নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহাদাত উদরাজী\'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - \'গল্প ও রান্না\' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সাহাদাত উদরাজী

[email protected] ০১৯১১৩৮০৭২৮গল্প ও রান্না udrajirannaghor.wordpress.comপ্লে স্টোরে ‘গল্প ও রান্না’ এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! আনন্দ সংবাদ! বাংলা রেসিপি নিয়ে এই প্রথম প্লে স্টোরে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! ‘গল্প ও রান্না’ এখন Play Store এ Apps হিসাবে আপনার হাতের কাছে। নেট কানেশন বা WiFi জোনে থেকে Play Store এ যেয়ে golpo o ranna বা “Golpo O Ranna” বা “com.udraji.rannaghor” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। খুব সহজেই আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে ‘গল্প ও রান্না’র আইকন ইন্সটল করে নিতে পারেন। ফলে আপনাকে আর মোবাইলে আমাদের সাইট দেখতে লিঙ্ক বা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে না। নেট কানেশন বা ওয়াইফাই জোনে থাকলেই আপনি ওয়ান ক্লিকেই গল্প ও রান্না দেখতে পাবেন।

সাহাদাত উদরাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচিত্র পেশাঃ ১৩ (জাহিদ ভাইয়ের ঘটি গরম চানাচুর)

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯

আমি মাঝে মাঝে নয়াপল্টন থেকে রামপুরা হেঁটে বাসায় ফিরে যাই, এটা বিশেষ করে রাতে দিকেই হয়, বড় রাস্তা ধরে। রিক্সা বা বাসে চড়তে ইচ্ছা না হলে এই কাজ করি, তবে সেটা খুব একটা বেশী নয়, মাসে কয়েকদিন। এইপথে চলতেই গিয়ে আমি মাঝে মাঝে থেমে মানুষের কান্ড কারখানা দেখি, কে কি করছে তা দেখতে আমার খুব ভাল লাগে। সাধারন মেহনতি মানুষের আয়ের জন্য কে কি করে তা দেখে হিসাব মিলাই। বেঁচে থাকার জন্য কত মানুষ কত কি করে যাচ্ছে!

যাই হোক, এই চলার পথেই আমার সাথে পরিচয় হয় বিচিত্র পেশার মানুষ জাহিদ ভাইয়ের সাথে। তার এই পেশা কেবিচিত্র বলার কারন, এই পেশা একটা প্রচলিত পেশা হলেও তিনি এই পেশায় একটু টুইষ্ট দিয়ে যাচ্ছেন। হ্যাঁ, আমি জাহিদ ভাইয়ের ঘটি গরম চানাচুরের কথাই বলছি! একটা ঘটিতে কয়লা পুড়িয়ে আগুন করা হয় এবং সেই আগুনের চার পাশে থাকে চানাচুর। কাষ্টমার এলে সেই গরম চানাচুর বানিয়ে পরিবেশন করা হয়, খেতে অসাধারন। আমি খেয়েই বলছি!

জাহিদ ভাইয়ের গ্রামের বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জ, খুব ছোট বেলায় বাবা মা মারা যাবার পর চাচার সংসারে বড় হয়েছেন এবং একটা সময়ে তিনি আর সেখানে থাকতে পারেন নাই, লেখা পড়া তেমন শিখতেও পারেন নাই, চলে আসেন এই রহস্যময় আদুরে ঢাকা শহরে, যে শহর সবাইকে কিছু না দিক অন্তত কোলে তুলে নেয়!

ঢাকা এসে সাধারন শ্রমিকের মত জীবন শুরু করেন, যথারীতি এক সিলেটি ভাইয়ের যোগাড় করে দেয়া হোটেলের বয় হিসাবে। কিন্তু এই কাজে মন বসে না, কিছু দিন হোটেলে কাজ করে বিরক্ত হয়ে টঙ্গীতে এক লোকের দেখা পান, সেই লোকের পরামর্শে তিনি তার সাথে কাজ শুরু করেন। হ্যাঁ, তিনিই এই রকম ঘটি গরম চানাচুর বিক্রি করতেন। প্রথম প্রথম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতেন এবং কিছু দিনের মধ্যে যাবতীয় কাজ শিখে নেন, নিজেই স্বীকার করেন, এটা তেমন কঠিন কাজ নয় তবে ঘটিতে কয়লা দীর্ঘক্ষন জালিয়ে রাখায় একটু কৌশল আছে।

