নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I\'m learning a lot about myself being alone, and doing what I\'m doing.

তুষার দেবনাথ

আমি নিজেই জানিনা, আমি আসলে কি।

তুষার দেবনাথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দূরন্ত শৈশব!

১৯ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩

খাপড়ার মত ইটের টুকরা পাতলা পলিথিনের ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়ে মাপ মত ছিড়ে, উপরের দিকে থ্রো করার মত নয় চেলে উঠিয়ে মারতাম। ইটের টুকরা পড়ে যেত, পলিথিন আয়েশ করে উড়ে যেত! মজা ছিল মাইরি।


কেউ কেউ আবার পলিথিনের পিছন বরাবর সুতা বেঁধে দিত। চরকির মত ঘুরে ঘুরে উড়ে যেত বহুদূর। দেখতে ভাল্লাগত। যেগুলো খুব ভালো উড়ত সেগুলো ধরে নিয়ে এসে আবার।


পুতির সাইজের ফাঁকওয়ালা কিশোর টাইপ বাঁশের ভিতরে ঢোকানোর জন্য মাপ মত চিকন কঞ্চি কাটতাম। যাতে করে এয়ার টাইট ভাবে কঞ্চি ওই পুতির মত ছোট ফাঁক দিয়ে ঢুকে যায়। পেপল্টির কথা বলছি।


পেপল্টি হলো পুতির মত দেখতে ফল। যেটা ওই বাশের ফাঁক দিয়ে ঢুকিয়ে ওই কঞ্চি দিয়ে ঠেলা দিলেই ব্যস! পটাশ করে শব্দ হয়ে গুলির বেগে আঘাত করত লক্ষবস্তুকে। লাইট কালার শার্ট অথবা গেঞ্জি পড়া পোলাপাইন ছিল টার্গেট।


রাইফেলের মত বাট বানাতাম। মাথার দিকে প্রস্থ বরাবর ফুটা করে গুলতির রবার ঢুকিয়ে টেনে নিয়ে এসে বাধিয়ে দিতাম দৈর্ঘ্য বরাবর ফুটো করে বানানো ট্রিগারের মাথায়। ট্রিগার চাপ দিলেই মার্বেল যেয়ে লাগত পাখির গায়ে অথবা রসের হাড়িতে।


এই যন্ত্রের নাম ছিল গুলতির রাইফেল। গুলতির কনসেপ্টের আপডেটেড ভার্সন। বানাতে হ্যাসেল হতো খুব। তবে একবার বানালে চলত অনেক দিন। একবার এটা দিয়ে একটা পাখি আহত করে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। সেইথেকে বাদ।


লাটাই কিনে মাঞ্জা দিয়ে ঘুড়ি ওড়ানো। কাটাকাটি খেলে ঘুড়ি হারানো নতুবা কেটে দিয়ে উল্লাস। লুটে নিয়ে আসা তো ওয়াল্ড ওয়ার জেতার সমান ছিল। এক টাকার অনেক দাম ছিল তাই টাকার অভাবে পাহাড় সমান গাছে উঠে পেড়েছি এক টাকার ঘুড়ি।


কেউ সাইকেলে যাচ্ছে দৌড় দিয়ে হালকা রান আপ নিয়ে লাফ দিয়ে পিছনের ক্যারিয়ারে ওঠা। বালির উপর উঠে রাজ্য রাজ্য খেলা। সেই সময় মনে হওয়া বিশাল পুকুরের এপার থেকে ওপার ইট মেরে পার করতে করতে বড় হয়ে ওঠা।


বল পুকুরে পড়লে ঝাকড়া কাঠে সুতা বেধে বলের ওপারে ফেলে বল বাধিয়ে নিয়ে এসে আবার খেলা শুরু করার মধ্যে আইনষ্টানীয় সফলতা দেখতাম। শোলা কেটে নৌকা বানিয়ে কয়েকশ ইট মেরে পুকুরের মাঝখানে পাঠানোর প্রতিযোগিতা।


সাত খাপড়া! টেনিস বল দিয়ে সাতটা খাপড়া ভেঙে প্রতিপক্ষের ছুড়ে দেওয়া বল এড়িয়ে খাপড়াগুলো আবার স্বস্থানে বসানো। বোম বাস্টিং...লাস্ট বল ড্রপয়ের জায়গা হতে আশেপাশের যে কারো বল নিক্ষেপ করে উদোম পিটানো।


ডাংগুলি। বড় লাঠি (ডাঙ) দিয়ে ছোট কাঠিটাকে (গুলি) মাটির খাদ থেকে উঠিয়ে নিয়ে ইয়া জোরে বাড়ি দিয়ে ডাঙ এবং গুলি (টাচয়ের হিশেবে) দিয়ে পয়েন্ট গোনা। অথবা খাপড়া চার আঙ্গুলের তফাতে ফেলে সিগারেটের প্যাকেটের তাস জিতে নেওয়া!


আহা, কত সুখের দিনগুলি!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৭

বিজন রয় বলেছেন: আগে কি সুন্দর দিন ছিল!!
উচ্ছল, স্বাধীন, রঙিন।

১৯ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪১

তুষার দেবনাথ বলেছেন: তা যা বলেছেন, ভাই। ☺

২| ১৯ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৪

সুমন কর বলেছেন: আহা শৈশব !! লেখা ভালো লাগল।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:১৯

তুষার দেবনাথ বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই।

৩| ২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৪৫

মোঃ আবুল হোসেন (হাবিব) বলেছেন: ++++++++
লগিন না করেই চোখ বুলাচ্ছিলাম, শুধুমাত্র প্রিয়তে রেখে দেবার জন্য লগিন করলাম।

আমার ছোট্ট একটা রাজকন্যা আর, আরও ছোট্ট একটা রাজপুত্র আছে। যদি আল্লাহ আমাকে হায়াত দেন, তাহলে ইচ্ছে আছে ওরা যখন একটু বড় হবে, তখন ওদের এই খেলাগুলোর (দু-একটা বাদে) সাথে পরিচয় করিয়ে দেব, আর ওদের সাথে আমিও খেলব। যাতে ভুলে না যাই তাই প্রিয়তে নিয়ে রাখা।
লেখকের জন্য শুভ কামনা রইল।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:২০

তুষার দেবনাথ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ হাবিব ভাই। আপনার রাজকন্যা আর রাজপুত্রের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। দূরন্ত শৈশবে বড় হোক ওরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.