নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ জগতে নতুন পা রেখেছি কিছু জানবার জানাবার শিখবার শেখাবার সর্বোপরি ইসলামী খেদমতের উদ্দেশ্যে! কবুল করার মালিক উপরওয়ালা ়়়়়়়

Ahmad Faiz

তালিবুল ইলম!

Ahmad Faiz › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাত্তাব! তোমাকে লাল সালাম!

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫

খাত্তাব! তোমাকে লাল সালাম!
(উৎসর্গ : হাদিল হাশলামুন ﺷﻬﻴﺪﺓ ﺍﻟﻨﻘﺎﺏ )
ফিলিস্তিনীদের অনেক লাশ পড়ার পর যখন
জাতিসংঘ মৃদু প্রতিবাদ জানায়, তখন ইসরাইল
সাফ জানিয়ে দেয়— আমাদের আত্মরক্ষার
অধিকার আছে! এভাবে ইসরাইলের আত্মরক্ষার
‘টেক্স’ দিতে গিয়ে কতো ফিলিস্তিনীকে-যে
জীবন ‘বিলিয়ে’ দিতে হয়েছে ইসরাইলীদের হাতে,
তার কোনো নির্দিষ্ট লেখাজোখা নেই। সময়টা
একেবারে কম না, ১৯৪৭ থেকে ২০১৫। ৬৮ বছর।
এর মধ্যে ইসরাইল যা চেয়েছে তাই করেছে।
জাতিসংঘ-আমেরিকা-বৃটেনসহ পাশ্চাত্যের
কারো মানাই শুনে নি। ফাতাহ-হামাসের পথচলায়
শুরুতে একতা থাকলেও এক পর্যায়ে হামাস
আলাদা হয়ে যায়। ইসরাইলের ব্যাপারে ফাতাহর
নমনীয়তা তাদের ভালো লাগে নি। স্বায়ত্ব
শাসনে ফাতাহ তৃপ্ত হতে পারলেও হামাস
জিহাদের পথ বেছে নেয়। আল-আকসাসহ
ফিলিস্তিনের পুণ্যভূমিকে ইহুদী আগ্রাসী শক্তির
কবল থেকে মুক্ত করতে তারা আগেও ছিলো
রক্তক্লান্ত এখনো রণক্লান্ত। এখন হামাসের
কেন্দ্র হলো গাজা উপত্যকা। চরম ইসরাইল-
বিরোধী বলে এই গাজাকে অনেক ‘সাজা’ সইতে
হয়েছে। বড় দু’টি যুদ্ধ ঘটে গেছে। দ্বিতীয় যুদ্ধটা
এখনো দগদগে ঘা হয়ে আছে। ২০১২ এর ২২শে
নভেম্বরে যেটা শেষ হয়েছে। এই যুদ্ধ এবং সেই
যুদ্ধে ইসরাইল মনের মতো করে গাজায়
ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। শিশু মেরেছে। নারী
মেরেছে। ভবনের পর ভবনকে মাটির সাথে
মিশিয়ে দিয়েছে। ‘শ্যারন-তনয়’ গিলাদ তো
গাজাকে পরমাণু বোমায় মাটির সাথে মিশিয়ে
দেয়ার খায়েশও জাহির করেছে। ইসরাইলের যতো
ক্ষোভ এই গাজার উপর। ক্ষোভের কারণও আছে।
এই যুদ্ধে কিংবা সেই যুদ্ধে কোনোটাতেই গাজার
আত্মোৎসর্গী দামাল ছেলেদের ছোঁড়া রকেটের
সাথে পেরে ওঠে নি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের
সহায়তা নিয়েও!
