নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আগুনঘর

আলম সিদ্দিকী

আলম িসিিদ্দকী

হরিহর... এত জল তবু নিরাক শূণ্যতায় পোড়ে দশদিক কোন দিকে যাব বলো, একটি একটি করে দিন যায় তবু ফুরোয় না বাম হাতে গচ্ছিত বালিয়াড়ির ঢেউ গোনা আর ডান হাতে সবর্দা সদরদুয়োরে শিকল তোলা।

আলম িসিিদ্দকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সান্নিধ্যে অনন্ত বিরহে'র কবিতা

১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:১১

সান্নিধ্যে অনন্ত বিরহ



আমি এখনো ঠিক বুঝতে পারিনে

তুমি কোনদিন আমাকে দেখেছ কিনা,

কোন কোন দিন যখন ভীষণ উল্লাসে

সমস্ত আধুনিকতার পশ্চাতে

মাটির বুকে প্রাচীণ গুপ্তধনের গন্ধ খুঁজে ফিরি

নিঃশ্বাসের বায়ুরা যেন বিদ্রোহী হয়ে

শুধুই আধুনিকতার ছোঁয়াচ ঢালে :

কী এমন অঢেল পরিবর্তন যে

চোখের সম্মুখে অথচ কথা বলে না উঠলে

তুমি কখনোই দেখতে পেলে না আমায় !

জানি এসব কিছুই তুমি জানবে না কখনো

উপরে অনেক পলির অকৃপণ ভালোবাসায়

আমার সাধের জীবন পড়েছে চাপা ;

স্রোতের টানে শুধু বয়েই চলেছি

এদিকে পলির পলেস্তারায় নব্যতা হ্রাস পাচ্ছে

তা কখনো ভেবে দেখিনি। সময়ের ফেরে যখন

তোমার সামনে দাঁড়াতে চাইলাম তখন বুঝলাম

পরিজনের প্রীতির পরশ প্রেমে পৌঁছাতে গেলে

হয়তোবা অবশিষ্টটাও নষ্ট হয়।



কিন্তু আজ তোমাকে লিখতে বসেছি

এই কলরব মুখর দিনে মনের ভাবনারা

মেঘের মতো উড়ে যায় দুচোখের সীমানায়।



আজ সারা দিন বর্ষারা একদল নৃত্য পাগল ময়ূরীর মতো

আমার টিনের চালাটা মাতিয়ে রেখেছে

বর্ষার এরকম আমেজ কতদিন যে উপভোগ করি না !

কৃত্রিম ভালোবাসার সুবাস যখন ফুরিয়ে যায়

প্রকৃতি তখন উদার হস্তে ঢেলে দেয় তার অকৃত্রিম ভলোবাসা।

জানোই তো

মানুষ ভালোবাসার কাঙ্গাল

আমি হয়তবা একটু বেশি।

লোভ সংবরণ করতে না পেরে দুবাহু ছড়িয়ে দিয়ে

দাঁড়িয়ে গেলাম নির্জন প্রান্তরে

অসংখ্য বৃষ্টিবিন্দু আমাকে কতবার যে ভালোবাসলো

তার কোন হিসেব নেই।

তোমাকে নিয়ে এরকম বৃষ্টিতে একদিন ভিজতে চেয়েছিলাম ;

অনেকদিন আগে ভয় পেয়ে আমার গলাটা

যেভাবে দুবাহু দিয়ে জড়িয়ে ধরেছিলে, তেমনি করে

জড়িয়ে ধরে বুকে কান পেতে শুনে নেবে সেই কথা

যা কিনা কোন প্রাচীণ সভ্যতার সাক্ষ্য দেয়।

বর্ষায় তোমার সমস্ত অঙ্গে লেপ্টে থাকবে ভেজা শাড়ি

আকাশের ঘন মেঘের বর্ষারা ভালোবাসবে আমায়

ভালোবাসবে তোমায়।

কিন্তু জীবন কী আশ্চর্য দেখ

এসব শুধু কল্পনাই হয়ে রইল,

তুমি কখনো জানলেও না

বর্ষার দিনে কেউ একজন তোমাকে নিয়ে

শুনশান কোন মাঠে বর্ষায় ভিজতে থাকে ;

সে তখন কাঁদে কিনা তুমি তা জানতেও পার না

কেননা চোখের পানির আলাদা কোন রং নেই।



গত একটি বছর কী তুমুল আড্ডাবাজের মতো

সময়টা পার করলাম, এমন কোন বর্ষার দিন ছিল না

যখন আমাদের বন্ধু মহলে সময়কে তুড়ি মেরে

উড়িয়ে দিতে কিছুমাত্র সংকুচিত হতাম;

এমন এক বর্ষার দিনে তুমি স্কার্ফ মোড়া জীবনের

অবগুন্ঠন হতে আমার সম্মুখে বেরিয়ে এলে,

মোহন চৈতন্যে লাগলো অস্থির দোলা...

সেদিন কি একটুখানি লজ্জা পেয়েছি আমি ?

কেন এরকম হলো তুমি তার কিছু কি বুঝেছ ?

