নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উনত্রিশে এপ্রিল ; মরণ কে খুব কাছ থেকে দেখার দিন।জীবন কে নতুন ভাবে অনুধাবন করার দিন।

উনত্রিশে এপ্রিল

উনত্রিশে এপ্রিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

এবং আমি-২

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪

কথিত আছে আমার মায়ের অনেক ভরী স্বর্ণ অলংকার ছিলো,আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে মায়ের স্বর্ণ সাধারনত মেয়েদেরকে তাদের বিয়ে দেয়ার সময় দেয়া হয়,কিন্তু আমাদের পরিবারে মায়ের স্বর্ণের বেশিরভাগ মেজোভাইয়ের পেছনে অলংকারীত হয়।কারণ মেজোভাইয়ের অদ্ভুত সব ব্যবসার পেছনে এক এর পর এক বিনিয়োগে মা স্বর্ণশুন্য হয়ে পড়ে,আমার ছয় ভাইবোনের মধ্যে মা মনেহয় মেজোভাইকে সবচাইতে বেশী ভালবাসতো,যদিও সবার ধারনা আমি ছিলাম মায়ের সবচাইতে প্রিয় সন্তান।কারণ আমার বড় এক ভাই মারা যাওয়ার পরে নাকি সৃষ্টিকর্তার কাছথেকে অনেক কান্নাকাটি করে আমাকে ছেয়ে নেয়া হয়!অদ্ভুত এক ব্যাপার যাদের ৫টি সন্তান ভারণপোষনে যায়যায় অবস্তা তারা আর একটি বাচ্চার জন্য কিভাবে সৃষ্টিকর্তার কাছে কান্নাকাটি করে?
যাইহোক মেজোভাই পার্টনারশিপে জুটের ব্যবসা আরম্ভের কিছুদিনের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পার্টনারের পেটে পাড় মেড়ে অন্তর্দানের ২দিন পর মা কোত্তেকে খবর পেয়ে আমাকে সাথে নিয়ে রওনা হয়,অনেক কানাকুঞ্চি পেরিয়ে মা আর মেজোভাইয়ের মিলনদৃশ্য তখন হয়তো ওভাবে বুঝতে না পারলেও এখন ঐ দৃশ্য কল্পে চোখের কোনায় জল অনুভব করি।এই পৃথিবীর সবচাইতে অস্বার্থপর কোন প্রানী যদি থেকে থাকে সেটা মনে হয় মা।

পরবর্তীতে ঘরের আসবাবপত্র, ফ্যান, মেজো আপার বানানো বেশকিছু নকশীকাথা,ছোট আপার কানের দুল,বিক্রি করে দিয়ে মেজোভাইয়ের বিসয়টা মিমাংসাপুর্বক মেজো ভাইকে গ্রামের বাড়ীতে পাঠানো হয়,মানে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়ালো কেউ কোন অপরাধ করলে যেমন তাকে জেলে দেয়া হয় আমাদের পরিবারে কেউ অপরাধ করলে তাকে গ্রামের বাড়ীতে পাঠানো হয়।মায়ের ঐকান্তিক চেষ্টায় গ্রামের বাড়ীর এক প্রভাবশালী লোকের খাবার হোটেলে মেজো ভাইয়ের চাকরি হয়।

মানুষ তার চিকিৎসার উৎকর্ষতার জন্য যেভাবে গিনিপিগদ্বারা পরিক্ষা নিরিক্ষা সাধন করে তেমনি আমাদের সমাজপতিরা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য কিছু নিম্নশ্রেণীর লোককে গিনিপিগ বানায়,গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক সাবেক ইউপি মেম্বারকে পর্যুদস্ত করার জন্য মেজোভাইকে ইউপি মেম্বারপদে দাড় করানো হয়,ভোটের দিন প্রতি পক্ষের এক সন্ত্রাসী যে কিনা তার বিপক্ষ দলের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিচ্ছিল তাকে জনগণ দ্বারা গণধোলাই দিয়ে পরপারে পাঠানোর পর মেজোভাই ও তার দলবল গ্রাম ছেড়ে কিছু সময়ের জন্য আবার ও অন্তর্ধানে বাধ্য হয়।মানুষের ডিএনএ এমন এক জিনিষ একমাত্র মহামানব ছাড়া মনেহয় তার চরিত্রের পরিবর্তন সাধণ অসম্ভব,মেজোভাই আরো একবার তার চরিত্রের স্বরুপ আমাদের মাঝে বিকশিত করল।

মা আর উপায়ন্তর না দেখে বিকল্প চিন্তায় ভাবিত হইল,শেষপর্যন্ত মা এই সিধান্তে উপণীত হইল যেকোন উপায়ে মেজোভাইয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে হবে,কিন্তু বিয়ে বললেইতো আর এইরকম পাত্রের জন্যে ভালো মেয়ে পাওয়া যায়না,আর তাছাড়া মায়ের কাছে তেমন টাকাপয়সা ও নেই যে মেজোভাইকে বিয়ে দেয় তাই মোটামুটি অপেক্ষাকৃত কমসুন্দরী এক মেয়েকে মেজোভাইয়ের বউ হিসেবে মা ঘরে তোলে,বলে রাখা ভালো মেজোভাবী দেখতে তেমন রুপসী না হলেও তার বাবার বিত্তের অভাব ছিলোনা,বিয়ের সময় মা মেজোভাবীর বাবাকে অনুরোধ করেন যদি উনার পক্ষে সম্ভব হয় তাহলে যেন মেজোভাইকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্তা করেন কারন মায়ের কাছে মেজোভাইকে বিদেশে পাঠানোর মতো অর্থ ছিলোনা। যাই হোক বিয়ের একবছর এর মধ্যে মেজোভাইয়ের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হল,আগের বগিচগি ভাব অনেকখানি কমে আসলো, একটা সময় পরে মেজোভাই শ্বশুর কতৃক বিদেশগমন এর ভিসা লাভ করল এবং যততারাতাড়ি মেজোভাই দুবাই গমন করলেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.