নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুব সাধারণ একজন মানুষ। বিনয়ে বলা সাধারণ নয়, সত্যিকারের সাধারণ। রূঢ় ভাষায় বললে \"গুড ফর নাথিং\"।

বিষাদ সময়

বিষাদ সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাল মন্দ নির্ধারণের দায়িত্ব আপনাদের

১৪ ই জুন, ২০২৩ রাত ৯:০৭



কোন সরকার ভাল, কোন দল ভাল, কোন নেতা ভাল, কোন ধর্ম ভাল, এমনকি কোন ব্লগার ভাল এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কেউ একে ভাল বলবেন তো অন্যজন বলবেন ওকে। অনেক ক্ষেত্রে এ ভাল লাগা বা না লাগার কোন যুক্ত সংগত কারণই থাকে না। বেশির ভাগটাই হয় আবেগ বা অন্ধ বিশ্বাস নির্ভর। চুড়ান্ত তর্ক বিতর্কের শেষে সবাই যার যার অবস্থানে অনড়। অথবা শেষ পর্যন্ত যা এখন নাই আগে ছিল তাই ভাল ছিল বলে একটা দীর্ঘনিশ্বাস। যাক এসব ভনিতা না করে দুটো পুরানো গল্প তার সাথে কিছু পাঁচ ফোড়ন যোগ করি।

যদি প্রশ্ন করা হয় কোন সরকার ভাল ছিল অনেক তর্ক বিতর্কের শেষে অনেকেই সব সরকারের আমলেই বলেন আগের সরকারই ভাল ছিল। কেন ?

উত্তর না দিয়ে একটা গল্প বলি -এক ডাকাত সর্দার এর অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ট। কিন্তু এই ডাকাত দলের সর্দার শুধু ডাকাতি করতো কখনও খুন, বাড়িতে অগ্নি সংযোগ বা ধর্ষণ করতো না। একদিন সর্দার খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো । তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা হল এবং সে তার প্রিয় সাগরেদকে ডেকে বলল দেখ আমি মরার পর এমন কাজ করবি যেন দশ গ্রামের লোকে আমাকে ভাল বলে। সাগরেদ বললো যথা আজ্ঞা। গ্রামের লোকদের কানে এ কথা যাওয়ায় তারা উৎফুল্ল হয়ে উঠল। কদিন পর সাগরেদ গ্রামে ডাকাতি করতে এসে খুন আগ্নি সংযোগ ধর্ষন সব করা শুরু করলো। তখন গ্রমবাসীরা এক বাক্যে বললো এর আগের ডাকাত সর্দার অনেক ভাল ছিল। মৃত ডাকাত সর্দারের মনোবাঞ্চা পূর্ণ হলো।
এভাবে জনগন নতুন সরকার আসলে উৎফুল্ল হয় আর সেই সরকার আগের সরকারকে ভাল বলার ব্যবস্থা করে যায়।

আমাদের দেশে অনেক নেতা আছেন। যদি প্রশ্ন করা হয় কোন নেতা ভাল? তবে শুরু হবে চির পরিচিত কেচাল। কেউ বলবেন এ ভাল কেউ বলবেন ও ভাল। যাহোক তর্ক বিতর্ক চলার ফাঁকে আসেন একটা গল্প পড়ি.....

কোন এক গ্রামে রাস্তার উপর ছিল একটা কাঁটা গাছ। ঐ পথে যাতায়াতের সময় প্রায়ই গ্রমবাসীরদের পায়ে কাঁটা ফুটতো। সংস্কারের কারণেই হোক বা মায়ায়ই হোক বা মঙ্গল-অমঙ্গল চিন্তা করেই হোক, গ্রমবাসী কাঁটা গাছটা কাটতো না বরং ওটাকে একটু সমীহ করে চলতো। সেই গ্রামের লোকজন সহ দুই দলের রাজনৈতিক নেতা গেছেন গ্রাম ঘুরতে হঠাৎ সেই কাঁটা গাছের কাঁটা ফুটলো এক নেতার পায়ে । নেতা অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন-
কে আছো কাস্তে দিয়ে কেটে একে নির্মুল কর।
গ্রামবাসী একরকম আর্তনাদ করে উঠল।
সাথে সাথে আপর নেতা বললেন-
আহা অমন করে বলবেন না রুক্ষ জাগায় জন্মেছেতো তাই ওর স্বভাব একটু রুক্ষ। এই কে আছো ওর গোঁড়ায় এক কেজি চিনি ঢেলে দাও ওর স্বভাব মিষ্টি হয়ে যাবে।
এই নেতার আচরণ আর বিচক্ষণতায় গ্রামবাসী মুদ্ধ হয়ে গেল। নিরিবিলি জাগায় পেয়ে চিনি ঢালা নেতাকে এক সাগরেদ বলল " কয়দিন আগে তো আপনার পায়েও কাঁটা ফুটেছিল। তখন তো আপনিও গাছটা কাটতে চেয়েছিলেন। গ্রমবাসীর কি রিআ্যকশন হবে ভেবে কাটেননি। এই চান্সে তো আপনি গাছটা শেষ করতে পারতেন আপনার কোন দোষই হতো না।"
নেতা বললেন - তাতে কি আমার প্রতি গ্রামবাসী ইমপ্রেসড হতো? যাকগে তোরা এসব বুঝবি না গাছের গোঁড়ায় চিনি দিতে বলেছি তাই দে। কাঁটা গাছটির গোঁড়ায় চিনি দেয়া হলো। ক'দিন পর চিনির লোভে গাছটার গোড়ায় বিশ পিপড়া বাসা বাঁধলো এবং তিল তিল করে কামড়ে গাছটিকে মেরে ফেলল।
এক সাগরেদ গাছটির অবস্থা দেখে বুঝলো নেতা কি সুক্ষ চাল চেলেছেন- সাপও মরলো সুনামও হলো। তাই সবাই নেতা হতে পারেনা।

