নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গেল বৃহম্পতিবারের ঘটনা। অবৈধ পাবলিক ট্রান্সপোর্টের মাইক্রোবাসে চেপে হাতিরঝিল পার হচ্ছিলাম। পুলিশ প্লাজা পার করে দেখি একটা গাড়ি আমাদের মাইক্রোবাসটাকে আটকাল। একটা স্বনামধন্য নিউজ চ্যানেলের গাড়ি, পিছনের গ্লাসে স্টিকার দেখে চিনলাম। সম্ভবত মাইক্রোবাসটা মিডিয়াওয়ালা গাড়ির গায়ে লাগিয়ে দিতে নিয়েছিল। গাড়ির সহযাত্রিরা বলতে শুরু করলেন মিডিয়াওয়ালা গাড়ির ড্রাইভারের দোষ, সে অন্য দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল।
তো, মিডিয়াওয়ালা গাড়িটা থেকে একটা লম্বু আর একটা মটু নামল। মটু হাতে একটা দশাসই ক্যামেরা বাগিয়ে রেখেছে, যেন সেটা একটা আগ্নেয়াস্ত্র, তার ক্ষমতার প্রতীক। লম্বু আমাদের বলল, সবাই গাড়ি থেকে নামেন। মটু ড্রাইভারের সাথে হম্বিতম্বি শুরু করল। যাত্রিরা মটুর কথা প্রতিবাদ করায় মটু শাসাল, বলল মাঝখানে কথা বলবেন না। তারা সেলফোন বের করল, কার সাথে যেন কথা বলার ভান করতে চায়। ড্রাইভারও গাড়ি থেকে নেমে ঠাট দেখাতে শুরু করল।
একজন যাত্রি, সাধারণ চাকুরিজীবী, গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভারের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। আরেকজন মিডিয়াকর্মী গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছিল। সে গিয়ে ঐ চাকুরিজীবীকে ধরে বলে, এত কথা বলেন ক্যান? আপনিই তাইলে গাড়ির মালিক, নেন মোবাইলে কথা বলেন... অন্য ভাষায় চাকুরিজীবীকে বুঝিয়ে দিল, তুমি সঠিক হইলেও ভয়েস রেইজ করার আওকাদ তোমার নাই্, মানে মানে কেটে পড়। চাকুরিজীবী বেচারা হকচকিয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর ট্রাফিক পুলিশ আসল। আস্তে আস্তে যে যার গন্তব্যে রওনা দিল। ঝামেলা বেশি দূর বাড়ল না যেহেতু, বোঝা গেল মিডিয়াওয়ালাদের সাথে ট্রান্সপোর্ট চক্রের গোপন যোগসাজশ আছে, এই গ্যাঞ্জাম দিয়ে স্রেফ নিজেদের টেরিটরিটা দেখিয়ে গেল। দুই পাড়ার কুকুরদের ঝগড়ার মত।
সবাই ব্যাঙের ছাতার মত মিডিয়া গজানো নিয়ে কথা বলে। কিন্তু এটার আসল বিপদ নিয়ে কথা বলতে কাউকে দেখলাম না- সেটা হল, মিডিয়াকর্মী তকমায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের কাছে ক্ষমতা এসে পড়ছে। সাংবাদিকের ক্ষমতা অলিখিত, তাদের ডান্ডা বিমূর্ত, অপব্যবহার করলে ফলাফল হয় নৃশংস। হুটহাট মিডিয়ার জন্মসূত্রে হুড়মুড় করে অনেক মানুষ ঢুকে পড়ছে এই পেশায়, যারা কিনা প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলোর নৈতিকতা চর্চার পরম্পরা থেকে বিযুক্ত। সোজা কথায়, রাস্তাঘাটে আপনার সাথে ফাপর নেওয়ার লোকের সংখ্যা বেড়ে গেছে, যাদের কাজ আপনার ভয়েজকে রিপ্রেজেন্ট করা না, রিপ্রেস করা, ঐ বেচারা চাকুরিজীবীর মত।
সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয়ের সময়ে মিডিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি একটা অশনি সংকেত। অবৈধ পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়ে সেটা নিয়ে আবার পোস্ট দিয়ে পোস্টদাতা যে ধৃষ্টতাটা দেখাল, সেটা এই অবক্ষয়েরই একটা দৃষ্টান্ত
ও আচ্ছা, স্টিকার মারতে ভুলে গেছি, আমি এই মর্মে বিবৃতি দিচ্ছি যে, সকল সাংবাদিকই খারাপ নয়, অজানা পার্সেন্টেজের সাংবাদিকের সমিস্যা থাকলেও থাকতে পারে...
০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ১০:৩৩
দ্যা বান্দর বলেছেন: ঠিকই বলসেন
২| ০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ১০:৩৩
আহা রুবন বলেছেন: আপনি তো রাজধানীর ঘটনা বর্ণনা করলেন। ছোট জেলা শহরের কিছু সাংবাদিকদের(আসলে এরা সাংবাদিক নয়, মিডিয়ার কার্ডধারী) সবাই পুলিশের চেয়ে বেশি ডরায়।
০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ১০:৩৭
দ্যা বান্দর বলেছেন: জেলা শহরের পরিস্থিতি জানি না, পারলে শেয়ার করেন
৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:২০
আনোয়ার ভাই বলেছেন: অজ্ঞরা বেশী ক্ষমতা দেখায়। এখন ওদের যুগ । সামাজিক অবক্ষয়ে ওরা এগিয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে বের হওয়া কঠিন।
১২ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪১
দ্যা বান্দর বলেছেন: আমার মতে, সাংবাদিক নিয়োগ আর চাকরিপ্রদানের রেগুলেশন আরও শক্ত হওয়া উচিত
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ১০:০৫
আহলান বলেছেন: কি করবেন ভাই ... প্রান থাকলে প্রানি হয়, মন না থাকলে মানুষ হয় না ....