ফিরে আসি মহান বীর খাত্তাবের কথায়।
বেশ কিছুদিন ধরে পড়ছিলাম সংগ্রামী বীর ও
সব্যসাচী এক লেখকের জীবনী। তিনি মাহমুদ
শাইত খাত্তাব, যিনি ছিলেন একাধারে লেখক
কবি সাহিত্যিক ও সমরবিজ্ঞানী। ইরাকের মানুষ
তিনি। তিনি একজন সনামধন্য মেজর জেনারেলও।
১৯৪৮ সালে সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে তিনি
ইরাকের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন
পেশ করেছিলেন। বিষয়বস্তু ছিলো ফিলিস্তিনে
গিয়ে ইসরাঈলের বিরুদ্ধে জিহাদে অংশগ্রহণ
এবং ফিলিস্তিনীদের পাশে দাঁড়িয়ে ইসরাঈলের
কবল থেকে ফিলিস্তিন ও মসজিদুল আকসা মুক্ত
করা। তার সৌভাগ্য; তৎকালীন ইরাকী সরকারের
কাছ থেকে তিনি এ ব্যাপারে শুধু অনুমোদনই পান
নি, লাভ করেছিলেন ব্যাপক সহযোগিতা ও
সার্বিক আনুকূল্য। ফলে এক ব্রিগেড সৈন্য নিয়ে
তিনি ছুটে গিয়েছিলেন ফিলিস্তিনের পবিত্র
ভূখণ্ডে, ইহুদীদের অপবিত্র পদদলনে যা দলিত
মথিত হয়ে পড়েছিলো। (অথচ এখন কোনো
আরবদেশ সৈন্য পাঠাবে তো দূরের কথা, পাখির
মতো ফিলিস্তিনীদেরকে বিনা অপরাধে গুলি করে
মারলেও কোনো আরব দেশ মুখেও একটু প্রতিবাদ
জানায় না। হাদিল হত্যাণ্ডের পর আরবরা যদি
২০জন করেও সশস্ত্র সৈন্য পাঠাতো
ফিলিস্তিনে, তাহলে সাগরপাড়ে ভীড় জমতো
পলায়নপ্রিয় ইহুদীদের। বারবার হাদিলরা প্রাণ
দিতেন না। আল আকসাও বারবার আক্রান্ত হতো
না।)
তাঁর অবস্থান ছিলো জেনিন নগরীতে। সেখানে
তিনি প্রায় এক বছর অবস্থান করেন এবং অনেক
গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের সফল নেতৃত্ব দান করেন।
কিন্তু ঐ যে..., তারিক-মুহাম্মদ বিন কাসিম-
কোতায়বাদের মতো অভিযানের মাঝখানে ইরাক
সরকার তাকে ফেরত ডেকে পাঠায়। তখন মনের
বিরুদ্ধেই তাকে ফিলিস্তিন ছেড়ে চলে আসতে
হয়। পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে আর সেখানে
যেতে না পারলেও সারা জীবনই তিনি ফিলিস্তিন
এবং মসজিদুল আকসা মুক্ত করার মহান স্বপ্নে
বিভোর ছিলেন। অস্ত্র নিয়ে লড়াই করার পর
কলম হাতে এক নতুন লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন
তিনি। আগেই বলেছি, তিনি অত্যন্ত উঁচুমানের
একজন লেখক কবি ও সমরবিজ্ঞানী ছিলেন। তাঁর
কলম থেকে ঝরেছে ইসলাম ও জিহাদের অবিনাশী
চেতনা। ফিলিস্তিন ও মসজিদুল আকসার প্রতি
ঈমানদীপ্ত মমতা। ছোট-বড় চার শতাধিক গ্রন্থ
তিনি রচনা করেছেন। রচিত গ্রন্থমালার ছত্রে
ছত্রে দ্যুতিত হয়েছে তাঁর সেই চেতনা ও
মমতাবোধ। শিল্প ও সাহিত্যের ভাষায়। হৃদয় ও
বিবেকের ভাষায়। নিষ্ঠাবান এক সমর বিশারদের
বিশ্বস্ত ও কুশলী বর্ণনায়।
ফিলিস্তিনের মাটিতে তাঁর প্রায় বছরকাল
অবস্থানের সংগ্রামী স্মৃতি তিনি উল্লেখ করে
গেছেন নিজের প্রায় সব রচনাতেই। আমি এখানে
মাত্র দু’টি স্মৃতি উল্লেখ করছি। লক্ষ্য করুন তার
ভাষায়—
এক.
এক অভিযানে কথা। আমাদের সৈন্যসংখ্য ৮২২
জন আর ইসরাইলিদের দশ হাজার। শেষ পর্যন্ত
আমরাই বিজয় লাভ করেছিলাম। ইহুদী শিবিরে
মারা পড়েছিলো আমাদের সৈন্যসংখ্যা যা,
তারচে’ ঢের বেশী। আর আমাদের মধ্যে শহীদ
হয়েছিলেন ত্রিশ জানবায মুজাহিদ। শত শত লাশ
ফেলে ওরা পালিয়ে গেলেও ফিরে এসেছিলো
ওদের নেতা বিন জোরইয়ূন তার মেয়ের লাশটা
ফেরত চাইতে। আমরা লাশ ফিরিয়ে দিয়েছিলাম
বটে কিন্তু জেনিনবাসীর যে সব কৃষি জমি ওরা
জবরদখল করেছিলো, তা ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে।
একটা লাশের বিনিময়ে ওদেরকে আমরা ১২
কিলোমিটার জমি ফেরত দিতে বাধ্য করেছিলাম।
মজার ব্যাপার হলো, বিন জোরইয়ূন শুধু মেয়ের
লাশটাই কঠিন শর্তে ফেরত চেয়ে নিয়ে গেছে,
অন্যদের লাশের ব্যাপারে একটা কথাও সে বলে
নি। ইহুদীরা নিজেদের বাণিজ্যটা ভালোই বোঝে!
