নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!
১)অন্নদাশঙ্কর রায়
খুকু ও খোকা
তেলের শিশি ভাঙল বলে
খুকুর পরে রাগ করো
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা
বাঙলা ভেঙে ভাগ করো!
তার বেলা?
২) আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
তাঁর করতলে পলিমাটির সৌরভ ছিল
তাঁর পিঠে রক্তজবার মত ক্ষত ছিল
৩) আবুল হাসান
ক)আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেপ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
সচ্চরিত্র ফুল আমি যত বাগানের মোড়ে লিখতে যাই, দেখি
কলম খুলে পড়ে যায় বিষ পিঁপড়ে, বিষের পুতুল !
খ)নিঃসঙ্গতা
অতটুকু চায়নি বালিকা!
অত শোভা, অত স্বাধীনতা!
চেয়েছিল আরো কিছু কম,
একটি পুরুষ তাকে বলুক রমণী!
গ)উচ্চারণগুলি
লক্ষি বউটিকে
আমি আজ আর কোথাও দেখিনা,
হাটি হাটি শিশুটিকে
কোথাও দেখিনা,
কতগুলি রাজহাঁস দেখি
নরম শরীর ভরা রাজহাঁস দেখি,
কতগুলি মুখস্থ মানুষ দেখি, বউটিকে কোথাও দেখিনা
শিশুটিকে কোথাও দেখিনা !
৪) কাজী নজরুল ইসলাম
ক)মানুষ
গাহি সাম্যের গান—
মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান
খ)সাম্যবাদী
সাম্যের গান--
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান
যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান ।
গাহি সাম্যের গান !মিথ্যা শুনিনি ভাই,
এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই ।
গ)বিদ্রোহী
বল বীর —
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন আরশ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর !
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর !
বল বীর —
আমি চির উন্নত শির।
ঘ)নারী
সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!
বিশ্বে যা-কিছু মহান্ সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
ঙ)আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে
আজকে আমার রুদ্ধ প্রাণের পল্বলে -
বান ডেকে ঐ জাগল জোয়ার দুয়ার – ভাঙা কল্লোলে।
আসল হাসি, আসল কাঁদন
মুক্তি এলো, আসল বাঁধন,
মুখ ফুটে আজ বুক ফাটে মোর তিক্ত দুখের সুখ আসে।
ঐ রিক্ত বুকের দুখ আসে -
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!
চ)চল চল চল
চল চল চল!
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণি তল,
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল রে চল রে চল
চল চল চল।।
৬) জসীমউদ্দীন
ক)কবর
এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
খ)পল্লী-বর্ষা
আজিকের রোদ ঘুমায়ে পড়িয়া ঘোলাট-মেঘের আড়ে,
কেয়া-বন পথে স্বপন বুনিছে ছল ছল জল-ধারে।
কাহার ঝিয়ারী কদম্ব-শাখে নিঝ্ঝুম নিরালায়,
ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে অস্ফুট কলিকায়!
গ)পল্লীবর্ষা
আজিকে বাহিরে শুধু ক্রন্দন ছল ছল জলধারে,
বেণু-বনে বায়ু নাড়ে এলোকেশ, মন যেন চায় কারে।
৭) জীবনানন্দ দাশ
ক)বনলতা সেন
হাজার বছর ধ'রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্তু প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দু-দন্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।
খ)আবার আসিব ফিরে
আবার আসিব ফিরে ধানসিড়ির তীরে — এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয় — হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে;
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঠাঁলছায়ায়;
গ)হায় চিল
হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে-উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!
অদ্ভুত আঁধার এক
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই – প্রীতি নেই – করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
ঘ)আকাশ লীনা
সুরঞ্জনা, অইখানে যেয়ো নাকো তুমি,
বোলো নাকো কথা অই যুবকের সাথে:
ফিরে এসো সুরঞ্জনা:
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে:
ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে:
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার:
দূর থেকে দুরে-আরো দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেয়ো নাকো আর।
কী কথা তাহার সাথে?-তার সাথে!
আকাশের আড়ালে আকাশে
মৃত্তিকার মতো তুমি আজ:
তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে।
ঙ)সুরঞ্জনা,
তোমার হৃদয় আজ ঘাস
বাতাসের ওপারে বাতাস-
আকাশের ওপারে আকাশ।
চ)আট বছর আগে একদিন
শোনা গেল লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে;
কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
মরিবার হল তার সাধ ।
ছ)বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যাই না আর :
৮) দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
ধনধান্য পুষ্পভরা
ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা;
তাহার মাঝে আছে দেশ এক- সকল দেশের সেরা;
ওসে স্বপ্ন দিয়ে তৈরী সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা;
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
সকল দেশের রাণী সে যে- আমার জন্মভূমি।
৯) নির্মলেন্দু গুন
নির্মলেন্দু গুন
আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে , আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক,
শুধু ঘরের ভেতর থেকে দরোজা খুলে দেবার জন্য ।
বাইরে থেকে দরোজা খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত ।
যাত্রা ভঙ্গ
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে...
