নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তুমি কেমন করে গান করো হে গুনী, আমি অবাক হয়ে শুনি, কেবল শুনি ।।

ঠাকুরমাহমুদ

sometimes blue sometimes white sometimes black even red, even golden ! yes dear - its me - i am sky ! color your life, than your life will be colorful

ঠাকুরমাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৭১ এর একদিন

১১ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:২৮





- গল্ফ আলফা, গল্ফ আলফা - চার্লি সিয়েরা ওভার।
ঝিঝি পোকার শব্দ সহ টুট টুট টু - - - শব্দ ছাড়া রেডিওতে অপর প্রান্তে কারো জবাব না পেয়ে মাইক্রোফোনে অন্ধকার নিঃশব্দ রাত চিরে আবারও শোনা যায়
- গল্ফ আলফা, গল্ফ আলফা - চার্লি সিয়েরা ওভার। অপর প্রান্ত থেকে এবার ভারি কন্ঠে উত্তর আসে -
- চার্লি সিয়েরা, রজার।
- গল্ফ আলফা নোট টু দ্য লোকেশান প্লিজ -
- গো অ্যাহেড চার্লি সিয়েরা।
- ফ্রম আশুগঞ্জ মেঘনা রেলওয়ে ব্রিজ। ইস্ট। থ্রি ও ক্লক। থ্রি নট মাইল। সাউথ ইস্ট বাঙ্ক। লালপুর।
- কপিড। ওভার এন্ড আউট।
- রজার। “চার্লি সিয়েরা যেই লোকেশান দিলেন এটি মেঘনা নদীর পাড়ে একটি অন্ধগ্রাম। লালপুর”।

গভীর কালো রাত আর মেঘনা নদীর গভীর ঘন কালো পানি চিরে খুবই ধির স্থির ভাবে অন্ধগ্রাম লালপুর নাওঘাটে যে বোটটি ভিড়ে এটি কোনো সাধারণ বোট না, একটি সুসজ্জিত গানবোট। বোটে লাকি সেভেন নামে চার্লি সিয়েরা সহ সাত জনের একটি টিম। সাথে আরোও দুইজন আছেন, তাদের নাম নুরুদ্দি আর আরজুদ্দি।

জুম্মা ঘরের ইমাম আবুল কাশেম হুজুরকে ভোর সকালে উঠতে হয়, ফজরের নামাজের জন্যও কাজের জন্যও। মসজিদে ইমামতি করে পরিবারের আট সদস্য নিয়ে চলতে তাঁর বেশ কষ্ট হয় বিধায়, ঘরে চিড়া মুড়ি খই তৈরি করে বিক্রি করেন। একই সাথে ভোর সকালে উঠতে হয় নারায়ণ ঘোষকেও। তিনি পূজার কাজ শেষ করেই তাঁর দুই পুত্র নিয়ে এলুমিনিয়ামের ছোট টোপা বালতি আর কলস নিয়ে গ্রামের কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুধ সংগ্রহ করেন। গরুর দুধ থেকে তৈরি করেন দই। লালপুরের নারায়ণ দা’র দই। কৃষক জেলে নিয়ে নিতান্ত সাধারণ ও নিরহ মানুষজনের বসবাস অন্ধগ্রাম লালপুর। সপ্তাহে একদিন মাত্র বাজার বসে - শুক্রবার হাটবার। এছাড়া আর কোনো বাজার নেই।

ফজরের সময় সাধারণত কোনো মুসল্লি আসেন না। প্রায় প্রতিদিন জুম্মাঘরে ইমাম আবুল কাশেম একা ফজরের নামাজ শেষ করেন। আজ ইমাম সাহেব তাঁর দুই পুত্র জালাল আর আলাল’কে নিয়ে ফজরের নামাজে জুম্মাঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে উঠোনে নামেন - এদিকে নারায়ণ ঘোষও তাঁর দুই পুত্র শিবু আর কার্তিক’কে নিয়ে উঠোনে নামেন - এখনও অন্ধকার ফজরের আযান হয়নি। দুই পরিবারের সামনেই খাকি পোশাকে চকচকে কালো শীতল সাব মেশিনগান আর চোখ ধাঁধানো আলোর এভারেডি টর্চ হাতে পাকিস্তান মিলিটারি! চার্লি সিয়েরা দিয়াশলাই জ্বালিয়ে সিগারেট ধরাতে খানিক সময়ের জন্য তার মুখ পরিস্কার দেখা যায়। ***ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ - রেডিও কোড চার্লি সিয়েরা। ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ হাসি মুখে পরিস্কার বাংলায় বলে উঠেন - “কেমন আছো নারায়ণ? খাকি পোষাকে পাকিস্তান মিলিটারির সাথে বেমানান দুইজন সহচর, লোভাতুর চোখে লুঙ্গি পরিহিত নুরুদ্দি আর আরজুদ্দি।

