নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলে যাব- তবু যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল।

হাবিব

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র।

হাবিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

টাঙ্গাইলের সব জমিদার বাড়ি একসাথে

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৫৮



(সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: পোস্টটি অনেক বড়।)

আজকে আমি টাঙ্গাইলে, আমার জানামতে সবগুলো জমিদার বাড়ি নিয়ে কথা বলবো। কিভাবে একদিনে প্রায় সবগুলো জমিদার বাড়ি ঘুরে আসবেন সে তথ্যও জানাবো। আমি কোন জমিদার না হওয়া সত্ত্বেও জমিদার বাড়ির আলোচনায় কেন আমার ছবি টাঙ্গাইলাম সে কথাও হবে। তাহলে চলুন আমার সাথে, ঘুরে আসুন জমিদারদের রাজত্ব থেকে।

ঢাকা থেকে আসতে চাইলে প্রথমে আপনাকে মহাখালি অথবা গাবতলী বাসটার্মিনাল থেকে আসতে হবে। মহাখালি বাসটার্মিনাল থেকে প্রতি আধা ঘন্টা পরপর টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় নিরালা, ধলেশ্বরী, দ্রুতগামী, বিনিময়, হাইচয়েস নামের নন-এসি বাস। ভাড়া নিবে ১২০-১৬০ টাকার মধ্যে। এসি বাসে আসতে চাইলে আপনাকে আসতে হবে কল্যানপুর সকাল-সন্ধ্যা কিংবা সোনিয়া বাসের কাউন্টারে। ভাড়া জনপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা। খরচ বাঁচাতে চাইলে ধলেশ্বরী অথবা হাইচয়েচ বাস আপনাকে বেছে নিতে হবে। কারণ অন্য পরিবহনগুলো সরাসরি টাঙ্গাইলের ভাড়া রাখবে। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য একদিনে সব জমিদার বাড়ি ঘুরে দেখা। তাই টাঙ্গাইলের আগেই আপনাকে নামতে হবে। ঢাকা থেকে সকাল ৭ টায় রওনা হলে সাড়ে ৮ টার আগেই প্রথম লোকেশনে পৌঁছে যাবেন। আপনার প্রথম লোকেশন হবে মির্জাপুর উপজেলার "পাকুল্যা জমিদার বাড়ি এবং ঐতিহাসিক মন্দির"। পাকুল্যা বাস স্ট্যান্ড নেমে সিএনজি বা অটোরিক্সা নিয়ে পাকুল্যা জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন। এখানে একঘন্টা সময় ব্যায় করে সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে পাকুল্যার অদূরে "মহেরা জমিদার" বাড়িতে সিএনজি নিয়ে আসতে পারবেন। আসতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিট। মহেরা জমিদার বাড়ি বর্তমানে পুলিশ ট্রেইনিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৮০ টাকা। স্কুল-কলেজের পক্ষথেকে আগে জানিয়ে আসলে অনেক কমেও ঘুরে দেখা যায়। টাঙ্গাইলের সবচেয়ে আকর্ষনীয় জমিদার বাড়ি এটি। ১১ টার মধ্যে চলে আসবেন "করটিয়া জমিদার বাড়িতে"। এখান থেকে সিএনজি যোগে করটিয়া জমিদারবাড়ি আসতে ২৫-৩০ মিনিট সময় লাগবে। করটিয়া জমিদার বাড়িতে বর্তমানে লাইট হাউস স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ভবন আছে, ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন। দেখার জন্য খুব বেশি সময় নিবেন না। এক জায়গায় বেশি সময় নিলে অন্যগুলো অদেখাই থেকে যাবে। চেষ্টা করবেন দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে টাঙ্গাইল শহরে আসার জন্য।

টাঙ্গাইল শহর থেকে ২০ টাকা অটোরিক্সা ভাড়া দিয়ে চলে আসবেন "সন্তোষের জমিদার বাড়িতে"। এখানে টাঙ্গাইলের সবচেয়ে বেশি জমিদার বাড়ি দেখতে পারবেন। সন্তোষের জমিদার বাড়িগুলো সবই কোন না কোন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। সন্তোষ সরকারী বক্ষব্যাধি ক্লিনিক, সন্তোষ জাহ্নবী উচ্চবিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন অফিস, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান হল, বিভাগীয় অফিস প্রভৃতি। এছাড়াও এই সন্তোষের কয়েকটি জমিদার মহল পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। সন্তোষেই রয়েছে বিখ্যাত সূর্য ঘড়ি এবং টি পুকুর, যা টাঙ্গাইলের আদ্যক্ষর নির্দেশ করে। টাঙ্গাইল এসে পোড়াবাড়ির চমচম না খেয়ে গেলে আপনার ভ্রমনটাই বৃথা হয়ে যাবে। সন্তোষ থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলের পুড়াবাড়িতে এসে আসল পুরাবাড়ির মিষ্টি খেয়ে যাবার দাওয়াত রইলো। দুপুর দুইটার মধ্যে এখান থেকে চলে আসবেন সন্তোষ থেকে ১৫ টাকার অটোরিক্সা ভাড়া করে "অলোয়া জমিদার বাড়ি"। টাঙ্গাইলের অন্যান্য জমিদার বাড়ি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হলেও এই জমিদার বাড়িটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর এই জমিদার বাড়ির সর্বত্র আগাছায় ছেয়ে আছে। আপনি এর ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হবে হরর মুভির শুটিং করতে এসেছেন। শুটিং শেষ করে ৩ টার মধ্যে চলে আসবেন "দেলদুয়ার জমিদার বাড়িতে"। আর হ্যাঁ, দেলদুয়ার বাড়িতে আসার পথে দেলদুয়ারের "আতিয়া মসজিদটি" দেখতে ভুলবেন না কিন্তু। আজীবন দশটাকার নোটের সেই মসজিদের ছবির কারুকার্য নিজ চোখে দেখলে আপনার মন এমনিতেই শান্ত হয়ে যাবে। চাইলে পাশে থাকা পুকুরের ঘাটে অযু করে দুই রাকাত নামাযও পড়ে আসতে পারেন। যাই হোক, এখান থেকে আপনার দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি আসতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে ২৫ মিনিট। দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। ছবি তুলে বেশি সময় নষ্ট না করে বেড়িয়ে পরবেন নাগরপুরের "পাকুটিয়া জমিদার বাড়ির" উদ্দেশ্যে। বিকাল সাড়ে ৪ টার মধ্যে এখানে আসতে পারবেন। বর্তমানে এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকে বোনাস হিসেবে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার "বালিয়াটি প্রাসাধ" থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। কারণ, এটি পাকুটিয়া থেকে মাত্র ৩০ মিনিটের দূরত্বে। আপনি যদি ঢাকা আসতে চান তাহলে আপনাকে আবার টাঙ্গাইল হয়ে আসার কোন দরকার নেই। এজন্য আপনি সাটুরিয়া থেকে সহজেই ঢাকা আরিচা মহাসড়কে আসতে পারবেন। সাটুরিয়া থেকে গাবতলীগামী একমাত্র বাস হলো এসবি লিংক।

তার মানে আপনার ভ্রমনটা একনজরে এরকম হবে, পাকুল্যা জমিদারবাড়ি ---< মহেড়া জমিদার বাড়ি ---< করটিয়া জমিদার বাড়ি ---< সন্তোষ জমিদার বাড়ি ---< অলোয়া জমিদার বাড়ি ---< আতিয়া মসজিদ ---< দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি ---< পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি ---< বালিয়াটি প্রাসাধ (বোনাস হিসেবে)।