মন বাড়িয়ে ছুঁই.....
দুইকে আমি এক করি না....
এক কে করি দুই...!!!!
হেমের মাঝে শুই না যবে...
প্রেমের মাঝে শুই...
তুই কেমন করে যাবি ????
পা বাড়ালেই পায়ের ছায়া....
আমাকেই তুই পাবি...!!!
১০) পুর্ণেন্দু পত্রী
কথোপকথন
যে কোন একটা ফুলের নাম বল
- দুঃখ ।
- যে কোন একটা নদীর নাম বল
- বেদনা ।
- যে কোন একটা গাছের নাম বল
- দীর্ঘশ্বাস ।
- যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল
- অশ্রু ।
- এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি ।
১১) প্রতুল মুখোপাধ্যায়
আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলায় গান গাই।
আমি বাংলার গান গাই।
আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুজে পাই।
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন।
আমি বাংলায় বাঁধি সুর।
আমি এই বাংলার মায়া ভরা পথে হেঁটেছি এতোটা দূর।
১২) ফররুখ আহমদ
পাঞ্জেরি
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলাল এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।
১৩) রফিক আজাদ
ভাত দে হারামজাদা
দৃশ্য থেকে দ্রষ্টা অব্দি ধারাবাহিকতা খেয়ে ফেলে
অবশেষে যথাক্রমে খাবো : গাছপালা নদীনালা
গ্রামগঞ্জ, ফুটপাত, নর্দমার জলের প্রপাত
চলাচলকারী পথচারী, নিতম্ব প্রধান নারী
উড্ডীন পতাকাসহ খাদ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর গাড়ী
আমার ক্ষুধার কাছেই কিছুই ফেলনা নয় আজ
ভাত দে হারামজাদা
তা না হলে মানচিত্র খাব
১৪) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ক)১৪০০ সাল
আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতূহলভরে—
আজি হতে শতবর্ষ পরে।
খ)স্ফুলিঙ্গ
বহু দিন ধ'রে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।
গ)চার অধ্যায়
প্রহরশেষের আলোয় রাঙা
সেদিন চৈত্রমাস,
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ
ঘ)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে
তিল ঠাঁই আর নাহি রে।
ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের
বাহিরে।
বাদলের ধারা ঝরে ঝর-ঝর,
আউশের খেত জলে ভর-ভর,
কালী-মাখা মেঘে ও পারে আঁধার
ঘনিয়েছে দেখ্ চাহি রে।
ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।
ঙ)দুই বিঘা জমি
শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই আর সবই গেছে ঋণে।
বাবু বলিলেন, "বুঝেছ উপেন, এ জমি লইব কিনে।'
কহিলাম আমি, "তুমি ভূস্বামী, ভূমির অন্ত নাই।
চেয়ে দেখো মোর আছে বড়ো-জোর মরিবার মতো ঠাঁই।'
চ)নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ
আজি এ প্রভাতে রবির কর
কেমনে পশিল প্রাণের পর,
কেমনে পশিল গুহার আঁধারে প্রভাতপাখির গান!
না জানি কেন রে এত দিন পরে জাগিয়া উঠিল প্রাণ।
জাগিয়া উঠেছে প্রাণ,
ওরে উথলি উঠেছে বারি,
ওরে প্রাণের বাসনা প্রাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারি
১৫) রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
বাতাসে লাশের গন্ধ
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
১৬) শক্তি চট্টোপাধ্যায়
অবনী বাড়ি আছো?
অবনী বাড়ি আছো?
দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া
কেবল শুনি রাতের কড়ানাড়া
অবনী বাড়ি আছো?
১৭) শহীদ কাদরী
ক)তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা
ভয় নেই
আমি এমন ব্যবস্থা করবো যাতে সেনাবাহিনী
গোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়ে
মার্চপাস্ট করে চলে যাবে
এবং স্যালুট করবে
কেবল তোমাকে প্রিয়তমা।
খ)হন্তারকদের প্রতি
অস্বীকার করার উপায় নেই ওরা মানুষের মতো
দেখতে, এবং ওরা মানুষই
ওরা বাংলা মানুষ
এর চেয়ে ভয়াবহ কোনো কথা আমি আর শুনবো না কোনোদিন।
গ)তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা
ভয় নেই আমি এমন ব্যবস্থা করবো মুদ্রাস্ফীতি কমে গিয়ে বেড়ে যাবে
শিল্পোত্তীর্ণ কবিতার সংখ্যা প্রতিদিন
আমি এমন ব্যবস্থা করবো গণরোষের বদলে
গণচুম্বনের ভয়ে
হন্তারকের হাত থেকে পড়ে যাবে ছুরি, প্রিয়তমা।
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৯
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান ৷
২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভাল সংগ্রহ আপনার এক সময় এই লাইন গুলি কতভাবে চলে আসত ।।
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০
আবদুর রব শরীফ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু...
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০১
চাঁদগাজী বলেছেন:
ভালো প্রচেস্টা, সময় করে পড়বো!