নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ জগতে নতুন পা রেখেছি কিছু জানবার জানাবার শিখবার শেখাবার সর্বোপরি ইসলামী খেদমতের উদ্দেশ্যে! কবুল করার মালিক উপরওয়ালা ়়়়়়়

Ahmad Faiz

তালিবুল ইলম!

Ahmad Faiz › বিস্তারিত পোস্টঃ

" বৃদ্ধাশ্রমে একদিন "

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩১


চেয়ারে বসে আছেন রফিক সাহেব ।
চোখের চশমাটা খুলে সবার অগোচরে চোখটা
মুছে তাকিয়ে রইলেন দিগন্তের দিকে।
চারদিকে অনেক বৃদ্ধ মানুষ, সবার বয়স ই রফিক
সাহেবের মতো ই ।
হুমমম জায়গা টা একটি বৃদ্ধাশ্রম ।
~~~
~~~
রফিক
সাহেবের মনটা আজ অনেক খারাপ।
কারন
আজ তার একমাত্র ছেলের জন্মদিন ।
এই প্রথম বাবা কে ছাড়া ই পাষান ছেলে তার
জন্মদিন পালন
করছে ।
ভাবতে ভাবতেই রফিক সাহেবের চোখ আবার
জলে ভরে উঠলো ।
~~~
~~~
রফিক সাহেবের সেই দিনটির কথা মনে পড়ে
গেলো ।
এইতো সেই দিন, মাত্র ২০ বছর আগের কথা।
ছেলের ১০ম জন্মদিন ছিলো ।
সেদিন সকালে তার ছেলে বাবাকে বললো ,
" বাবা আজ আমার জন্মদিন ।
আজকে কিন্তু আমাকে একটা সাইকেল
কিনে দিতেই হবে "।
রফিক সাহেব কিছু না বলেই অফিসে চলে
গেলেন ।
~~~
~~~
রফিক সাহেব এমনিতেই সামান্য বেতনের সরকারি
চাকরিজীবী ।
তার উপর মাসের শেষে একদমই পকেট ফাকা ।
আবার, মা মরা একমাত্র ছেলেটা কে জন্মদিনে
কিছু না দেওয়ার কথা তিনি ভাবতেও পারছিলেন না

তারপর
ভালোমন্দ কিছু না ভেবেই তার বউয়ের শেষ
স্মৃতিটা , স্বর্নের ঘড়িটা বিক্রি করে দিলেন ।
~~~
~~~
তারপর রাতে বাড়ি ফেরার পথে ছেলের জন্য
একটি সাইকেল ও একটি কেইক নিয়ে হাসিমুখে
বাসায় চলে
গেলেন ।
কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখলেন তার ছেলে
ঘুমিয়ে পড়েছে ।
তারপর সারারাত ওই ছেলের পাশে নির্ঘুম
বসে রইলেন আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে
লাগলেন ।
~~~
~~~
সকালে যখন ছেলে সাইকেলটা দেখলো তখন
সে খুশি হয় বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললো, "
বাবা তোমাকে অনেক ভালোবাসি "।
আর ,
"আমি বড় হয়ে যখন ডক্টর হবো, তখন তোমাকে বড়
একটা
বাড়ি কিনে দিবো আর একটা গাড়িও কিনে দিবো "।
~~~
~~~
~~~
ছেলেটা আজ ঠিক ই ডক্টর হয়েছে । শুধু ই ডক্টর
না শহরের নামকরা ডক্টর ।
তার আজ বাড়ি
আছে, আছে অনেক গাড়ি ।
তার পিছনে রয়েছে মূলত রফিক সাহেবের
মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রম ।
খেয়ে না খেয়ে ছেলেকে বড় করছেন তিনি!
~~~
~~~
কথা ছিলো ছেলে বাবাকে গাড়ি, বাড়ি কিনে
দিবে । কিন্তু একটা ঝড়ে কেমন যেনো
সবকিছু ওলট পালট হয়ে গেলো ।
বিয়ে দেয়ার পর ছেলেটা একেবারেই
বদলে গেছে ! বাবাকে আর বাবা মনে করে না সে ।
চাকরের
মতোই ব্যবহার করে । বউ এর সাথে পরামর্শ করে
একদিন
বৃদ্ধাশ্রমেই রেখে আসলো বাবাকে ।
~~~
~~~
যেই বাবা তাকে মানুষের মতো মানুষ করলো
সে বাবাকেই সে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসলো ।
....
যেই হাতে বাবা ছেলেকে খাইয়ে দিতেন ,
সেই হাতেই ছেলে কিছু টাকা দিয়ে
বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসলো ।
....
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আবারো কেঁদে
উঠলেন তিনি । এ এক অন্যরকম কান্না । পাষান
সেই সন্তানের
জন্য কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি একপ্রকার
শুকিয়েই গেছে
। বার বার প্রতিজ্ঞা করছেন পাষান ছেলের জন্য
আর
কাঁদবেন নাহ।
কিন্তু রফিক সাহেবের মতো বাবা'রা তোহ আর
পাষান হতে
পারে নাহ ।
~~~
~~~
তারপর ভেতরে যেয়ে নামাজ পড়ে ছেলের
জন্য প্রানভরে দুয়া করলেন ।
তারপর ছেলের দেয়া সেই সাদা পান্জাবী টা পড়ে
ছেলের
জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন ।
....
হয়তো আজ
তার ছেলে তাকে নিতে আসবে
আর বলবে, "বাবা
বড্ড ভালোবাসি তোমায় ।
চলো, বাড়ি চলো ।
তোমার নিজের বাড়িতে চলো" ।
"চলো, আজ তুমি ই কেইক কেটে আমাকে খাওয়াবে "

~~~
~~~
~~~
কিন্তু
একসময় সূর্য ডুবে গেলো ।
দিন কেটে যায় , কেটে যায় রাত ....
তারপরও তার ছেলে তাকে নিতে আসে না ।
এভাবেই বাবা ছেলের জন্য অপেক্ষায় থাকে
অথচ ছেলের একবার ও বাবার কথা মনে পড়ে
না ।
~~~~
~~~~
~~~~
এ কেমন ছেলে ....??
এ কেমন সমাজ ....??
যে সমাজে রফিক সাহেবের মতো বাবাদের
পরিনতি এমন হয়

যেই রফিক সাহেবরা তার জীবনের চেয়েও তাদের
সন্তানদের বেশি ভালোবাসে ।
কিন্তু ফলাফল হিসেবে যেতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে যা
তাদের
কল্পনার বাহিরে থাকে ।
~~~~
~~~~
প্রত্যাশা একটাই, রফিক সাহেবের মতো আর
কোনো
বাবাকেই যেনো তার সন্তানদের অবহেলার কারনে
বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয় ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.