নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Wasiful Gofur Abir\n\nFacebook ID: Wasif Abir

দ্যা বান্দর

দ্যা বান্দর › বিস্তারিত পোস্টঃ

EQ নিয়ে গল্প

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১১

আপনারা সবাই কমবেশি EQ এর কথা শুনেছেন। এর জোরেই মানুষ বুঝতে পারে কার সাথে কোন জোক করা যাবে না, অথবা কার জোক শুনলে হাসি না পেলেও হাসতে হবে, কাকে কোন দিক দিয়ে তেল মারলে সে নিজের অজান্তেই গায়ে মেখে নিবে, কাকে কোন ভাষায় কথা বললে কাজ আদায় হবে। এর জোরেই মানুষ শুনতে পারে কথার পেছনে না বলা কথা। আবার আরেক দিক দিয়ে এর জোরেই মানুষ কারও ধমক শুনে মন খারাপ হয়ে গেলে, তা থেকে দ্রুত রিকভার করতে পারে।
.
আমার আফসোস হল এই বস্তু আমার মধ্যে কম। আমার মা অবশ্য এ ব্যাপারে আমাকে অনেক হেল্প করেছে। ছোটবেলায় হাতে গল্পের বই নিয়ে বসে থাকতাম। কেউ আমার সাথে কথা বলতে আসলেও হাতে বইটা খোলা রেখেই কথা বলতাম। মা আমাকে শিখিয়েছে কথা শোনার সময় কমসে কম হাতের বইটা বন্ধ করতে। তাহলে বলনেওয়ালা মানুষটা এটা দেখে নিশ্চয়তা পাবে তার কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনা হচ্ছে।
.
EQ কম থাকায় বহু বার মর্মান্তিক পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে আমাকে সহ আমার আশেপাশে আসা অন্যদের। এরকমই একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে। ক্লাস শেষ করে (নাকি পরীক্ষা? মনে নাই) ভার্সিটির খোলা চত্বরে এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের আড্ডা দেয়া দেখছি। তখন সিকিউরিটি গার্ডের ড্রেস পরা একজন বয়স্ক লোক আমার কাছে এসে জানাল, তার ছেলে আজকে এমবিবিএস শেষ করে ডাক্তার হল। তিনি ছেলেকে গ্রীন ডেল্টা/ লাইফ মেডিকেল কলেজে 14 লাখ টাকা (এরকমই কিছু একটা বলেছিল) খরচ করে পড়িয়েছে।
আমার মনে তখন চিন্তা চলছিল, এই বয়স্ক লোকটা হয়তবা গ্রামের জমি বেঁচে স্বপ্নটা পূরণ করেছে, এখন ছেলেটা কী করবে? সে কি তার বিশাল টুইশান ফি পুনরোদ্ধারের লক্ষে ক্যারিয়ার সাজানোর চিন্তা-ভাবনা শুরু করবে, নাকি নিজের গ্রামের মানুষদের সেবায় রত হবে? এত টাকা খরচ করে সে ডাক্তারি বিদ্যায় স্রেফ প্রথম ধাপটা অতিক্রম করল, সামনে আরও কষ্টের দিন আছে... ইত্যাদি ইত্যাদি। মুখে শুধু হুঁ,হ্যাঁ, ভেরি গুড এই জাতীয় সামান্য কয়েকটা কথা বলেছিলাম।
.
অনেক দিন পর ভাবতে লাগলাম আর সবাইকে বাদ দিয়ে চিনে না- জানে না আমাকে কেন এ খবর দিতে আসল লোকটা? বহু ভাবনা-চিন্তা করে পরে অনুমান করলাম লোকটা সম্ভবত ভার্সিটির ভেতরের ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড।
তার চাকরির জায়গাটাই এমন যে, না পারে সে গেটের সিকিউরিটি গার্ডদের সাথে খাতির করতে, না পারে ভেতরের ম্যাসেঞ্জারদের সাথে কথা বলতে, সারাদিন ব্যাংকের সামনে টুলের উপর একা একা বসে থাকতে হয়। আর কাউকে না পেয়ে বেচারা তার বিশাল আনন্দের কথা বলতে আমাকে বেছে নিয়েছিল। দিনশেষে বেচারার কপালে পড়ল আমার মত একটা গাড়ল।
.
ঐ সময় আমার ভালোমত রিঅ্যাক্ট করা উচিত ছিল, উচিত ছিল তাকে ভালো ভালো কথা বলে চিয়ার আপ করা। ঘটনাটা মনে পড়লে অনেক খারাপ লাগে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.