আপনি চাইলে এর উলোটপথেও আসতে পারেন। মানে শেষ থেকে শুরু। ব্যক্তিগত গাড়ি যোগে কিনবা রিজার্ভ গাড়িতে আসলে আরো দেখতে পারবেন নাগরপুর উপজেলার নাগরপুর জমিদার বাড়ি, ধনবাড়ি জমিদার বাড়ি, ধনবাড়ি নবাব প্যালেস ও মসজিদ (যেখানে নামাজের ওয়াক্ত ব্যতিত ২৪ ঘন্টা কোরআন তেলাওয়াত চলে), গোপালপুর ২০১ গম্বুজ মসজিদ, মধুপুরের বঙ্গবন্ধু জাতীয় উদ্যান। পথ চিনার সুবিধার্থে পরিচিত কাউকে সাথে করে আনবেন। অবশ্য আমাকে বলবে আমিও না করবো না। আর হ্যাঁ, ঘুরতে এসে কিছু না নিয়ে গেলে কেমন দেখায়! সাথে করে টাঙ্গাইলের পুড়াবাড়ির চমচম আর তাঁতের শাড়ির নিয়ে যাবেন। বৃহ:স্পতিবার করে আসলে করটিয়ার হাট থেকে পাইকারি ধরে শাড়ি নিতে পারবেন, শো-রুমের প্রায় অর্ধেক দামে। যাই হোক, আমার জন্মস্থান টাঙ্গাইল জেলায় আপনাকে স্বাগতম। আমার বাড়ি আসার পথ দেখালাম না, কারণ আমার বাড়িটি কোন রাজবাড়ি নয়। কিন্তু আমার শৈশবমাখা গ্রামটি রাজবাড়ির চাইতে বেশি কিছু।

১) পাকূল্যা জমিদার বাড়ি ও শ্রী শ্রী রাধা কালাচাঁদ মন্দির



শ্রী শ্রী রাধা কালাচাঁদ মন্দিরটি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবী রাম মোহন সাহা ও গৌর মোহন সাহা ১১৯৫ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে গীতাপাঠ, মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান, শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী, দোলযাত্রা ও ঝুলনযাত্রাসহ সারা বছর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এর আগে একতলা পাকা মন্দিরটি দুই বার সংস্কার করা হয়। সম্প্রতি এলাকার সমাজ হিতৈষী ব্যক্তিরা মন্দিরটিকে বাংলাদেশসহ দেশ-বিদেশে অন্যতম কারুকার্যসমৃদ্ধ ঐতিহাসিক মন্দির হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেন। চার বছর পূর্বে প্রায় ৬০ ফুট উঁচু মন্দিরটি নতুন রূপে নির্মাণ কাজ শুরু করেন তারা। এর আগে বাংলাদেশ ও ভারতসহ বেশকিছু দেশের মন্দির পরিদর্শন করে মন্দিরটির নক্সা তৈরি করা হয়। মন্দিরটি নির্মাণে ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে কারুশিল্পী আনা হয়। এছাড়া ঢাকা চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিল্পীরা ছাড়াও দেশের নামকরা কারুশিল্পীদের সহযোগিতা নেয়া হয়েছে এটি নির্মাণে। মন্দিরটির মধ্যে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিকৃতি নিপুণভাবে তৈরি করা হয়েছে। পুণ্যার্থী ও দর্শণার্থীদের আকর্ষণ করার জন্য মন্দিরটিতে সোনালি রঙের প্রলেপ দেয়া হয়েছে। দূর থেকে মনে হয় এটি একটি স্বর্ণ খচিত মন্দির। অনেকে এই মন্দিরটিকে বাংলার ‘স্বর্ণ মন্দির’ হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন। মন্দিরটি নির্মাণ করতে এক কোটি টাকারও বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে জানান এর অন্যতম উদ্যোক্তা সুরঞ্জন শেঠ তাপস।



নবাব শায়েস্তা খানের বংশোধর নবাব হাসান আসকারী জামুর্কি ইউনিয়নের পাকুল্যা এলাকায় প্রায় ৬ দশমিক ৮৪ একর জায়গা নিয়ে জমিদার বাড়ি নির্মাণ করে জমিদারি পরিচালনা করেন। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জমিদারগণ বিশাল জমিদার বাড়ি ফেলে চলে যান। এখানে দৃষ্টিনন্দন সুনিপুণ হাতে গড়া পাকা ভবন, নবাবদের ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, এতিমখানা, রং মহল, পুকুর, লেক, কাচারি বাড়ি, বাগানসহ বিভিন্ন স্থাপনা থেকে যায়। মালিক না থাকায় ও পরিচর্যার অভাবে জমিদার বাড়িটি দখল হতে থাকে।

১৯৫০ সালের শেষের দিকে সরকার এই জমিদার বাড়িটি অধিগ্রহণ করে দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় একটি চক্র জমিদার বাড়িটির অধিকাংশ স্থাপনা ও জমি দখলে নিয়ে নেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা হয়। মামলায় সরকার পক্ষ রায় পান। রায় পেয়ে জমিদার বাড়িটি দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করে বিনোদনের জন্য পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

২) করটিয়া জমিদার বাড়ি



“আটিয়ার চাঁদ” নামক গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, আফগান অধিপতি সোলায়মান খান পন্নী কররানির ছেলে বায়েজিদ খান পন্নী ভারতে আগমন করেন। তার পুত্র সাঈদ খান পন্নী আটিয়ায় বসতি স্থাপন এবং ১৬০৮ খ্রিঃ সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে আটিয়ার বিখ্যাত মসজিদ নির্মাণ করেন। এই বংশেরই ১১তম পুরুষ সা'দত আলী খান পন্নী টাঙ্গাইলের করটিয়ায় এসে পন্নী বংশের ভিত প্রতিষ্ঠা করেন। উনিশ শতকের প্রথম দিকে সাদত আলী খান পন্নী সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে নানা মামলায় জড়িয়ে পড়েন। ঢাকার জমিদার খাজা আলীমুল্লাহর সহায়তায় তিনি পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধার করেন, কিন্তু শর্ত ভঙ্গের কারণে পাল্টা মামলা করে খাজা আলিমুল্লাহ ভোগ-স্বত্বের ডিক্রি লাভ করেন। তখন সা'দত আলী খান সম্পত্তি রক্ষার জন্য স্ত্রী জমরুদুন্নেসা খানমের নামে তা দানপত্র করে দেন। পরে অবশ্য উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষ মীমাংসা হয়। সা'দত আলী খান সম্পত্তির ৭ আনা অংশ খাজা আলিমুল্লাহকে ছেড়ে দেন। অতঃপর বাংলা ১২২৭ সনের ৯ পৌষ সা'দত আলী খান এবং তার স্ত্রী জমরুদুন্নেসা খানম যৌথভাবে একটি দলিল করেন। এতে সমস্ত সম্পত্তি দুটি ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগ পরিবারের ব্যয় ও অন্য ভাগ ওয়াকফ্ করে ধর্মীয় ও দাতব্য কাজে ব্যয় করার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। ওয়াকফ্ সম্পত্তি দেখাশুনা করার জন্য মুতাওয়াল্লী নিয়োগের বিধান রাখা হয়। সা'দত আলী খান পন্নীর মৃত্যুর পর তার পুত্র হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নী মুতাওয়াল্লী ছিলেন। মাহমুদ আলী খান পন্নীর মৃত্যুর (১৮৯৬) পর মুতাওয়াল্লী কে হবেন এ নিয়ে তার পুত্র ওয়াজেদ আলী খান পন্নী (চাঁদ মিয়া) এবং পিতামহী জমরুদুন্নেসা খানমের মধ্যে বিবাদ ও মামলা মোকদ্দমা সংঘটিত হয়। পরিশেষে ওয়াজেদ আলী খান পন্নী জয়ী হন এবং দক্ষতার সঙ্গে জমিদারি পরিচালনা করেন। পন্নী পরিবারের ১৩তম পুরুষ দানবীর জমিদার আটিয়ার চাঁদ হিসেবে খ্যাত ওয়াজেদ আলী খান পন্নী অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার কারণে ১৯২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর কারা অবরুদ্ধ হন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার অনমনীয় মনোভাব ও দৃঢ় ব্যক্তিত্বের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ আজও লন্ডন মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ওয়াজেদ আলী খান পন্নীর তৈলচিত্রের নিচে লেখা রয়েছে 'ওয়ান হু ডিফাইড দি ব্রিটিশ।' ১৯২২ সালে জেল থেকে মুক্ত হয়ে তিনি সমাজ ও শিক্ষা সংস্কারের কাজে আত্মনিয়োগ করেন এবং বাংলার আলীগড় নামে খ্যাত ১৯২৬ সালে করটিয়ায় সা'দত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। কলেজের পাশাপাশি তিনি স্থাপন করেন রোকেয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, এইচএম ইনস্টিটিউশন (স্কুল এ্যান্ড কলেজ) এবং দাতব্য চিকিৎসালয়সহ জনকল্যাণকর বহু প্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকার ব্যয় নির্বাহের অভিপ্রায়ে তিনি তার সমস্ত সম্পত্তি, বসতবাড়িসহ এলাহীর উদ্দেশে ১৯২৬ সালের ৯ এপ্রিল এক ওয়াকফ্ দলিলের সৃষ্টি করেন ।

