নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনফ্লিঞ্চিং

আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল! আমি মানি না কো কোন আইন, আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন! আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর আমি বিদ্রোহী,আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!

আনফ্লিঞ্চিং › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসা এবং আমাদের ব্রেইন : বিজ্ঞান কি বলে !!? ১ম পর্ব :

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ৮:৩৩

রোমান্টিক ভালোবাসা এবং মায়ের ভালোবাসা নিঃসন্দেহে অসাধারন সুখকর আর রিওয়ার্ডিং একটি অভিজ্ঞতা। এই দুটোই প্রজাতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সে কারনেই বিবর্তন প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ কিছু বায়োলজিক্যাল প্রক্রিয়ার সাথে এরা ঘনিষ্টভাবে জড়িত; অথচ এই আচরনগুলোর স্নায়ুবৈজ্ঞানিক ভিত্তি সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের গবেষনা অপেক্ষাকৃত নবীন। বিশেষ করে প্রযুক্তিগত কিছু অগ্রগতি, যেমন: fMRI(ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেসোন্যান্স ইমেজিং) এ ক্ষেত্রে গবেষনার একটি নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দিয়েছিল ৯০ এর দশকের শুরুতে। নতুন এই ব্রেন ইমেজিং টেকনিকগুলো নিউরোবায়োলজিষ্টদের কোন সাবজেক্টিভ (ব্যাক্তি নির্ভর) অনুভুতির সরাসরি স্নায়বিক পরিবর্তনগুলো শনাক্ত করার সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে, যেমন: রোমান্টিক এবং মায়ের ভালোবাসার ক্ষেত্রে। ৯০ দশকের শেষের দিকে ডঃ জেকি ও তার সহযোগীরা আমাদের ব্রেনে রোমান্টিক ভালোবাসার সাথে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলো খোজার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তার গবেষনায়ে যুক্ত হয় সন্তানের প্রতি মার ভালোবাসার নিউরোবায়োলজিক্যাল ভিত্তি । দেখা যায় এই দুই ধরনের গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক আমাদের ব্রেনের কিছু বিশেষ এলাকা স্বতন্ত্র ভাবে সক্রিয় বা অ্যাক্টিভেট করে। আবার ওভারল্যাপিংও হয়, যেমন ব্রেনের কিছু কিছু এলাকা এই দুই ভালোবাসার ক্ষেত্রেই সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যে এলাকা গুলো আমাদের ব্রেনের রিওয়ার্ড মেকানিজমের সাথে জড়িত। এখানে আমাদের ব্রেনের গুরুত্বপুর্ণ দুটি রাসায়নিক পদার্থ বা নিউরো হরমোন অক্সিটোসিন এবং ভেসোপ্রেসিনের রিসেপ্টরের (রিসেপ্টর হলো কোষের ঝিল্লীতে থাকা একটি অনু, যার সাথে নির্দিষ্ট কোন রাসায়নিক অনু যুক্ত হতে পারে) বাহুল্যও থাকে এখানে। এই গবেষনার আরেকটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হলো যখন এই দুই ধরনের ভালোবাসা ব্রেনের কিছু অংশকে সক্রিয় করে, এরা তার সাথে ব্রেনের কিছু অংশকেও নিষ্ক্রিয় বা ডি অ্যাক্টিভেট করে: সেই অংশগুলো আমাদের নেতিবাচক আবেগের সাথে জড়িত, এছাড়াও আছে সামাজিক জাজমেন্ট এবং মেন্টালাইজিং ( অর্থাৎ অন্য মানুষদের ইনটেনশন বা উদ্দেশ্য এবং ইমোশন সম্বন্ধে আমাদের নিজেদের মেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট) প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রনকারী কিছু অংশ। নিউরোবায়োলজিষ্টরা মনে করেন এই মানুষের সম্পর্ক বা অ্যাটাচমেন্টগুলো সৃষ্টিতে এধরনের একটা পুশ-পুল মেকানিজম কাজ করে, যে নেটওয়ার্কগুলো আমাদের ব্রেনে অন্যমানুষ সম্বন্ধে ক্রিটিক্যাল সামাজিক অ্যাসেসমেন্ট এবং নেগেটিভ ইমোশন সৃষ্টি করে, সেটাকে নিষ্ক্রিয় বা নিয়ন্ত্রনে এনে সামাজিক দুরত্বকে অতিক্রম করতে সহায়তা করে, যা বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে তৈরী করে বন্ধন ব্রেনের রিওয়ার্ড সার্কিট্রিকে ব্যবহার করে। এই নিউরোবায়োলজিক্যাল প্রক্রিয়াগুলো ব্যাখ্যা করতে সক্ষম, কাউকে প্রেরণা দেবার ক্ষেত্রে বা তীব্র সুখের অনুভুতি দিতে ভালোবাসার অসীম শক্তিকে।