আর আমরা জণগন সারা বছর নেতাদের গাল মন্দ দিব, তারপর নির্বাচন আসলে ভোট বিক্রি করবো, গরম চা পুরি খেয়ে গলায় শ্লোগান তুলবো, মালপানি খেয়ে এ ওর মাথা ফটাাবো আর যারা কিছু নিবো না তারাও অন্ধ আবেগ বা অন্য দলের প্রতি আক্রোশে ঘন্টার পর ঘন্টা রোদে দাঁড়িয়ে লক্ষ লক্ষ ভোট দিয়ে এসব নেতাদের জিতিয়ে আনবো তারপর বছর ঘুরতে না ঘুরতে আবার গলায় শ্লোাগন তুলবো "অমুক ভাইয়ের চামড়া তুলে নেব আমরা।"

পরিবার, পাড়া, গ্রাম বা ব্লগ সব জাগায়ই আমাদের প্রায় একই অবস্থা। সত্যি সেলুকাস।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০২৩ রাত ৯:২৪

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: আমরা পতনে বিশ্বাসী। খালি পতন ঘটিয়ে সুখ পাই। ৭৫, ৯০, ২০০১, ২০০৭ এর পর এখন আবার পতন ছাড়া ভাল্লাগেনা রোগ এ ধরছে। গাছে তুলে মই কেড়ে নিতে বড়োই ভাল লাগে আমাদের।

১৪ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:৪৮

বিষাদ সময় বলেছেন: আসলে আমারা জাতি হিসাবে অসহিষ্ণু এবং আবেগ প্রবণ। কোন সরকার নিয়ে যদি কথা নাও বলি। কিছুদিন আগের কথা আমরা প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে লক্ষ লক্ষ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলাম। তিনিও ঢাকার উন্নয়নে আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু ডেঙ্গুর সময় যেই তিনি বললেন-মানুষের ঘরে গিয়ে মশা মারা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব না। সাথে সাথে তার সকল কর্ম জলে ভেসে গেল। তাকে নিয়ে শুরু হল ট্রল। জনগণ, স্বার্থান্বেষী মহল সবাই তার বিপক্ষে। তার ক'দিন পর তিনি যখন মারা গেলেন তখন আবার সবাই স্বীকার করলেন আনিসুল হক ছিলেন মেয়রদের রোল মডেল। সত্যি সেলুকাস।
সাথে পেয়ে খুশী হলাম। ভাল থাকবেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:২৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: বিষাদ সময়,




প্রবচনই তো আছে-- যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ।
আমাদের খাসলত দিন দিন অধঃপতনে যায় বলেই এমনটা হয়!

১৪ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:৫৫

বিষাদ সময় বলেছেন: প্রবাদ প্রবচন নিয়ে আর কি বলবো! আমরা একই মূখে পরষ্পর বিরোধী কথা বলতে অত্যন্ত পটু। সে কারণে আমাদের প্রবাদ প্রবচনও তেমনই।
আয় বুঝে ব্যায় কর যেমন প্রবাদ আছে তেমনি চার্বাক দর্শণে বলা হয়েছে- ‘ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ :)

কোনটা রেখে কোনটা বাদ দিবো??????

আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণীত হলাম। অনেক অনেক ভাল থাকবেন।

৩| ১৪ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:৩৯

কামাল১৮ বলেছেন: যে ভালো মন্দ নর্ধারণ করবে সবার আগে তার সেই ক্ষমতা থাকতে হবে।নয়তো তার নির্বাচন ঠিক হবে না।
একজন চোর,একজন ডাকাত,একজন দুর্নীতিবাজ নির্বাচনে দাঁড়ালো, এখান থেকে আপনি কাকে নির্বাচিত করবেন।

১৪ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:৫৯

বিষাদ সময় বলেছেন: যে ভালো মন্দ নর্ধারণ করবে সবার আগে তার সেই ক্ষমতা থাকতে হবে।নয়তো তার নির্বাচন ঠিক হবে না।

গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলেছেন। একটা কথা আছে-
"Democracy without Education is Hypocrisy without Limitation"

আমরা সেই হিপোক্রাসিই প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি।
অনেক অনেক শুভকামনা।

৪| ১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১২:১২

আমি সাজিদ বলেছেন: ওরা যারা হালুয়া রুটির ভাগ পেয়েছে!