ওয়াজেদ আলী খান পন্নী ওরফে চাঁদ মিয়া সাহেবে মৃত্যুর পর তার পুত্র মাসুদ আলী খান পন্নী এস্টেটের মোতোয়ালি নিযুক্ত হন। এস্টেটের অব্যবস্থাপনার জন্য ওয়াকফ্ প্রশাসক ১৯৪০ সালের ১০ নভেম্বর ১৩৬৭৮ নং পত্রে মাসুদ আলী খান পন্নীকে শর্তহীনভাবে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে মাসুদ আলী খান পন্নী পদত্যাগ করেন এবং ওয়াকফ্ দলিল অনুসরণে খুররম খান পন্নী মোতোয়ালি নিযুক্ত হন। ১৯৬২ সালে তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হলে ১৯৬৩ সালে তার পুত্র ওয়াজিদ আলী খান পন্নী (২য়) ওরফে বান্টিং ভারপ্রাপ্ত মোতোয়ালি নিযুক্ত হন।। উল্লেখ্য যে, পন্নী পরিবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেশ পরিচিত মুখ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় হতে। ওয়াজেদ আলী খানের দৌহিত্র খুররম খান পন্নী পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের চীপ হুইপ এবং একজন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। অপর দৌহিত্র হুমায়ন খান পন্নী বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ছিলেন। খুররম খান পন্নীর পুত্র ওয়াজেদ আলী খান পন্নী (দ্বিতীয়) বাংলাদেশ সরকারের উপমন্ত্রী ছিলেন।

৩) মহেরা জমিদার বাড়ি:



প্রাকৃতিক এবং নিরিবিলি পরিবেশের এই জমিদার বাড়ীটি প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ০.৫ কিলোমিটার প্রস্থ বিশিষ্ট প্রাচীরঘেরা যেখানে রয়েছে লোহার ঘর, রোকেয়া মহল, রাণীর পুকুরঘাট, ছোট তরফ দাউদ মহল এবং বাড়িসংলগ্ন মোগল স্থাপত্যের আদলে গড়া মসজিদ একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য। মোগল ও চৈনিক স্থাপত্যের মিশেলে নির্মিত জমিদার বাড়ীটি প্রথম দর্শনেই আপনার মন কেড়ে নেবে। সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে অবস্থিত মোগল স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন রোকেয়া মহল; যা প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শনের মর্যাদা পাওয়ার দাবি রাখে। অথচ উহা বিদ্যালয় ও কোচিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।



১৮৯০ দশকের পূর্বে স্পেনের করডোভা নগরীর আদলে জমিদার বাড়ীটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়ীতে হামলা করে এবং জমিদার বাড়ীর কূলবধূ সহ পাঁচজন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে (১৯৭১)। পরবর্তীতে তারা লৌহজং নদীর নৌপথে এ দেশ ত্যাগ করেন। এখানেই তখন মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। এ জমিদার বাড়ীটি পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় (১৯৭২)। এবং পুলিশ ট্রেনিং স্কুলকে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উন্নীত করা হয় (১৯৯০)।

এই জমিদার বাড়ির সামনে প্রবেশ পথের আগেই রয়েছে ‘বিশাখা সাগর’ নামে বিশাল এক দীঘি এবং বাড়িতে প্রবেশের জন্য রয়েছে ২টি সুরম্য গেট। এছাড়াও মূল ভবনে পিছনের দিকে পাসরা পুকুর ও রানী পুকুর নামে আরো দুইটি পুকুর রয়েছে এবং শোভাবর্ধনে রয়েছে সুন্দর ফুলের বাগান। বিশাখা সাগর সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে রয়েছে বিশাল আম্র কানন ও বিশাল তিনটি প্রধান ভবনের সাথে রয়েছে নায়েব সাহেবের ঘর, কাছারি ঘর, গোমস্তাদের ঘর, দীঘিসহ ও আরো তিনটি লজ।

চৌধুরী লজঃ জমিদার বাড়ি প্রবেশের পরেই মূল ফটক দিয়ে দেখা যায় চৌধুরী লজ। এটির গোলাপি রঙের ভবনটির পিলার গুলো রোমান স্থাপত্য শৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছে। সুন্দর নকশাখচিত এই ভবনের ভেতরে রয়েছে ঢেউ খেলানো ছাদ। দোতলা বিশিষ্ট এই ভবনটির সামনে রয়েছে সুন্দর বাগান ও সবুজ মাঠ।

মহারাজ লজঃ বাইজেনটাইন স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত মহারাজ লজ ভবনের সামনে ছয়টি (৬) টি কলাম রয়েছে। সেখানে গোলাপি রঙের মহারাজ লজের সামনে রয়েছে সিঁড়ির বাঁকানো রেলিং ও ঝুলন্ত বারান্দা যা ভবনের শোভা বৃদ্ধি করেছে। ভবনটিতে মোট কক্ষ আছে বারো (১২) টি, সামনে বাগান ও পেছনে একটি টেনিসসহ কোর্ট রয়েছে। এই ভবনটি বর্তমানে শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

আনন্দ লজঃ মহেরা জমিদার বাড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ভবন হলো আনন্দ লজ। নীল ও সাদা রঙের মিশ্রনে ভরা ভবনটির সামনে আট (৮) টি সুদৃশ্য কলাম রয়েছে। তিন তলা বিশিষ্ট ঝুলন্ত বারান্দা এ ভবনকে করেছে আরো দৃষ্টিনন্দন। আনন্দ লজের সামনে হরিণ, বাঘ ও পশু-পাখির ভাস্কর্যসহ একটি চমৎকার বাগান আছে।

কালীচরণ লজঃ জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির শেষের দিকে নির্মিত এই কালীচরণ লজ অন্য ভবন থেকে অনেকটা আলাদা। ইংরেজি ‘ইউ’ (U) অক্ষরের আদলে এই ভবনটি ইংরেজ স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। অন্যোন্য স্থাপত্য শৈলীর জন্য বিকেল বেলা ভবনের ভেতর থেকে সুন্দর আলোর ঝলকানি দেখা যায়।

৪) সন্তোষ জমিদার বাড়ি



টাঙ্গাইল শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত মওলানা ভাসানীর স্মৃতি বিজরিত সন্তোষ একটি উজ্জ্বল নাম। সন্তোষের জমিদার এবং জমিদার বাড়িরও রয়েছে বহু স্মৃতি বহু ইতিহাস।