ভুমিকা:
অপেক্ষাকৃতভাবে অল্প কিছুদিন হলো নিউরোবায়োলজিষ্টরা মানুষের সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী আর তীব্রতম সুখানুভুতিগুলোর অন্যতম, ’ভালোবাসার স্নায়বিক ভিত্তির রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা শুরু করেছেন। তাদের এই্ প্রচেষ্টা খানিকটা সহজ হয়েছে আধুনিক ইমেজিং প্রযুক্তির নানা টেকনিক ব্যবহারের মাধ্যমে। এই টেকনিকগুলোই নিউরোবায়োলজিষ্টদের সুযোগ করে দিয়েছে গবেষনায় অংশগ্রহনকারীদের সাবজেক্টিভ বা ব্যক্তিনির্ভর মানসিক কোন অবস্থার ক্ষেত্রে ব্রেন বা নিউরাল সিস্টেমের অংশগ্রহনকারী অংশগুলো খুজে বের করতে। বিষয়গুলো সাবজেক্টিভ ( অংশগ্রহনকারীর নিজের আত্মগত অনুভূতি) থাকার কারনে অবজেক্টিভ কোন বৈজ্ঞানিক গবেষনার ধরাছোয়ার বাইরে ছিল এতদিন। আপাতত বিজ্ঞানীরা এই ভালোবাসার নিউরাল কোরিলেট গুলো সম্বন্ধে যতটুকু জানেন,অবশ্যই এখনও তা অসম্পুর্ন এবং সীমিত, তবে এটা স্পষ্ট যে, আগামী বছরগুলোতে এই ক্ষেত্রে গবেষনা আরো দ্রুত অগ্রগতি লাভ করবে। নিউরোবায়োলজিষ্ট সমির জেকী মনে করেন, ভালোবাসার স্নায়ুবৈজ্ঞানিক উৎস খোজার প্রচেষ্টায় ভবিষ্যতের নিউরোবায়োলজিষ্টরা হয়তো ভালোবাসা সংক্রান্ত বিশ্বসাহিত্য থেকেও প্রমান খুজবেন, কারন সাহিত্য ব্রেনেরই একটি সৃষ্টি, এবং খুব লক্ষ্য করে পড়লে মানুষের ব্রেনে রোমান্টিক সিস্টেমটা কেমন করে সংগঠিত আছে তা সম্বন্ধে বেশ স্পষ্ট একটি ধারনা পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু আপাতত এই আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টাল স্টাডির মাধ্যমে পাওয়া ভালোবাসার স্নায়ুবৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে। আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল প্রাইমেট রিসার্চ সেন্টারের নিউরোবায়োলজিষ্ট ল্যারী ইয়ং মনে করেন এই প্রক্রিয়াগুলো ক্যাবিক তো নয়ই, এমনকি বিশেষভাবে রোমান্টিক কোন কিছুও না; কিন্তু ভালোবাসাকে তার গঠনকারী উপাদানে বিভাজন করার প্রক্রিয়াই কেবল পারে মানুষের সেক্সুয়ালিটি সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের একটি ধারনা দিতে এবং হয়তো অন্যদের জন্য আমাদের ভালোবাসা বাড়ানো কমানোর ঔষধও একদিন উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে এভাবে।
বৃটিশ কবি আলফ্রেড অস্টিন তার Love’s Trinity তে ভালোবাসার একটি হলিস্টিক রুপ তুলে ধরেছিলেন এভাবে, যে রুপটি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের মনোজগতে রাজত্ব করে আসছে:
Soul, heart, and body, we thus singly name,
Are not in love divisible and distinct,
But each with each inseparably link’d.
বর্তমানে গবেষকরা চেষ্টা করছেন আপাতদৃষ্টিতে অনন্য এই মানবিক আবেগটির মুল ভিত্তির স্নায়বিক এবং জেনেটিক উপাদানগুলো পৃথক এবং শনাক্ত করতে। এবং সত্যি সত্যি জীববিজ্ঞানীরা খুব শীঘ্রই হয়তো সক্ষম হবেন ভালোবাসার সাথে সংশ্লিষ্ট মানসিক অবস্থার প্রানরাসায়নিক ঘটনাক্রমটি উদঘাটন করতে আর এই তথ্যগুলো মানুষের সেক্সুয়ালিটির বিবর্তনের ব্যাখ্যায় প্রভাব ফেলবে অবশ্যই । এছাড়াও এর সাথে সামাজিক উদ্বেগটাও অস্বীকার করার কোন উপায় নেই, বিশেষ করে যখন আমাদের নানা আচরনের উৎস সন্ধানে জেনেটিক স্ক্রীনিং টেস্ট এবং মানসিক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রন করতে বিভিন্ন ঔষধের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার বাড়ছে।

