নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Wasiful Gofur Abir\n\nFacebook ID: Wasif Abir

দ্যা বান্দর

দ্যা বান্দর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি নিদ্রাবীর

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪২

আমি নিদ্রাবীর

দুর্গমগিরি-কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার,

রুখিবে আমায় এমন গুর্দা সিনায় আছে কার?

রক্তচক্ষু করি উপেক্ষা, অবসাদে নত শির

আমি নিদ্রাবীর।।



নিদ্রাবীর হবার সাধনা চাট্টিখানি কথা না। এই সাধনার দীর্ঘ পথচলায় আমি নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছি। জিপিও-টু-গুলশান রুটের বন্ধু পরিবহনের পুঁচকে বাসগুলোর ভয়াবহ ঠাঁসাঠাঁসি বাইরে থেকে দেখলেই অনেকের জ্ঞান হারাবার উপক্রম হয়! প্রবাদ আছে, এসব গাড়িতে কেউ বায়ুত্যাগ করলে সেই বায়ুও চিপাচাপা দিয়ে গাড়ি থেকে বের হতে পারে না, তাকেও মানুষের ভীড়ে আটকা পড়ে থাকতে হয়। (প্রবাদটা নাহয় আমিই চালু করলাম) এরকম বাসেও সীটে বসা অবস্থায়, যখন দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীভাইদের পশ্চাদদেশ আমার নাকে-মুখে ঠেকে যায় যায় অবস্থা, আমি ঘুমোতে দ্বিধাবোধ করিনি।



তবে মজার বিষয় হলো প্রতিকূলতা বরং ঘুমানোর মজা আরও বাড়িয়ে তোলে। সবচেয়ে মজার ঘুম চলমান অবস্থায় আর ক্লাসরুমে। ক্লাসরুমে আপনি চাইলেন আর ঘুম শুরু করলেন- তাহলে তো হবে না। ক্লাসরুমে ঘুমাতে হলে ক্লাসরুমের পরিবেশ বুঝে, স্যার-ম্যাডামদের সামনে আদবের সাথে পেশ হয়ে ঘুমাতে হবে। আদব-লেহাজ অনুযায়ী ঘুমকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করেছি, যথা: আদব ঘুম, বেয়াদব ঘুম এবং অ্যাম্ফোআদব ঘুম।



আদব ঘুম: এমন ঘুম হলো ঘুমানোর মধ্যেও আদব মেইনটেইন করা। এটার মূল দর্শন হলো স্যারকে ম্যাসেজ পৌঁছানো- “আপনার ক্লাসটা করার ইচ্ছা আমার আসলেই ছিল, আপ্রাণ চেষ্টাও চালিয়েছি, কিন্তু শারীরিক কারণে তা শেষমেষ সম্ভবপর হয়ে উঠছে না।” এভাবে ঘুমানোর তিনটি জনপ্রিয় টেকনিক হলো:



Chin down method: এ পদ্ধতিতে আপনার মাথা সামনের দিকে হেলে থুতনি বুকে লেগে থাকবে। এটা সহজ টেকনিক। আবার এক্সট্রা অ্যাডভান্টেজ হল, সামনে খাতা খুলে রাখলে মনে হবে খাতার দিকে তাকিয়ে লেকচার শুনছেন।



Chin up method: এই পদ্ধতি বেশ কঠিন, রীতিমত আয়ত্ত করতে হয়। এতে থুতনি স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে, যেন চোখ খোলা না বন্ধ বোঝা না গেলে মনে হবে জাগনা। ক্লাস চলাকালিন সময়ে এই স্ট্যান্ট প্রদর্শন করে আমি বেশ সুনাম কুড়িয়েছি।



Side lean method: এ পদ্ধতিতে ঘাড় কাত হয়ে কাঁধ ছোঁবে। কিন্তু এতে সার্ভাইকাল অঞ্চলের নার্ভগুলোয় চাপ পড়ে বিধায় পরে ব্যথা হয়।



বেয়াদব ঘুম: এ ধরণের ঘুমে কোন সৌন্দর্য নেই। এতে ক্লাসরুমে শিক্ষকবৃন্দের প্রতি ধৃষ্টতা প্রকাশিত হয়। এ ঘুম দেখে শিক্ষকের মনে হতে পারে ছাত্র ইনটেনশনালিই ঘুমোচ্ছে। এ শ্রেণীর আওতাভুক্ত পদ্ধতিগুলো হল:



Monopod method: এ পদ্ধতিতে এক হাতের কনুই টেবিলে রেখে মুষ্ঠিবদ্ধ করে তার উপর গণ্ডদেশ স্থাপন করে মনোপডের (ট্রাইপডের যেকোন দুইটি পা বাদ দিন) আকৃতি নেয়া হয়।



Head down: এটা ধৃষ্টার চূড়ান্ত। তবে অসুস্থ অবস্থায় স্যার-ম্যাডাম নিজ থেকেই অনুমতি দেন।



অ্যাম্ফোআদব ঘুম: এ ধরণের ঘুম অবস্থা বা পাত্রভেদে শিক্ষকবৃন্দের কাছে গ্রহণযোগ্য বা অপছন্দনীয় হয়ে থাকে। যেমন, Vertical chin method-যেখানে থুতনি একেবারে উর্দ্ধমুখী হয়ে থাকে ইত্যাদি। তবে এসব পদ্ধতি এড়িয়ে চলারই পরামর্ম দিব।



এই পোস্ট উৎসর্গ করলাম, যেসব স্যার-ম্যাডাম বিভিন্ন ক্লাসে সহানুভূতিশীল হয়ে আদর করে আমাকে ঘুম চালিয়ে যেতে দিয়েছেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.