সব ক্ষেত্রে। ওদের মতবাদ হলো— আগে নিজে
বাঁচো, তারপর পরিবার, তারপর দেশ!
দুই.
মাত্র দশজন ফিলিস্তিনীকে নিয়ে একটা
অভিযানে একবার অংশ নিতে হয়েছিলো।
অর্ধরাতের পর ইহুদীদের ফাকূয়া নামের একটা
গ্রামে আমরা হামলা করি। ওরা তখন
ঘুমোচ্ছিলো। হামলা শুরু হতেই ওরা জেগে
উঠলো। কিন্তু কোনো রকম প্রতিরোধ না গড়েই
যে যার মতো জানটা নিয়ে পালিয়ে গেলো। অস্ত্র
ও গোলাবারুদ সব ফেলে গেলো। এমনকি ওদের
সামরিক জিপগুলোও ওরা নিয়ে যেতে পারলো না।
ময়দান যেহেতু একেবারেই ফাঁকা, তাই আমরা
নির্বিঘ্নে অনেক মালে গনিমত নিয়ে ওদের জিপে
করেই ফিরে এলাম নিজেদের শিবিরে— রাত
পোহাবার দু’ঘণ্টা আগেই। এসেই একটা ছোট্ট ঘুম
দিলাম। মনে হচ্ছিলো; রাতে যেনো কিছুই ঘটে
নি।
মাহমুদ শাইত খাত্তাব আজ নেই। কিন্তু
ফিলিস্তিনের জন্যে .. আল-আকসা মুক্ত করার
জন্যে যে অবদান তিনি রেখে গেছেন তা আজো
বীর ফিলিস্তিনীদের হৃদয়াকাশে জ্বলজ্বল করে
জ্বলছে, মিটিমিটি আলো ছড়াচ্ছে সন্ধ্যা তারার
মতো। তার সব লেখাতেই ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ
ঘুরে-ফিরে বারবার এসেছে, তার কবিতায়
উচ্চারিত হয়েছে ফিলিস্তিনের প্রতি দরদ ও
ভালোবাসা, স্বপ্ন ও আশা এবং সংকল্প ও
প্রতিজ্ঞা। তার প্রথম বই ﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﺍﻟﻘﺎﺋﺪ —রাসূল
যখন সেনাপতি, যেটি লিখতে তাকে প্রায় দুই যুগ
সাধনা করতে হয়েছে। এবং এটি তার সবচে’ প্রিয়
বই। জিহাদের ময়দানে নবীজী কতোটা দূরদর্শী
দক্ষ যোগ্য ও কুশলী ছিলেন, সে কথাই এ
কিতাবের পাতায় পাতায় বিধৃত হয়েছে। এখানে
এই ক্ষুদ্র পরিসরে তার অন্যান্য কিতাব নিয়ে
আলোচনা করার অবকাশ নেই। তবে তার রচিত শত
শত গ্রন্থে যে বার্তাটা আমাদেরকে তিনি দিয়ে
গেছেন তা হলো এই—
আমাদের একটা ফিলিস্তিন আছে। সেখানে আছে
আমাদের প্রথম কেবলা—আল আকসা। সেই
ফিলিস্তিনের জন্যে .. সেই আল আকসার জন্যে
যুগে যুগে অনেক বীর লড়াই করেছে। রক্ত
দিয়েছে। জীবন দিয়েছে। কলমের কালি
ঝরিয়েছে। জিহাদের দ্যোতনায় ভাস্বর হাজার
হাজার কবিতাপংক্তি রচনা করেছে। এখনো
সংগ্রামের সে ধারা বহমান। এখনো ওখানে লড়ছে
অনেক বীর। বিলিয়ে দিচ্ছে জীবন। একের পর
এক। নির্ভয়ে। নিঃশঙ্কে। হাসতে হাসতে।
ফিলিস্তিনের শিশু মানেই এখন এতিম—অসহায়।
ফিলিস্তিনের নারী মানেই এখন স্বামীহারা—
বিধবা। ফিলিস্তিনীদের জীবন মানেই ঘিঞ্জি
তাঁবু জীবন। ওষুধহীন .. পথ্যহীন অবরুদ্ধ জীবন।
ফিলিস্তিনের তরুণ যুবা মানেই এখন অবিনাশী
চেতনায় ছাওয়া দ্রোহ মেশানো একগুচ্ছ শাণিত
শব্দমালা, যা কাগজে এঁকে দিলে ভাষাটা দাঁড়ায়

এসো অস্ত্র ধরি, লড়াই করি, ফিলিস্তিনকে মুক্ত
করি। আল আকসাকে ফিরিয়ে আনি। বজ্জাত
ইহুদীদেরকে বিতাড়িত করি।
আমাদের ডাক শুনে যদি কেউ না আসে, না আসুক!
