![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কে আমি? কোথায় থেকে এসেছি? কোথায় যাবো? আমি কি জন্য এসেছি? আর কি করছি??
সময়টা ২০১১ সাল । আমি মাত্র নবম শ্রেণীতে উঠেছি । এই বয়সে সবার মনেই রঙিন স্বপ্ন উঁকি দেয় । আমার মনটাও এক অপরূপা সুন্দরী কে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে মানে আমি প্রেমে পড়েছি । হঠাৎ মেয়েটি আমার আমার প্রেমে সাড়া দিল । আমি ভাবতেও পারিনি এমনটা কখনো হবে । আমি অবাক হচ্ছি , বিশ্বাস হচ্ছিল না ।
আমি যেন রঙিন স্বপ্নে ডুবে আছি, এখন তো দুজনেই প্রেম সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি । আমি একটি খাতার পাতায় চিঠি লিখে প্যাকেট করে কদম গাছের নিচে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গোপনে পুঁতে রেখে আসতাম খুব সাবধানে , এছাড়া কোন উপায় ছিলনা । সেও আমাকে নিয়ে কবিতা লিখে পাঠাতো, ফুল এঁকে দিত ।
একদিন আমার আব্বু আম্মু অফিসে চলে যাওয়ার পর সে আমার সাথে দেখা করতে আসছে । আমাদের বাড়ির সামনে একটি রাস্তা তারপাশে একটি টঙ আর সামনে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে সবুজ ঘাস আর ফসলাদি । দিনটাও খুব সুন্দর , আকাশটা দেখতে যা লাগছিল না , যদি ডানা থাকতো তবে দুজনেই পাখি হয়ে উড়াল দিতাম ।
সে একটি নীল জামা আর সাদা ওড়না পরিধান করে এসেছে । হয়ত সে জানত নীল আমার পছন্দের । আজ যেন প্রকৃতির সৌন্দর্য তার রূপের কাছে হার মেনেছে । আকাশের লক্ষ কোটি তাঁরার মাঝে যেন একটি চাঁদ আলো ছড়াচ্ছে ।আমার হৃদয়ের গহীনে যে অজানা শূণ্যতা কাজ করতো তা যেন নিমিষেই দুর হয়ে গেল ।
সে খুব লাজুক । লজ্জাবতী লজ্জায় আমার দিকে ভালো করে তাকাচ্ছেই না, মাথাটা নিচু করে মাঝেমধ্যে চোখ একটু বাঁকিয়ে তাকায় । আমি তাকানো মাত্রই লজ্জায় মুখটা যেন লাল হয়ে গেল । আমি যেন চোখ ফিরাতে পারছি না, অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছি । আমি বললাম: এত লজ্জার কি আছে? তুমি অনেক সুন্দর । প্রশংসা শুনে সে তাবাস্সুম হাসি (মুচকি হাসি) দিলো আর বলল: আপনার হাসিটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে, আপনি নিজেও হাসতে পারেন অন্যকেও খুব হাসিয়ে থাকেন । সেদিন থেকেই আমি কারনে অকারনে হাসি । তাবাসসুম, যেহক, কাহকাহা তিন ভাবেই হাসি ।
সকাল দশটায় দেখা হয়েছিলো কখন যে তিনটা বেজে গেছে টের ই পাইনি, পিছন দিকে তাকানোর সাথে সাথে দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যেতে লাগলো । আমি বুঝতে পারছি না এখন আমি কি করবো?
আমি কিভাবে মুখ দেখাবো, আর এক মিনিটের মধ্যে আব্বু এখানে এসে যাবে, একটু দুরেই সাইকেলে আব্বু আসতেছে । আমি আব্বু কে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই । প্রতিদিন সন্ধ্যার আগেই বদন, হা ডু ডু, বউ সি খেলা ছেড়ে নামাজ পড়ে পড়ার টেবিলে না দেখলে অনেক বকাবকি, রাগ করতেন । আমার মন খেলার মাঠেই পড়ে থাকতো । এ অবস্থায় যদি আব্বু দেখেন তাহলে তিনি আর কোনদিন আমাকে ক্ষমা করবেন না ।
আমি তাকে বললাম: তুমি এখন চলে যাও । আমার চোখে মুখে ছিলো বিষন্নতার ছাপ । ও বলল : কেন, কি হয়েছে? এভাবে যেতে বলছেন কেন?
: আমি যেতে বলছি ব্যাস ! তুমি যাও ,সময় নাই আর একটা কথা বলিও না ।
কেন আমি কি খারাপ মেয়ে? এমন আচরণ করছেন কেন?
:আমি রাগের মাথায় বললাম: হ্যাঁ! তুমি খারাপ মেয়ে নইলে আমার সাথে এভাবে দেখা করতে আসতে??
আমি ভাবছিলাম মেয়েটি এবার চলে যাবে কিন্তু তা নয় উল্টো নতুন ঝামেলা শুরু করলো, সে কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়ল ।
বাম দিকে তাকিয়ে দেখি আব্বু চলে আসছে । আমি ভয়ে কাঁপতেছি আর ঘাঁম ঝরছে । হঠাৎ করে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো তখনি ঘুমটা ভেঙ্গে গেল । জেগে দেখি আমার হৃদকম্পন বেড়ে গেছে, কপাল ঘেমে গেছে । আব্বুর মোবইল টা নিয়ে সময় দেখলাম । তখন সময়টা ঠিক ৩:০৫ am বাজে...
লেখা: আব্দুল্লাহ আল বাকী
১৩/০৭/২০১৭
©somewhere in net ltd.