নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খ্যাপাটে , দেশকে নিয়ে স্বপ্নবাজ , উচ্চতা ভীতি এবং নারী ভীতি রয়েছে ।

জাবের তুহিন

নামেই আমার পরিচয়

জাবের তুহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক গ্লাস অন্ধকার দিবেন ? []

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫৯





বিছানায় শুয়ে থেকে ফ্যানের ঘূর্ণন দেখছিলাম । অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে গেছি । পরে চা বানানোর জন্য উঠে রান্নাঘরে গেলাম । চুলোয় পাতিলে পানি দিয়ে চড়িয়ে দিলাম । কিছুক্ষণের মধ্যেই পানি ফুটতে শুরু করেছে । অল্প কিছু চা-পাতা ছেড়ে দিলাম । পানির রঙ বদলাতে শুরু করেছে । অনেকটা জীবনের মতোই , ছোট্ট করে কারো উপস্থিতিও জীবনের রঙ বদলে দিতে পারে । সাথে দিলাম দু’টকরো লবঙ্গ , আধখানা দারুচিনি । রঙ এর সাতে সুঘ্রাণও যুক্ত হয়ে গেলো । ছাকনি দিয়ে ছেঁকে তাতে লেবুর রস দিয়ে মগ হাতে নিলাম । “অচেনা” ঘরের তালা খুলে ভিতরে ঢুকে গেলাম । বিশাল বাসায় একা থাকি । বন্ধু বান্ধব এসে এই ঘরের রহস্য জানতে চায় , কাউকে কোনদিন বলি নি । তন্য তন্য করে খুঁজেও কেউ এই ঘরের চাবি পায় নি । খুবই কম শক্তির একটা বাতি জ্বালিয়ে ঘরের মাঝখানে রাখা কাঠের চেয়ারে বসে পড়লাম । এখন আমি আর একা নই । আমাকে ঘিরে রেখেছে কতগুলি অস্তিত্ব । পুরো ঘরটা আয়না দিয়ে ঘেরা । প্রতিটায় আমি আছি । তবে পুরো নয় । মুখ বাদে পুরো শরীরটা । মুখের অংশটুকু কালো করে দেয়া । সবাইকে একই রকম দেখতে হ্লে তো হবে না । একেকজনকে একেক চেহারায় কল্পনা করে নেবো ।

সবাই চা খাচ্ছে আমার সাথে । ওদের সাথে ঐভাবে কথা হয় না , আমি আমার সকল চিন্তা ওদেরকে বলি । ওরা খুব ভালো শ্রোতা । আমাকে এক বিন্দুও বিরক্ত করে না , কথার মাঝে কথা বলে না । কাজের কথা বলে উঠে চলে যায় না , আসতে দেরি হওয়ার অজুহাত হিসেবে দাঁড় করায় না ।
চা ধীরে ধীরে খেয়ে শেষ করে উঠে আসলাম “অচেনা” ঘর থেকে । আজকে আড্ডাটা ঠিক জমলো না । অন্য সময় চা কয়েক কাপ প্রয়োজন হয় ।
এইটা আমার প্রতিদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে । তবে সেদিন আরেকজনকে পেলাম ঠিক আমার মতো । আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো ভয় পেয়ে মরেই যেতো । আমি ভয় পাই নি , বরং বন্ধুভাবে ঝাপটে ধরেছি । তার অস্তিত্বের নাম “ছায়া” । নাহ , শুধু ছায়া না । ছায়ার চেয়ে বেশি কিছু । অন্ধকারেও থাকে , সব প্রবাদকে ভুল প্রমাণ করেছে ।
অন্ধকারে ঈষৎ আলোর রূপে মেঝেতে পরে থাকে । আবার দিনের আলোতে সব থেকে আলাদা অবতারে আমাকে একা পেলেই ছুটে আসে । ঠিক পাশে থাকে ।
“অচেনা” ঘরে এরপর বহুদিন যাওয়া হয় নি । সেদিন বন্ধুটিকে নিয়ে গেলাম সেই ঘরে । ভাঙ্গা কাঁচের টুকরোতে পুরো ঘর ভরে আছে । অনাদরে অবহেলায় পুরনো অনেকগুলো বন্ধু হারালাম । সেই বন্ধুটি এই ঘরে ঢুকে নি । কেন ঢুকে নি ? আমার কান্না সহ্য করতে পারবে না বলে ?
বন্ধু হলে তো সবার আগে ছুটে আসার কথা ?
আবার একা হয়ে গেলাম ?
ভাঙ্গা কাঁচের টুকরোর উপর দিয়ে হেঁটে রক্তে প্রতিদান দিয়ে মাফ চেয়ে নিলাম । কোনদিনও ফিরবে না । অভিমানগুলো কতটা প্রখর ছিল ? আমার কষ্টের সময় ওরা ছিল কিন্তু ওদের কষ্টের সময় ?
ফিরে আসবে না আর দিনগুলো , বাহিরে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধুটিও অল্প অল্প করে মিলে যাচ্ছে অন্ধকারে ।
আমাকে কেউ এক গ্লাস অন্ধকার দিবেন ? সাথে অল্প একাকিত্ব গুলিয়ে দিবেন । একাকিত্ব ছাড়া আমার চলেই না ………….

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:১০

সাগর কর্মকার বলেছেন: ভালোইত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.