যদি আমাদের পাশে এসে কেউ না দাঁড়ায়, না
দাঁড়াক!
আমরা সামনে চলবোই। রক্তনদী পেরিয়ে।
শহিদের রাঙা মিছিল সঙ্গে নিয়ে।
বাইরের মুসলিম বিশ্ব এবং ভিতরের মানুষ যতোই
করুক বেঈমানি গাদ্দারি, ইহুদীদের সাথে
গলাগলি, আমরা দমবো না। থামবো না। হীনবল
হবো না।
আমাদের জিহাদ চলবেই। অব্যাহত থাকবেই।
আমরণ। আমাদের মধ্যে শেষ ফিলিস্তিনীটি
জীবিত থাকা পর্যন্ত। সৈন্যসংখ্যা আর
অস্ত্রবলে আমরা লড়াই করি না, কখনো করিও
নি। আমরা লড়াই করি শুধুই ঈমানের বলে—
ইখলাসের বলে। আমরা আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা
রা.-এর অনুসারী। যিনি ২ লাখ রোমক সৈন্যের
বিরুদ্ধে মাত্র তিন হাজার সৈন্য নিয়ে লড়াই
করতেও দ্বিধাগ্রস্ত হন নি, শংকিত হন নি। বরং
সহযোদ্ধাদের মধ্যে যারা রোমক বাহিনীর
সংখ্যা-ভীতিতে আক্রান্ত হতে যাচ্ছিলেন,
তাঁদেরকে সাবধান করে দিয়েছিলেন এই বীরোচিত
ঘোষণায়—
ﻭﺍﻟﻠﻪ! ﻣﺎ ﻧﻘﺎﺗﻞ ﺑﻌﺪﺩ ﻭﻻ ﻋﺪﺓ ! ﺇﻧﻤﺎ ﻧﻘﺎﺗﻞ ﺑﻬﺬﺍ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﺍﻟﺬﻱ
ﺃﻛﺮﻣﻨﺎ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻪ. ﻓﺎﻧﻄﻠﻘﻮﺍ ﺇﻣﺎ ﻇﻔﺮ ﻭ ﺇﻣﺎﺷﻬﺎﺩﺓ !
আল্লাহ্র কসম! সৈন্যবল আর অস্ত্রবলে বলীয়ান
হয়ে আমরা লড়াই করি না। আমরা তো লড়াই করি
সেই দ্বীনের বলে বলীয়ান হয়ে, যে দ্বীন
আমাদেরকে দিয়েছে সম্মান ও মর্যাদা। সুতরাং
সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে চলুন
সামনে, লড়াই হবেই। সে লড়াইয়ে হয়ত আসবে
বিজয় নয়ত শাহাদাত—শহিদী মওত।’
* * *
ফিলিস্তিনীরা মাহমুদ শাইত খাত্তাবকে কখনো
ভুলে নি। ভুলে যায় নি কেউ তার রেখে যাওয়া
অবদান ও বার্তাকে। কৃতার্থচিত্তে আজো সবাই
তাকে স্মরণ করে। তার দেখিয়ে যাওয়া পথে
অবিচল থাকার শপথে তারা বলীয়ান। কান
পাতলেই শোনা যাবে তাদের সে প্রত্যয়দীপ্ত
পঙক্তিমালা—
আমরা গর্ব করি আমাদের ইরাকী ভাই ‘জেনিনের
বীর’ সিপাসালার মাহমুদ শাইত খাত্তাবকে নিয়ে।
তার দেখানো পথে চলেই আমরা অর্জন করবো
বিজয়। ছিনিয়ে আনবো স্বাধীনতা। গড়ে তোলবো
ইহুদীমুক্ত ফিলিস্তিন। আমরা কখনো তাকে
ভুলবো না। বিশেষ করে জেনিন ছাড়ার আগে এক
অশ্রুসজল বিদায়ী অনুষ্ঠানে আমাদের চোখে
চোখ রেখে যে কবিতা তিনি আমাদেরকে উপহার
দিয়ে গিয়েছিলেন, তা আমাদেরকে বাঁকে বাঁকে
দিকনির্দেশনা দেবে। তিনি সেদিন এক দীর্ঘ
কবিতার শেষে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলে
গিয়েছিলেন—
ﺇﻥ ﺍﻟﺨﻠﻮﺩ ﻟﻤﻦ ﻳﻤﻮﺕ ﻣﺠﺎﻫﺪﺍ + ﻟﻴﺲ ﺍﻟﺨﻠﻮﺩ ﻟﻤﻦ ﻳﻌﻴﺶ ﺟﺒﺎﻧﺎ
জিহাদ করতে করতে যে মরে তার জন্যেই লেখা
হোক অমর অক্ষয় জীবনের মহিমা,
যে কাপুরুষ তার জীবন আবার জীবন নাকি? কিসের
আবার চিরন্তনতা?
