নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শারমিন আকতার

শারমিন আক্‌তার

জ্ঞান অর্জনের জন্য ছুটে চলা অবিরাম .....

শারমিন আক্‌তার › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প:চোর

২২ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

চোর

শারমিন আক্‌তার

নিজের চিংড়ীর ঘেরে আপন মনে ভেলায় চড়ে মাছের খাদ্য ছিটাচ্ছেন কুদ্দুস আলী । মনের সূখে হেরে গলায় গান গাইছেন

-ও......রে নীল দরিয়া / আমায় দেরে দে ছাড়িয়া / বন্দী হইয়া মনোয়া পাখি হায়রে / কান্দে রইয়া রইয়া.......

হঠাৎ চার-পাঁচ জন পুলিশ আচমকা সেখানে উপসিস্থত হলো । কুদ্দুস আলী সহ আরো সাত-আট জন চিংড়ী চাষীকে অ্যারেস্ট করে থানায় নিয়ে গেল । আঁধা ঘন্টার মধ্যেই কুদ্দুস আলীদের অ্যারেস্টের খবর ছড়িয়ে পড়লো পুরো এলাকায়। সবার চোখে মুখে প্রশ্ন– কেন তাদেরকে পুলিশ ধরে নিযে গেল ? তাদের কেউতো পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে এ রকম অপরাধ করার মত লোক নয় । তবে কেন ?

কুদ্দুস আলীর পরিবারের লোকেরাও তার অ্যারেস্ট হওয়ার খবর পেয়ে গেল । কুদ্দুস আলীর মা, স্ত্রী ও সন্তানেরা কাঁন্না কাঁটি শুরু করে দিল । কি করবে না করবে কোন তাল পাচ্ছে না বউ শাশুড়ী । অবশেষে একজন প্রতিবেশীর পরামর্শ মত তারই সাথে থানায় গেল । কুদ্দুস আলীর সাথে দেখা করার জন্য । অনেক কষ্টে তার সাথে দেখা করার সুযোগ পেল তারা ।

¯স্বামীর সাথে দেখা হওয়া মাত্রই কুদ্দুস আলীর ¯ত্রী কাঁদতে কাঁদতে বলল

- কি কইরছো তুয়ি ? পুলিশ ক্যান তোয়ারে ধইরা আইনলো ?

বউয়ের প্রশেরœ উত্তর না দিতেই কুদ্দুস আলীর মা বলে উঠলো

-বাজান তোয়ারে ক্যান পুলিশ ধইরা লইলো ? কত্ত কষ্ট কইরা আই তোয়ারে বড় কইরছি । আমার কষ্ট সব তুই নষ্ট কইরা দিলি বাজান ? কি কইরছো তুয়ি ?

কুদ্দুস আলী কাঁদতে কাঁদতে মায়ের প্রশ্নের উত্তর দিল

-আই চুরি কইরছি মা । আই চোর । আই চোর ।

-তুয়ি চুরি কইরছো ? কি চুরি কইরছো বাজান ?

- হানি মা । আই হানি চুরি কইরছি ।

- হা..নি...!

বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলেন কুদ্দুস আলীর মা । ভাবতে লাগলেন

- হানি । হে আয়ার কেউ চুরি করে নি ? আর করলেও কি পুলিশ ধইরা লয় ? কি কয় কুদ্দুস ?

-বাজান তোর কি মাতা খারাপ হইছোন ? হানি আয়ার চুরি করোন লাহে নি ?

- লাহে মা লাহে । প্যাটের লাইগা হানিও চুরি করোন লাগে ।

কিছুক্ষণ থামলো কুদ্দুস আলী । এবার কন্ঠে কিছুটা আক্ষেপের সূর মাখিয়ে বলল

-কি করুম মা ? বৃষ্টি হয় না । সাওরের হানির ঢল বাঁধ দিয়া আইটকা দিছে হানি উন্নয়োন বোড । চিংড়ী বেইচ্চা প্যাডের ভাত জোগাই । হেয় চিংড়ীরে বাঁচানোর লাইগা তো হানি দরকার মা । হেই হানির লাইগাই বাঁধ ফুঁইটা কইরছিলাম । পানি নিছিলাম ক দিন আগে সাওর থেইক্কা । হের লাইগা...।

কথা আঁটকে যায় কুদ্দুস আলীর । সে ভাবতে থাকে-নিজের না হয় জেলের মোটা ভাত, পোড়া রুটি খাইয়া চইলা যাইবো । কিন্তু বুরা মা, বউ, বাচ্চা; হেরায় কি খাইয়া বাঁচবো ?

কুদ্দুস আলীর মা ছেলের চোখের জল মুছতে মুছতে আনমনে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলেন

-কি অজিব যুগ আইছেরে....। বাঁচার লাইগা ক্যান হানিও লওন যাইবো না ???

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮

শারমিন আক্‌তার বলেছেন: সালাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.