সেদিনের ভোর হবার আগেই দুঃখিনী মা বাংলাদেশের দুঃখিনী আঁচল মেঘনায় পনেরোটি ক্ষত বিক্ষত লাশ ভাসতে থাকে, অবহেলায়। কে হিন্দু কে মুসলমান তাঁর বিবেচনা না করেই মেঘনা তাঁর বুকে পরম মমতার লাশগুলো আকড়ে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। লালপুরের নিরহ মানুষ জানতেও পারেনি দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। নারায়ণ ঘোষ আর ইমাম আবুল কাশেমের পরিবার হত্যা দিয়ে লালপুরে হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। সময় ২৫শে মার্চ ১৯৭১।



বিশেষ দ্রষ্টব্য: ১৯৭১ এর একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে সামহোয়্যারইন ব্লগে আজ আমার ১৭১ নাম্বার পোস্ট।

ঋণ স্বীকার: মুক্তিযোদ্ধা ডঃ এম এ আলী সাহেব। যিনি লালপুর বাইশ মৌজা সহ ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও মমতাময় মায়ের আঁচল আর মায়ের চোখের জল মেঘনা ও তিতাস নদীর সাথে জড়িত।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যরাইন ব্লগ।
ছবি: ফটোশপে তৈরি করা




মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৪৪

রানার ব্লগ বলেছেন: স্মৃতি গুলো লিখে ফেলেন, কিছুটা হালকা হবেন সেই সাথে তরুনদের প্রতি আপনার যে দায়বদ্ধতা তা কিছুটা কমবে।

১১ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



আমি লিখতে চেষ্টা করছি। আশাকরি জীবদ্দশায় কিছু ঘটনা লিখে যেতে পারবো। দায়বদ্ধতা - আপনি সঠিক বলেছেন। দায়বদ্ধতা আসলে দেশের প্রতি। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

২| ১১ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৩

কুশন বলেছেন: আপনি মুক্তি যুদ্ধ করেছেন?!
দেশের জন্য কিছু করা বিশাল ব্যাপার।
তবে বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করার পর দেশের জন্য আর কিছু করেনি। যা দুঃখজনক। সেই ৭১ নিয়ে তাঁরা আজও পড়ে আছে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর হয়ে গেছে। এই ৫০ বছর তাঁরা হাত পা নিয়ে শুধু বসেই থাকলো।

১১ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




না, আমি মুক্তিযুদ্ধ করিনি। যুদ্ধ করার মতো বয়স আমার ছিলো না। তবে গর্বের সাথে বলতে পারি দেশের জন্য কাজ করেছি এখনও করছি। যুদ্ধ আমার নিজ চোখে দেখা। সাথে থাকুন, যুদ্ধ নিয়ে আশা করি বেশ কিছু লেখা ও নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো।

মুক্তিযোদ্ধারা বসে থাকেন নি। যারা বসে থাকার যারা লুটপাট করার তারা আজীবন তাই করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা অগ্নি পরিক্ষা দিয়ে পরিচয় দিয়েছেন তাঁরা এই দেশের এই মাটির সন্তান।

৩| ১১ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: বেদনাদায়ক স্মৃতি এবং সকরুণ অভিজ্ঞতার সাথে সাথে মানবতার অপমানের ও সাক্ষী আপনি স্যার।

যদিও সঠিক জানিনা,তারপরেও জিজ্ঞাসা - মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি বা অভিজ্ঞতার আলোকে কোন বই কি আপনি লিখেছেন বা কোন ইচছা আছে কি?

যদি বই লিখে থাকেন ,তাহলে বইয়ের নাম দয়া করে বলবেন।

১১ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



প্রিন্টিং প্রেস হতে ছাপার অক্ষরে আমি কোনো বই লিখিনি বা প্রকাশ করিনি, এক সময় সাপ্তাহিক যায়যায়দিন এ লেখালেখি করেছি এখন সামহোয়্যারইন ব্লগ সহ কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে আর নিজস্ব একটি ফ্রি ওয়েবে লিখি।

মোহামমদ কামরুজজামান ভাই, আমাকে স্যার বলতে হবে না। চাকরিগত জীবনে আমি অনেক কে স্যার বলেছি আর অনেকে আমাকে স্যার বলেছেন, ব্লগে আমি আপনাদেরই একজন। আমাকে ভাই বললেই আমি খুশি। ১৯৭১ এ মানুষ যেই কষ্ট করেছেন তা লিখে বলে শেষ করা সম্ভব না। মুক্তিযুদ্ধ আমার নিজ চোখে দেখা। আমি নিজের জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।


