নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সাইফ সামির (Saif Samir), প্রাগৈতিহাসিক যুগের ব্লগার। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। পড়ে দেখুন পুরনো দিনের লেখা! যোগাযোগের ঠিকানা: www.facebook.com/saifsamir

সাইফ সামির

মুভি ক্রিটিক ব্লগ

সাইফ সামির › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাফ-হুজুরের গল্প: পাঞ্জাবি-লীলা

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪১

মাদ্রাসা পড়ুয়া তিনি। কিন্তু মাদ্রাসার শিক্ষা তাকে যে মূল্যবোধ দেওয়ার কথা তা তিনি গ্রহণ করেননি। প্রাপ্ত তথ্য মতে, মদ্যপান থেকে শুরু করে সমকাম পর্যন্ত গোপনে সবকিছুই করেছেন তিনি।

অনেক মাদ্রাসা শিক্ষিতের মতো তার মধ্যেও কুপমুন্ডকতা কাজ করেছে। পাঠ্য বইয়ের বাইরে বাকি সব বইকে অপাঠ্য মনে করে জীবনে তেমন কোন বই পড়েননি। কিন্তু তবুও নিজেকে তিনি মনে করেন সবজান্তা। সবকিছু নিয়ে কুতর্ক করার অভ্যাস। তার অল্প বিদ্যা বড়ই ভয়ঙ্কর।

এই ধরণের লোকগুলো আবার মহা চালবাজ হয়ে থাকেন, তিনিও মহা চালবাজ। মাথা ভর্তি শয়তানী বুদ্ধি।

এক আত্মীয়ের সুপারিশে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরিতে ঢুকে সুযোগ বুঝে বসকে তৈল-মৈথুন করে বাগিয়ে নিয়েছেন বেটার পোস্ট। বেতন কম, কিন্তু ধান্ধা বেশি। নুন খেতেন কম্পানির কিন্তু কাজ বাগিয়ে দিতেন তাদেরকে যারা তাকে বেশি করে ঘুষ দিত। ঘুষের টাকা তার কাছে বড়ই বরকতময়।

আমাদের সমাজের চরিত্র হচ্ছে টাকাওয়ালাকে সালাম ঠুকা। কিন্তু টাকাওয়ালার খাসলত যদি খারাপ হয় সালামের পর মানুষ পেছন থেকে ‘হারামজাদা’ বলে গালিও দেয়। এই গালি মনে মনে বিধায় এই গল্পের চরিত্রটিও সেগুলো শুনতে পায় না।

ঘুষের টাকাতে গরম বেশি। তাই আমাদের এই হাফ-হুজুর টাকার গল্প করতে ভালবাসেন। এমন কোন আদমি নাই যার সাথে তিনি মোলাকাত করেছেন অথচ তার টাকার গল্প বয়ান করেননি।

টাকাই তার জীবনের যৌবন হওয়ার পিছনে আরেকটি ছোট গল্প আছে। এক মেয়েকে বিয়ে করতে না পারার ব্যর্থতা।

হাফ-হুজুরের তখন টাকা কম ছিল, মেয়ের বাবা অন্য আরেকটি অর্থবান ও সচ্চরিত্রের ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন। আমাদের হাফ-হুজুর ক্ষেপে যায়। তার ধারণা হয় তার যদি সেই ছেলেটির থেকে বেশি টাকা থাকতো তবে তার সাথেই বিয়ে দিত। তাই তিনি টাকার সাথেই যৌবন লীলায় মেতে ওঠেন, হোক সে ঘুষের টাকা।

এরপর তার যখন ভালো ঘুষের টাকাপয়সা হলো, তখন সে নির্লজ্জের মতো একটি কাজ করে বসলো। যে মেয়েটিকে সে বিয়ে করতে পারেনি তার ছোট বোনকে সে বিয়ে করতে উঠে-পড়ে লাগলো। সেই ছোট বোনটি হাফ-হুজুরের কাণ্ডে আকাশ থেকে পড়লো, “এটা কী ধরণের কথা! আপনি আমার আপুকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, এখন আমাকেও!”। ছোট বোনটি বুঝে নাই এই ভণ্ড হুজুর আসলে তার আপুকে বিয়ে করতে না পারার প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে, দেখাতে চাচ্ছে টাকার গরম।

যা হোক, হাজুরের (হাফ-হুজুর) এই আশাও পূরণ হলো না। টাকা দিয়ে বৌ কিনতে পারলো না।

অনেক চেষ্টা-তদবিরের পর আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করলো।

