![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন কসমিক ট্র্যাভেলার, মহাজাগতিক মুসাফির।
তখন গোধূলি লগন শেষ হয়ে বাড়ির পূর্ব পাশের বাঁশঝাড়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে।দোস্ত কাউছার আলমের -এর সাথে মুঠোফোনে খোশগল্পে মেতেছিলাম কিছুসময়।অামাদের অনাগত অনিশ্চিত জীবন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল।তখন পূব অাকাশে উড়ে বেড়ানো সাদা মেঘের মাঝখান থেকে শরৎ এর চাঁদ মাত্র উঁকি দিয়েছে।যেন নব বধূ শ্বশুরালয়ের অপরিচিত মুখ দেখে ঘোমটার অাড়ালে লাজুক হাসছে।চাঁদের অাগমন দেখে অামাদের অনিশ্চিত জীবন নিয়ে চলমান কথাগুলোকে অনিশ্চয়তায় ফেলে মেতে উঠি চাঁদের অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে।চাঁদকে ঘিরে অামরা ডুবে থাকি কতশত রোমাঞ্চকর ভাবনায়।জীবনে বহুবার চাঁদ দেখেছি।কখনো বিল্ডিং এর ছাদে বসে, কখনো বাড়ির পাশের পিচ ঢালা পথে হাঁটতে হাঁটতে, কখনো বৃক্ষের নিচে খবরের কাগজ বিছিয়ে ডালমুটের অায়োজনে, কখনোবা জানালার পাশে শুয়ে শুয়ে।কিন্তু গতকাল চাঁদটাকে অন্যরকম লেগেছিল।চাঁদের অালোয় নিজের ভিতরের অাত্মভোলা মানুষটিকে অালোকিত হতে দেখলাম।অপলক নয়নে দেখতেছিলাম অালোক রশ্মি চাঁদের অবয়ব।পাতলা ওড়নার আড়ালে লুকিয়ে থাকা ষোড়শীর মত শরৎ -এর সাদা মেঘের আড়ালে লুকোচুরি খেলা চাঁদটাকে মনে হয়েছে টগবগে পূর্ণযৌবনা রূপবতী নারী।অাকাশে চাঁদের চারপাশে উড়ে বেড়ানো সাদা কাদম্বিনীদের মনে হয়েছে এই নারীরুপি চাঁদের সেবিকা।অার পুরো অাকাশে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য নক্ষত্রের সমারোহকে মনে হয়েছে নারীরুপি চাঁদের দেহরক্ষী।কিছুসময় পর ফোনালাপ শেষ করে বাসায় ফিরে যাই।তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাবার সাথে উনার ব্যাবসায়িক লেনদেনের হিসাবের ব্যাপারে অালাপকালে চাঁদের এই অপরূপ সৌন্দর্যের রহস্য সম্পর্কে জানতে পারলাম।গতকালই অাশ্বিন মাসের প্রথম দিন ছিল অর্থাৎ ঋতুরানী শরৎ তাঁর রাজপ্রসাদের রূপ, সৌন্দর্য, মনিমুক্তা, ঐতিহ্য ও অহংকার নিয়ে প্রকৃতিতে অাগমন করেছে।অামার লোভাতুর মন ছুটে গেল যৌবনা চাঁদের রূপের টানে।তখন গভীর নিস্তব্ধ রাত।শরদিন্দু মধ্য গগনে গিয়ে পৌছেছে।জ্যোৎস্নায় সাঁতার কাটছে সারা জগত।ঝিঁঝিঁপোকা ঝির ঝির করে সুর তুলছে।বাড়ির পশ্চিম দিকের বালুর মাঠের নিঃসঙ্গ কাশফুলগুলো জ্যোৎস্নার অালিঙ্গনে মধুর সময় পার করছে।এত রূপের ছড়াছড়ি ! যেদিকে চোখ যায় সর্বত্র যেন মমতার জড়াজড়ি।সে দিগন্ত থেকে অনন্ত ছড়িয়ে দিচ্ছে তাঁর মায়াবী অালো। উঠোনের মাটিতে জ্যোৎস্নার প্রেম -অনাবিল।অার অামি চির যৌবনা এই রূপবতী শরদিন্দুর স্নিগ্ধ অালোয় স্নান করে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যাই প্রফুল্ল মনে।তখন রাত চারটা বেজে দশ মিনিট।সমুদ্রের অথৈ জলরাশিতে চাঁদের প্রতিবিম্বকে চুমু খেতে গিয়ে মৃত্যুকে অালিঙ্গন করা চৈনিক কবি লি বাই -এর ধরাধাম ত্যাগ সত্যিই স্বার্থক হয়েছে।
[প্রথম প্রকাশঃ ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ফেসবুকে।যদিও এখন চারিদিকে হেমন্তের বাতাস বইছে।আজ অকস্মাৎ টাইমলাইন ঘুরতে গিয়ে লেখাটি চোখে পড়ল।তাই আমার এই ভালো লাগার মুহুর্তটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।]
©somewhere in net ltd.