৪| ১১ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১

আহমেদ জী এস বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ,




৭১ এর স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা। শুরুটা সুন্দর, শেষটাও।
মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অনেক কথাই বলা হয়। আসল কথাটি মনে হয় কেউ বলেনা। মুক্তিযোদ্ধাদের বিপুল অংশ নিয়ে আছেন সাধারণ জনতা যার বেশির ভাগই গ্রামের, চাষী, মজুর, পুলিশ, তৎকালিন ইপিআর, আর ছাত্ররা। এদের একটিই লক্ষ্য ছিলো দেশকে পাকিস্তানী শোষন থেকে উদ্ধার করে স্বাধীন করা । এর বাইরে তাদের সামনে আর কোন উদ্দেশ্যই ছিলোনা। কোন ধরনের উদ্দেশ্যই তাদের সামনে তুলে ধরা হয়নি। দেশ গঠনে যে তাদেরও অংশগ্রহন করতে হবে এমন কোনও ইঙ্গিত কোথাও থেকে তারা পায়নি। তাই দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তারা কেন চুপচাপ বসে ছিলো এমন কথা প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়, যা আদৌ সঠিক নয়। দেশ স্বাধীন করে দিয়ে তারা যে যার কাজে চলে গেছে। কোন রাজনৈতিক প্রজ্ঞা তাদেরকে কোনও কাজে লাগায়নি, লাগতে বলেও নি। লাগানো যে যায়, তার বোধও কারও হয়নি।
তবে বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধা যারা শহুরে এবং শিক্ষিত তারা এ গরজটা অনুভব করেছেন। কিন্তু সে গরজের গোড়ায় পানি ঢালার কাজটিতে কোনও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানই আগ্রহ দেখায়নি । তাই তারা কাজ করে গেছেন বিচ্ছিন্ন ভাবে , নিজের মতো করে। শেষমেশ যা হয়েছে, তাদের সামনে রেখে সুযোগ সন্ধানীরা সব ব্যক্তিগত ফায়দা কুক্ষিগত করেছেন।

উচিত ছিলো একটি দুরদৃষ্টি সম্পন্ন "ভিশন" ও "মিশন" এর। যা তৎকালীন সরকার ও জানতেন কিনা সন্দেহ। ফলে দেশ প্রেমের জায়গায় নিজ প্রেমের রাস্তা সুগম হয়েছে এবং দিনে দিনে তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। তাই পঞ্চাশ বছর পরেও আমাদের কাঙ্খিত মুক্তি মেলেনি।
মিলবে কিনা তাও জানিনা! আমরা শুধু ৭১ এর স্মৃতির জাবর কেটেই বাঁচবো...................

১১ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



আহমেদ জী এস ভাই, অভিভাবকহীন পরিবার, অবিবেচক অভিভাবক, নীতিহীন অভিভাবক, অজ্ঞ অভিভাবক, স্বার্থপর অভিভাবক হলে একটি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হয় - যেই ক্ষতি কখনো, কখনো পূরণযোগ্য নয়। আমাদেরও কি সেই একই অবস্থা নয়!

অর্থনীতি, রাজনীতি, আইন, প্রশাসন, দক্ষতা, যোগ্যতা, ভিশন, মিশন, প্ল্যানিং, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন এসব বিষয়ে আসলে আমি আপনি আলোচনা থেকে বিরত থাকলে ভালো থাকবো। তাই এই বিষয়ে ফাইল ক্লোজ।

আহমেদ জী এস ভাই, সমগ্র বিশ্ব যেখানে সান ফ্লাওয়ার চাষ হচ্ছে তৈলের জন্য আমরা এখনও এটিকে ফুল হিসেবে চিনি! সরিষাক্ষেতকে সিনেমা নাটকের নাচ গানের স্যুটিং স্পট হিসেবে ভাবি! ভাবতে পারেন কতোবড় আহাম্মক! এই দেশের সাধারণ মানুষ আজোও জানেন না আমাদের সম্পত্তি কি এবং কোথায় যদি জানতে পারতেন বুঝতে পারতেন তাহলে লাখে লাখে কম্পিউটার সাইন্সে না পড়ে কৃষিবিজ্ঞানে পড়ে দেশের সুবিধা এবং নাগরিক সুবিধা বাড়িয়ে নিতেন।

মানুষের আসল মুক্তি মানসিক মুক্তি যা আমরা আজও পাইনি। খাঁচাবন্দি পাখির মতো - খাঁচাবন্দি মানুষ হয়ে বেঁচে আছি। ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কৃষিখাত ও কৃষি উন্নয়ন নিয়ে আমাদের বেশ কিছু আর্টিকেল লেখা অত্যন্ত জরুরী মনে করছি।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৩৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ৭১ নিয়ে লিখতে পারেন। মহান ৭১ আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

১১ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




প্রিয় সেলিম আনোয়ার ভাই, আমি অবশ্যই লিখবো। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। আপনি আমার পাশে আছেন আমি মনে করবো আমার পাশে একজন যাদুকর আছেন - কবিতার যাদুকর। কথামালায় যিনি অত্যন্ত শক্তিশালী একজন মানুষ। আপনাকে ধন্যবাদ।

৬| ১১ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সত্য কাহিনী অবলম্বনে লেখা গল্পটি পাঠে মুক্তি যুদ্ধের প্রথম দিকের একটি মর্মান্তিক
কাহিনীর বিবরণ শুনে মনটা ব্যথায় ভরে গেল।

হ্যাঁ ঐসময় লালপুরকে পাকবাহিনীর কবজায় নেয়া খুব জরুরী ছিল। কারণ ঐখান দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা
যাওয়ার জন্য নৌকাপথে অনেক শটকাট পথ খাল বিল ছিল ।