জানা যায় মোগল সম্রাট শাহজাহানের শাসনামলে কাগমারী পরগনার মালিকানা পান হযরত শাহজামান (রঃ)। নবাব মুর্শীদ কুলি খাঁর সময়ে এ কামেল পীরের শিষ্য ইন্দ্র নারায়ন ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে এনায়েতুল্লাহনাম গ্রহণ করেন এবং এক সময় এ পরগনার মালিকানা লাভ করেন। বিশ্বনায়েব তিনপুত্র রঘুনাথ রায়, রামেশ্বর রায় এবং রামচন্দ্র রায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে ৩টি জমিদারী লাভ করেন। এগুলো হচ্ছে ছয়আনা, বড় পাঁচ আনা এবং ছোট পাঁচ আনা।

এ সময় থেকে কাগমারী পরগনা সন্তোষে স্থানান্তরিত হয়। সন্তোষের জমিদার ছয় আনার মালিক রঘুনাথ রায়ের বংশধর জাহ্নবী চৌধুরাণী ও দীনমনি চৌধুরাণী ছোট পাঁচ আনা জমিদারীর মালিক রামচন্দ্র রায় এর বংশধর বিন্দুবাসিনী চৌধুরাণী ও তার দুইপুত্র প্রমথনাথ রায় চৌধুরী ও মন্মথনাথ রায় চৌধুরী জমিদারী পরিচালনায় যুক্ত হয়ে বহু জনহিতকর কাজ করে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

সূর্যঘড়ি:



বাংলাদেশে সূর্য ঘড়ি কোথায় কোথায় আছে আমার জানা নেই। তবে টাঙ্গাইলের সন্তোষের জমিদার বাড়ির সামনে ( বর্তমানে সন্তোষ জাহ্নবী উচ্চ বিদ্যালয়) একটি সুর্য ঘড়ি আছে। গত ২৯/০৫/০৯ তারিখে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি তে ভারতের জয়পুরের রাজ প্রাসাদে তৎকালিন রাজা কর্তৃক নির্মিত একটি সূর্যঘড়ির ফিচার দেখানো হয়েছিল। ফিটারটি দেখে বুঝতে পারলাম সূর্য ঘড়ি থেকে সেই সময়ের রাজা জমিদাররা সময় দেখে থাকতেন। এখানে উল্লেখ্য সূর্য ঘড়ি থেকে যে সময় পাওয়া যায় তা একেবারে পারফ্যাক্ট। তবে মোদ্যা কথা সন্তোষের সূর্য ঘড়িটি যদিও হয়ত বিখ্যাত নয় কিন্তু ইহা অবশ্যই ভিন্ন একটি ব্যাপার। যদি কেই নিজ চোখে দেখতে চান তবে চলে আসুন টাঙ্গাইল এর সন্তোষ জাহ্নবী উচ্চ বিদ্যালয়ে।

৫) অলোয়া জমিদার বাড়ি:



প্রায় ১৮০০ শতকে জমিদার সচী নাথ রায় চৌধুরী বর্তমান টাঙ্গাইল সদরের পৌরসভা এলাকায় ১৩২ শতাংশ জমির উপর এই অলোয়া জমিদার বাড়িটি স্থাপন করেন। এরপর বংশপরামপণায় জমিদার বংশধররা এখানে জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। একসময় জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেলে এই জমিদার বাড়িটি পরিত্যাক্ত হয়ে যায়। অবশ্যক পরিত্যাক্ত হওয়ার দীর্ঘ কয়েক বছর পর বাড়িটির কিছু অংশে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয় ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসতেছেন। বাকী অংশ এখন প্রায় ধ্বংসের মুখে। এই জমিদার বাড়ির শেষ জমিদার ছিলেন কনক লতা রায় চৌধুরী। তিনি তার পরিবার নিয়ে ১৯৫০ সালে ভারতে চলে যান।

এই ছবিটি আমার নিজের তোলা। প্রথম ছবিটি সেখানে বেড়াতে দিয়ে ক্লীক করেছেন আমার সহধর্মীনি।

৬) আতিয়া মসজিদ:



আতিয়া মসজিদ বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ যা বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এই মসজিদটি ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছে এবং এখানে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এ স্থাপনার তত্ত্বাবধান করছে।

টাঙ্গাইল অঞ্চলে প্রাপ্ত মূল শিলালিপিগুলোর মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদ এলাকায় প্রাপ্ত একটি আরবি এবং একটি ফার্সি শিলালিপি রয়েছে, তবে এগুলোতে মসজিদের নির্মাণকাল সম্পর্কিত তথ্যের ক্ষেত্রে কিছুটা অসংগতি পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত শিলালিপিটিতে নির্মাণকাল ১০১৯ হিজরি (১৬১০-১১ খ্রি.) দেয়া হলেও কেন্দ্রীয় প্রবেশ পথের উপর স্থাপিত অপর শিলালিপিতে এর নির্মাণকাল ১০১৮ হিজরি (১৬০৮-৯ খ্রি.) উল্লেখ করা হয়েছে।

আরবি ‘আতা’ থেকে ‘আতিয়া’ শব্দটির উৎপত্তি, যার বুৎপত্তিগত অর্থ হল ‘দান কৃত’। আলি শাহান শাহ্‌ বাবা আদম কাশ্মিরী (র.) কে সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ টাঙ্গাইল জেলার জায়গিরদার নিয়োগ দান করলে তিনি এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করেন; সে সময় তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারের এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য আফগান নিবাসী কররানী শাসক সোলাইমান কররানীর কাছ থেকে সংলগ্ন এলাকা দান বা ওয়াকফ্ হিসাবে লাভ করেন। এবং এই এলাকাটি তাঁকে দান করায় এই অঞ্চলটির নাম হয়েছে ‘আতিয়া’।

পরবর্তীতে বাবা আদম কাশ্মিরীর পরামর্শক্রমে সাঈদ খান পন্নী নামক সুফিজির এক ভক্তকে মোগল সম্রাট জাহাঙ্গির উক্ত আতিয়া পরগণার শাসন কর্তা হিসেবে নিয়োগ দান করেন। এই সাঈদ খান পন্নীই ১৬০৮ সালে বাবা আদম কাশ্মিরীর কবরের সন্নিকটে আতিয়া মসজিদ নির্মাণ করেন।

মুহাম্মদ খাঁ নামক তৎকালীন এক প্রখ্যাত স্থপতি এই মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা ও নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। রওশন খাতুন চৌধুরাণী ১৮৩৭ সালে এবং আবুল আহমেদ খান গজনবী ১৯০৯ সালে মসজিদটির সংস্কার করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার এই মসজিদটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে অধিগ্রহণ করেন।

লাল ইট দ্বারা নির্মিত এই মসজিদটি আকারে বেশ ছোট, মাত্র ১৮.২৯ মিটার (৫৯ ফুট) x ১২.১৯ মিটার (৪০ ফুট) এবং দেয়ালের পুরুত্ব ২.২৩ মিটার (সাড়ে ৭ ফুট)। এর চারকোণে ৪টি অষ্টকোণাকৃতীর মিনার রয়েছে, যার উপরের অংশটি ছোট গম্বুজের আকৃতি ধারণ করেছে।

সুলতানি ও মুঘল—এই দুই আমলেরই স্থাপত্যরীতির সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে এই মসজিদের নির্মাণ শৈলীতে

