নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে একটা দেয়াল আছে, এর একদিকে থাকে চাওয়া,আর একদিকে পাওয়া। মুখ্য সমস্যা হল দেয়ালটা স্বচ্ছ কাঁচের\'

যাযাবর জোনাকি

‘আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে একটা দেয়াল আছে, এর একদিকে থাকে চাওয়া,আর একদিকে পাওয়া। মুখ্য সমস্যা হল দেয়ালটা স্বচ্ছ কাঁচের’

যাযাবর জোনাকি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নোট# মান্টো

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫২

সাদাত হাসান মান্টো। উর্দুভাষা সাহিত্যে মান্টো নামে অধিক পরিচিত। মান্টো আসলে তাঁর গোত্রের নাম। তিনি জাতে কাশ্মীরী পণ্ডিত ছিলেন। আমাদের এই উপমহাদেশীয় শিক্ষিত সমাজে কেন জানিনা, অত্যন্ত স্বাধীনচেতা মানুষগুলি শেকড়ের কারণেঅকারণে প্রচণ্ড গোড়ামীতে ভোগেন। মান্টো তার ব্যতিক্রম নয়। তিনি তাঁর কাশ্মীরী শেকড়ের টানে গোড়া ছিলেন। মান্টোর সাথে পরিচয় হয় একটু অন্যভাবে। যেহেতু তিনি উর্দু লেখক তাই কেউ হাতে ধরে তাঁর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়নি। বলিউডের অভিনেতা নাওয়াজউদ্দিনের আগামী সিনেমার খোঁজ করতে গিয়ে “In Defence of Freedom” আনুগমিকটি দেখে তাঁর সম্পর্কে, তাঁর লেখা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা করে,কিন্তু সে ইচ্ছা আরও হাজারো ইচ্ছার নিচে একসময় চাপা পড়ে যায়। এর অনেকদিন পর মান্টোর গল্পের একটা বাংলা বই হাতে এসে লাগে। ইন্টারনেট থেকে যতটুকু জেনেছি মান্টোর লেখা উল্লেখযোগ্য গল্পগুলির একটি “ঠান্ডা গোশত”। বইটি হাতে পাবার পর মান্টোর জীবনীতে একটু চোখবুলিয়েই চলে যাই “ঠান্ডা গোশত” গল্পটি পড়ার জন্য। গল্প ছোট। বাংলায় পড়ে মনেহল গল্পটি যেন অনেক খাপছাড়া, শুরু হতে না হতেই শেষ। কিছুতেই হজম হতে চাইছিল না ব্যাপারটা। উর্দু যেহেতু পড়তে পারিনা, কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। পড়ে একটু আগ্রহ নিয়ে খুঁজে দেখি তাঁর প্রায় সব গল্পগুলির অডিও সংস্করণ আছে ইউটিউব এ। যেহেতু কমবেশি হিন্দি আগে থেকেই ভাল বুঝি আর উর্দু অনেকটা হিন্দির মতই তাই শুনতে আরম্ভ করলাম। শুরু করলাম “ঠান্ডা গোশত” দিয়ে। গল্পটা শোনা শেষ হলে মনেহল যেন বাংলায় অনুবাদক শুধু থানকাপড় পরিয়ে গল্পটাকে উপস্থাপন করেছে। আসল অলংকার সবগুলিই অনুবাদক যেন ইচ্ছে করে খুলে রেখেছে লজ্জায়। এরপর এক এক করে অনেকগুলি গল্প শুনলাম। এরমধ্যে “খোল দো” আর “বাদশাহাত কা খাতমা” গল্প দুটি আগের দেখা যথাক্রমে সৃজিতের “রাজকাহিনী” আর মৃণাল সেনের “অন্তরীন” সিনেমা তে ব্যবহার করা হয়েছে। সিনেমা দুটি দেখেছি অথচ মান্টোর সাথে পরিচয় হয়নি,ভেবে একটু অবাক লাগলো। মান্টো এই উপমহাদেশীয় সমাজের গল্প লিখেছেন। আমাদের উপমহাদেশীয় পুরুষ শাসিত সমাজের পর্দার আড়ালে লুকানো ঘা পাছড়া গুলিকে মান্টো তাঁর গল্পের আয়নায় উলঙ্গ করে দিয়েছেন। এতে অনেকে লজ্জা পেয়েছেন,অনেকে মজা পেয়েছেন,অনেকে তা পর্দা দিয়ে আবারও ঢাকতে চেষ্টা করেছেন, অশ্লীলতা বলে চোখ বন্ধ করে নিয়েছেন। অথচ আজকাল এই ঘা পাছড়াকে লুকিয়ে শুধু নগ্নতাকে যখন উপভোগ্য পন্য করা হয়েছে তখন তার গায়ে লেগেছে স্বাধীনতার মার্কা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

মান্টো সম্পর্কে অনেক কিছু বলা ও লেখা হয়েছে— তার বিরুদ্ধেই বেশি, যত না তার পক্ষে।
খুব অল্প কথায় মান্টোর ব্যক্তিত্ব সম্মন্ধে বলা যায় সে একজন মিথ্যুক, চোর, বিশ্বাসঘাতক আর অযথা চেঁচামেচি করে লোক জোগাড় করতে ওস্তাদ। মান্টোর ক্ষমতা আদতে দুটো পরস্পরবিরোধী শক্তির মধ্যকার দ্বন্দ্বের নীট ফল। মান্টোর বাবা ছিলেন অন্যন্ত রুক্ষ মানুষ, অপরদিকে মা ছিলেন কোমলপ্রাণা। মান্টো ওই দুই বিপরীত স্বভাবের অশান্ত তোলপাড়ের মধ্যে বড়ে ওঠে।
মান্টো বিরুদ্ধে ছয়বার অশ্লীলতার অভিযোগে মামলা হয়। ভারতে ও পাকিস্তান দুই দেশেই তার গল্পকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় অশ্লীলতার অভিযোগে। তার বিটার ফ্রুট গল্পের জন্যে অশ্লীলতার অভিযোগে তাকে লাহোর আদালতে অভিযুক্ত হয়ে আসতে হয় ১৯৫০ সালের ২৯ আগস্ট। সাদাত হাসান মান্টো আর্থিক দুরবস্থার কারনে ভাল আইনজীবী নিয়োগ করতেপারেননি।
তার জীবনযাত্রা ও ছিল চুড়ান্ত বাউণ্ডুলে এবং বেপরোয়া। শরীরের প্রতি অযত্ন, অপ্রতুল চিকিৎসা, আর্থিক অনটন ইত্যাদিতে জর্জরিত মান্টোর বেঁচে থাকার প্রবল আগ্রহ ব্যাধির কাছে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৫৫ সালের ১৮ জানুয়ারি তাঁর অকাল প্রয়াণ ঘটে তাঁর দ্বিতীয় আবাস ভূমি লাহোরে। মন্টো জন্য সমবেদনা।

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১৭

প্রামানিক বলেছেন: সাদাত হোসেন মান্টোর কিছু বাংলা অনুবাদ পড়েছিলাম অনেক আগে। আমি প্রায় তার নামটি ভুলেই গিয়েছিলাম। আপনার পোষ্ট পড়ে আবার তার নামটি মনে পড়ল। পোষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.