নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহাদাত উদরাজী\'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - \'গল্প ও রান্না\' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সাহাদাত উদরাজী

[email protected] ০১৯১১৩৮০৭২৮গল্প ও রান্না udrajirannaghor.wordpress.comপ্লে স্টোরে ‘গল্প ও রান্না’ এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! আনন্দ সংবাদ! বাংলা রেসিপি নিয়ে এই প্রথম প্লে স্টোরে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! ‘গল্প ও রান্না’ এখন Play Store এ Apps হিসাবে আপনার হাতের কাছে। নেট কানেশন বা WiFi জোনে থেকে Play Store এ যেয়ে golpo o ranna বা “Golpo O Ranna” বা “com.udraji.rannaghor” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। খুব সহজেই আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে ‘গল্প ও রান্না’র আইকন ইন্সটল করে নিতে পারেন। ফলে আপনাকে আর মোবাইলে আমাদের সাইট দেখতে লিঙ্ক বা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে না। নেট কানেশন বা ওয়াইফাই জোনে থাকলেই আপনি ওয়ান ক্লিকেই গল্প ও রান্না দেখতে পাবেন।

সাহাদাত উদরাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচিত্র পেশাঃ ৬ (ইসলাম ভাইয়ের বনাজী শরবত)

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪০

আমার বড় ছেলেকে স্কুলে দিয়ে এবং নিয়ে আসতে যে পথ দিয়ে যেতে হয়, সেই পথের ধারেই ইসলাম ভাইয়ের বনাজী শরবতের দোকান। দোকান মানে বেশ জকিয়েই বসছেন আমাদের ইসলাম ভাই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী ইসলাম ভাইকে আমি অনেক দিন ধরে দেখে আসলেও কখনো কথা হত না। একদিন সন্ধ্যায় সেই পথ দিয়ে বাসায় হেঁটে আসতে ভাবলাম, ইসলাম ভাইয়ের সাথে আজ কথা বলি!

কিশোর গঞ্জ থেকে ভাগ্যের টানে এই ঢাকা শহরে এসেছিলেন একদিন। মোটামুটি নানান কাজ করেছেন এবং এক সময়ে একটা গ্রোসারী দোকান করতে পেরেছিলেন কিন্তু জীবন সঠিক ভাবনায় চলে না। বাড়ীওয়ালা সেই গ্রোসারীর এডভান্স এবং ভাড়া বাড়াতে ইসলাম ভাই সেটা আর চালু রাখতে পারলেন না। বছর দেড় আগে বাধ্য হয়ে সেই দোকান বন্ধ করে লস দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়লেন। এমনি সময়ে মাথায় আইডিয়া এল, খুব কম পুঁজিতে কি করে কিছু একটা করা যায়। খোঁজাখুঁজির এক সময়ে এই শরবতের ব্যাপারটা মাথায় এল। হাতে থাকা টাকা দিয়ে একটা চমৎকার ভ্যান বানিয়ে নিলেন, অনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় জিনিষ কিনে ফেললেন এবং কয়েকদিন ট্রেনিং নিলেন এক পেশাদার শরবত বিক্রেতার কাছে, সাথে কিছু বই পত্র পড়লেন এবং নেমে গেলেন এই মহৎ পেশায়। ইসলাম ভাই জানালেন, গাছ পালার উপরে এই দুনিয়াতে আর কি আছে। মানুষ সহ দুনিয়ার প্রায় সব প্রানীই তো গাছ পালার উপর নির্ভরশীল, গাছ থেকেই তো সব কিছু আসে।

ইসলাম ভাইয়ের এই ব্যবসার মেয়াদ প্রায় দেড় বছর এবং তিনি সাফল্য পেয়েছেন বলেই জানান এবং উপরোয়ালাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন এখন ভাল আছেন। কোন কিছুতেই কোন ভেজাল নেই, নিজ হাতে গাছপালা, ফুল ফল কিনে নিয়ে আসেন এবং ফরমুলা বা কাষ্টমার চাহিদা মাফিক এই বনাজী শরবত বানিয়ে দেন। ফিল্টারের পরিস্কার পানি ব্যবহার করেন। আমি কখনো এমন বনাজী শরবত পান করি নাই শুনে মিষ্টভাষী ইসলাম ভাই বললেন, আপনার জন্য আমি নিজে পছন্দ করে এক গ্লাস শরবত বানিয়ে দিচ্ছি।

কম কথা বলা ইসলাম ভাই বললেন থেমে না যেয়ে এক টানে পান করে ফেলতে। না, আমি পারি নাই। এই গ্লাস শেষ করতে আমাকে তিন টান দিতে হয়েছে এবং শেষেও কিছু বাকী ছিল এবং সেটা হাতে ধরে ইসলাম ভাইয়ের সাথে কথা বলছিলাম। তিনি চিরতা চুবিয়ে রাখা একটা বোয়াম দেখিয়ে বললেন, এমন অনেক কাষ্টমার আসে যারা শুধু এলোভেরা এবং চিরতার এই রস মেশানো শরবত একটানে পান করে যায়। আমি আগ্রহ প্রকাশ করে বললাম, চিরতার নাম শুনেছি, অনেক তিতা, একটু দিন দেখি। ইসলাম ভাই কয়েক চামচ চিরতা আমার গ্লাসে মিশিয়ে দিলেন, আমি চেষ্টা করলাম, না সামান্য পান করতে পেরেছি, এই জন্মে এমন তিতা আর পান করি নাই।