এপ্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে আমাদের সমবয়সি একটি গ্রুপ সেই লালপুর হয়ে সীমান্ত পাড়ি
দিয়ে ভারতে গিয়ে মুক্তি যুদ্ধের প্রশিক্ষন নেয়ার কথা মনে পড়ে যায়। লোকমুখে শুনেছিলাম ভারতের
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার কাছাকাছি হতে তিতাস নামে একটি নদী প্রবাহিত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার
আখাউড়ার কাছ দিয়ে প্রবেশ করে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে ভৈরব-আশুগঞ্জের সীমানা ঘেঁষে মেঘনার
সাথে মিশেষে। এ নদী পথেই ভারতের ত্রিপুরায় যাওয়া নাকি আমাদের জন্য সহজ ও কাছের হবে।

এদিকে আমাদের এলাকার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কিছুদিন আগেই সীমানা পাড়ি দিয়ে ত্রিপুরায়
আগরতলায় অবস্থান করছিলেন । তিনিই লোক মারফত নদীপথে ব্রাম্মনবাড়িয়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে
নৌপথে কিভাবে পাক বাহিনীর দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়া যায় সেসব কথা বিস্তারিত বলে লোক পাঠিয়েছেন
এলাকায় । একই সময়ে আমাদের সমবয়সি বন্ধুদের প্রস্তুতি চলছিল সেখানে যাওয়ার তরে। নিদৃষ্ট দিনে
আমাদের গ্রুপটি একটি স্থানীয় গয়না নোকায় দুইজন মাঝি, সাথে গাইডকে নিয়ে আল্লা খোদার নাম
স্মরন করে মা বাবা দাদা দাদীর চড়ন ছুয়ে সালাম করে তাদের চোখের জলে ভিজা দোয়া নিয়ে রাতের
আঁধারে যাত্রা করি শুরু। মুক্তি যুদ্ধে গিয়েছি এ কথা জানা জানি হলে বিপদ নেমে আসবে গ্রামে বসবাসকারী
অন্য সকলের তরে, একথা বিবেচনাতেই সকলের অগোচরে রাতের আঁধারে যাত্রা হয় শুরু। এমনিতেই পরে
কিছুটা জানাজনি হওয়ায় সকলকে নীজ বাড়ী ঘর ছেড়ে আরো দুরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন গ্রামে দুর সম্পর্কের
আত্মিয়ের বাড়ীতে আশ্রয় নিতে হযেছিল দির্ঘ নয়মাস ধরে। নীজ এলাকাতেই শরনার্থী সেজে নীজের
বাড়ীঘর ছেড়ে, দু:খ দুর্দশা কষ্ট ভোগ করা সে যে কতই করুন তা এ প্রজন্ম বুজিবে কেমন করে।

যাহোক, রাতের আঁধারে সুতিয়া নদী ধরে এগিয়ে গিয়ে পুরাতন ব্রম্মপুত্র নদীর গতিপথ বেয়ে টুকের কাছে গিয়ে
পড়ি মেঘনার এক শাখা নদীর বুকে। সেখান হতে ছোট (নাম মনে করতে পারছিনা) নদী বেয়ে কিছুদুর গিয়ে
ভৈরবের উত্তর দিক দিয়ে গিয়ে পৌঁছে যাই মেঘনার কুলে । সেখানে নিভৃত এক গ্রামে নৌকা নোঙ্গর করে ।
গাইড খবর নেয় মেঘনা পাড়ি দিয়ে কিভাবে যাওয়া যায় তিতাস নদীতে নিরাপদে। দিনমান অপেক্ষায় থাকি
রাতের আঁধারের তরে। গাইড স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে যেখানে আছি সেখান হতেই
মেঘনা নদী পাড়ি দিলে উপাড়ে মিলবে লালপুর নামে একটি গ্রাম । সেখানে গেলে ছোট খাট খালবিল নদী
পেরিয়ে পৌছেঁ যাওয়া যাবে তিতাস নদীতে ।

তিতাস নদী বেয়ে উজানে মাইল বিশেক পারি দিলেই নাকি পৌঁছে যাওয়া যাবে ত্রিপুরা সীমান্তে।তবে নিরাপদে
মেঘনা পাড়ি দেয়াই নাকি সমস্যা, কারণ এদিকে নাকি পাকিস্তানি গানবোটের চলাচল রয়েছে দিনে রাতে। যে
কোন সময় নাকি ভয়ানক বিপদ ঘটে যেতে পারে । যাহোক বিপদ মাথায় নিয়েইতো রাস্তায় নেমেছি,এতকিছু
চিন্তা না করলেও চলে । তাই সন্ধার আঁধার নামার সাথে সাথেই মাজি মাল্লা নিয়ে আল্লার রহমতে নিরাপদে
মেঘনা পাড়ি দিয়ে পৌঁছে গেলাম লালপুরে । মানুষের কাছে শুনা গেল কাছেই নাকি বাজার , সেখানে নাকি
গুর, মুরী পুটি মাছের সিধল শুটকী বেশুমার মিলে।গয়না নৌকার মাঝিদের সাথে চুক্তি ছিল তারা নিরাপদে
আমাদেরকে মেঘনা নদী পার করে দিবে।এখানে এসে সস্তায় ভাল সিধল পুটি শুটকীর খবর শুনে বায়না ধরল
আমাদের সাথে তারা দিন কাটাবে এখানে নিরাপদ খালের বাঁকে। পরদিন তারা এখান হতে যত পারে সিধল
শুটকি কিনে নিয়ে যাবে নীজ এলাকাতে বানিজ্যের তরে।