বছর দুয়েক ধরে এই ব্যবসা এখন আর ভাল চলছে না, আগে লাভ হত বেশী এবং অনেক কমেছে। আগে চিকন চানাচুরের কেজি ছিল ৪০ টাকা, এখন প্রায় ১২০টাকা। এই টাকা দিয়ে কিনে এনে অন্যান্ন মাল মশলা দিয়ে চানাচুর বিক্রী করে লাভ আর আগের মত হচ্ছে না, তা ছাড়া আগের মত কাষ্টমার এখন আর নেই। আগে সারাক্ষন ভীড় লেগে থাকত, এখন সবাই প্রায় নিরব! দোকান খুলে আগে কাজ শুরু করলে শেষ হত না, এখন প্রায় সময়েই হাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

জীবনের সেরা দুঃখের কথা জানতে চাইলে বলেন, ছোট বেলায় বাবা মা মারা যাওয়াই সেরা দুঃখের ঘটনা। আর সেরা মজাদার ঘটনা কি জানতে চাইলে, জাহিদ ভাইকে চিন্তায় পড়ে যেতে দেখা যায়। হেসে বলি, কখনো কি আপনার স্ত্রীকে এই চানাচুর বানিয়ে খাইয়েছেন। এবার হেসে বললেন, শুধু চানাচুর না অনেক কিছুই রান্না করে খাওয়াই। এতে আমার আগ্রহ বেড়ে যায়, জানতে পারি জাহিদ ভাই, প্রায় সব রান্নাই করতে পারেন এবং কাজ শেষে বাসায় ফিরে গিয়ে নিজেই রান্না করেন। তিন ছেলে মেয়ের পিতা জাহিদ ভাইয়ের এই কথা শুনে আমার মন ভাল হয়ে যায়, আমি নিজেও রান্না করতে ভালবাসি, নিজে হাতে রান্না করে প্রিয়জনদের খাবারের আনন্দে আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না! হা হা হা।।

যাই হোক, জাহিদ ভাইয়ের জন্য ভালবাসা থাকল। বাংলাদেশের মানুষের প্রায় সবারই অনেক কষ্টের গল্প। হয়ত এমন কষ্টের গল্প শুনে আমাদের চোখের কোনায় পানি জমে যায়!

জাহিদ ভাইয়ের ব্যবসা এগিয়ে চলুক। জাহিদ ভাইয়ের চানাচুরের রেসিপি আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন, আমি একদিন বানাবো বাসায়, তবে কথা বলতে বলতে কখন ১৫টাকার চানাচুর খেয়ে ফেলেছি, তা কে বলবে।

বিল দিয়ে আমি রাস্তায় নামি, যে কোন পেশায় একটু বিচিত্র না থাকলে কি চলে।

বিচিত্র পেশাঃ ১২
http://www.somewhereinblog.net/blog/udraji/30005510

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫১

তূর্য হাসান বলেছেন: সিরিজটা ভালোই লাগছে। চালিয়ে যান।

২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২০

অপ্রতীয়মান বলেছেন: ভিন্ন চিন্তা, আগ্রহ থেকেই নতুন কিছুর সৃষ্টি হয়। ঘটিতে করে কয়লা জ্বালিয়ে রাখা এটাও ভিন্ন চিন্তারই ফসল।

যাই হোক, এবারের "বিচিত্র পেশা" পর্বটিও ভালো লেগেছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম :)

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০০

আজমান আন্দালিব বলেছেন: ভালো লাগা।

৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩

তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: এই সিরিজ টা পড়তে বেশ লাগে। কত রকম মানুষের কত গল্প আমাদের চারপাশে।

৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২১

জাদিদ বলেছেন: দারুন পোষ্ট। আপনার এই সিরিজটা আসলেই দারুন হচ্ছে।

৬| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৩

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: আপনার সিরিজের ভক্ত আমি। ভালো হচ্ছে..গো অন

৭| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৩

সুমন কর বলেছেন: যাক, এবার আপনি খেয়ে লিখেছেন। :D


সাথে অাছি।

৮| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৯

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: চমৎকার লাগল এই পর্বটা :)

৯| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভাল লাগল

১০| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫০

মাহবু১৫৪ বলেছেন: ++

জীবিকার তাগিদে মানুষ কত কিছুই না করে!

ভাল লেগেছে

১১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৫৩

নতুন বলেছেন: এটা জটিল একটা সিরিজ হয়ে যাচ্ছে.... :)

১২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৫

মন্জুরুল আলম বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। আশাকরি কন্টিনিউ করবেন....

১৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার সিরিজ । চলুক...

১৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫৯

মহান অতন্দ্র বলেছেন: তবে কথা বলতে বলতে কখন ১৫টাকার চানাচুর খেয়ে ফেলেছি, তা কে বলবে। হা হা হা । ভাল লাগলো ।

১৫| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪৭

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বিচিত্র পেশাঃ ১৪ (কমলা কাহিনী!)
http://www.somewhereinblog.net/blog/udraji/30008773

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.