নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পারতেই হবে !

সুপ্ত আহমেদ

পজেটিভ কিছু ভাবনা সব সময় থেকেই যাই মনে । ভাবনা গুলোর যেন ডানা মেলা শেষ হয় না ।

সুপ্ত আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

৫০০ টাকা মুল্য নাজমুল তোর জিবণের । ( ছোট্ট গল্প)

২৭ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩১

ঐ ব্যাটা কই যাস ?
চাচা স্কুলে যাইতেছি ।
এতো পড়া-লেখা কইরা করবি কি ?
- কি যে কোন চাচা পড়া লেখা না করলে কি হয় কন ?
চ কয়ডা আম পাইড়া দে পুকুর পাড়ের গাছ থেইকা । আজ আর স্কুল যাওন লাগবোনা । বাড়ি তোর মার লাইগা কেজি খানেক আম নিয়া যাস ।

চাচা স্কুলে না গেলে তো স্যারে মারবো।
আরে আমি কইয়া দিমুনে সমস্য নাই।

কয়ডা গাছের আম পাড়োন লাগবো চাচা ?
বেশি না পুকুর পাড়ের ঐ ৫ টা গাছের আম পাড়লেই হইবো।

আম পাড়ার জন্য প্রস্তুত , যখন পুকুর পাড়ে।

চাচা এতো বড় গাছ ? চাচা আমি উওঠতে পারুম না , ভয় লাগে।
-আরে হালার পুতে কয় কি ? ব্যাডা এই গাছে এই বয়সে না উঠতে পারো , জিবণে কি কয়রা খাবা ?

অনেক কষ্টে প্রথম গাছে উঠে আম পাড়ে কিছু । দ্বিতীয় গাছে যখন আম পাড়তেছে তখন চেয়ারম্যানের সমবয়সী ছেলে অতুল এসে হাজির।

অতুল - বাবা ওরে ঐ গাছ পাকা আমটা পেরে দিতে বলো ণা।
চেয়ারম্যন- ঐ ওরে ঐ আমডা পাইড়া দে।

- কই চাচা আমি তো দেখতে পারি না।

অতুল- ঐ যে তোর বা পাশে , কানা নাকি দেখতে পারিস না?

- কই দেখি না তো । ঐ তুই তো গাছে উঠতে পারোস , তুই উইঠা পাড় না কয়টা।
চেয়ারম্যন - অঈ গাছে উঠতে পারবো না, জিন্দেগিতে উঠে নাই।

- না চাচা ও তো কাইল গাও গাছে উঠছিলো আক্কবর চাচা গো গাছে ।

অতুল- কই না আব্বা উঠি নাই আমি।

চেয়ারম্যন- এতো বুঝিস না। আমডা ওরে পাইড়া দে তুই।
- চাচা আমি তো দেখতেছি না।

অতু;ল- আরে আরো সামনে তোর , হাত দিয়া ডালটা একটু সরা।

কই , দেখি না তো।
চেয়ারম্যন- আগাই যা আরো।

- চাচা চিকনা ডাল, ভাইঙ্গা যাইবোগা ।

চেয়ারম্যন - আরে হালার পুত আগা যা না ভাংগবো না।

কিছুটা আগাতেই ডাল টা ভেঙ্গে নিচে মাটিতে পড়ে যায়।
পাখির ছানা গাছ থেকে পড়ে যেভাবে কাতরাতে থাকে অথবা কাউকে বেঁধে শিরচ্ছেদ করলে যে ভাবে হাত প্যাঁ ছুড়ে ।
ঠিক সেভাবেই হাত প্যাঁ ছুড়ছিলো।
চেয়ারম্যন পাশে থাকা লোক জনরে ডাক দিয়া ওরে ধরতে বলল । তবুও একটা বার ছুয়ে দেখলো না।

ধরাধরি করে ওকে নিয়ে গেলো হস্পিটালে।

সেই ব্যাটাটার নাম , নাজমুল । বাবা অনেক আগেই সবাইকে রেখে চলে গেছে অচিনপুরে। মা আর ছোট বোনটা কে নিয়েই সংসার।
ক্লাস ফাইভে পড়ে। কিছু দিন পর হাইস্কুলে যাবে।

কিন্তু সেই স্কুলে যাওয়া আর হলো না মনে হয়,
হস্পিটালের বেডেই শেষ দেখা হলো সবার সাথে। চেয়ারম্যন সাব এসেছিলেন একবার দেখতে । হাতে ৫০০ টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিয়ে গেছে নাজমুলের মায়ের হাতে।


মদ্দ্যকথাঃ আসলে আমরা সবাই সার্থপর। নিজের ভালো দিকটা সবাই বুঝি, নিজের সুবিধাটা আগে দেখি। চেয়ারম্যন নিজের ছেলেকে একবারো গাছে উঠানোর কথা ভাবালেন না।
নাজমুল কিছু আমের লোভে গাছে উঠেছিলো। চেয়ারম্যনের আদো কি উচিৎ ছিলো কচি বাচ্চা টা কে গাছে উঠানোর???
নাকি নাজমুলের জিবণের মুল্য কয়েকটা আম আর একটা ৫০০ টাকার নোট চেয়ারম্যনের কাছে???

আমরা বড়োই সার্থপর। আমরা বড়ই সার্থপর।

(কাউকে উদ্দেশিতভাবে পোষ্ট না। কারো চরিত্রে সাথে মিললে আমি দায়ি নই )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.