নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যদি ভালো ইনসানই না হতে পারি, তবে এই রক্ত-মাংস-রূহ-মস্তিষ্কের মূল্য কী? আমি উড়ার স্বপ্ন দেখি না, উড়তে তো মাছিও পারে! আমি মাটির আদম, মাটিতেই মরতে চাই, আমার বুকে লাগিয়ে দিও কদম ফুলের গাছ।

কাগজের ফেরিওয়ালা

কাগজের ফেরিওয়ালা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোস্তাকিমের পথে (পর্ব ৪)

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:০৭

নুসরাতের মা সুরাইয়া তার স্বামী আলমগীরের সাথে কথা বলছে।
সুরাইয়াঃ ঈশিতা ভাবী বাসায় এসেছিলেন। তার ননদের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। তার সাথে নুসরাতের বিয়ে দিতে চান।
আলমগীরঃ তাই নাকি? তো তুমি কি বললে?
সুরাইয়াঃ পাত্র তো ভালোই ছিল। কিন্তু তোমার মেয়ে তো বিয়ের জন্য একদমই রেডি না। তাই আমি মানা করে দিয়েছি।
আলমগীরঃ ওকে রেডি হতে বলো। জাবেদ ভাইও তার ছেলের জন্য নুসরাতকে চাইছে।
সুরাইয়াঃ হুম। কিন্তু তোমার মেয়েকে তো বোঝানোই যায় না। ভীষণ জেদী আর একগুঁয়ে। তোমার স্বভাব পেয়েছে।
আলমগীরঃ হাহাহা। ঠিক আছে। তুমি এক কাজ করো। মা কে বলে দাও, সে যেন নুসরাতকে বোঝায়।
সুরাইয়াঃ হুম, একমাত্র উনিই আছেন যে তোমার মেয়েকে বোঝাতে পারে। ভাবছি, মা কে কিছুদিন ঢাকায় এসে থাকতে বলব।
আলমগীরঃ গুড আইডিয়া। এখন মা আসতে রাজী হলে হয়...
নুসরাত তার দাদীর বাসায় যাচ্ছে। উঠোনে আসতেই কুকুর ঘেউ ঘেউ করে তার দিকে তেড়ে আসল। সে দৌড়ে বাসায় ঢুকে গেল। তারপর ক্রোধান্বিত হয়ে বলতে লাগল, আমি একদিন গুলি করে এই কুত্তাটাকে মারব।আমাকে দেখলেই তেড়ে আসে।
ফাতেমা বেগমের কাজের মেয়ে বলল, আপা, ও আপনাকে হয়তো চিনতে পারে নি। তাই এমন করেছে।
নুসরাত বলল, দিদা কোথায়?
কাজের মেয়ে বলল, উনি নামাজ পড়ছেন।
নুসরাত ফাতেমা বেগমের রুমে ঢুকে দেখল তার দাদি নামাজ পড়ছে। সে পাশে গিয়ে বসে রইলো। সালাম ফিরিয়ে ফাতেমা বেগম বললেন, তুই কখন এলি?
নুসরাত বলল, তুমি তো নামাজ পড়ায় এত বিভোর ছিলে যে আমি এসেছি এটা বুঝতেই পারোনি। এই বুঝি আমার প্রতি তোমার দরদ!
ফাতেমা বেগম বললেন, মানুষের যখন কোন কাজ করতে খুব ভালো লাগে, তখন সে খুব মনো্যোগ দিয়ে কাজটি করে। তার হৃদয় লেগে যায় সেই কাজে। দুনিয়ার সাথে তখন তার আর কোন যোগাযোগ থাকে না।
নুসরাত বলল, আচ্ছা দিদা, তুমি কাকতালীয় ঘটনায় বিশ্বাস করো?
ফাতেমা বেগম বললেন, কেন?
নুসরাত বলল, প্লীজ, বলো না! তোমার সাথে কখনও কোন কাকতালীয় ঘটনা ঘটেছে!
ফাতেমা বেগম বললেন, যা কিছু ঘটে সব আল্লাহ সুবহানাতা’লার ইচ্ছায় ঘটে। এই যে আমরা বেঁচে আছি; শত দুঃখ কষ্ট, বেদনা, নির্যাতন সহ্য করেও এই যে মানুষেরা বেঁচে থাকে- এর চেয়ে বড় কাকতালীয় ঘটনা আর কী হতে পারে! এই যে আমরা কোটি কোটিবার শ্বাস প্রশ্বাস নিচ্ছি, এই যে প্রতিদিন সূর্যোদয় হয় সূর্যাস্ত হয় একেবারে নিয়মমাফিক, এগুলো কাকতালীয় ঘটনা নয় কী!আসলে কাকতালীয় ঘটনা প্রতিদিনই ঘটে, কিন্তু আমরা তাকে বাস্তবতার নামে অভিহিত করেছি। আর তাই খোদার নিদর্শনগুলো আমাদের চোখের সামনে থাকার পরও আমরা দেখতে চাইনা, আমরা অবাধ্য হই, অবিশ্বাসী হই।
