নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহাদাত উদরাজী\'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - \'গল্প ও রান্না\' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সাহাদাত উদরাজী

[email protected] ০১৯১১৩৮০৭২৮গল্প ও রান্না udrajirannaghor.wordpress.comপ্লে স্টোরে ‘গল্প ও রান্না’ এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! আনন্দ সংবাদ! বাংলা রেসিপি নিয়ে এই প্রথম প্লে স্টোরে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! ‘গল্প ও রান্না’ এখন Play Store এ Apps হিসাবে আপনার হাতের কাছে। নেট কানেশন বা WiFi জোনে থেকে Play Store এ যেয়ে golpo o ranna বা “Golpo O Ranna” বা “com.udraji.rannaghor” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। খুব সহজেই আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে ‘গল্প ও রান্না’র আইকন ইন্সটল করে নিতে পারেন। ফলে আপনাকে আর মোবাইলে আমাদের সাইট দেখতে লিঙ্ক বা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে না। নেট কানেশন বা ওয়াইফাই জোনে থাকলেই আপনি ওয়ান ক্লিকেই গল্প ও রান্না দেখতে পাবেন।

সাহাদাত উদরাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচিত্র পেশাঃ ৭

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৬

আজকের বিচিত্র পেশার নায়ক মোহাম্মদ করিম, যুবক, বয়েস মনে হয় না ত্রিশ পার হয়েছে। দেখতে শুনতে বেশ সুদর্শন এবং দীপ্ত, যাকে এক নজরে হিরো বলা চলে, রাস্তার রাজা! করিমের সাথে আমার দেখা হয় রাস্তায় এবং প্রতিদিন একটা নিদিষ্ট জায়গাতেই ওর সাথে দেখা হয়ে থাকে। মানুষের ওজন এবং উচ্চতা মাপ ঝোক নিয়েই ওর কারবার। এবার নিশ্চয় আপনারা বুঝে গেছেন, আমাদের করিমের পেশা কি! না, এটাকে তার পূরোপুরি পেশা বলা চলে না, তবে গত তিন বছর ধরে এই কাজটা নিখুতভাবে করে যাচ্ছে, মাশাআল্লাহ আয় রোজগার বেশ ভাল, সেটা পরে বলছি!


আজ থেকে বছর পাঁচেক আগে নোয়াখালীর লক্ষীপুর থেকে এই শহরে উঠে এসেছিল করিম। কাজের সন্ধানে ঘুরে ফিরে একটা কাজ পেয়ে যায়, ডেলিভারীম্যান হিসাবে, বিরাট বড় কোম্পানীর মালামাল গোডাউন থেকে গাড়ীতে নিয়ে কতগুলো নিদিষ্ট পয়েন্টে ডেলিভারী দিয়ে আসা, টাকা কালেকশন অন্যজনের। কাজের সময় সকাল ৯ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত, কখনো ১২টাতেই কাজ শেষ হয়ে যায়। এভাবে দিন চলছিল, কিন্তু বিকালের সময় আর একলা পাড়ি দিতে চায় না! কিছুটা সময় ঘুমিয়ে, এদিন ওদিক আড্ডা দিয়েও সময় পার করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তার উপর বেতন যা পাওয়া যায় তা দিয়ে চলে না।

কিছু একটা করার বা সময় কাজে লাগানোর চিন্তা করিমকে পেয়ে বসে। এমন সময় মাথায় আইডিয়া খেলে যায়, রাস্তার ধারে ওজন ও উচ্চতা মাপার কাজ করলে কিছু টাকা আয় হবে হয়ত। এভাবে করিম সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে একটা মেশিন কিনে ফেলে। বিকাল থেকে রাস্তার ধারে মানুষের ওজন উচ্চতা মাপে। শুধু ওজন দুই টাকা, উচ্চতা ও ওজন পাঁচ টাকা। ব্যস, এভাবে চলছে করিমের ২য় পেশা।

আমি করিমের সাথে কথা বলে বেশ আনন্দিত হয়েছি। পরিস্কার শুদ্ধ বাংলা এবং বেশ ঘুচিয়ে কথা বলার ধরন আপনার মন ভাল করে দেবে। আমি আমার অতীতের অভিজ্ঞতা এবং লক্ষীপুরের অনেক বন্ধু পেয়েছি, লক্ষীপুরের ছেলেরা যখন বাংলা বলে সেটা বেশ শ্রুতি মধুর হয়। করিমের ক্ষেত্রেও তা হল, বেশ বুদ্ধি রাখে বলে মনে হল! তার এই ২য় পেশার ব্যাপারটা তার বুদ্ধিমাত্তার বহিঃপ্রকাশ বটেই।

যাই হোক, করিম আমাকে জানালো এভাবে প্রতিদিন সে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা রুজি করে, তবে প্রায় সব নোট গুলো হয় ২ টাকা এবং ৫ টাকার। রাতে বাসায় ফেরার সময় এই নোট গুলো পান দোকান থেকে বড় নোট করে নিয়ে ফিরেন। তবে বৃষ্টির দিনে আয় প্রায় হয় না বলেই চলে।