আমাদেরো অবশ্য প্রয়োজন ছিল লালপুর থেকে নতুন বিশ্বস্ত মাঝি মাল্লা জোগার করে বাকী পথ পারি দেয়া
নিরাপদে । কি আর করা, মেনে চল, চলো সাথী চল একসাথে, ঘর বেধেছি যে আমরা পথে,অপেক্ষায় থাকা
ছাড়া গতি কি আর আছে।আওয়ামী নেতার দেয়া তালিকায় থাকা আশুগঞ্জ, নবীনগর থানার (এখন উপজেলা)
স্থানীয় লীগ নেতাদের সাথে দিনের বেলায় কথাবার্তা বলে গাইড মাঝি মাল্লাসহ ছইওয়ালা নৌকা যোগার
করে ফেলে। যাত্রা হলো শুরু , লালপুর হতে ছোট খাল বেয়ে বাইশমৌজা গ্রমের ভিতর দিয়ে এগিয়ে চলল
নৌকা তর তর করে। এখানে যে এত খালবিল তা চোখে না দেখলে বুঝা যেতোনা জীবনেও এ পথে নোকায়
না চললে। মাঝির কাছে শুনেছি ব্রাম্ননবাড়ীয়ার বিভিন্ন থানার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কতেক নদীর সুন্দর
সুন্দর নাম যার মধ্যে এখনো মনে পড়ে কিছু নাম যথা; তিতাস, মেঘনা, আউলিয়াজুরী, কালাছড়ি, খাস্তি,
ছিনাইহানি, ডোলভাঙ্গা, পাগলা, পুটিয়া, বলভদ্র, বলাক, বালিয়াজুড়ি, বালুয়া, বিজনা, বুড়ি, বেমালিয়া,
মধ্যগঙ্গা, রোপা, লংঘুন, লাহুর, সোনাই, হাওড়া, হুরুল প্রভৃতি । যাহোক নবীনগর থানাধীন বিটঘর
গ্রামের ভিতর দিয়ে ছোট এক নদীর মত খাল বেয়ে নৌকা এগিয়ে চলে আমাদেরকে নিয়ে।

মাইল কয়েক গিয়ে এক জায়গায় খালের পারে নৌকা গিয়ে থামে। স্থানীয় গাইড বলে নৌকা আর যাবেনা,
সামনে নাকি তিনলাখপুর, সেখানে কুমিল্লা থেকে সড়ক গিয়েছে ব্রাম্মনবাড়িয়ার দিকে। মাঝে ব্রীজ, সেখানে
নাকি পাকি সৈন্য থাকতে পারে । তাই ভাল করে খুঁজ নিয়ে এগুতে হবে ।

গাইড নৌকা হতে নেমে সামনে এগিয়ে ঐ সড়কের ডাইনে বায়ে ভাল করে খবর নিয়ে ঘন্টা দুয়েক পরে
সিগনাল দিল নৌকা নিয়ে এগুবার তরে । বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে নৌকা এগিয়ে চলল সামনের পানে ।
নিরাপদেই পাড়ি দেয়া গেল সে বিপদসংকুল জায়গা । দিন মান চলে নৌকা গিয়ে পৌঁছল কসবা সিমান্তের
কাছে । সেখান হতে হাটা পথে গন্তব্যে যেতে হবে । বাকী গল্প সে আরো বড় ইতিহাস সময় সুযোগ পেলে
বলব না হয় পরে ।

যাহোক, সত্য কথা অবলম্বনে রচা আপনার গল্প পাঠে মনে জেগে উঠা কিছু কথা বলে গেলাম এখানে।

ঐতিহাসিক তথ্য সমৃদ্ধ লেখাটি গেল প্রিয়তে ।

শুভেচ্ছা রইল

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৪৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



ডঃ এম এ আলী ভাই, মেঘনার দুই কূলে অবস্থিত ভৈরব বাজার ও আশুগঞ্জ বাজার নদীপথে কিশোরগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ ও সিলেট বরিশাল সহ সমগ্র দেশের সাথে যোগাযোগ থাকার কারণে ভৈরব বাজার, আশুগঞ্জ বাজার ও কিশোরগঞ্জ বাজার হতে চাল ডাল গম সরিষা তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান আভ্যন্তরীণ রপ্তানী রুট হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

মেঘনা নদী লালপুর, বাইশ মৌজা হয়ে তিতাসে মিলিত হয়েছে। তিতাস নদী গোসাইপুর, ভৈরব নগর, বৈরামপুর, কালিশিমা, সিন্দুরা, নাটঘর, ভাদুঘর ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে আখাউরা - ত্রিপুরা প্রায় সিমান্ত ঘেষে তিতাসের বিস্তার। মেঘনা ও তিতাস নদীর পাড় মাছ ও শুটকির দেশ।