৭) দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি



দেলদুয়ার জমিদার বাড়িটি অনেকের কাছে নর্থ হাউজ নামেও পরিচিত। তবে জমিদার বাড়িটি কবে বা কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা সচারচর দেখে থাকি বা জানি যে, বেশীরভাগ জমিদাররাই ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। কিন্তু এই জমিদররা ছিলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী। যাদের পূর্ব পুরুষরা এখানে আফগানিস্তান থেকে এসেছেন। জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা হলেন ফতেহদাদ খান গজনবী লোহানি। জমিদার বংশধররা তাদের পূর্ব পুরুষ আফগানিস্তানের গজনী থেকে আসার কারণে তাদের নামের শেষে গজনবী লোহানি খেতাবটি ব্যবহার করতেন। জমিদার বাড়ির জমিদারদের মধ্যে দুজন ছিলেন খুবই আলোচিত সনামধন্য জমিদার। যারা ছিলেন দানবীর, উচ্চশিক্ষিত ও ব্যবসায়ী। তারা হলেন স্যার আবদুল করিম গজনভি এবং স্যার আবদুল হালিম গজনভি। আব্দুল হাকিম খান গজনবী ও করিমু নেসা খানম চৌধুরানীর সন্তান ছিলেন তারা দুইজন। তাদের মাতা করিমুন নেসা ছিলেন বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত ও কবি বেগম রোকেয়ার বোন। তখনকার সময় তারা ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত।

জমিদার স্যার আবদুল করিম গজনভি ১৮৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইংল্যান্ড এবং জার্মানিতে পড়ালেখা করেন। ১৮৯৪ সালে তিনি জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি ব্রিটিশ ভারত শাসনামলে ব্রিটিশ সরকারের দুইবার মন্ত্রী হয়েছিলেন এবং ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে নাইট ও নবাব বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত হন ১৯২৮ ও ১৯৩৩ সালে। তিনি ইংরাজী ভাষায় তিনটি বই লিখেন। বইগুলোর নাম হলো - Pilgrim traffic to hejaz and Palestine, Muslim education in Bengal ও The diearkiyal education in Bengla. তিনি ১৯৩৯ সালে মারা যান।

জমিদার স্যার আবদুল হালিম গজনভিও বড় ভাই জমিদার স্যার করিম গজনবীর মতই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। তিনি ১৮৭৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্যবসা ও রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ইন্ডিয়া স্টিমশিপ কোম্পানির চেয়ারম্যান ও কলকাতার মুসলিম চেম্বার অব কমার্স এবং ইন্ডিয়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি The Musolman এবং The Star of India পত্রিকার প্রকাশের সাথে জড়িত ছিলেন। স্যার আব্দুল হালিম গজনবীও বড় ভাইয়ের মত ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ১৯৩৫ সালে নাইট উপাধি পান। মৃত্যুর চার বৎসর আগে তিনি কলকাতা থেকে দেলদুয়ার জমিদার বাড়িতে ফিরে আসেন এবং সেখানেই ১৯৫৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে এই জমিদার বাড়ির জমিদারিরও সমাপ্তি ঘটে।

চারদিক দিয়ে দেয়ালবেষ্টিত একতলা বিশিষ্ট জমিদার বাড়িটি ঔপনিবেশিক স্থাপত্যশৈলীর আদলে তৈরি করা। জমিদার বাড়ির সামনের দিকে রয়েছে পারিবারিক কবরস্থান। পূর্ব-দক্ষিণ কোনে রয়েছে একটি মসজিদ। পূর্ব পাশে বসার জন্য রয়েছে লোহার গার্ডেন চেয়ার, গোল টেবিল এবং পাশেই রয়েছে কৃত্রিম পানির পেয়ারা। বাড়ির পিছন দিকে রয়েছে আম বাগান এবং বাগানের মাঝখানে রয়েছে টালির দোতালা শেড। ধারণা করা হয় এটি ছিল বাড়ির মহিলাদের জন্য আড্ডাখানা।

অন্যান্য জমিদার বাড়ির মত এই জমিদার বাড়িটি পরিত্যক্ত বা অবহেলা অযত্নে নেই। জমিদার বাড়িটি দেখাশুনা করার জন্য একজন কেয়ারটেকার আছেন। তাই এখনো জমিদার বাড়িটি আগের মতই ভালো অবস্থায় আছে।


৮) পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি



ইংরেজ আমলের শেষ দিকে এবং পাকিস্তান আমলের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তৎকালীন বৃটিশ রাজাধানী কলকাতার সাথে মেইল স্টিমারসহ মাল এবং যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস চালু ছিল। একপর্যায়ে নাগরপুরের সাথে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে পশ্চিম বঙ্গ কলকাতা থেকে আসেন রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডল (ধনাঢ্য ব্যক্তি)।ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে তিনি পাকুটিয়ায় জমিদারী শুরু করেন। প্রায় ১৫ একর এলাকা জুড়ে একই নকশার পর পর তিনটি প্যালেস বা অট্টালিকা নির্মাণ করা হয় (১৯১৫)। তখন জমিদার বাড়িটি তিন মহলা বা তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল।


প্রতিটি বাড়ীর মাঝ বরাবর মুকুট হিসাবে লতা ও ফুলের অলংকরণে কারুকার্য মন্ডিত পূর্ণাঙ্গ দুই সুন্দরী নারী মূর্তি রয়েছে। এবং প্রতিটি মহলের রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য। রেলিং টপ বা কার্নিশের উপর রয়েছে বিভিন্ন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ছোট আকৃতির নারী মূর্তি। এই অট্টালিকা গুলো পাশ্চাত্য শিল্প সংস্কৃতির এক অনন্য সৃষ্টি, যার লতাপাতার চমৎকার কারুকাজ গুলো মুগ্ধ করার মতো। এছাড়া পূজা মন্ডপের শিল্পিত কারুকাজ শতবছর পর এখনও পর্যটককে মুগ্ধ করে।


তিনটি নাট মন্দির যা তিনটি বাড়ীর সামনে অবস্থিত। দ্বিতল বিশিষ্ট নাচঘরটি মাঠের মাঝখানে রয়েছে। উপেন্দ্র সরোবর নামে বিশাল একটি আট ঘাটলা পুকুর রয়েছে।
বর্তমান অবস্থা

এ সম্পদ অধিগ্রহণের পর এখানে গড়ে তোলা হয় বিসিআরজি ডিগ্রী কলেজ (১৯৬৭)।

টাংগাইল সদর থেকে ৩৫কিমি. দক্ষিণে নাগরপুর উপজেলার লৌহজং নদীর তীরে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী অবস্থিত।

৯) নাগরপুর জমিদার বাড়ি



প্রায় ৫৪ একর জমির উপর শৈল্পিক কারুকার্যমণ্ডিত নাগরপুর চৌধুরীবাড়ী প্রতিষ্ঠা করেন যদুনাথ চৌধুরী। কথিত আছে কলকাতার আদলে নাগরপুরকে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এখান থেকেই তিনি জমিদারি পরিচালনা করতেন। রঙ্গমহলের পাশে ছিল সুদৃশ্য চিড়িয়াখানা। সেখানে শোভা পেত- ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ, ময়না ইত্যাদি।

অন্যান্য স্থাপনা: ঝুলন্ত দালান, ঘোড়ার দালান, রংমহল, পরীর দালান

কারুকার্য: অট্টালিকাটির অভ্যন্তরের কাজটি সুদৃশ্য শ্বেত পাথরের। পাশ্চত্য এবং মোঘল সংস্কৃতির মিশ্রনে এক অপূর্ব নান্দনিক সৌন্দর্যে নির্মিত এই চৌধুরীবাড়ী।

অধিগ্রহণ: দেশ বিভক্তির পর তদানিন্তন সরকার চৌধুরীবাড়ীর সকল সম্পদ অধিগ্রহণ করে (১৯৪৭)।

বর্তমান অবস্থা: নাগরপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজটি চৌধুরীবাড়ীর মুল ভবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।চৌধুরীবাড়ীর দক্ষিণে ১১ একর জমির ওপর একটি বিরাট দিঘি রয়েছে, এটি উপেন্দ্র সরোবর নামে পরিচিত।

১০) বালিয়াটি প্রাসাধ:



“গোবিন্দ রাম সাহা” বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি লবণের বণিক ছিলেন। জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের মধ্যে “কিশোরিলাল রায় চৌধুরী, রায়বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কিশোরিলাল রায় চৌধুরীর পিতা এবং যার নামানুসারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত, এই প্রাসাদ চত্বরটি প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার জমির উপর ছড়িয়ে থাকা ৭টি দক্ষিণমুখী দালানের সমাবেশ। এই দালানগুলো খ্রিষ্টীয় মধ্য ঊনবিংশ শতক থেকে বিংশ শতকের প্রথমভাগের বিভিন্ন সময়ে জমিদার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সামনের চারটি প্রসাদ ব্যবহৃত হত ব্যবসায়িক কাজে। এই প্রসাদের পেছনের প্রাসাদকে বলা হয় অন্দর মহল যেখানে বসবাস করত তারা।

বালিয়াটি প্রাসাধের সব ছবি একত্রে: বালিয়াটি প্রাসাধ: একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য ফটো ব্লগ এবং একটি বিজ্ঞাপন

১১) নবাব প্যালেস



প্রায় ১৮০০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই জমিদার বংশ বা জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশদের কাছ থেকে বাহাদুর, নওয়াব, সি.আই.ই খেতাবপ্রাপ্ত জমিদার খান বাহাদুর সৈয়দ নবাব আলী চৌধুরী। যিনি ব্রিটিশ শাসনামলে প্রথম মুসলিম হিসেবে ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রীত্বের পদ লাভ করেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রতিষ্ঠাতা ব্যক্তির মধ্যে তিনি একজন এবং বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রথম প্রস্তাবক ছিলেন তিনি। তবে একটি সূত্রমতে মোঘল শাসনামলে সেনাপতি ইস্পিঞ্জর খাঁ ও মোনোয়ার খাঁ সিংহ নামের একজনকে পরাজিত করে উক্ত জমিদারীর সূচনা করেন। তবে এই জমিদার বাড়ির প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সৈয়দ নবাব আলী চৌধুরীকেই ধরা হয়। যদিও তারা বাবা এখানে এসে প্রথমে বসতি স্থাপন করেন। তিনি বেশ সুনামের সাথে উক্ত জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। এরপর জমিদারী আমল থেকে এখন পর্যন্ত তার বংশধররা উক্ত জমিদারীর আওতায় থাকায় সবকিছু দেখভাল করতেছেন। এই জমিদার বংশের একজন মোহাম্মদ আলী বগুড়া পাকিস্তানের তৃতীয় নম্বর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এবং আরেকজন সৈয়দ হাসান আলী চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তানের শিল্প মন্ত্রী ও বাংলাদেশ গঠনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বি.এন.পি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

চাইলে দেখতে পারেন:

১) একদিনের ভ্রমন টাঙ্গাইলে ...
২) একদিনে টাঙ্গাইলের পাঁচ জমিদার বাড়ী ভ্রমণ
৩) টাঙ্গাইলের বাস ও কিছু হোটেলের ফোন নাম্বার।


মন্তব্য ৬০ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৬০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৬

ইসিয়াক বলেছেন:
অনেক পরিশ্রমি পোষ্ট । পোষ্টে ভালো লাগা।
পোষ্ট প্রিয়তে নিলাম।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২০

হাবিব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই ইসিয়াক। আসলেই, তথ্যগুলো একত্র করতে কষ্ট হয়েছে। টানা ৪.৩০ ঘন্টা লেগেছে আমার। পোস্ট লাইক এবং তৎসহ প্রিয় পেস্টের তালিকায় যোগ করে নেয়ায় কৃতজ্ঞতা রইল।

আমার জন্মস্থান জেলা টাঙ্গাইলে আসার দাওয়াত রইল

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বড় পোস্ট! হাঁপিয়ে গেছি।একটু জিরিয়ে নিয়ে আবার আসছি..

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২১

হাবিব বলেছেন: হা হা হা......... আগেই সতর্ক করেছিলাম। যাই হোক, আপনার সুমন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: টাঙ্গাইল বেশ কয়েকবার গিয়েছি। কিন্তু কোনো জমিদার বাড়ি যাওয়া হয়নি।

বাস ছাড়া ট্রেনেও তো যাওয়া যায়।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৪

হাবিব বলেছেন: ট্রেনেও যাওয়া যায় তবে উল্টা হয় রাস্তা। এই জন্য ট্রেনের কথা বললাম না। তবে একদিন থেকে বেড়াতে পারলে ভালো লাগবে আশা করি। ২০১ গম্বুজ মসজিদ এবং জমিদার বাড়ি দেখার আমন্ত্রণ রইল। টাঙ্গাইল আসলে সুরভী আপুর জন্য শাড়ি নেয়ে যাবেন। সন্তোষে আসলে ভাসানী জাদুঘর দেখতে ভুলবেন না কিন্তু!

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৫

ফয়সাল রকি বলেছেন: পরে আবার ফিরতে হবে এই পোষ্টে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৭

হাবিব বলেছেন: শুধু পেস্টেই না, আপনাকে টাঙ্গাইলেও নিমন্ত্রণ রইল

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩১

রূপম রিজওয়ান বলেছেন: দারুণ স্যার! প্রিয়তে রেখে দিলাম,পরে সময় নিয়ে পড়তে হবে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩৬

হাবিব বলেছেন: রূপম রিজওয়ান ভাইয়া, আপনার মন্তব্যে সবসময় অনুপ্রাণিত হই। প্রিয়তে রেখে কৃতজ্ঞতার বাঁধনে বাঁধলেন।

৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩২

ফয়সাল রকি বলেছেন: টাঙ্গাইলের কোথায়? রেগুলার না হলেও দীর্ঘ বিরতিতে যাওয়া পড়ে আমার।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩৮

হাবিব বলেছেন: আমার বাসা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, তবে শহরেও বাসা আছে। আমার প্রতিষ্ঠান ছিল "মাওলানা ভাসানী বি: ও প্র: বিশ্ববিদ্যালয়"। মাসে দুই তিনবার শহরে যাই। টাঙ্গাইলে আসলে ভার্সিটিতে আসবেন বেড়াতে

৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩৯

এমজেডএফ বলেছেন: সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেখে ঢুকলাম পোস্টের সাইজ দেখার জন্য! জমিদারদের নিয়ে লেখা পোস্ট জমিদারী সাইজের হবে—এটাই স্বাভাবিক। জমিদার দেখলাম ওরা ১১ জন। আপনার লেখায় এর আগে মন্তব্য করেছি কিনা মনে পড়ছে না। সময় নিয়ে ধীরে-সুস্থে আপনার এই পোস্টটি পড়ে এসে একটি জমিদারী সাইজের মন্তব্য লিখবো। আপাতত শুভেচ্ছা জানিয়ে সাময়িক বিদায়।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৪৭

হাবিব বলেছেন: যাক, শেষ পর্যন্ত আপনি মন্তব্য করলেন খান্দানি স্টাইলে। আবার জমিদারী স্টাইলে মন্তব্য করবেন জেনে আনন্দিত হলাম। জমিদার আনাচে কানাচে আরো যে কত আছে......! ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিবেন আশা করি। জমিদারী মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম। টাঙ্গাইলে মিষ্টির দাওয়াত রইলো।

৮| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রায় চার শ বছরের পুরনো স্থাপনা আতিয়া মসজিদ।
আতিয়া মসজিদে বেশ কয়েকবার জুম্মার নামাজ
এবং ওয়াক্তিয়া নামাজ আদায় করার সৌভাগ্য হয়েছে।

পুরনো ১০ টাকার নোটে মুদ্রিত আছে মসজিদটি।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫১

হাবিব বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ..........। টাঙ্গাইলে এসে নিশ্চয় চমচম খেয়েছেন! স্বাদ কি মুখে লেগে আছে? বাড়িওয়ালির জন্য কি তাঁতের শাড়ি নিয়েছিলেন?

৯| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাড়ীগুলোর ব্যবস্হাপনায় কাহারা আছে?