হাফ-হুজুর এবার পুরোপুরি ভণ্ড হুজুরের চরিত্রে প্রবেশ করলো। বৌয়ের সাথে একাধিক যুবতী শ্যালিকা পেল। সেই যুবতীদের সাথে হাফ-হুজুরের প্রকাশ্য গা ঘষাঘষি টাইপ সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে সবাইকে হতবাক করে দিল। ঘুষের টাকার গরম তাকে এমনই অন্ধ করে দিল, আশেপাশে থাকা বড়-ছোট সবাইকে অগ্রাহ্য করতে শুরু করলো। চারিদিকে ছিঃ ছিঃ কানাঘুষা, তবু তার পাঞ্জাবি-লীলা (পাঞ্জাবি পড়ে যে লীলা) সাঙ্গ হলো না! হাফ-হুজুর পুরোপুরি ভণ্ড হয়ে গেল।

ভণ্ড হুজুরের বৌ এই সব লুচ্চামির প্রতিবাদ করতে চাইলো। ভণ্ড হুজুর বৌকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে থামিয়ে দিল। বৌয়ের ফেসবুক ব্যবহার করা মানা, এমনকি ফোনে কোন ম্যাসেঞ্জার অ্যাপ ইন্সটল করার আগে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু সে নিজের পাঞ্জাবি-লীলা চালিয়ে যেতে লাগলো। সমাজের যে সুবিধাবাদী শ্রেণী তার টাকাকে লোক দেখানো ‘সম্মান’ করে কিন্তু পেছনে গালি দেয়, তারা সবকিছু দেখে বুঝেও না দেখার, না বোঝার ভাণ করতে লাগলো।

ওদিকে ভণ্ড হুজুর ঘুষের টাকায় ব্যবসাতেও নামলো। এইবার তার ধান্দা শুধু ঘুষ নেওয়া নয়, দেওয়াও। অফিসারদেরকে ঘুষ দিয়ে কাজ হাসিল করতে লাগলো। হঠাৎ ব্যবসার পার্টনার মারা যাওয়ায় সে একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে গেল। শোকের বদলে অচিরেই নতুন গাড়ি কিনে সুখ করতে লাগলো।

হাজুর ভাবে তার অনেক টাকা তাই সে উপরে উঠে গেছে, বড়লোক হয়ে গেছে। সে ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করলো। আসলে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হাজুর দিন দিন আরও ছোটলোক হয়ে যেতে লাগলো। লোকে আড়ালে তাকে ছি ছি করে, গালি দেয়। সবাই জানে তার চারিত্রিক কু-বৈশিষ্ট্য, তার বাজে স্বভাবের কথা। কেউ তাকে পছন্দ করে না, কিন্তু সামাজিকতার খাতিরে প্রকাশ করে না সে কথা।

কিন্তু একজন আছে যে সবার চেয়ে অন্যরকম। যে কারো টাকাকে সম্মান করে না। যাকে টাকা দিয়ে কেনা যায় না। যে তার মেধা ও নিজস্ব গুণাবলী দিয়ে সবার কাছে সুপরিচিত। যে সম্মান করে মানুষকে, কোন ভণ্ড হুজুরকে নয়। সুনাম-পরিচয়ে হাফ-হুজুর যার কাছে নগণ্য। সেই একজন হাফ-হুজুরের ঘুষের টাকার কাছে বশ্যতা স্বীকার না করায় ঘটনাক্রমে তার শত্রু হয়ে দাঁড়ালো। হাজুর তাকে সহ্য করতে না পেরে হিংসা করতে লাগলো। এই হিংসা বেরিয়ে আসলো মুখোশ ছিঁড়ে, পরিণত হলো বিদ্বেষে, গোপন শত্রুতা থেকে প্রকাশ্য নোংরামিতে। কিন্তু হাজুর যতোই নোংরামি করুক নিজ কাজের গুণে সেই একজনের সুনাম কিন্তু বাড়তেই থাকে, দেশ থেকে দেশান্তরে। তার ব্যক্তিত্বের কাছে হাজুর ছোট হয়ে রইলো। এর ফলে হাজুরের মাথা খারাপ হয়ে গেল।

হাজুরের মনে একটাই প্রশ্ন, তার এতো টাকা, তবু কেন অন্য আরেকজনের পরিচয় তার চেয়ে বড় হবে? হাজুর বুদ্ধি আঁটতে লাগলো, শয়তানি বুদ্ধি। হাজুর বুঝতে পারলো, শুধু আরেকজনের নামে মিথ্যা কথা রটিয়ে সে বেশি সুবিধা করতে পারবে না, তাকে অন্য কিছু করতে হবে। হাজুর ঠিক করলো সে ধর্ম ব্যবসায় ঢুকবে। এই একটা জিনিস দিয়ে সে মানুষকে তার প্রতি দুর্বল করতে পারবে। যেহেতু তার কাছে মাদ্রাসার সার্টিফিকেট আছে, কালো টাকা আছে, তাই লোকজন জুটিয়ে ধর্মের সেবার নামে সে অনেক কিছুই করতে পারবে। দুই-একজন পীর, একদল সত্যিকারের হুজুরকে বাগে আনতে পারলেই হবে। হাজুর ঠিক করলো সে এক ঢিলে দুই-তিন পাখি মারবে, কালো টাকাকে সাদা করা হবে আবার দুই-কালীন কামিয়াবিও হাসিল হবে। এইবার তার সম্মান বৃদ্ধি থামাবে কে? সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে সে! মুহাহাহা (হাজুরের হাসি)!