তিনি আমাদেরকে আরো বলেছেন— ‘ইহুদীরা
কাপুরুষ। সত্যিকারের জিহাদকে ওরা যমের মতো
ভয় করে। এরা কখনো দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধে টিকে
থাকতে পারে না। সে মনোবল কোনোকালেই
ওদের ছিলো না। ৬৭'র আরব-ইসরাঈল যুদ্ধে
আরবরা ইহুদী বাহিনীর কাছে হেরে গিয়েছিলো।
কারণ আরবরা নিজেদের উজাড় করে দিয়ে লড়তে
পারে নি। গাদ্দার ঢুকে পড়েছিলো ভিতরে। অনেক
দেশই ছিলো জয়-পরাজয় নিয়ে দ্বিধান্বিত,
ভাবিত। আরবরা সম্মিলিতভাবে ওদেরকে রুখে
দাঁড়ালে গাজা-সমুদ্রে সেদিনই ইসরাঈলের সলীল
সমাধি রচিত হতো। ঝড়ের কবলে-পড়া
পর্ণকুটিরের মতো ওরা চিহ্নহীন হয়ে যেতো।
ফিলিস্তিনের আকাশে শকুনের ওড়াওড়ি বন্ধ হয়ে
যেতো।’
তিনি আরো বলেছেন— ‘ইসরাঈল স্বপ্ন দেখে
ফুরাত থেকে নীল পর্যন্ত ওদের সাম্রাজ্যকে
বিস্তৃত করতে। এ জন্যে ওরা ইরাক গিলবে,
সিরিয়া গিলবে, মিশর গিলবে, লেবানন গিলবে
এবং তুরস্কের দিকেও মুখ হা করে এগিয়ে যাবে।
ফিলিস্তিনকে তো পেটের ভিতরে নেবেই।
জেরুজালেম তো ওদের বিশেষ লক্ষ্য। ওদের এক
নেতা বলেছে— ‘জেরুজালেম ছাড়া ইসরাঈল হতে
পারে না এবং হায়কাল-এ-সোলায়মানী ছাড়া
জেরুজালেম হতে পারে না।’ (আর এ হায়কাল
স্থাপন করতে গেলে মসজিদুল আকসা অক্ষত
থাকবে না। ওরা তা ভেঙে ফেলবে।) এ স্বপ্ন
বাস্তবায়নে ওরা সব সময় কাজ করে যাচ্ছে।
নীলনক্সা তৈরী করছে। আমরা অনেকেই এ
ব্যাপারে বে-খবর, উদাসীন।’
আমরা সারা পৃথিবীকে জানিয়ে দিতে চাই—
আমরা—ফিলিস্তিনের তরুণ-যুবা-দামাল ছেলেরা
—আমাদের পূর্বসুরীদের পথ থেকে এক পাও
পেছনে সরে আসবো না। আমাদের জিহাদ চলবে।
আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। দেশের জন্যে
লড়াই করলে, আল আকসার জন্যে লড়াই করলে,
আমাদের মা-বোনের সম্ভ্রমের জন্যে লড়াই
করলে, সর্বোপরি পবিত্র ভূখ- ফিলিস্তিনকে
ইহুদীমুক্ত করার জন্যে লড়াই করলে কেউ যদি
আমাদেরকে সন্ত্রাসী বলে, বলুক! এমন সন্ত্রাস
মিশে যাক আমাদের রক্তে-মাংসে, অস্থি
মজ্জায়! চেতনার পরতে পরতে! এমন সন্ত্রাস ও
সন্ত্রাসীকে আমরা স্বাগত জানাই এখানে—এই
ফিলিস্তিনে, সতত বিমুগ্ধতায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.