নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সাইফ সামির (Saif Samir), প্রাগৈতিহাসিক যুগের ব্লগার। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। পড়ে দেখুন পুরনো দিনের লেখা! যোগাযোগের ঠিকানা: www.facebook.com/saifsamir

সাইফ সামির

মুভি ক্রিটিক ব্লগ

সাইফ সামির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মের ভক্ষক, ধর্মান্ধ, ধর্মভীরু, ধার্মিক

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৮

আমি ধর্মান্ধ না, এমনকি ধর্মভীরুও না। ধর্মকে ভয় পাব কেন? ধর্ম কি মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য? যারা ধর্মকে ভয় পেয়ে আতঙ্কগ্রস্ত- তারাই ধর্মান্ধ। ধর্মভীরুতা কোন গর্বের কথা না, ধর্মভীরুতা থেকেই ধর্মান্ধে রূপান্তর হয় মানুষ।



আপনি ধর্মপালনকারী তথা ধার্মিক হতে পারেন। এতে আবার লজ্জা বা সংকোচের কিছু নেই। নিজেকে অনাধুনিক মনে করে হীনমন্যতায় ভোগার কোন কারণও নেই। চুম্বকের যেমন ধর্ম আছে, সবকিছুরই ধর্ম আছে। একটা সঠিক পথ আছে। সেই পথটি খুঁজে পাওয়া, সেই পথের পথিক হওয়া- আপনার অধিকারই শুধু নয়, স্রষ্টার সৃষ্টি হিসেবে কর্তব্যও বটে।



কিন্তু ধর্মকে অনাবশ্যকভাবে জটিল বানিয়ে ফেলেছে এক শ্রেণীর ধর্মব্যবহারকারী, তথা ধর্মব্যবসায়ী। এরা এমনভাবে ধর্মভীরুদের মগজ ধোলাই করে রেখেছে- যেন এরাই একেকজন অঘোষিত নবী। এরা যা বলেন ধর্মভীরুরা বিনা জিজ্ঞাসায় মাথা নিচু করে তা মেনে নেন, পায়ে লুটিয়ে পড়ে চুম্বনে পদধূলি গলাধঃকরণ করেন। এরা ভাবেন, এভাবেই ধর্মের সেবা হয়। গুরুর সেবা মানেই ধর্মের সেবা। গুরুই যেন ধর্ম। ধর্মের সেবা হোক বা না হোক সেই সব ধর্মের ঝাণ্ডাধারীদের সেবা ঠিকই হয়। আরাম-আয়েশে থেকে থেকে ঘি-চর্বি খেয়ে খেয়ে একেকজনের চেহারা এতোটা উজ্জ্বল হয় যে, ধর্মান্ধরা ভাবে তাদের গুরুর চেহারায় নূরানি/স্বর্গীয় আভা ফুটে উঠেছে। তারা গদগদ হয়ে গুরু পায়ে আরো বেশি করে উপুড় হয়ে পড়ে, তার পবিত্র পদে লুটিয়ে দেয় নিজেদের হালাল/হারাম উপার্জন, আকাশ-বাতাস ফাটিয়ে গুরুর নামে শ্লোগানের ঝড় ওঠায়। বিনা মেঘের ঝড়ে পাখিরাও ভড়কে যায়। আর ধর্মগুরু গদিতে আরেকটু হেলান দিয়ে আরেকটু আয়েস হয়ে বসে আঙুর-বেদানা খেতে থাকেন। উপভোগ করেন পদ-চুম্বন।



ধর্মভীরুরা প্রশ্ন করতে ভয় পায়। প্রশ্ন মাথায় আসলে ভাবেন, এই প্রশ্ন করলে তিনি কাফের বা যবন হয়ে যাবেন। ঈমান চলে যাবে বা হালকা হয়ে যাবে। প্রশ্ন না করে করে ধর্মভীরুরা যখন ধর্মান্ধ হয়ে যায় তখন কোন প্রশ্নই আর মাথায় আসে না। গরুর মতো গুরুর আদেশ/নিষেধ পালনই তখন তাদের একমাত্র ধর্ম হয়ে যায়। গুরু যদি বলেন, 'বৎস, আমার মূত্র সেবন কর। জীবিতকালেই তুমি স্বর্গের দেখা পাইবে'। বৎস তখন পানপাত্র হাতে দল-বল পরিবার-পরিজন ধরে নিয়ে এসে গুরুর আস্তানার সামনে লাইন লাগিয়ে দিবেন, স্বর্গের ডিরেক্ট লাইন। আবার গুরু যদি বলেন, 'যাও, অমুকের মস্তক স্কন্ধ হতে দ্বিখণ্ডিত করিয়া দাও। তোমার স্বর্গের গ্যারান্টি আমার'। হৈ হৈ করে বেড়িয়ে যাবে ধর্মান্ধের দল, নাঙ্গা তরবারি হাতে। ফিরে আসবে যখন, অস্ত্র থেকে ঝরবে তখন রক্ত, যার প্রতিটি ফোঁটা ধর্মান্ধের জন্য গুরুর আশীর্বাদ। ওদিকে গুরুর ঠোঁট-মুখও তখন রক্তিম, লাল আঙুরের রসে।