কিন্তু একটা সমস্যা আছে। বিয়ে করার সময় হাফ-হুজুর তার লম্বা দাঁড়িকে হাফ-ইঞ্চি করে ফেলেছিল বৌ আর শ্যালিকাদের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে। হাজুর এবার মহা চিন্তিত, হাফ-ইঞ্চি দাঁড়ি নিয়ে তো আর ফুল হুজুর হতে পারবে না! দাঁড়ি বাড়ালে তার পাঞ্জাবি-লীলার কী হবে! বৌ-শ্যালিকারা তো দাঁড়ি পছন্দ করে না। হাজুর দোটানায় পড়ে গেল। পাঞ্জাবি-লীলা নাকি ধর্ম ব্যবসা?

যার মনে একবার ধর্ম ব্যবসা ঢুকেছে তার সিদ্ধান্ত কি হবে তা বলাই বাহুল্য। হাফ-হুজুর নিজেকে বোঝালো, ধর্ম ব্যবসাও এক প্রকার পাঞ্জাবি-লীলা।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৩২

সকাল-সন্ধ্যা বলেছেন: দেশে এত পেশার মানুষ থাকতে , লেখক হুজুরের পিছনে লাগলেন কেন বুঝলাম না। :)

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:১৫

সাইফ সামির বলেছেন: লেখক কারও পেছনে লাগেনি। এটি একটি এক্সপেরিমেন্টাল স্টোরি :)

২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:১৭

পলাশমিঞা বলেছেন: শুরু করে বেশি আগ বাড়তে পারিনি।

বদমাশরা সত্য আলিমদের বদনাম করছে।

বদমাশদের মুখোশ খুলা দরকার।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৩৩

সাইফ সামির বলেছেন: সেটাই। সত্য আলেমদের বদনাম করছে কিছু বদমাশ। সত্য আলেমদের স্বার্থেই বদমাশদের মুখোশ খুলা দরকার।

৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৩৪

পলাশমিঞা বলেছেন: আমি একবার খপ্পরে পড়েছিলাম।

আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন।
বলে, দাড়ি লম্বা করুন। দুনিয়ার সকল দুইনম্বরি কাজ ওরা করে।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:০২

সাইফ সামির বলেছেন: দাঁড়ি রাখা নবিজির (সাঃ) সুন্নত। কিন্তু দাঁড়িকে লেবাস হিসেবে ব্যবহার করে দুনম্বরি কাজ করা জঘন্য।

৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৬

ইফতি সৌরভ বলেছেন: হাজুর ভাবে তার অনেক টাকা তাই সে উপরে উঠে গেছে, বড়লোক হয়ে গেছে। সে ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করলো। আসলে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হাজুর দিন দিন আরও ছোটলোক হয়ে যেতে লাগলো। লোকে আড়ালে তাকে ছি ছি করে, গালি দেয়। সবাই জানে তার চারিত্রিক কু-বৈশিষ্ট্য, তার বাজে স্বভাবের কথা। কেউ তাকে পছন্দ করে না ----- ভালো লা্গল! এমন উদাহরণ এখন ভুরিভুরি

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৮

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ। সত্যিই এমন উদাহরণ প্রচুর।

৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২

পলাশমিঞা বলেছেন: জি, আমরা অনেকে দাঁড়ি রাখি নবীর সুন্নত মেনেই। ভালোবাসা জন্য। দাঁড়ি আমাদেরকে পাপ থেকে দূরে রাখে।
আমার দাঁড়ি বেশি লম্বা নয়।

৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:০৫

রায়হান মাহমুদ রাজিন বলেছেন: আ্সলে আমাদরে সমাজরে মানুষ গুলা এমন, ক্উ দোষ করলে সেই ধরনের সব লোখ গুলাকে কারাফ মনে কর।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪

সাইফ সামির বলেছেন: এমন কিছু ভণ্ডের কারণে গোটা আলেম সমাজেরই বদনাম হচ্ছে। সত্য আলেমদেরকে এই ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে।

৭| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৭

হাফিজ বিন শামসী বলেছেন:
হুম। ভন্ড সবখানেই আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.