১৫ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১১:১২

বিষাদ সময় বলেছেন: কে যে হালুয়া রুটি খাচ্ছে আর কে খাচ্ছে না তা নির্ণয় করাই তো কঠিন। হালুয়া রুটি খোররা তো আফিম খোরদের চেয়ে ভাল। আমরা কিছু মানুষ তো তিন দলের আফিম খেয়ে বসে আছি...নেশার ঘোরে নিজের দল ছাড়া আর কিছুই বুঝি না।
ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৫| ১৫ ই জুন, ২০২৩ ভোর ৪:২৩

কাঁউটাল বলেছেন: ফেয়ার ইলেকশন ছাড়া পাবলিকের জাজমেন্ট বুঝা যাবে না।

১৫ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১১:১৭

বিষাদ সময় বলেছেন: পাবলিক কি জাজমেন্ট দেয়ার যোগ্য মনে হয়। যে দেশে দল ছাড়ার পর ডঃ কামাল হোসেন বা বদরুদ্দোজা চৌধুরীদের মত নেতাদের নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার মত অবস্থ হয় সে দেশে পাবলিকের জাজমেন্টের মূল্য কতটুকু?
ধন্যবাদ।

৬| ১৫ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১০:৫৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: লাইনে দাড়িয়ে ভোট? সেটা আবার কি?

১৫ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১১:২০

বিষাদ সময় বলেছেন: লিটন ভাই আপনি তো তরুণ ব্লগার নন। ১৯৯১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত কি লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন নাই?
আমার ব্লগ বাড়িতে আসায় ধন্যবাদ।

৭| ১৫ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: কামাল১৮ বলেছেন- একজন চোর, একজন ডাকাত, একজন দুর্নীতিবাজ নির্বাচনে দাঁড়ালো, এখান থেকে আপনি কাকে নির্বাচিত করবেন?

আসলেই তাই।

১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:৪০

বিষাদ সময় বলেছেন: সোজা হিসাব। কাউকেই ভোট দিব না........
শুভ কামনা। ভাল থাকবেন।

৮| ১৬ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৭:৪২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আওয়ামী লীগ ভেঙে জাসদ হলো, তারপর ধ্বংসাত্মক রাজনীতি শুরু করল। আওয়ামী লীগের পতন হলো একসময়। জাসদের কী হলো? সেনাবাহিনী তাদের পুরোপুরি তছনছ করে দিল। আমি ভাবি, জাসদের নেতাকর্মীদের তখন কী মনে হয়েছিল? তাদের ধ্বংসাত্মক রাজনীতির ফল যে সেনাশাসকরা খেল, এটা মানতে কেমন কষ্ট হয়েছিল না? তারা হয়তো ভেবেছিল তাদের সুদিন আসবে।

যা দেখলাম, তরুণেরা বর্তমানের রাজনীতি পছন্দ করে না। একজন ওদিন লিখল ছাত্রদল ভালো ছিল। অথচ সে ছাত্রদলের রাজনীতি দেখেইনি। বিএনপির রাজনীতি নিয়ে তাদের অনেকের কৌতূহল তুঙ্গে। মনে করে কতই না ভালো ছিল। নিরপেক্ষভাবে ভালোমন্দ যাচাই-বাছাইয়ের বালাই নেই। বেশিরভাগ উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতি পছন্দ করে।

১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১১:১১

বিষাদ সময় বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বয়সে প্রবীণ হওয়ায় এবং কিছুটা রাজনীতি সচেতন হওয়ায় রাজনীতির অনেক খেলা দেখলাম । কিন্তু কেন যেন রাজনীতির সমীকরণটা ঠিক মেলাতে পারি না।

বর্তমান রাজনীতির আর কোন আদর্শ নাই। ক্ষমতায় যাওয়া বা টিকে থাকাই একমাত্র লক্ষ। সে কারণে তরুণরা যদি রাজনীতি বিমূখ হতো তবে আাপত্তি ছিল না। কিন্তু বর্তমানে বেশির ভাগ তরুণ মোজ, মাস্তি বা ভোগবাদে নিমগ্ন দুঃখটা সে কারণে। তরুণদের বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কিছু কারণ আছে তার কোনটা ইতিবাচক আর কোন কোনটী নেতিবাচক। আমার মনে হয় এর একটি কারণ হচ্ছে বিএনপি কিছু গেম তার বি টিম দিয়ে খেলায় ফলে একটা ক্লিন্‌ ইমেজ ধরে রাখতে সক্ষম হয়। আরো কিছু কারণ আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চাচ্ছি না।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ। অনেক অনেক শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.