অ্যানিমল মডেল থেকে মানুষ;
আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রনের মেকানিজমগুলো বোঝার ব্যাপারে অ্যানিমল মডেলগুলো গবেষকদের অনেক সহায়তা করেছে, বিশেষ করে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় সুসংরক্ষিত প্রতিক্রিয়াগুলো: যেমন ভয় (Fear) এবং দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগ (Anxiety)। গবেষনার এই অগ্রগতিগুলো নানা ধরনের ফোবিয়া, দুশ্চিন্তা আর পোস্ট-ট্রমাটিক স্টেস ডিসওর্ডারের চিকিৎসার পথকে সুগম করে দিয়েছে। এই সব মডেলগুলো ‘ভালোবাসা’ স্নায়ুবৈজ্ঞানিক বিষয়টি বুঝতে গবেষকদের সাহায্য করছে।




শুধুমাত্র আমরাই কেবল একমাত্র প্রানী না যারা গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী সামাজিক সম্পর্ক তৈরী করে। মা এবং শিশুর বন্ধনের কথাই ধরা যাক। একজন মা ভেড়ার সাথে তার সন্তান বা ল্যাম্ব এর বা একটি মা জাপানী ম্যাকাকের সাথে তার সন্তানের আবেগীয় সম্পর্কর গুনগত ভাবে মানব মা’র ভালোবাসার মত হোক বা না হোক, কিন্তু এই সম্পর্কগুলো বিবর্তন প্রক্রিয়ায় সংরক্ষিত একই ধরনের ব্রেন মেকানিজম ব্যবহার করার সম্ভাবনা অনেক বেশী। মানুষ, ইদুর, ভেড়ার শরীরে অক্সিটোসিন (Oxytocin) হরমোন তৈরী হয় প্রসব বেদনা, সন্তান প্রসব এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়। গবেষনায় দেখা গেছে স্ত্রী ভেড়াদের ব্রেনে অক্সিটোসিন হরমোন দিলে, অপরিচিত ভেড়া শাবকের সাথে দ্রুত বন্ধন সৃষ্টি হয়।