ভাই সাহেব, ২৫শে মার্চ আশুগঞ্জ ও ভৈরব বাজারের পাকিস্তান মিলিটারির ব্যাকআপ একটি টিম চার্লি সিয়েরা ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ সহ সাত জনের একটি টিম লালপুরে অবস্থান নেয়। সাথে সহচর হিসেবে নরসিংদী এলাকার দুইজন নুরুদ্দি ও আরজুদ্দি রাজাকার ছিলো। এই নয়জনকে ৫ই এপ্রিল অতর্কিত হামলা করে ভয়ংকরভাবে হত্যা করে ইস্ট বেঙ্গলের মুক্তিযোদ্ধার একটি ছোট্ট দল। বাইশ মৌজা মেঘনা তিতাসের মোহনায় ও বড়াইল খারঘর পাগলী নদীতে এদের লাশ ফেলে দেওয়া হয়। (আমি পরবর্তীতে বিস্তারিত লিখবো)

এরই সাথে সাথে প্রতিশোধ নিতে ৭ই এপ্রিল ৩০ জন পাকবাহিনী ও ৬ জন রাজাকার সহ ব্যাকআপ টিম আসে লালপুর এবং ১৪ই এপ্রিল পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সামনা সামনি একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এটি আশুগঞ্জ - পাকবাহিনী যুদ্ধ নামে পরিচিত। উক্ত ৩৬ জনের একজনও বেঁচে ফিরতে পারেনি। সবগুলোকে মেরে মেঘনাতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। আমি বিস্তারিত লিখবো শুধু মন্তব্যে একটি বিশেষ ঘটনা লিখে যেতে চাইছি ৫ই এপ্রিল ও ১৪ই এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী টেঁটা বল্লম অলঙ্গা দিয়ে পাক সৈনিকদের যেভাবে গেঁথে ফেলে পরবর্তীতে পাকবাহিনী লালপুর বাইশ মৌজা ঘাটি না করে ভৈরব বাজারে অবস্থান নেয়। আশুগঞ্জ ও ভৈরব বাজার ১০ই ডিসেম্বর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকবাহিনী মুক্ত হয়।

মেঘনা তিতাস বহু রক্তের সাক্ষী। সেইসব দুঃখগাথা মাঝে মাঝেই মনে হয় তখন খুবই কষ্ট লাগে। কষ্ট লাগে স্বাধীন দেশটির এমন হবার কথা ছিলো না। কখনো এমন অসুস্থ একটি দেশ হবার কথা ছিলো না। দেশটি সত্যি সত্যি সোনালীি আশের দেশ সোনালী ধানের দেশ আর সোনালী মানুষের দেশ হবার কথা ছিলো।

ভাই সাহেব, আপনার তথ্যবহুল মন্তব্যর জন্য আমি আন্তরিকভাবে ঋণ স্বীকার করছি। এবং পোস্টে আপনার নাম উল্লেখ করছি। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

৭| ১১ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:০৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ২৫শে মার্চে কি গ্রামেও হামলা হয়েছিলো?
সেই কালো রাতে কাপুরুষ হায়নারা শহরেই তান্ডব চালিয়েছিলো বলেই ধারনা ছিলো আমার!!

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ২:২৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




মেঘনা ব্রিজের পশ্চিমে ভৈরব কিশোরগঞ্জ বেল্ট আর পূর্বে আশুগঞ্জ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বেল্ট মেঘনা ও তিতাসের কারণে পাকিস্তান মিলিটারির গানবোটের টহল সীমানা ছিলো। পাকিস্তান মিলিটারি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো। ২৫শে মার্চের আগে থেকেই হত্যা শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা সাধারণ জনগণ বুঝতে পারি ২৫শে মার্চের পর। আশুগঞ্জ ১০ই ডিসেম্বর পাক বাহিনী হতে মুক্ত হয় শেষ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। ( সময় ও সুযোগে আমি বিস্তারিত ধাপে ধাপে লিখবো)।

৮| ১১ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৭

অপু তানভীর বলেছেন: ২৫শে মার্চ কি গ্রামের দিকেও হামলা হয়েছিলো ? এই বিষয়ে তো খুব একটা লেখালেখি হয় নি । যতদুর পড়েছি ২৫শে মার্চের হামলা শহর কেন্দ্রিক ছিল ।

এই ধরনের পোস্ট আরও বিস্তারিত লেখার অনুরোধ রইলো !

সেই সাথে ডঃ এম এ আলীর মন্তব্য পড়ে চমৎকৃত হলাম । তাকেও অনুরোধ করবো সেও যেন এই বিষয়ের উপরে পোস্ট লেখে ।

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ২:৩২

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



মেঘনা ব্রিজের পশ্চিমে ভৈরব কিশোরগঞ্জ বেল্ট আর পূর্বে আশুগঞ্জ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বেল্ট মেঘনা ও তিতাসের কারণে পাকিস্তান মিলিটারির গানবোটের টহল সীমানা ছিলো। পাকিস্তান মিলিটারি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো।

২৫শে মার্চের আগে থেকেই হত্যা শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা সাধারণ জনগণ বুঝতে পারি ২৫শে মার্চের পর। আশুগঞ্জ ১০ই ডিসেম্বর পাক বাহিনী হতে মুক্ত হয় শেষ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। আমার জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা সময় ও সুযোগে আমি বিস্তারিত ধাপে ধাপে লিখবো।