আমি প্রায় ঘন্টা খানেক ছিলাম, ইসলাম ভাইয়ের সাথে। দেখছিলাম তার হাতের কৌশল, দারুণ। এত চমৎকার হাতের কাজ, ভালবাসা না থাকলে সম্ভব নয়। এই সময়ে তার অনেক কাষ্টমার দেখলাম, ঢাকা শহরের বাড়ীওয়ালা থেকে দারোয়ান, রিক্সাওয়ালা কে না খাচ্ছে! হা হা হা.।। ইসলাম ভাই বললেন, এই বনাজী শরবতে সত্যই শরীরের অনেক কাজ হয়। শরীরে ছোটখাট রোগ প্রবেশ করতে পারে না, ক্যালসিয়াম থেকে শুরু করে নানান খনিজ শরীরে কাজ করে। (যাই হোক, তিনি ভেজাল দিচ্ছেন না এবং কাষ্টমারের সামনেই যা বানিয়ে দিচ্ছেন, এটাও কম কিসে)

আমি ভাবছি, আরো অনেক দিন ইসলাম ভাইয়ের বনাজী শরবত পান করবো এবং তার নানান পদের শরবতের স্বাদ নিবো।

পেশা হিসাবে আমি এটাকেও বিচিত্র মনে করি এই জন্য যে, এটা সবার দারা সম্ভব নয় এবং এই পেশায় যে জ্ঞান থাকতে হয় সেটা অনেকেই অর্জন করতে পারবেন না। পাশাপাশি এটা একটা সৎ পেশা, খুব ভোরে উঠে নানান জায়গা থেকে নানান ভেজষ কিনে নিয়ে সেটা পরিস্কার পরিছন্ন করে ধুয়ে, সাজিয়ে বসা এবং নানান পদের ভেজষ কয়েকদিন বা কয়েক ঘন্টা পানিয়ে চুবিয়ে তার রস বের করা এবং তার গুনাগুন থাকা বস্থায় বিক্রি করা সহজ কাজ নয়।

আমি ইসলাম ভাইয়ের এই বনাজী শরবতের ব্যবসার সাফল্য কামনা করি। উপরোয়ালা উনাকে হাসি খুশি রাখুন।

বিদ্রঃ সাধারনত ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত এক গ্লাস শরবত বিক্রি হয়, কাষ্টমার ইচ্ছা হলে কাষ্টমাইজ করতে পারেন। চিনি ছাড়া না চিনি দিয়ে, এটা না ওটা, যেভাবেই কাষ্টমার চাইবেন!

বিচিত্র এই দেশ, বিচিত্র এই দেশের মানুষ, কত কি বিচিত্র পেশা! তবে সবই জীবিকার টানে!

(আসছি, আরো নানান বিচিত্র পেশা নিয়ে, আশা করি সাথে থাকবেন।)

বিচিত্র পেশাঃ ৫ (নুরু মিয়ার নেহারী রান্না)
http://www.somewhereinblog.net/blog/udraji/30001660

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২

পাগলাগরু বলেছেন: বিদেশে গিয়া থাল বাটি মাজার থেকে নিজ দেশে কিছু করার চেয়ে আর ভালো কিছু হয় না।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩১

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ পাগলা ভাই।
কথাটা মন্দ বলেন নাই, আমিও এক সময়ের প্রবাসী! হা হা হা।
শুভেচ্ছা।

২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৫

সুফিয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বিচিত্র পেশা সন্ধানী ভাই। আপনার লেখা আমি খুব উপভোগ করে পড়েছি। ভালো লাগল। সবচেয়ে বড় কথা হলো সমাজের অবহেলিত পেশা কিংবা পেশাজীবীকে আপনি তুলে আনছেন লোকসমক্ষে। এটা কম কথা নয়। অনেক শুভ কামনা রইল আপনার জন্য। আরও আরও এই ধরনের লেখা চাই।

সবশেষে ছোট্ট একটা সংশোধন করতে চাই। শব্দটা ‌'ভেজষ' না হয়ে "ভেষজ" হবে।

ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৪

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।
আমার চেষ্টা চলবে। অনেক গুলো জমা আছে, স্ময় ও সুযোগ পেলেই তুলে দিব।

শুভেচ্ছা। বানানটা মনে রাখবো।

৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৮

এইচ তালুকদার বলেছেন: ইসলাম ভাইয়ের সততা পরিশ্রম আর আপনার লেখনি দুই মিলিয়ে অসাধারন একটা ছবি পাচ্ছি চোখের সামনে।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৪

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ তালুকদার ভাই।
শুভেচ্ছা।

৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৬

ইমরান আশফাক বলেছেন: আমার ব্লগে ডেগের গো্স্তের একটা পোস্ট আছে দেখে নিয়েন।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ইমরান ভাই।
আপনার পোষ্ট দেখে এলাম, দারুন।
চুইঝাল পেলে এমন রান্না করবো।
শুভেচ্ছা।

৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৩

সুমন কর বলেছেন: সাহাদাত ভাই, অাপনি খেতে পারলেন না !!!!! তাহলে ব্লগাররা কিভাবে খাবে ?

অামি ছোট বেলা অনেক চিরতার রস খেয়েছিলাম। খুব তিতা......

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই।
চিরতা তিতা বটেই কিন্তু এমন তিতা হবে তা ভাবি নাই।
শুভেচ্ছা।

৬| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৯

সুমন জেবা বলেছেন: সবই জীবিকার টানে!

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৮

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ জেবা ভাই।

৭| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: বিচিত্র পেশার পর্বগুলো চমৎকার । চলুক....

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৯

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রাদার।

৮| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৮

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বিচিত্র পেশাঃ ৭
http://www.somewhereinblog.net/blog/udraji/30002646

৯| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫৩

মন্জুরুল আলম বলেছেন: আপনার এই সিরিজের সবই পড়ে ফেললাম। আরও লিখবেন আশাকরি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.