নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খ্যাপাটে , দেশকে নিয়ে স্বপ্নবাজ , উচ্চতা ভীতি এবং নারী ভীতি রয়েছে ।

জাবের তুহিন

নামেই আমার পরিচয়

জাবের তুহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষমাপ্রার্থী ....

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০২

ভোরে ওঠার অভ্যাসটা সেই ছোটবেলার , অভ্যাস রয়ে যায় । পঞ্চাশ বছর পেরোলে সবে । যথেষ্ট বুড়ো হয়েছি । পাশের মেয়েটাও বুড়ি হয়েছে । ফজরের নামায পড়তে যাওয়ার আগে বুড়িকে উঠিয়ে রেখে যাই । নামায শেষে দুজনে মিলে হাঁটতে বের হই ।
দুই জনেই ডায়াবেটিসের রোগী । নিয়মিত ১/২ ঘন্টা হাঁটার নির্দেশ ডাক্তারের । ধানমন্ডির বাসা থেকে হাঁটা শুরু করে সংসদ ভবনের ঐ দিক দিয়ে হাঁটতে থাকি । এতোদিনে দুইজনের হাঁটার গতি প্রায় একই হয় গেছে । হাঁটার সময় খুব একটা কথা হয় না আজকাল ।
তবে ৩০ মিনিট হাঁটার পরে নিয়মিত এক জায়গায় বসা হয় । জিয়া উদ্যানের ঐখানে । সূর্যটা মাথা তুলতে থাকে ধীরে ধীরে । কোন তাড়া নেই , তেজ নেই – এক অপূর্ব আলো ছড়িয়ে দেয় ।
জিয়া উদ্যানে ভোরে বেশ কিছু জায়গায় ছোট ছেলেরা ফুটবল খেলতে আসে । ওদের খেলাটা এখান থেকে দেখা যায় । এই সময়টাই সবচেয়ে কষ্টের । আমার বসার ইচ্ছা নেই , বহুবার না করার পরেও রাহমিনাকে মানাতে পারি নি । এই ছেলেদের খেলা দেখবে আবার কাঁদবে । ও বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে থাকে আর আমি ওর দিকে । চোখে জমে থাকা পানিতে ভোরের আলো পড়ায় একেক টুকরো ফোঁটা যেন হীরের টুকরো , যার দাম শুধু আমি জানি ।
আমার চোখের পানি অনেক আগেই শুকিয়ে গেছে । শরীরের ভিতরটা রুক্ষ্ম মরু চর , শুধুই হাহাকার । নিজেকে বড় বেশি পাপী মনে হয় । অন্য কারো সাথে যদি ও জীবন কাটাতে পারতো , ওর কান্না যদি দেখা না লাগতো ।
আজ দেখলাম এক টুকরো কান্না নাকের সামনে এসে বেধে আছে , সূর্যের আলো তো চক চক করছে । নাকটা হালকা চিপে ধরে বললাম , “ বড্ড হয়েছে , কালকের জন্যও কিছু বাঁচিয়ে রাখুন ।হীরের বড়ই দাম । ”
অনিচ্ছা সত্ত্বে উঠে দাঁড়ায় , যাওয়ার পথটা যেন আর শেষ হতে চায় না । ওর হাঁটার গতির থেকে আমার হাঁটার গতি কম এবার , বেশ কম । বিজয় স্মরণির এই মাথায় কিছু ছেলেমেয়ে ফুল বিক্রি এই ভোরে সেগুলো গোছাতে ব্যতিব্যস্ত থাকে ।
ওদের নিয়ে সকালের নাস্তাটা সেরে ফেলি আজকের মতো – সামনের একটা হোটেল থেকে খাবার কিনে ফুটপাথে বসে ।
এই সময় রাহমিনার আরেক রূপ দেখা যায় আবার । বুড়ো হলো তবু হাসির মোহনীয়তা একটুও কমে নি । এইরকমই তো হওয়ার থাকার কথা ছিল ওর ।
মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরে বলি – “ SORRY SORRY SORRY ”
বুকের ভেতর হুল ফুটে উঠে প্রতিবার এই চিন্তা করে , সরি বলে কি ফিরিয়ে দিতে পারবো যে দিনগুলো নিয়েছি ওর কাছ থেকে ।
“ভালোবাসি ভালোবাসি” লিখে পুরো মানিক মিয়া এভিনিউ ভাসালেও কি বুঝাতে পারবো কতটুকু ভালোবাসি তার সাথে কতটুকু ক্ষমাপ্রার্থী আমি ?
সূর্য বেশ বেরসিক , তাতিয়ে ওঠা শুরু করেছে , রাহমিনার গালে রোদ পরে লাল করে দিয়েছে । উচিত হয় নি ...............

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



না পড়লেই ভালো ছিলো, পড়ে অনেক কস্ট পেলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.