আমেরিকার জাহাজ সমুদ্রপথে বাংলাদেশে আসতে পারেনি এটি আমাদের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করে। আমেরিকার জাহাজে যে পরিমাণ অস্ত্র গোলাবারুদ শেল ট্যাংক কামান ছিলো তাতে বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পারতো কিনা তা নতুন করে চিন্তা করতে হবে।

৯| ১১ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৩

কামাল১৮ বলেছেন: একাত্তরে মুক্তি যুদ্ধ সুরু হয় নাই মুক্তি যুদ্ধ সুরু হয় তারো অনেক আগে,বলতে গেলে ৪৭ থেকেই।স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হয়েছে কিন্তু মানুষের মুক্তির যে যুদ্ধ সেই যুদ্ধ এখনো চলমান।

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ২:৩৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আপনি সঠিক বলেছেন যুদ্ধ ১৯৪৭ থেকেই শুরু হয়েছে আমরা বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারলে পূর্ব পাকিস্তান না হয়ে শুরু থেকেই বাংলাদেশ হতো। ১৯৪৭-১৯৫২-১৯৬৪-১৯৭১ এতো এতো নিরহ মানুষ হত্যার পেছনে ছিলো তখনকার আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতা আর মুসলিম দেশ নামক দেশ গড়ার গাধা খচ্চরের চিন্তা।

১০| ১২ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কী ভয়ং্কর দিনগুলো ছিলো। আব্বার কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি। আব্বা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন :(

এমন আরও গল্প শুনতে চাই।
ভালো থাকুন

১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




বাংলাদেশের একটিই গৌরব বাংলাদেশ ভিক্ষা করে স্বাধীনতা আনেনি। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে দেশ স্বাধীন করেছে। আপনার আব্বার সুস্থতা কামনা করছি। ফি আমানিল্লাহ।

১১| ১২ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:১৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনারা যারা নিজের চোখে দেখেছেন মুক্তিযুদ্ধ তাদের অভিজ্ঞতা ও আমাদের জন্য সম্পদ। আপনাদের গল্পে কথায় উঠে আসুক সঠিক ইতিহাস। আর যারা যুদ্ধ করেছেন তারা তো জীবন্ত কিংবদন্তী ! সাধারণের দেখা আর তাদের দেখার পার্থক্য লেখায় সবসময় স্পষ্ট হয়, ইতহাসের দাঁয় থেকে কারো মুক্তি নেই। আপনার লেখায় ভালোলাগা রেখে গেলাম। ভালো লেগেছে এম এ আলী ভাইয়ের চমৎকার মন্তব্য ও।

১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ইতিহাস বিকৃত হয়। সময়ে সময়ে ইতিহাস লিখা হয় ইতিহাস বিকৃত হয়। কিন্তু দেশের প্রতি যাদের দায়ভার আছে তাঁরা এই ঋণ পরিশোধ করার চেষ্টা করেন। কেউ পারেন - কেউ পারেন না। তবে চেষ্টা করাটাও কৃতজ্ঞতা। আপনার চমৎকার মন্তব্যর জন্য রইলো অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১২| ১২ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৩৯

রাকু হাসান বলেছেন:

অনেক ধন্যবাদ জানলাম । যার ভেতর মানবিকতা নেই তার কিসের ধর্ম। হিন্দু মুসলিম সব একই । কেমন আছেন। ব্যস্ততায় যাচ্ছে দিন .,, শ্রদ্ধা রইল।

১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ন্যায় হচ্ছে ধর্ম আর অন্যায় হচ্ছে অধর্ম। - এটি আমার কথা। আমরা ভাবসম্প্রসারণ পড়েছি “অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে - তব ঘৃণা যেন তারে তৃণ সম দহে” পাকিস্তানী সেনা ও আমাদের দেশের রাজাকার সমান অপরাধী ছিলো। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৩| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৫৪

নীল আকাশ বলেছেন: ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ হাসি মুখে পরিস্কার বাংলায় বলে উঠেন - “কেমন আছো নারায়ন?
বড় ভাই দুইটা জিনিস বুঝতে পারিনি।
১) পরিস্কার বাংলায় বলা
২) নারায়ণকে চেনা
আবার সম্ভব হলে ফিরে আসবো এখানে। একটা বড় গল্পের প্ল্যান এসেছে মাথায়।

১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৪৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ হাসি মুখে পরিস্কার বাংলায় বলে উঠেন - “কেমন আছো নারায়ণ? খাকি পোষাকে পাকিস্তান মিলিটারির সাথে বেমানান দুইজন সহচর, লোভাতুর চোখে লুঙ্গি পরিহিত নুরুদ্দি আর আরজুদ্দি। - নারায়ণকে চেনার জন্য আমাদের দেশের কলঙ্ক ছিলো দুইজন। যাদের নাম যথাক্রমে নুরুদ্দি আর আরজুদ্দি। ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ নিতান্ত অল্প বয়সের ছেলে বয়স আনুমানিক ২৫-২৬ হবার কথা - সে এই বয়সেই ম্যানিয়াক টাইপের ছিলো। (আমি চার্লি সিয়েরা নিয়ে আরোও লিখবো)

