নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গেল বছর এক বন্ধুর সাথে বাড়ি ফেরার পথে একটা আর্ট একজিবিশনে গিয়েছিলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে- ভাস্কর্যের প্রদর্শনী। বিভিন্ন প্রতীকী অর্থবাহী ভাস্কর্য। সবগুলোর সাথে নাম আর ওটা সম্পর্কে ছোট করে শিল্পীর নিজের কিছু কথা। এগুলোর কয়েকটা ভাস্কর্য কী বলছে আবছা আবছা বুঝতে পারছিলাম। এখানেই আনন্দ। এই যেমন, একটা চেয়ারকে গাছের ডালে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা। মানে চেয়ারকে ফাঁসি দিয়েছে। ক্ষমতার ফাঁসি চাই- এ জাতীয় কিছু একটা ব্যাপার; এখানে চেয়ার মানে গদি, ক্ষমতা। আবার একটা চেয়ার গাছের ডালের উপর বাসানো। গাছ বেয়ে তাতে অনেকগুলো প্লাস্টিকের ইঁদুর ওঠার চেষ্টা করছে- ক্ষমতালিপ্সায় ইঁদুর দৌড়। আরও ছিল একটা ভিট্রুভিয়ান ম্যান আঁকা, মুখের দিকটায় আয়না বসানো যাতে দর্শনার্থী নিজের চেহারা দেখতে পাবেন; খাঁচার ভিতর ভরা ইস্টার আইল্যান্ডের মূর্তিগুলোর মত একটা ভাস্কর্য- বন্দী মন বা এই জাতীয় কিছু একটা; অনেকগুলা খেলনা গাড়ি একটা খাঁচায় ঢুকছে- শহুরে আধুনিক খাঁচাবন্দী জীবন।
এক জায়গায় এসে সব হিসাব-নিকাশ গিট্টু খেয়ে গেল। মাটিতে একটা ছোট কাঠের ফ্রেম শোয়ানো। তার ভিতর ব্যবহৃত কনডমের একটা স্তূপ। লাল, হলুদ, সাদা- বিভিন্ন রংয়ের। রং কি কম্পানি থেকে করা না ব্যবহৃত কনডম রং করা হয়েছে কে জানে! আশেপাশে কোন ডেসক্রিপশনও পেলাম না।
এই জিনিসটাই আমাদের একটা আইডিয়া দিল। বাড়ি ফেরার পথে দুই বন্ধু ভাস্কর্যের আইডিয়া বানালাম। সেটা এমন হবে- অনেকগুলো কনডম আঠা দিয়ে জোড়া লাগিয়ে মালা বানাব। তারপর একটা প্রমাণ সাইজের মানুষের হাইটের একটা আয়নার দৈর্ঘ্যগুলোর কাছে অনেকগুলো গর্ত করব। তারপর ওটাকে সোজা দাঁড় করিয়ে মালাটাকে গর্তগুলো দিয়ে কেডসের ফিতার মত পেঁচিয়ে দিব। যখন দর্শক ওটার সামনে দাঁড়াবেন, তখন দেখবেন আয়নায় তিনি কনডমের জিঞ্জিরে আবদ্ধ হয়ে আছেন- যৌনতায় আবদ্ধ মনুষ্যত্ব বা এই জাতীয় কিছু একটা। পর্নোগ্রাফি, অশ্লীল সিনেমা, গান, সাবলিমিনাল ল্যাংগুয়েজ, সবকিছু সেক্সুয়ালাইজেশনের যুগে নিজেদের যৌনপ্রবৃত্তির হাতে আমরা নিজেরাই বন্দী।
এখন কথা হল, এত কনডম পাবো কই? ধানমন্ডি লেক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে কুড়িয়ে ওটা ব্যবহার করা একেবারেই অসম্ভব। ফার্মেসিতে এই অল্প বয়সে একটা কনডম চাইলে সন্দেহের চোখে দেখবে। গিয়ে যদি বলি ৫০টা দেন তাইলে বেচারা দোকানদার চেয়ার থেকে উল্টিয়ে পড়বে...
©somewhere in net ltd.