![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নুসরাত ও আবিদ কুমিল্লার ময়নামতিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হটাৎ নুসরাত একজন চুড়িওয়ালিকে দেখতে পেল। সে আবিদকে বলল, আবিদ, আমি চুড়ি কিনব।
আবিদ বলল, ওহ কাম অন নুসরাত, এই সস্তা চুড়ি কিনে তুমি কী করবে?
নুসরাত বলল, আমি এত কিছু বুঝি না। আমার ইচ্ছে হয়েছে আমি কিনব।
নুসরাত চুড়িওয়ালিকে বলল, আমাকে চুড়ি দেখাও তো কিছু।
চুড়িওয়ালি বলল, কী রঙের চুড়ি নিবেন আপা?
নুসরাত বলল, লাল রঙের দেখাও। লাল রঙ আমার খুব পছন্দ।
চুড়িওয়ালি লাল রঙের চুড়ি দিল।
নুসরাত বলল, আরেকটু বড় দাও। হাতে ঢুকছে না।
চুড়িওয়ালি বলল, হাত দিন আপা। আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।
নুসরাত হাত বাড়িয়ে দিল। চুড়িওয়ালি তার হাতে চুড়ি পরিয়ে দিল। তারপর বলল, আমি আপনার হাত দেখতে পারি, আপা?
নুসরাত বলল, তুমি হাত দেখতে জানো?
চুড়িওয়ালি বলল, হ্যাঁ আপা, আমি জ্যোতিষ বংশের মেয়ে।
নুসরাত বলল, ওকে। দেখো।
আবিদ বলল, হোয়াট ইজ দিস নুসরাত? তুমি এসবে বিলিভ করতে শুরু করলে কবে থেকে?
নুসরাত বলল, আরে, হাত দেখালে কি প্রবলেম? দেখুক না।
আবিদ বলল, ইউ আর ইম্পসিবল!
নুসরাত আবিদকে জিহবা দেখিয়ে ভেংচি কাটল। তারপর চুড়িওয়ালির দিকে ফিরে বলল, কী দেখলে?
চুড়িওয়ালি বলল, কিছুই না আপা। আপনার হাত শূণ্য।
নুসরাত মলিন মুখে বলল, আমার হাত শূণ্য মানে?
আবিদ বলল, ওহ নুসরাত, চলো তো। কী ছেলেমানুষি করছ!
নুসরাত বলল, দাড়াও এক মিনিট। আমার হাত শূণ্য মানে কি?
চুড়িওয়ালি বলল, আপনার ভাগ্যে কিছুই নেই আপা। আপনার ভাগ্যে কিছুই নেই।
আবিদ তার মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে চুড়িওয়ালিকে দিয়ে বলল, এই তুমি যাও তো।
চুড়িওয়ালি চলে গেল। নুসরাত ভাবতে ভাবতে বলল, ও কী মিন করে গেল!
আবিদ বলল, ও এটাই মিন করে গেল যে আমার খুব ক্ষিধে পেয়েছে এবং আমরা খাবার খেয়ে এখন বাসায় ফিরব।
নুসরাত হেসে দিল।
*****
বাসায় ফিরে নুসরাত কুমিল্লায় তোলা ছবিগুলো দেখতে লাগল। হটাৎ একটা ছবিতে তার চোখ আটকে গেল। সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। জুম করে সে ছবিটা দেখতে লাগল। তারপর অবাক হয়ে হাসতে লাগল। সে আবিদকে ফোন দিল। কিন্তু আবিদের মোবাইল বন্ধ পেল। তখন সে তার ফ্রেন্ড সুমাইয়াকে ফোন দিল।
নুসরাত ।। হ্যালো সুমাইয়া।
সুমাইয়া ।। হ্যাঁ বল। রাত একটার দিকে কী জোকস শোনাতে ফোন দিলি?