স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে সঙ্গী সঙ্গীনিদের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদী বন্ধন দেখা যায় খু্বই কম।এটি হয়তো নিয়ন্ত্রন করে সেই একই ব্রেন মেকানিজম যা মাতৃত্বের বন্ধনের জন্যও দায়ী। যেমন, স্ত্রী প্রেইরী ভোল (Prairi vole) , যারা মনোগ্যামাস বা একগামী সম্পর্কের জোড় বাধে, তাদের জুটি বাধার জন্য প্রণোদনা দেয় তাদেরে মেটিং এর সময় ব্রেনে নিঃসরিত হওয়া হরমোন অক্সিটোসিন। কোন মেয়ে প্রেইরী ভোল দ্রুত তার সবচেয়ে কাছের কোন পুরুষ প্রেইরী ভোল সাথে সম্পর্ক তৈরী করে যদি তাদের ব্রেনে অক্সিটোসিন হরমোন দেয়া হয়; এই হরমোনটি ডোপামিন নামে একটি নিউরোট্রান্সমিটার রাসায়নিক প্রদার্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রিওয়ার্ড এবং রিইনফোর্সমেন্ট সিস্টেমকেই ব্যবহার করে ( ব্রেনের এই একই সার্কিট্রি ব্যবহার করে নানা ধরনের মাদক দ্রব্যগুলো যেমন সিগারেটের নিকোটিন, কোকেইন বা হেরোইন, মনে উৎফু্ল্লতা বা ইউফোরিয়া তৈরী করে, এবং আমাদেরকে এই পদার্থগুলোর প্রতি আসক্ত করে তোলে); নিউরোবায়োলজিষ্টদের কাছে যে ব্যাপারটা বিস্ময়ের, তা হলো ভোলদের জুটি বাধার সময় তাদের ব্রেনের যে অংশগুলো কাজ করে, মানুষের ভালোবাসার ক্ষেত্রে আমাদের ব্রেনের একই জায়গাগুলো কাজ করে। ব্রেনে ডোপামিন সংশ্লিষ্ট রিওয়ার্ড এলাকা এলাকাগুলো সক্রিয় হয়ে যায় যখন কোন মা তার সন্তানের ছবি দেখেন, আবার ব্রেনে প্রায় একই এলাকাগুলোই সক্রিয় হয়ে ওঠে যখন কেউ তাদের ভালোবাসার মানুষদের ফটোগ্রাফ দেখে।
মানুষের জুটি বাধা প্রক্রিয়াটি হয়তো বিবর্তিত হয়েছে যে ব্রেন মেকানিজমটা মাতৃত্বের সম্পর্কর সাথে সংশ্লিষ্ট, সেই মেকানিজমটাকেই খানিকটা রুপান্তরিত করে- এই ধারনাটি মানুষের সেক্সুয়ালিটি কিছু বিশেষ বৈশিষ্টকে ব্যাখ্যা করতে পারে। যেমন, নারীদের যৌন কামনা তার উর্বরতা বা ফার্টিলিটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে বা ডিকাপলড হয়েছে এবং নারীদের স্তন পুরুষদের যৌনকামনা উদ্রেককারী অঙ্গে পরিনত হয়েছে, প্রাচীন মাতৃত্বের বন্ধনে ব্রেনের সিস্টেমগুলোকে সক্রিয় করতে। জরায়ুর মুখ এবং স্তনবৃন্তকে যৌন অন্তরঙ্গতার সময় উত্তেজিত করার প্রক্রিয়া ব্রেনে অক্সিটোসিন হরমোন নি:সরনের জন্য অত্যন্ত্য কার্যকরী এবং দু্ই সঙ্গীর মধ্যে আবেগীয় সম্পর্কটি দৃঢ় করার জন্য তা উপযোগী হতে পারে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে জুটি বাধার প্রক্রিয়ায় মেয়েদের মত একই রকম ব্রেন সার্কিট্রি ব্যবহৃত হয়, কিন্তু নিউরোকেমিক্যাল পথটা ভিন্ন। যেমন পুরুষ প্রেইরী ভোলদের ক্ষেত্রে অক্সিটোসিনের মত অন্য আরেকটি হরমোন ভেসোপ্রেসিন (Vasopressin),জোড় বাধার ক্ষেত্রে প্রনোদনা,সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দীর প্রতি আগ্রাসী মনোভাব এবং প্যারেন্টিং বা সন্তান প্রতিপালনের প্রবৃত্তি, যেমন বাচ্চাদের দেখা শোনা করা, ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় কাজ করে । ভেসোপ্রেসিন রিসেপ্টর জিন, avpr1a এর নিয়ন্ত্রনকারী ডিএনএ অংশে কোন পরিবর্তন পুরুষ ভোলের কোন মেয়ে ভোলের সাথে জুটি বাধার প্রবনতার সম্ভাব্যতা সম্বন্ধে আগাম ধারনা বা প্রেডিক্ট করতে পারে।
