নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উননুর

সামাইশি

সময় বয়ে যায়, ক্ষয়ে যায় জীবন, মন, সৃষ্টি, ক্লেদের গ্লানি জমা হোল যত যথাপি ঝরে যায় বৃষ্টি।

সামাইশি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোবা কান্না।

০২ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:০৫



বোবা কান্না।

কি বলব, বোবা কান্নায় গুমড়ে মরছি। শেষ পর্যন্ত আমাদের সবুজ শ্যামলিমাময় সোনার দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ার একই কাতারে চলে এলো। আমার আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন রয়েছে, তাই বলে অন্ধ সমর্থক নয়। আগেও বলেছি এখনো বলছি এ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে পড়ে পাওয়ায় ক্ষমতায়। এবং সেটা সম্ভব হয়েছে বিএনপির হঠকারী, অদূরদশী অজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে। যেহেতু পড়ে পাওয়ায় ক্ষমতায় আছে বর্তমান সরকার তাই পূর্ণ মেয়াদে টিকে থাকার জন্য নানান অপকৌশলের আশ্রয় নিতে হচ্ছে তাদেরকে। বাংলাদেশে মূলত রাজনৈতিক দল দুইটি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। জনসমর্থনের হিসেবে অর্ধেক অর্ধেক। যদি ধরে নেয়া হয় বাংলাদেশের অর্ধেক লোক বিএনপির সমর্থক, সংখ্যার হিসাবে সেটা কয়েক কোটি। এই কয়েক কোটি লোকের দেশের সর্বস্তরে (আমি এখানে বলতে চাই প্রশাসনের কথা ) উপস্থিতি রয়েছে। কয়েক বছরের নানা ঘটনা প্রবাহের কারণে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিস্ফোরোন্মুখ।

যে নেতৃত্ব চলমান ঘটনাপ্রবাহের নিকট ভবিষত্যের প্রতিক্রিয়া অনুধাবনে ব্যর্থ তো বর্তমানে পাটকেলের ঘটনা সমূহ তো অনিবার্য। এক নাগাড়ে ক্ষমতার দ্বিতীয় পর্যায়ে মনে হচ্ছিল এ সরকার হয়তো মসৃন ভাবেই মেয়াদ পূর্ণ করবে। কি বাস্তব প্রেক্ষাপটের কারণে তো তা হবার নয়। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বিক্ষুব্ধ সরকারের প্রতি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরকারের প্রতি নৈতিক সমর্থন নেই। যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার, বিরোধী দলের অজস্র নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা ও নির্বিশেষে হয়রানি, আলোচিত কিছু গুম খুন এবং বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারি, অতিরিক্ত ভারত প্রীতি ও নির্ভরতা সব সমার্থক হয়ে এক সুতোর উপর এসে দাঁড়িয়েছে।

ওরা নীরবে ক্ষোভ পুষে পুষে তলে তলে যে মহীরুহ আকার ধারণ করছে তার জন্য সরকারের জঙ্গি জঙ্গি জুজুর ভয় দেখানোই দায়ী। কেননা তারা প্রথম প্রথম যখন বিচ্ছিন্ন ভাবে ঘটনা শুরু হোল তখন অপরাধীদের মূল উত্পাটনের দিকে নজর না দিয়ে মনে হলো যেন জিয়ে রাখতে পারলেই তাদের আখেরে লাভ। এটা অত্যন্ত আশ্চর্য্যের বিষয় যে বাংলাদেশের মতো একটি সর্বোচ্চ জনবহুল ছোট দেশে খুনিরা দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে খুন করে পালিয়ে যায় আর আর আমার দেশের গরিব জনগণের করের পয়সায় ঘুষ খাওয়া ভুঁড়িওয়ালা পুলিশ তাদের টিকিটিও ধরতে পারেনা। আবার যদি জনগণের হাতে ধরে পড়া কোন সন্ত্রাসী পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় তাহলে তাকে দিয়ে মূল হোতাদের খুঁজে বের করার চেচ্টা না করে এক গুলিতে তার কর্ম সাবাড় করে দেয়া হয়। এতে প্রতীয়মান হয় সরকার না হয় সরকারের প্রশাসনের মধ্যে অনেকেই আছে যারা চায় জঙ্গি কার্যক্রম চলতে থাকুক। ধরে নিলাম সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কিছু অংশে সদিচ্ছা রয়েছে জঙ্গি সম্পূর্ণ নির্মূল করতে, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তা সম্ভব হচ্ছে না কেন? বুঝতে হবে তাহলে প্রশাসনের একটা বিরাট অংশ সরকারের পরোক্ষ বিরোধিতা করছে। এরা যদি সকলে বিএনপি জামাত শিবিরের অনুসারী হয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কেননা দেশের সকল মানুষ তো আর আওয়ামী লীগের অনুসারী নয়। আগেই বলেছি দেশের অর্ধেক লোক আওয়ামী লীগের বিরোধী।

শেখ হাসিনা হয়তো ঠিকই বলেন জামাত শিবিরের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে এগুলো হচ্ছে (হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি। কারণ উপরে উল্লিখিত দেশের পূর্বাপর নানা ঘটনা প্রবাহের প্রতিক্রিয়া যে ঘটবেই তাতো আমি উল্লেখ করেছি।) কিন্তু ওদের গায়ে দোষ চাপিয়ে তো আর পার পাওয়া যাবেনা যেহেতু ক্ষমতায় আপনি সেহেতু আপনাকেই দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সুষ্ঠ, সঠিক, স্বচ্ছ ও সার্বজনীন উপায়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হল সঠিক পন্থা অবলম্বন না করে সরকার নানান অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে এখন লেজে গোবরে করে দেশকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত করেছে।