প্রকৃত ধার্মিকরা অন্ধ অনুকরণ করেন না। তারা পালনের পূর্বে সবকিছু যাচাই-বাছাই করতে প্রস্তুত। কারণ তারা সত্যানুসন্ধানী। তারা ধর্মকে ভয় পান না, ধর্ম নিয়ে তারা আতঙ্কিত নন। তারা ধর্মকে আলিঙ্গন করেন, ধর্মে আনন্দ খুঁজে পান। তারা চিন্তা করেন, প্রশ্ন করেন, প্রশ্ন করতে ভয় পান না। নিজেরা প্রশ্নের উত্তর খুঁজেন, উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত ক্ষান্ত হন না। তারা পড়াশোনা করেন, গবেষণা করেন, একান্তে ভাবেন, আলোচনা করেন। কোন কিছু সন্দেহজনক মনে হলে তারা সেটি পালন করা থেকে বিরত থাকেন, কিন্তু নিরলস থাকেন সত্যটি খুঁজে বের করা অবধি। তারা মধ্যসত্বভোগীর মাঝে স্রষ্টা খুঁজেন না। তারা স্রষ্টার সাথে সরাসরি সম্পর্ক করতে উৎসুক। সেই সম্পর্কের পথ তৈরিতে তারা পূর্বগামীদের সাহায্য নেন বটে, কিন্তু দাসে পরিণত হন না। দাস তারা একজনেরই, পরম স্রষ্টার। স্রষ্টা প্রদত্ত বিচার, বুদ্ধি, বিবেক; নিজেদের অর্জিত জ্ঞান-গরিমা তারা সতর্কতার সাথে ব্যবহার করেন। তারা ধর্মান্ধ নন, ধর্মভীরুও নন, তারা ধর্মপালনকারী তথা ধার্মিক। ধর্মের প্রকৃত রক্ষা তারাই করেন। আরা যারা নিজেদেরকে ধর্মের একচ্ছত্র অধিপতি ভাবেন, ধর্মের রক্ষক দাবি করেন, তারাই আসলে ধর্মের ভক্ষক। এর ধর্মকে নিজেদের প্রয়োজন মতো ব্যবহার করে; পরিবর্তন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করে। এরাই ধর্মকে জটিল বানিয়েছে, এরাই সৃষ্টি করেছে দল-উপদল, এরাই জন্ম দেয় দাঙ্গা-হাঙ্গামার।



ধর্মের অপব্যবহার যারা করে তাদের দায় খোদ ধর্ম কিংবা ধার্মিকের উপর কেন বর্তাবে? পারমাণবিক শক্তির নিজের তো কোন দায় নেই। আপনি এ দিয়ে বোমাও বানাতে পারেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনও করতে পারেন। কোনটি করবেন তার দায় আপনার। ধর্মের সাথে কারও সম্পর্ক ভক্ষণের, অন্ধত্বের, নাকি ভীরুতার হবে তার দায় প্রত্যেকের আলাদা। ধার্মিকের কাজ আমরণ সত্য অনুসন্ধান করা।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৮

নুসরাতসুলতানা বলেছেন: প্রতিটি মুসলমানের জন্য কোরআন শরীফ অর্থ বুঝে পড়া , তা মেনে চলা এবং আমাদের সবাইকে একদিন আল্লাহ্‌র কাছেই ফিরে যেতে হবে - তাঁর কাছে সকল কাজের হিসাব দিতে হবে এটি বিশ্বাস করা ---- -- এর বাইরে আর কিছু করার বা বুঝার কি দরকার আছে ?

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৫

সাইফ সামির বলেছেন:

নবী তো বলেছেনই কোরআন আর তার সুন্নাহ রেখে যাচ্ছেন উম্মতের জন্য... ও দুটো আঁকড়ে থাকলেই হবে... কিন্তু উম্মতের সচেতন সক্রিয়তার অভাবে সৃষ্টি হয়েছে একদল মধ্যসত্বভোগীর...