নুসরাত ।। ওহ আই এম সরি। একটা বেজে গেছে, না? আসলে আমি এতটাই এক্সাইটেড যে না জানিয়ে থাকতে পারছিলাম না। আর আবিদের মোবাইলও বন্ধ পাচ্ছিলাম। তাই তোকে ডিস্টার্ব করলাম।
সুমাইয়া ।। হুম বল। এত এক্সাইটেড কেন? তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে বুঝি?
নুসরাত ।। আরে ধুর। ওটা এক্সাইটেড কোন নিউজ নাকি?
সুমাইয়া ।। আমার জন্য এটাই এক্সাইটেড নিউজ। আচ্ছা রাখ, তুই বল। কী কারণে এত এক্সাইটেড?
নুসরাত ।। আজ কুমিল্লা গিয়েছিলাম।
সুমাইয়া ।। হুম শুনেছি। আবিদ বলেছে।
নুসরাত ।। কুমিল্লায় তোলা আমার ফটোগুলির মধ্যে একটা ফটোটে আমার পেছনে একটা ছেলেকে দেখেছি।
সুমাইয়া ।। তো?
নুসরাত ।। তুই তো বিশ্বাসই করবি না, ছেলেটা দেখতে হুবহু আমার তৈরী করা ভাস্কর্যটির মতো!
সুমাইয়া ।। কি বলছিস!
নুসরাত ।। হ্যাঁ, আমি তো বিলিভই করতে পারছি না যে আমার তৈরী করা ভাস্কর্যের মত দেখতে হুবহু একই চেহারার একটি লোক পৃথিবীতে আই মিন এই দেশেই এক্সিস্ট করে।
সুমাইয়া ।। এটা তো সত্যিই অবাক করার মত বিষয়। ওকে, তুই কালকে ফটোটা নিয়ে আসিস ভার্সিটিতে। আমিও তো দেখি আসলেই একই রকম দেখতে কী না!
নুসরাত ।। অবশ্যই। ওকে, গুড নাইট।
সুমাইয়া ।। গুড নাইট।
******
নুসরাত তার ভাস্কর্যটির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সুমাইয়া একবার ভাস্কর্য দেখছে, একবার ফটো দেখছে। আর আবিদ হতাশ চোখে দুই বান্ধবীর কান্ডকারখানা দেখছে।
সুমাইয়া ।। আসলেই তো রে, সেইম টু সেইম। তুই আগে কখনও ওকে দেখিসনি তো! ভেবে দ্যাখ, কোন প্রোগ্রামে কিংবা কোন ফাংশনে বা পার্টিতে?
নুসরাত ।। আই সুইয়ার, আমি একে আগে কোথাও কখনো দেখিনি। আমার মনের মত করে আমি ভাস্কর্যটি গড়েছি। আমি তো নিজেই অবাক এমন একটা মানুষ সত্যি সত্যি আছে জেনে।
আবিদ বিরক্ত হয়ে বলল, ওকে। কাকতালীয় ঘটনা ঘটে মানুষের জীবনে মাঝে মাঝে। তাতে এমন কী বড় ব্যপার ঘটে গেছে!
নুসরাত ।। হুম, কিন্তু এভাবে আমার সাথেই এরকম একটা জিনিস ঘটবে আমি বুঝতে পারিনি।
আবিদ ।। তো এখন?
নুসরাত ।। আমি ছেলেটাকে খুঁজে বের করব। যেভাবেই হোক, বাই হুক অর বাই ক্রুক, আমার তাকে চাই। আমি ছেলেটাকে সরাসরি দেখতে চাই, আর জানতে চাই তার স্বভাব, তার কথাবার্তা, তার চালচলন, তার চরিত্র সব সবকিছু।
আবিদ ।। আর ইউ ক্র্যাজি?
নুসরাত ।। হুম। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।
নুসরাত উঠে চলে গেল।
আবিদ সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
সুমাইয়া হাসতে হাসতে বলল, সামলাও তোমার পাখিকে। সে কিন্তু অন্য গাছে ফুরুৎ করে উড়ে যাচ্ছে...
(চলবে...)
©somewhere in net ltd.