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪৩

হাবিব বলেছেন:





১) পাকুল্যা জমিদার বাড়ি= পার্ক হিসেবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ব্যবহার করছে
২) মহেড়া জমিদার বাড়ি= বাংলাদেশ পুলিশের তত্ত্বাবধানে
৩) একটি মহল বাদে সব গুলো জীর্ণ প্রায়। প্রশাসন নজর না দিলে অল্প দিনেই নষ্ট হয়ে যাবে
৪) সন্তোষ জমিদার বাড়ি= বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস, বক্ষব্যাধি ক্লিনিক, একটি ভবন স্কুল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, আরেকটি পরিত্যাক্ত
৫) অলোয়া জমিদার বাড়ি= একটি ভবন ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কিন্তু মূল ভবনটি পরিত্যাক্ত
৬) নাগরপুর জমিদার বাড়ি= স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্ববধানে আছে, একটি মহিলা কলেজ হিসেবে।
৭) দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি= স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের অধীনে ভূমি অফিস
৮) পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি= একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে
৯) নবাব প্যালেস (ধনবাড়ি জমিদার বাড়ি)= একটি ট্রাস্টের অধীনে আছে। এখানে প্রবেশ মূল্য একশত টাকা
১০) বালিয়াটি প্রাসাধ= প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর অধীন, উপজেলা ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে

১০| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: দারুণ !! এক পোস্টে চমৎকার ভ্রমণ গাইড।
আপনার ভীষণ পরিশ্রমী লেখায় অনেকগুলো ++++

প্রিয়তে নিলাম ।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪৪

হাবিব বলেছেন: শুভসকাল আপু। টাঙ্গাইলের জমিদারদের পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম

১১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১১

শের শায়রী বলেছেন: এই সব ঐতিহাসিক ঘর বাড়ী ঘটনা আমাকে সব সময়ই টানে। একটানে পড়ে গেলাম। ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪৬

হাবিব বলেছেন: জমিদারী প্রথার আদ্যোপান্ত আপনার কাছে জানতে চাই। এসব নিয়ে একটি পোস্ট দেবার অনুরোধ রইলো

১২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪৬

ওমেরা বলেছেন: বাংলার সব জমিদার কি শুধু টাংগাইল ছিল? আমি একবার মহেড়া জমিদার বাড়ি গিয়েছিলাম কাছাকাছি কোথাও আমাদের এক আত্বীয়ের বাড়ি গিয়েছিলাম তাই।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪৯

হাবিব বলেছেন: আমিও তাই ভাবি মাঝে মাঝে! এতো জমিদার ছিল টাঙ্গাইলে কেমনে! যাই হোক, টাঙ্গাইলে বেড়াতে আসবেন সময় করে। একদম তাঁত থেকে পছন্দ করে তাঁতের শাড়ি নিয়ে যাবেন।

১৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১:২৬

রাকু হাসান বলেছেন:


এত জমিদার বাড়ি । প্রিয়তে রাখলাম । কোেো দিন কাজে লাগবে । শুভকামনা হাবিব ভাই।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫০

হাবিব বলেছেন: রাকু হাসান ভাই, টাঙ্গাইলে অবশ্যই ঘুরতে আসবেন। মিষ্টি খেয়ে যাবেন।

১৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমি যাবো টাঙ্গাইল সব ঘুরে ঘুরে দেখে আসবো।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৫৪

হাবিব বলেছেন: একা আইসেন না আবার। সুরভী আপু আর পরীকেও নিয়ে আসবেন ..........

১৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৫৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: যাইয়াম নে কোনো একদিন
সুন্দর পোস্ট

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৭

হাবিব বলেছেন: আইসেন আইসেন..... সাথে ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা আইনেন

১৬| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২২

নীল আকাশ বলেছেন: ভীষণ পরিশ্রমী লেখা অনেক বড় হলেও পড়তে খারাপ লাগে নি।
চমতকার পোস্ট।
ধন্যবাদ।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:১২

হাবিব বলেছেন: কৃতজ্ঞতা জুনায়েদ ভাই

১৭| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৮

দেবদাস বাবু বলেছেন: ইশ!!!!!! স্যার যাওয়ার পূর্বে জানাতেন আমারও অংশগ্রহন করতাম।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:১৩

হাবিব বলেছেন: আমার বাসা টাঙ্গাইলেই, ইচ্ছা করলেই যেতে পারি। আপনি যেতে চাইলে বলবেন, আপনাকে রাস্তা চিনিয়ে দেব

১৮| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর। ২/৩টি জমিদার বাড়ি দেখি একনও মনোলোভা হয়ে দাড়িয়ে আছে।

দেখতে ভীষণ সুন্দরী।

এককালে অনেক জমিদার ছিল টাঙ্গাইলে।+++++++++++

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:১৫

হাবিব বলেছেন: টাঙ্গাইলের মতো এতো জমিদার মনে হয় বাংলাদেশের আর কোথাও ছিল না। অলোয়া জমিদার বাড়ি ছাড়া অন্যগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই জমিদার বাড়িটি কেন রক্ষনাবেক্ষণ করা হচ্ছে না আমি জানি না।

১৯| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৪

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এক জীবনে মনে হয় কিছুই দেখা হলো না, এখানে শুধু মাত্র পাকুটিয়া আর বালিয়াটি দেখা সম্ভব হয়েছে।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:১৬

হাবিব বলেছেন: ভাইয়া, আপনার দাওয়াত রইলো জমিদার বাড়িতে। দেখতে আসবেন সময় করে।

২০| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৭

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: শোকেসে রাখলাম, পরে হয়তো কাজে লাগবে।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:১৭

হাবিব বলেছেন: শোকেসে রাখলেন যখন তখন আসবেন আশা করি

২১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: দারুণ পোস্ট দিয়েছেন হাবিব স্যার! পরিশ্রমী পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। শুধু ধনবাড়িরটা দেখা হয়েছে। যদিও আমার বাড়ি আপনার পাশের জেলায়ই তবুও সময়সুযোগের অভাবে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো দেখার সুযোগ হয়নি। আপনার পোস্ট পড়ে দেখার আগ্রহ জাগল। সময় করে একদিন বেরিয়ে পড়ার ইচ্ছে আছে।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৮

হাবিব বলেছেন: অবশ্যই আসবেন ভাইয়া। আমার জেলায় আপনাকে স্বাগতম। আপনার বাড়ি কোন জেলায়?

২২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৪

শিখা রহমান বলেছেন: পোস্টটি কিন্তু তেমন দীর্ঘ মনে হয়নি পড়ার সময়ে। চমৎকার বর্ণনা আর ছবি।

করোটিয়ার জমিদার বাড়ির নাম জানলেও বাকী গুলোর সাথে পরিচিত ছিলাম না। শ্রী শ্রী রাঁধা কালাচাঁদ মন্দির, আতিয়া মসজিদ, নবাব প্যালেস ও মহেরা জমিদার বাড়ি খুব ভালো লেগেছে।

তথ্যবহুল ও পরিশ্রমী পোস্টটার জন্য ধন্যবাদ।
শুভকামনা সতত প্রিয় ব্লগার।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১২

হাবিব বলেছেন: প্রিয় শিখা আপু, দেশে আসলে বেড়াতে আসবেন। নিজ চোখে দেখলে আপনার আরো বেশি ভালো লাগবে। করটিয়া আর অলোয়া জমিদার বাড়ি বাদে বাকীদের প্রেমে পরবেন আমি নিশ্চিত। আর হ্যাঁ, সরকারী ছুটির দিনে আসলে নাগরপুর জমিদার বাড়ি দেখতে পারবেন না কিন্তু।

২৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: একা আইসেন না আবার। সুরভী আপু আর পরীকেও নিয়ে আসবেন .........


আপনার বাড়ি কি টাঙ্গাইল?

