নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সে অপেক্ষায় আছে। বাচ্চাটা মারা যাবে, তারপর বাচ্চার মা এবং বাবাকে এ্যারেস্ট করবে।
হসপিটাল বেড থেকে খানিকটা দুরে একটা চেয়ারে বসে আছে পিসি নাইজেল টাম্বলিং-গগিন। লন্ডন মেট্রপলিটন পুলিশ সার্ভিসের একজন অফিসার। প্রতিদিনের মত আজও সে শিফট শুরু হবার ঠিক পনের মিনিট আগে ব্রীফিং রুমে হাজির হল। নাইজেল ইমার্জেন্সি রেসপন্স অফিসার। ওদের টিমে একজন ইন্সপেক্টর, ছয় সাত জন সার্জেন্ট সহ প্রায় ষাট জন অফিসার। ওকে যখন বলা হল হাসপাতালে যাবার জন্য, হসপিটাল গার্ড। ভেতর ভেতর পূলক বোধ করলো। ওকে যেতে হবে পেডিয়াট্রিক ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে। মানে কি? ছোট বাচ্চা আসামী, এটা কিভাবে সম্ভব? এখন অতশত ভাবতে পারছেনা। খুশীর খবর ওটা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট, রুগী বেশীরভাগ সময় ঘুমে থাকবে। ঘুমে থাকতে পারবে সে ও, গতরাতে ভালো ঘুম হয় নি। এটা ভাবতে ভাবতে ব্রীফিং রুমে বসে আরাম করে কফি খাচ্ছিলো নাইজেল। সবাই এসে গেছে, সামনে সিনেমা হলের মত বিশাল স্ক্রীন। একটু পর পোষ্টিং দিয়ে ব্রীফিং শুরু হবে। ব্রীফিং আরেক বোরিং জিনিষ, কেউ প্রিজন থেকে ছাড়া পেয়েছে তার তাকে নজরে রাখতে হবে, কোথায় কোথায় ড্রাগ হটস্পট, কোথায় কোথায় এন্টি সোশাল হটস্পট অথবা গ্যাং গুলো কে কাকে মারছে। কে পকেটে ছুরি নিয়ে হাঁটছে, কোন চিপায় অবৈধ অস্ত্র লুকিয়ে রাখা আছে, কোন গাড়ি দেখামাত্র থামাতে হবে। দুনিয়ার ইতং বিতং। মাঝে মাঝে ভাবে, “ধুর! করছি কি আমি এখানে? সব বোরিং কাজ কারবার। অন্য চাকরী খুঁজতে হবে।” আবার ভাবে মাসে আঠারো দিন কাজ আর বারো দিন ছুটি, এমন জব আর কোথায় পাবে?
লন্ডন মেট্রপলিটন এলাকাকে বত্রিশটি বরো (Borough)-তে ভাগ করা হয়েছে। নাইজেলের চাকরী তাদের একটিতে, লন্ডন বরো অফ টাওয়ার হ্যামলেটস্। গোটা লন্ডনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার অফিসার শুধু রেসপন্স করার জন্য ২৪ ঘন্টা এ্যাকটিভ থাকে। প্রতিটি বরো-তে আরো আছে নেইবারহুড টাস্ক ফোর্স, সেইফ নেইবারহুড টিম, চাইল্ড এ্যাবিউজ এন্ড এক্সপ্লয়টেশন ইউনিট, গ্যাং ইউনিট, পাবলিক অর্ডার ইউনিট (দাঙ্গা-ফ্যাসাদ ডিফিউজ করার জন্য), সি.আই.ডি, এয়ার ইউনিট, ডগ ইউনিট, হর্স রাইডার্স, ফরেনসিকস, স্পেশালস (বিনা বেতনে শখের পুলিশ), আরো কত কি। বৃটিশ পুলিশ অস্ত্র বহন করেনা। তবে ফায়ার আর্মস ইউনিট আছে বিশেষ প্রয়োজনের জন্য। এই দুর্ধর্ষ ফায়ার আর্মস অফিসারেরা সব সময় বি এম ডাব্লিউ এক্স-ফাইভ নিয়ে চলাফেরা করে। বাইরে থেকে কারো অস্ত্র দেখা যায় না। ওরা ট্রোজান নামে পরিচিত। শুট করা সিরিয়াস বিষয়, প্রতিটি বুলেটের হিসেব দিতে হয়। ব্যাপারটা ভয়াবহ, অর্থাৎ শুট করলে নিশ্চিত হয়ে শুট করতে হবে যে বুলেটটার অপচয় হয় নি। বুলেটের অনেক দাম। কারো না কারো মাথা বা হৃৎপিন্ড ভেদ না করা মানে ট্যাক্স পেয়ারদের অর্থের অপচয়। সুতরাং একটি শুট মানে কারো না করো মৃত্যু। ফায়ার আর্মস টিমে কন্টিনিউয়াস শট (ব্রাশ ফায়ার)-এর প্রচলন নেই। মহামান্য রাজার এই (ব্রিটিশ) রাজ্য সরকারের নাম ‘হিজ ম্যাজেস্টিজ গভার্ণমেন্ট অফ ইউনাইটেড কিংডম এন্ড নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড।’ হিজ ম্যাজেস্টি ‘দ্য কিং’-এর কড়া নির্দেশ তাঁর প্রজাদের শান্তি বিঘ্নিত করা যাবেনা। শব্দ দুষণ তার মধ্যে অন্যতম। মহামান্য রাজধিরাজ তাঁর প্রজাদের 'সাবজেক্ট' বলে ডাকেন।
প্রথমে কল করে পোষ্টিং দেওয়া হয়। প্রতিটি ইউনিটে দুজন অফিসার। প্রতিটা পুলিশ কার একেকটা ইউনিট। এছাড়া আছে আট জনের মিনিবাস, বারো জনের ভ্যান ইত্যাদি। রেসপন্স অফিসাররা সবসময় পুলিশ কার নিয়ে চলাফেরা করে যাতে করে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইমিডিয়েট এ্যাকশন নেয়া যায়। যদি আরো অফিসার দরকার পড়ে, রেডিওতে সাপোর্ট চাইতেই মিনিটের মধ্যে কাকের মত কা কা করতে করতে সাইরেন বাজিয়ে দুনিয়ার পুলিশ এসে সয়লাব হয়ে যায়। কলিগদের একের প্রতি অন্যের এই গভীর টান নাইজেলকে মাঝেমাঝে অপরাধী করে, “তারপরও কেন আমি চাকরী ছাড়তে চাই?
চলবে. . .
২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০১
আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। পরবর্তী পর্ব কাল দিতে পারবো।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: থ্রিলার। সাস্পেন্স। দারুন।