নুসরাত বলল, তোমার কথা ধরতে আমাকে এরোপ্লেন পাঠাতে হবে। সব মাথার উপর দিয়ে গেল। যাই হোক, চলো ব্যাগ গুছাই। আম্মা তোমাকে নিয়ে যেতে বলেছেন।
ফাতেমা বেগম বললেন, কিন্তু...
নুসরাত বলল, কোন কিন্তু শুনব না। আজকে তোমাকে আমাদের বাসায় যেতেই হবে। নইলে আর কখনও আমি এ বাসায় আসব না। তুমি তো জানো, আমার জেদ কতটা!
ফাতেমা বেগম বললেন, পাগলী মেয়ে। আচ্ছা চল। তবে আমি কিন্তু বেশীদিন থাকতে পারব না।
****
নুসরাত আর সুমাইয়া তাদের বান্ধবী তানিয়ার বার্থডে পার্টিতে গিয়েছে।
নুসরাতঃ ওয়াও তানিয়া, তোমাকে খুব গরজিয়াস দেখাচ্ছে। নিউ ড্রেস, না?
তানিয়াঃ হ্যাঁ, তোমাকেও খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
সুমাইয়াঃ হাহ, আমার প্রশংসা করাতে লোক ভাড়া করে আনতে হবে মনে হচ্ছে।
তানিয়াঃ হুম, আনো ভাড়া করে।
নুসরাতঃ তোমরা কথা বলো। আমি একটু আসছি। তানিয়া, ওয়াশ রুমটা কোনদিকে?
তানিয়াঃ ডানদিকের সিড়ি বেয়ে উপরেই।
নুসরাত সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে যাবে। হটাৎ একটি ছেলের সাথে তার ধাক্কা লাগল। ছেলেটি বলল, ওহ আই এম এক্সট্রেমলি সরি।
নুসরাত ইট’স ওকে বলে তাকালো আর অবাক হয়ে গেল। ছেলেটি এক্সকিউজ মি বলে চলে গেল।
*****
নুসরাত সুমাইয়াকে এসে বলল, দোস্ত, ও এখানেই আছে।
সুমাইয়া বলল, কে এখানেই আছে?
নুসরাত বলল, ঐ ভাস্কর্যের ছেলেটা।
সুমাইয়া বলল, হোয়াট?
নুসরাত বলল, হ্যাঁ, ঐ যে ওদিকে তাকিয়ে দ্যাখ।
সুমাইয়া দেখল, তারপর বলল, আরে তাইতো!
নুসরাত বলল, প্লীজ, আমার সাথে ওর পরিচয় করিয়ে দে না।
সুমাইয়া বলল, ঠিক আছে, দাঁড়া। আমি তানিয়াকে বলে দেখি।
*****
তানিয়া বলল, ও তো ফরহাদ। ভাইয়ার বন্ধু।
সুমাইয়া বলল, আমাদের সাথে আলাপ করিয়ে দে, প্লীজ।
তানিয়া বলল, ঠিক আছে।
তানিয়া তার ভাই সাজ্জাদ আর ফরহাদকে নিয়ে এলো।
সাজ্জাদ বলল, কেমন আছ তোমরা?
সুমাইয়া বলল, জ্বী ভালো। আপনি ভালো আছেন?
সাজ্জাদ বলল, হ্যাঁ, ভালো। পরিচয় করিয়ে দেই। এ আমার বন্ধু ফরহাদ আর ফরহাদ, এরা হচ্ছে তানিয়ার বান্ধবী সুমাইয়া এবং নুসরাত।
ফরহাদ বলল, হাই গার্লস।
নুসরাত বলল, হাই ফরহাদ। আপনি কি করেন?
ফরহাদ বলল, জ্বী আমি ফ্রান্সে ছিলাম এতোদিন। এখন বাবার বিজনেস দেখাশোনা করছি।
সাজ্জাদ বলল, তো গার্লস, দাঁড়িয়ে কেন? এঞ্জয় ইউরসেলফ।
ফরহাদ বলল, সাজ্জাদ, আমাকে যেতে হবে।
সাজ্জাদ বলল, আরেকটুক্ষণ থাকো।
ফরহাদ বলল, না, একটা কাজ আছে। লেট হয়ে যাবে।
সাজ্জাদ বলল, আচ্ছা।
ফরহাদ চলে যাচ্ছিল। পেছন থেকে নুসরাত ডাক দিল, এক্সকিউজ মি।
ফরহাদ বলল, ইয়েস।
নুসরাত বলল, আপনার নাম্বারটা কী দেয়া যাবে? প্লীজ।
ফরহাদ অবাক হয়ে বলল, নাম্বার?
নুসরাত মাথা নাড়াল।
ফরহাদ কিছুক্ষণ অবাক হয়ে ভাবল, নাম্বার দেয়াটা কী ঠিক হবে!
নুসরাত বলল, কী, দিবেন না?
ফরহাদ বলল, শিউর।
নুসরাত তার মোবাইলে ফরহাদের নাম্বার সেইভ করে নিল। মনে মনে সে দারুন খুশি উপলব্ধি করল।
(চলবে...)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.