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৪

হাবিব বলেছেন: জ্বী ভাই, আমার স্ত্রী শ্বশুর বাড়ি এবং আমার শ্বশুর বাড়ি উভয়ই টাঙ্গাইল

২৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এবং অবৈধ দখলদারদের কল্যানে সব জমিদার বাড়ীর অবস্থাই মোটামুটি কাহিল বলেই জানতাম। তবে, আপনার দেয়া ছবিগুলো দেখে তো ভালোই মনে হলো।

ভালো পোষ্ট। :)

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৭

হাবিব বলেছেন: অলোয়া জমিদার বাড়ি রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে কাহিল আর করটিয়া জমিদার বাড়ি দখলের কবলে পড়ে কাহিল। বাকিগুলো এখনো চির যৌবনা..........

২৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: রীতিমত টাঙ্গাইল জমিদার বাড়ি আর্কাইভ !!!

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৭

হাবিব বলেছেন: হা হা হা হা ....। নিজ চোখে দেখে যান না এসে

২৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৫

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

টাঙ্গাইলে এত কিছু?
সুন্দর লিখেছেন। টাঙ্গাইলে যাওয়া দরকার।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৯

হাবিব বলেছেন: জ্বী ভাই, টাঙ্গাইলেই এইসব জমিদার বাড়ি। আপনাকে আমার জন্মস্থান জেলায় স্বাগতম জানাই অগ্রিম

২৭| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪১

এমজেডএফ বলেছেন: আপনি কবিতা, গল্প, ফিচার বিভিন্ন বিষয়ে লিখেন। আপনার কিছু কিছু গল্প পড়েছি। লেখা ভালো লেগেছে, সময়ের অভাবে মন্তব্য করা হয় নাই। আমি আবার এক-দুই অক্ষরে মন্তব্য করতে পারি না :(

যাই-হোক, এখন জমিদার বাড়ি পরিদর্শন পোস্টের কথায় আসি। প্রথমেই আমাদেরকে একদিনের সুন্দর একটি ভ্রমণ প্যাকেজ উপহার দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

এই পোস্টে যা ভালো লেগেছে:
● লেখাটি একটু বড় হলেও একদিনের ভ্রমণ প্যাকেজ হিসাবে সবগুলো জমিদার বাড়ির বর্ণনা একই পোস্টে দিয়েছেন।
● জমিদার বাড়ির বর্ণনা ঠিক ততটুকু দিয়েছেন, যতটুকু আমাদের মতো সাধারণ পাঠকের জানলে চলবে।
● আলাদা আলাদাভাবে লিখে সবগুলোর ছবি দিয়েছেন - বেশিও নয় কমও নয়।

এই পোস্টে যা থাকলে আরো ভালো হতো:
● টাঙ্গাইলের একটি মানচিত্র! এটি থাকলে আপনার লেখা অনুসারে কোন বাড়ি থেকে কোন দিকে যাচ্ছি বুঝতে সুবিধা হতো।
● কিছু কিছু জমিদার বাড়ি এখন স্কুল-কলেজ-অফিস হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। সেখানে আমাদের মতো বহিরাগত দর্শনার্থী গিয়ে কিভাবে কী দেখবে সে ব্যাপারে কিছু বুদ্ধি-পরামর্শ দিলে ভালো হতো।
● তথ্যসূত্র 'ইন্টারনেট, গুগল' লেখলে লেখার গুরুত্ব কমে যায়। কারণ পেজবুক, মিথ্যা, গুজব এগুলোও ইন্টারনেটের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশ সম্পর্কিত তথ্য সম্ভব হলে বাংলাপিডিয়া থেকে নেবেন এবং সেক্ষেত্রে তথ্যসূত্র 'বাংলাপিডিয়া' উল্লেখ করবেন।

টাঙ্গাইলের স্থানীয় লোকেশান সম্পর্ক আমার ধারণা নেই। তারপরেও আপনার লেখা পড়ে এবং কিছুটা অনুমানের ওপর ভিত্তি করে একটি মানচিত্র এখানে দিলাম।



লেখাটি প্রিয়তে রাখলাম। সুযোগ হলে একদিন জমিদার বাড়ি দর্শনে চলে আসবো। আজকে এই পর্যন্ত। ভালো থাকুন, শুভকামনা রইলো।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৮

হাবিব বলেছেন:




প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনার সুন্দর বিশ্লেষণমূলক মন্তব্যের জন্য। সামুতে যে কয়জনের মন্তব্য ভালো লাগে সেখানে আরো একজনের নাম যুক্ত করলাম আপনার মন্তব্য দেখে।


ভাইয়া, আপনার ম্যাপের ধারনা আমার কাছে চমৎকার লাগলো। আপনার সংযোজনে পোস্ট পূর্ণতা পেল। ম্যাপ অনেকটাই ঠিক আছে। (১) পাকুল্যা (২) মহেড়া (৩) করটিয়া (৪) সন্তোষ (৫) অলোয়া (৬) আতিয়া (৭) দেলদুয়ার (৮) পাকুটিয়া। এইখান থেকে নাগরপুর আর বালিয়াটি প্রায় সমান দূরত্বের। সমস্যা হলো দুইটা দুইদিকে। একদিকে ঘুরতে চাইলে যে কোন একটা স্কীপ করতে হবে। আর নাগরপুর জমিদার বাড়ি আমি ফ্লো-চার্টে রাখিনি কারণ সরকারী ছুটির দিনে এখানে প্রবেশ করা যায় না। এখানে একটি মহিলা কলেজ হওয়ায় কলেজ ছুটির পরে কিংবা কলেজ শুরুর আগে যাওয়ার অনুমতি নেই। শুধুমাত্র মহেড়া জমিদার বাড়ি এবং ধনবাড়ি নবাব প্যালেসে প্রবেশের জন্য ফি দিতে হয় যথাক্রমে ৮০ ও ১০০ টাকা করে। মহেড়া জমিদার বাড়িতে সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত অবস্থান করা যায়। আপনার মন্তব্যের পরামর্শ অনুযায়ী সময় করে আরো তথ্য সংযোজন করা হবে ইনশাআল্লাহ।

তথ্যসূত্র ইন্টারনেট দেওয়ার আসলেই কোন প্রয়োজন ছিল না। কারন এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট জমিদার বাড়ির ফলকে লেখা রয়েছে।

টাঙ্গাইলে আসলে অবশ্যই জানাবেন। সুযোগ থাকলে আপনার ভ্রমনে সঙ্গী হওয়া যাবে।

২৮| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:২৩

মলাসইলমুইনা বলেছেন: সন্তোষ ট্রফি এখনো ভারতের জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার নাম । যে টুর্নামেন্টে প্রদেশগুলোর টিম অংশগ্রহণ করে ।পুরো ভারত জুড়েই এটা ফুটবলের অন্যতম প্রতিযোগিতা । স্যার মন্মথ রায় এই ট্রফিটা দিয়েছিলেন ভারতীয় ফুটবলের প্রসারের ১৯০০ সালের শুরু দিকে । এই প্রতিযোগিতার সাথে সন্তষ মানে টাঙ্গাইলের নাম তাই জড়িয়ে আছে এখনো।

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬

হাবিব বলেছেন: বাহ .......... নতুন তথ্য জানলাম আপনার থেকে।।। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

২৯| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২

জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার! জমিদার পিডিয়া বললে ভুল বলা হবেনা।
সংগ্রহে রাখার মতো সুন্দ একটি লেখা।

১০ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০০

হাবিব বলেছেন: সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । আশা করি ভালো আছেন।

৩০| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
পরিশ্রমী পোষ্ট, সরাসরি প্রিয়তে।
উঠেএসেছে টাঙ্গাইলের এক সমৃদ্ধ ইতিহাস
এর অনেকগুলিই এখন জনহিতকর কাজে
ব্যবহৃত হচ্ছে শুনে ভাল লাগল ।

নব বর্ষের শুভেচ্ছা রইল

১০ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১

হাবিব বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম। অনেকদিন পর ব্লগে আসলাম, কেমন আছেন আপনি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.