২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:


++++++++

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৬

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১

মহাকাল333 বলেছেন: প্রকৃত ধার্মিকরা অন্ধ অনুকরণ করেন না। তারা পালনের পূর্বে সবকিছু যাচাই-বাছাই করতে প্রস্তুত। কারণ তারা সত্যানুসন্ধানী। তারা ধর্মকে ভয় পান না, ধর্ম নিয়ে তারা আতঙ্কিত নন। তারা ধর্মকে আলিঙ্গন করেন, ধর্মে আনন্দ খুঁজে পান। তারা চিন্তা করেন, প্রশ্ন করেন, প্রশ্ন করতে ভয় পান না। নিজেরা প্রশ্নের উত্তর খুঁজেন, উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত ক্ষান্ত হন না। তারা পড়াশোনা করেন, গবেষণা করেন, একান্তে ভাবেন, আলোচনা করেন। Well-said....i am 100% agree with u...Thanks for nice post.

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫৪

সাইফ সামির বলেছেন:

স্বাগতম... শতভাগ সহমত হওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ

৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৮

নিয়ামুলবাসার বলেছেন: ভাল লাগল.....চুম্বকের যেমন ধর্ম আছে, সবকিছুরই ধর্ম আছে। একটা সঠিক পথ আছে। সেই পথটি খুঁজে পাওয়া, সেই পথের পথিক হওয়া- আপনার অধিকারই শুধু নয়, স্রষ্টার সৃষ্টি হিসেবে কর্তব্যও বটে।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:২১

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১২

ভাইটামিন বদি বলেছেন: ভাল লাগল.......আসলেই তো ধর্মকে বা স্রষ্টাকে ভয় পেতে ঞবে কেন? স্রষ্টা তো ভালবাসেন তার সৃষ্টিকে পরম মমতায়।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:৪৬

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ...

হ্যাঁ। শুধু তাই নয়, তিনিই সকল গুণের আধার।

স্রষ্টা এই জগতকে পরিপূর্ণ করে বানিয়েছেন আমাদের জন্য। কিভাবে আমরা আত্মিক-বাহ্যিক সমস্ত রিসোর্স ব্যবহার করবো সেই স্বাধীনতা, সামর্থ্য ও পথ নির্দেশ দিয়েছেন।

ভুল করে কিন্তু মানুষ- এমনকি স্রষ্টার নামে, কিন্তু আজব- মানুষ দুষে সেই স্রষ্টাকেই!

৬| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৩

নাইট রাইটার বলেছেন: ++++++

০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:০৬

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৯

আবু শাকিল বলেছেন: নুসরাতসুলতানা আপার সাথে সহমত।

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩

সাইফ সামির বলেছেন: হুম...

৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনেক ভালো বলেছেন ।

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৯| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৮

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: অসাধারন পোস্ট , ভাললাগা +

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ

১০| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৯

yasmina বলেছেন: ভালো লাগল ++

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:১৩

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ

১১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫০

yasmina বলেছেন: ভালো লাগলো ।

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২১

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ

১২| ০৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:১১

উড়োজাহাজ বলেছেন: আমিও এমনটাই মনে করি। আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত।

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২৮

সাইফ সামির বলেছেন: সম্পূর্ণ একমত হওয়ার জন্য অভিনন্দন!

১৩| ২৫ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২

নতুন বলেছেন: অন্ধভক্ত না থাকলে... মাজার/পীর/পানিপড়া/তাবিজ/ থাকবেনা....

এই জন্যই ভন্ডরা চায় সমাজে ধমের অন্ধভক্ত থাকুক...

এই জন্যই অনেকেই জনগনের ধম`ভীরুতাকে পুজি করে ব্যবসা করে যাচ্ছে...

কিন্তু ধম`ও কিন্তু বেশি প্রশ্নকরা পছন্দ করেনা....কারন ধমের ভীত হচ্ছে বিশ্বাস.... এর প্রমান নাই... তাই যুক্তি দিয়ে ধম`কে প্রমান করা যায়না...

বিশ্বাসের উপরে প্রশ্ন করতে থাকলে বিশ্বাসের ফাকগুলি বেশি নজরে আশে তখন মানুষের বিশ্বাস কমতে শুরু করে

তখন মানুষকি ধমে`র উপরে বিশ্বাস হারাতে শুরু করবে না তো???

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.