একই ভাবে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ফর্মের AVPR1A ভ্যারিয়ান্ট জুটি বাধা এবং সম্পর্কের গুনগত মানকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে পারে। একটি সাম্প্রতিক গবেষনা বলছে যে, একটি নির্দিষ্ট ভ্যারিয়ান্টের AVPR1A জিন কোন পুরুষের তাদের ডিএনএ বহন করলে তার অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনা, এটা যারা বহন করেনা এমন পুরুষদের চেয়ে দ্বিগুন বেড়ে যায়। অথবা যদি বিবাহিত হয়েও থাকে তবে দ্বিগুন সম্ভাবনা থাকে তাদের সম্পর্কের কোন সাম্প্রতিক কোন সমস্যা উল্লেখ করার ক্ষেত্রে। এবং এই ভ্যারিয়ান্ট সহ পুরুষদের সহধর্মিনীরাও তাদের পারস্পরিক সম্পর্কে অসুখী, এই ভ্যারিয়ান্ট নেই এমন পুরুষদের তুলনায়। ভোল কিংবা মানুষ, AVPR1A জেনেটিক বহুরুপীতা বা পলিমরফিজম নির্ধারন করে ব্রেনে কি পরিমান ভেসোপ্রেসিন হরমোন রিসেপ্টর এক্সপ্রেস হবে।
প্রাচীন কিছু নিউরোপেপটাইড আর নিউরোট্রান্সমিটারের ককটেল থেকে উদ্ভুত কোন বিষয় হিসাবে ভালোবাসাকে দেখা সমাজের জন্য কিছু গুরুত্বপুর্ন বিষয়ের অবতারনা করে। একটা ব্যাপারতো আছেই, আমাদের ব্রেনকে প্রভাবিত করার মত ড্রাগ, যা কারো প্রতি আমাদের ভালোবাসা বাড়াতে বা কমাতে পারবে হয়তো খুব একটা দুরে নেই। পরীক্ষা প্রমান করেছে যে নাকে অক্সিটোসিনে স্প্রে আমাদের অন্য মানুষের প্রতি আস্থা ও তাদের আবগের প্রতি সহমর্মী হবার সম্ভাবনা বাড়ায়। ইন্টারনেটে অনেক উদ্যোগীরা ইতিমধ্যে এ জাতীয় কেমিক্যাল বাজারজাত করেছে যেমন: Enhanced Liquid Trust, কোলোনের মত অক্সিটোসিন এবং ফেরোমোনদের একটি মিশ্রন, যার বিক্রেতা বলছে ”designed to boost the dating and relationship” যদিও এধরনের কিছু ব্যবহারকারীদের আত্মবিশ্বাস খানিকটা বাড়ানো ছাড়া কিছুই তেমন করেনা; অষ্ট্রেলিয়ায় একটা গবেষনা চলছে সাধারন বিবাহিত দম্পতিদের ম্যারিটাল থেরাপীতে অক্সিটোসিন থেরাপি কোন ভূমিকা পালন করতে পারে কিনা।
আমরা এখনও জানিনা যে সমস্ত ড্রাগ সাধারনতঃ ডিপ্রেশন থেকে সেক্সুয়াল ডিসফাংশান এর চিকিৎসায় আমরা ব্যবহার করে থাকি তারা কি ব্রেনের নিউকেমিষ্ট্রি বদলে দিয়ে কারো পারস্পরিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে কিনা। কিন্তু প্রোজাক (Prozac: Fluoxetine) এবং ভায়াগ্রা (Viagra: Sildenafil Citrate), এই দুটি ড্রাগই ব্রেনের অক্সিটোসিন সিস্টেমটাকে প্রভাবিত করে। একারনে রোগীদের পারস্পরিক সম্পর্ককে গুনগত মানকে একটি ভ্যারিয়েবল হিসাবে যোগ করা উচিৎ, কন্ট্রোলড সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ ট্রায়ালে। জেনেটিক ভ্যারিয়েশন যে, আমাদের রোমান্টিক সম্পর্কের গুনগত মানকে প্রভাবিত করতে পারে এমন সম্ভাবনার কিছু পরিনতি আছে। হয়তো কোন একদিন যোগ্য পাত্রপাত্রী খোজার জন্য জেনেটিক টেষ্ট পাওয়া যাবে। যে টেষ্টের ফলাফল সঠিক পার্টনার নির্বাচনে আমাদের পছন্দের পক্ষে হয়তো অবস্থান নেবে কিংবা ওভাররাইড করবে আমাদের সহজাত প্রবৃত্তিকে । যাই হোক না কেন, জুটি বাধা বা পেয়ার বন্ডিং বায়োলজীতে সাম্প্রতিক অগ্রগতির অর্থ হচ্ছে, সেই দিন খুব বেশী দুরে নেই কোন বিবেকবর্জিত কোন পাণিপ্রার্থী আমাদের পানীয়র সাথে ’Love Potion’ ঔষধ মিশিয়ে দেবে আমাদের মন জয় করার জন্য। আর যদি তারা তা করে, আমরা কি গুরুত্ব দেবো ব্যাপারটাকে আর যাইহোক সর্বোপরি ভালোবাসাতো একটা পাগলামীই

ভালোবাসা এবং আমাদের ব্রেইন : বিজ্ঞান কি বলে !!? ২য় পর্ব

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৫ রাত ১১:২১

নাসরীন খান বলেছেন: অনেক তথ্যবহুুল লেখা।ধন্যবববাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.