করিম আমাকে জানালো, এই পেশায় এসে তার সাফল্যের কথা। গত বছরে লক্ষ টাকা দিয়ে বাড়িতে ধানী জমি কিনেছে। নব্বই হাজার টাকা দিয়ে একটা ঘর দিয়েছে। অবশ্য বাবাই এই কাজ গুলো করে দিয়েছে, সে শুধু টাকা পাঠিয়েছে।

আমি করিমের ছবি তুলতে চাইলাম এবং বললাম, তার গল্পটা অনলাইনে শেয়ার করবো। করিম খুব হাসি মুখে জানালো, করবেন। তার এই পেশায় না আছে মিথ্যা, না আছে কোন চাতুরতা, না কোন প্রতারনা। আপনি রাস্তার ধারে হেটে যেতে আপনার উচ্চতা ও ওজন মাপতেই পারেন এবং এটা কার না ইচ্ছা হয়। করিম কাউকে জোর করেন না এমনকি অনেকে ওজন মেপে টাকাও দেয় না, তাতেও করিমের আফসোস নেই! তবে করিম তার এই যন্ত্রটাকে অত্যান্ত ভালবাসে, আজ পর্যন্ত নষ্ট হয় নাই এবং ভুল ওজন দেয় নাই! কাজ শেষে কাছের অফিসেই রেখে বাসায় ফিরে যান।

আমি করিমকে স্যালুট করি এবং তার আরো সাফল্য কামনা করি। আমি নিশ্চিত আমাদের করিম আরো আরো বড় হবে একদিন, তার টাকায় থাকবে শুধু পরিশ্রম ও ভালবাসার ঘ্রান। আমাদের দেশের আমজনতা আসলে এমনি, এমনি সহজ ও সরল।

বিচিত্র এই দেশ, বিচিত্র এই দেশের মানুষ, কত কি বিচিত্র পেশা! তবে সবই জীবিকার টানে!

বি দ্রঃ করিমের কাছে একটা উচ্চতানুশারে ওজনের চার্ট আছে, সেটা দেখে আমার মোটা শরীর কেঁপে উঠলো! আমার ওজন কমের পক্ষে ১০ কেজি কমাতে হবে!


বিচিত্র পেশাঃ ৬ (ইসলাম ভাইয়ের বনাজী শরবত)
http://www.somewhereinblog.net/blog/udraji/30002003

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার এই সিরিজটা আসলেই ভালো হচ্ছে। তবে লক্ষীপুর তথা আমাদের ঐ অঞ্চলের শুদ্ধ ভাষা কতখানি মিষ্টি জানি না, তবে আমার কাছে বেশ মজারই লাগে। হা হা হা।

দেখি সামনে কোন বিচিত্র পেশার লোককে আপনি উপস্থাপন করেন!

শুভেচ্ছা রইল।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৮

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ভালবাসা ভাই।
আমি চেষ্টা চালিয়ে যাব।
হ্যাঁ, আগামীতে আরো রহস্য আছে। আশা করি সাথে থাকবেন।
শুভেচ্ছা।

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

সপ্নীল বলেছেন: বেশ কিছুদিন যাবৎ আপনার সিরিজটা পড়ছি। খুব ইন্টারেস্টিং আর অনুপ্রেরনাদায়ী পোষ্ট বিশেষ করে বেকার যারা সৎভাবে কিছু করার জন্য খুজে পায় না তাদের জন্য। ইচ্ছে ঠাকলে খুব সহজে কিভাবে সৎভাবে জীবিকা নির্বাহ করা যায় তার উজ্জল দ্্বষ্টান্ত এ লোকগুলো।

পোষ্টে প্লাস। ভাল থাকুন নিরন্তর।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ সপ্নীল ভাই।
হ্যাঁ, এটা আমিও লক্ষ করেছি।
শুভেচ্ছা।

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার সিরিজ । এমন পরিশ্রমী লোকদের গল্প শুনলে মনটা ভালো হয়ে যায় ।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রাদার।
হ্যাঁ, এই সৎ মানুষ গুলো থেকে আমরা অনুপ্রেরনা পেয়ে থাকি।
শুভেচ্ছা নিন।

৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪১

সুমন কর বলেছেন: সাথে অাছি।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৩

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন দা।

৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৫

মো সালাহ্ উদদীন বলেছেন: দেশে দিনে-দিনে বেকারের সংখ্যা লাগামছাড়া হচ্ছে ।কাজ না পেয়ে অনেককে হয়তো অবৈধ পথে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে ।সেখানে করিমের সত্‍ উপার্জনের গল্পটা ভালো লাগল ।তার সাফল্য কামনা করছি ।

৬| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৬

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বিচিত্র পেশাঃ ৮
http://www.somewhereinblog.net/blog/udraji/30003388

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.