টিভি নাটকে আমরা প্রচুর ভুল তথ্য পেয়েছি যাতে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ও ভুল উর্দূতে পাকিস্তান মিলিটারি কথা বলতে দেখেছি! বাস্তবে উর্দূ তাদের মাতৃভাষা সহ পাকিস্তান মিলিটারিতে অনেকে শুদ্ধ ও আঞ্চলিক বাংলা বলতে পারতেন। আরেকটি বিষয় পাকিস্তান মিলিটারি গ্রামকে গ্রাম চেনার অন্যতম মাধ্যম ছিলো আমাদের দেশের নুরুদ্দি আর আরজুদ্দির মতো লোকজন।

যুদ্ধের কিছু ঘটনা আছে যা এই সময়ের জন্য অর্থাৎ ২০২১ এর জন্য নয়। কখনো যদি দিন পাল্টায় আমি লিখবো। (আশা করি আপনি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন)

১৪| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:২১

শেরজা তপন বলেছেন: আশ্চর্য ঘটনা যুদ্ধের প্রায় অর্ধ শত বছর পর জানলাম- এমন একটা ঘটনা, যা ঘটেছিল ২৫শে মার্চে!!!!


অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ভাই ঠাকুর মাহমুদ ঘটনাটা শেয়ার করার জন্য। ভাল থাকুন

১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




পাকিস্তানিরা আরোও আগেই হত্যা সহ বাসা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুম করে দেওয়ার সাথে জড়িত ছিলো। আমরা বেকুব জাতি ২৫শে মার্চের পর বুঝতে পারি। আশুগঞ্জ ১০ই ডিসেম্বর পাক বাহিনী হতে মুক্ত হয় শেষ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। আমার জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা সময় ও সুযোগে আমি বিস্তারিত ধাপে ধাপে লিখবো।

আমেরিকার জাহাজ সমুদ্রপথে বাংলাদেশে আসতে পারেনি এটি আমাদের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করে। আমেরিকার জাহাজে যে পরিমাণ অস্ত্র গোলাবারুদ শেল ট্যাংক কামান ছিলো তাতে বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পারতো কিনা তা নতুন করে চিন্তা করতে হবে। এছাড়া চীন তৈরি ছিলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য বিচিত্র কারণে আর সম্ভব হয় না। অথচ চীন এখন আমাদের একটি মূল ব্যবসা কেন্দ্র।

আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৫| ১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:০৬

ইসিয়াক বলেছেন: আমি পোস্টটির গুরুত্ব বুঝি। পরে পড়বো বলে প্রিয়তে রেখেছি। কারণ এর মন্তব্য প্রতি মন্তব্য গুলিও অনন্য সাধারণ।

অঃ টঃ আপনি (সম্ভবত মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র এম এল এ শহীদ) শহীদ মসীয়ূর রহমানের নাম শুনেছেন? যাকে যশোর ক্যান্টনমেন্টে যুদ্ধচলাকালীন সময়ে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করে হত্যা করা হয়।

১৩ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



শহীদ মসিয়ূর রহমান সম্পর্কে আমি জানি। তাছাড়া উনার সম্পর্কে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৬| ১৩ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫৫

ইসিয়াক বলেছেন: উনি আমার চাচাতো দাদু হন।
আপনি ওনার সম্পর্কে জানেন জেনে ভালো লাগলো। আমি আসলে উনার সম্পর্কে কোন লেখা অনলাইনে পাই নি। আসলে উনি একজন চরমভাবে অবহেলিত। যা হোক উনার সম্পর্কে লেখার লিঙ্ক থাকলে দিয়েন।

কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা রইলো।

১৩ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



লিংকে বাংলা শব্দ থাকায় ব্লগে সংযুক্ত হচ্ছে না। আপনি “শহীদ মসিউর রহমান যশোর” লিখে গুগলে সার্চ দিন। অনলাইনে শহীদ মসিউর রহমান সাহেবকে নিয়ে লেখা আপনি পেয়ে যাবেন। আপনি একজন শক্তিমান মানুষের নাতি। এটি বিশাল পরিচয়। বংশ পরিচয় অনেক বড় বিষয়। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৭| ১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত এ গল্পে গবেষক পাঠকেরা অনেক তথ্য পাবেন। ডঃ এম এ আলী এর দীর্ঘ মন্তব্যটা এ পোস্টের একটা অলংকার হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।

২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আপনি সঠিক বলেছেন। পোস্ট ও মন্তব্য পড়ে ১৯৭১এর যুদ্ধে পাকিস্তানের বাংলাদেশে একটি গ্রামে আক্রমনের মাত্রা কেমন ছিলো তা অনূভব করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করি।

আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত আমি কিছু কাজে ও ক্লান্তিতে ব্লগে মন্তব্য উত্তর করতে বিলম্ব হয়েছে। তাছাড়া লেখালেখিতে আগ্রহও পাচ্ছি না। এটিও একটি কারণ। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

১৮| ২২ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৩:১৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

২৪ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৫৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ভাই সাহেব আপনাকেও ঈদ মোবারক। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত আমি কিছু কাজে ও ক্লান্তিতে ব্লগে মন্তব্য উত্তর করতে বিলম্ব হয়েছে। তাছাড়া লেখালেখিতে আগ্রহও পাচ্ছি না। এটিও একটি কারণ। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.