জীবনের শ্রেষ্ঠতম সময়ে পা দিয়েও বুঝতে পারি না

আর মুখস্ত নয়, চিৎ সাঁতারে এখন শুধু ভেসে যাওয়া,

ভাসতে ভাসতে স্বপ্নের রাজহংস হয়ে

সমস্ত মালিকানায় দখল নেওয়া।

শুনেছি শাড়িতে তোমাকে বেশ লাগে

চন্দন বরণ অঙ্গের উপর রেশমি শাড়ির দোল দেখে

অনিয়ম এসে মুহূর্তে আচ্ছন্ন করে স্বর্গ মর্ত সকল রাজ্য

দ্বিধায় মুড়ে থাকে মেঘ বিস্তার,

উজ্জ্বল দিন এসে লুটিয়ে পড়ে ধরণীর কোলে

সূর্যালোক উল্লাসে মাতে অথৈ দিনের।

তোমার এত কাছের মানুষ ছিলাম অথচ দেখ

সেই অবাক সূর্যালোকের উল্লাস

আমি কখনোই উপভোগ করিনি।

ভয় ছিল যদি মৃত্যুর পদধ্বণিকে আড়াল করে

আবার বেঁচে উঠতে মন চায়।



মাঝে মাঝে হঠাৎ যেয়ে উপস্থিত হতাম তোমার ওখানে

অস্থির নয়নে কেন এতদিন আসিনি সেই প্রশ্নে অভিমানীর

মতো তাকাতে, আমি অস্পুটে মন্ত্রবানী অন্তরে যপি

‘তোমার এইটুকু স্নেহের লোভেই হয়তো আসিনি।’

অতঃপর আপ্পায়নের লজ্জা ভুলে অনেক কথার হামাগুড়ি

চির পরিচিত অচেনা দুজন নীরব সময় মুখোমুখি।

এক সময় বিদায়ের ঘন্টা বেজে উঠলে বেরিয়ে পড়ি,

তুমি ব্যালকনির গ্রিল ধরে

আমি পিছু ফিরি

না, ‘কেউ নেই মনের কাছাকাছি।’



এখনো মাঝে মাঝে করিডোরে পায়ের শব্দ পাই

চৈতন্যের মহাসাগরে ঝড় ওঠে, উৎভ্রান্ত দৃষ্টিতে

করিডোরে এসে দেখি সব শুনশান, তিনটি টব

আর সাদাকালো গোলাপের সন্তর্পন নিঃশ্বাস।

মনে পড়ে সেই কথা : যখন তুমি আসতে

শ্রাবণের সন্ধ্যার মতো মেঘদূত জমিয়ে আসতে

প্রতিদিন ঘরে বসে শুনতে পাই তোমার পদধ্বণি

মেঘমোড়া ওড়নার বাতাস এসে লাগত

আমার অনুর্ভূতির উল্লোসিত পালে

জয়োধ্বণিরা পিঠ চাপড়ে কথা বলে উঠত।

কিন্তু আজ নিশ্বাসের সরলরেখা শুধুই দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে

অনুভূতির নিঃস্ব প্রার্থনায় শুধু পিছু ফিরে চাওয়া :

তোমার এত কাছে ছিলাম বলেই হয়তবা

কোনদিন দেখলে না - আমি থাকতে পারি।



নষ্ট জীবনের অবশিষ্টাংশ বায়ুহীন সমুদ্রে

যাত্রাহীনতায় ভুগতে ভুগতে চলে যাবে

পাকস্থলির কানায় কানায় বিষাক্ত রোদের

খরতাপে পরিপূর্ণ , এখন আর চাই না

কৈশোরের ছোট্ট নদীর বহতা জীবন

বাঁকে বাঁকে আর নেই স্বপ্নের রাজহংসের

অবাধ বিচরণ। যা আমার নয় তাকে আর

তুফানের মতো ডাক দিতে চাই না ,পালহীন

নৌকা নিয়ে শুধুই স্রোতের অনুকূলে ভেসে যাওয়া।





[১৯৯৭ সাল, জুন জুলাই মাস। বাংলা ঋতু বৈচিত্রে বর্ষাকাল। । এস এস সি পরীক্ষা দিয়ে ফল প্রত্যাশায় বসে আছি। কাব্য চর্চার জন্য মোক্ষম সময়। তার উপর বাড়ির পাশে আরশি নগরের হাতছানি তো আছেই। একদিন ঝুম বৃষ্টি নামে। আমি হরিহরের তীরে দাড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজি, আর আরশি নগর খুুঁজে ফিরি। সেদিন বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে পেয়ে যাই সান্নিধ্যে অনন্ত বিরহে’র প্রথম লাইন ‘ আমি এখনো ঠিক বুঝতে পারিনে তুমি কোন দিন আমাকে দেখেছ কিনা ’ বাড়ি ফিরে অমিতের মতো আমিও আমার নোট খাতা নিয়ে লিখতে শুরু করি প্রথম যৌবনের প্রথম অনুভূতির কথা। ‘সান্নিধ্যে অনন্ত বিরহ ’ লেখার অনেক দিন পরে এসে আমার মনে হয়েছিল কবিতাটিতে হয়তো আবেগের তরলতা সরল ভাবে প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু এই ভেবে নিজেকে প্রবোধ দিই সতের বছর বয়েসী একটি কিশোরের প্রথম আবেগ তো কিছুটা তরল হবেই, একই সাথে প্রকাশে সরল। ]

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭

একজন আরমান বলেছেন:
প্রেমময় বিরহ কাব্যে প্রথম ভালো লাগা। :)

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:০০

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
সহজ সুন্দর আবেগময় কবিতা।
ভালো লাগলো।

৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার। ৯৭ সালের লেখা কবিতা...তাইতো ভাবছিলাম এখনকার সাথে মেলানো যায়না কেন! অনেক ভালো লিখেছিলেন।

৪| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:১৭

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

অনেক ভালোলাগা নিবেন ।
++++

৫| ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:২৭

অদৃশ্য বলেছেন:




সেই সময়ের.... ভাবাবেগে ভরপুর...

লিখাটি খুব ভালো লেগেছে আমার....
আর আরশি নগর নামটা শুনলেই.... কোন এক দূরদৃশ্য গাঁয়ের ছবি মনের পর্দায় ভেসে ওঠে... যেদিন প্রথম গানটা শুনেছিলাম সেদিন থেকেই...

শুভকামনা রইলো...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.