বর্তমান সরকার হয়তো মনে করেছিল ভারত তাদেরকে নির্ববিচ্ছিন্ন সমর্থন ও সহযোগিতা করলে তাদেরকে আর ঠেকায় কে? কিন্তু সরকার দেশের সিংহ ভাগ মানুষের ভারতের প্রতি মনোভাব অনুধাবন করতে চরমভাবে ব্যর্থ। ভারতকে খুশি করতে একে একে আমরা সব কিছু খুলে বা বিলিয়ে দিচ্ছি (আর এটা হচ্ছে আমার এক বন্ধুর ভাষায় বাঁশ তুমি ঝাড়ে কেন পোঁদে আসোর মতন ) ভারত তো সরকারের পাশে থাকার মুলা ঝুলিয়ে আমার দেশের বুক চিরে ভেদ করে বের হচ্ছে ।

***কেও কি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন যে ভারতের ট্রানজিটের চালানের আড়ালে বাংলাদেশে অঢেল অস্র প্রবেশ করে নাই। নয়তো সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া বিপুল অস্র কি তার ইঙ্গিত বহন করেনা। উদ্ধার হয়েছে হয়তো সামান্য আর হয়তোবা তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি পরিমান অস্র সন্ত্রাসীদের হাতে চলে গেছে, বর্তমানের পরিস্থিতির আলোকে তা অসম্ভব মনে হচ্ছেনা।

আমার ধারণা ভারতকে কখনোই বিশ্বাস করতে নেই। ওরা ধরেও কাঁটে ভারেও কাঁটে। ভারত কখনোই চায়না আমরা তার ছোট্ট প্রতিবেশী হয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাড়াই। যখন আমাদের দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাড়াচ্ছে তখনই তা ভারতের গাত্রদাহের (মুখে না বললেও তার কর্মকান্ডে বুঝিয়ে দিচ্ছে) কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি বাংলাদেশের থেকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যবসা করতে যানতো আপনাকে কমপক্ষে দুই দশকের লাল ফিতার দৌরাত্ম্য ও নানা অজুহাতের জালের মধ্যে আটকা পড়তে হবে। আর আমরা তিতাসের প্রবাহ বন্ধ করে তার বুকে বাঁধ দিয়ে ওদেরকে বলি এসো আমার বুক মাড়িয়ে যাও। শেখ হাসিনার ভাগ্য ভালো যে ঐ এলাকার জনগণ নীরবে চোখ বুজে সহ্য করে গিয়েছে। খোদ ভারতে মমতা ব্যানার্জি নিজের দেশের টাটা কোম্পনীকে সিঙ্গুর থেকে বিতাড়িত করেছে শিল্পের জন্য জায়গা না দিয়ে। যে আমাদের তিস্তার পানি দেয়না অথচ তার সাথে কি সখ্যতা, বর্তমান উন্মুক্ত বিশ্বব্যাপী আকাশ সংস্কৃতির যুগে এখনো বাংলাদেশের চ্যানেল গুলো ভারতে প্রদর্শিত হওয়ার সুযোগ পায়না, যেটা স্রেফ পশ্চিমবঙ্গের চ্যানেল গুলোর মালিকদের দাবির কারণে, অথচ আমরা পুরো দেশকে খুলে দিয়ে বসে আছি। দেশের মানুষের এসব ক্ষোভ সরকার অনুধাবনে ব্যর্থ, যার ফায়দা নিচ্ছে ভারত পুরোপুরি। আর এখন তো সরকার কাঁদায় পড়ে গেছে। দেশে বিদেশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা যার প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে আর তখন ভারত মুখোশ খুলে আমাদের নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলবে।

সেই দিন দেখার আগেই বর্তমান সরকারের উচিত দলমত নির্বিশেষে সকলকে সঙ্গে নিয়ে সংকট থেকে উত্তরণের সঠিক, সুষ্ঠ, স্বচ্ছ, কার্য্যকরী উপায় বের করে বর্তমানের ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে দেশকে মুক্তি দেয়া। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নাই যে সরকারের হাত অনেক অনেক দুর্বল হয়ে গিয়েছে, তাতো ঘটনাবলীই বলে দিচ্ছে। আবারো বলেছি বাংলাদেশে কোটি কোটি লোক জামাত বিএনপির অনুসারী রয়েছে যারা সরকারের উপর চরমভাবে বিক্ষুব্ধ, এবং ঐ কোটি কোটি লোককে চাইলেইতো সরকার দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবেনা, বরঞ্চ তাদেরকে সঙ্গে নিয়েই দেশ চালাতে হবে, দেশের জনগণ, নাগরিক হিসাবে তাদের গণ্য করে সবার কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আমাদের সোনার দেশ এক চরম দুর্যোগের সন্ধিক্ষণে উপনীত। বর্তমান সরকার কি পারবে এ থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে উত্তরণের! আমার আশা সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং দূরদৃষ্টিতা সহকারে প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে দেশের আপামর জনসাধারণের সুখ শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.