নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি গল্পকার ব্লগার, নাস্তিক নই।

আলভী সীমান্ত

আলভী সীমান্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

যদি মন কাঁদে, তুমি চলে এসো এক বরষায়...

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩


বাংলা সাহিত্যের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস “কৃষ্ণপক্ষ” থেকে মেহের আফরোজ শাওন চিত্রনাট্য করেছেন, সেই চিত্রনাট্য অবলম্বনে তিনি সিনেমা বানিয়েছেন। উপন্যাস থেকে তিনি কিছু বাদ দিয়েছেন, কিছু যোগ করেছেন। বর্তমান সময়ের উপযোগী করতে কিছু জিনিস এডাপ্টেশন করেছেন যা হুমায়ূন সাহিত্যের মানহানী করার শামিল।কারন, সাহিত্যের কোন কিছুকে যদি সিনেমাতে রুপ দিতে হয় তাহলে তাকে নিখাদ রাখাই শ্রেয়।হলে গিয়ে আপনি ‘কৃষ্ণপক্ষ’ সিনেমা দেখতে পাবেন। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ উপন্যাস সিনেমা হলে দেখতে পাবেন না।
কৃষ্ণপক্ষ যখন উপন্যাস হিসেবে পাঠকেরা পড়েছিলেন তখন প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা অরু আর মুহিব কল্পনা করেছিলেন। তাদের সবার কল্পনার সাথে হয়তো অনেকটাই অমিল হবে এখানে। অতটুকু মেনে নিয়ে অনেকেই যাচ্ছেন সিনেমা দেখতে।
শাওনের প্রথম সিনেমার পরিচালনা ভাল, বেশ ভাল। পুরো সিনেমা কখনো গতি হারায়নি।তবে সিনেমায় শাওনের সবচেয়ে বড় এবং সম্ভবতা একমাত্র দূর্বলতা তিনি অরু-মুহিব, জেবা আপা আর শফিক সাহেব ছাড়া আর কারো চরিত্রকে কোন ধরণের গুরুত্ব দেননি, কোন চরিত্রকেই বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেন নি। বলতে গেলে একটু পরেই হত্যা করেছেন। অথচ প্রায় সবগুলো চরিত্র অসম্ভব প্রমিজিং, চরিত্রগুলোর শুরুও দুর্দান্ত। অভিনয়ও ভাল ছিল।
কৃষ্ণপক্ষ সিনেমাতে সবচে চমৎকার কাজ হয়েছে সিনেমেটগ্রাফিতে। এই কাজের জন্য শাওনকে অভিনন্দন এবং সিনেমাটগ্রাফারকে ধ্যনবাদ দিতেই হবে।সিনেমেটগ্রাফি দেখে যে কেউই বলবে এ কাজ বলিউড অথবা হলিউড সমসমানের। যেদৃশ্যে যেমন শর্ট প্রয়োজন ছিল তেমনটাই পাওয়া গেছে।
বানিজ্যিকঘরানার নায়িকা মাহিকে নিয়ে অনেকেই ভয়ে ছিলেন। অনেকে অশংকা করেছিলনে এখনেও হয়তো তার সস্তা ন্যাকামি দেখা যেতে পারে। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি অসাধারণ ভাবে অরু চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। সিনেমার প্রথম অর্ধে ভাল না করতে পারলেও শেষের অংশে বেশ ভাল করেছেন। তবে সবচে কষ্ট দিয়েছে রিয়াজ, মুহিব চরিত্রে।
মুহিব একটি হিমু চরিত্র। সিনেমার মুহিবের সাথে গল্পের মুহিবের একটাই মিল ছিল, হলুদ পাঞ্জাবিতে।তাছাড়া প্রায় সবকিছুই অমিলের।রিয়াজ মুহিব চরিত্রে শুধু ব্যর্থ হন নি, তাঁর অভিনয়ও ভাল ছিল না। একটা এম. এ. পাশ করা বেকার হিমুর বয়সের তুলনায় রিয়াজ অনেক বয়স্ক এবং মোটা। তার হাব-ভাবে তাঁকে হিমু মনে হয় নি।
তবে অভিনয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন জেবা চরিত্রে তানিয়া আহমেদ। শফিক সাহেব চরিত্রে আজাদ আবুল কালামও অনেক ভাল অভিনয় করেছেন। তাদের অভিনয়ে মনে হয়েছে সত্যিকারের জেবা আর শফিক সাহেব জেন পর্দায় হাজির হয়েছেন।
কৃষ্ণপক্ষ একটা নিখাঁদ ভালবাসার সিনেমা। কমেডি না। হলের মধ্যে শিষ বাজানোর সিনেমা না। এই ভালবাসার পাত্র মুহিব। প্রেমিকা ও বউ অরুর ভালবাসা, জেবা আপার ভালবাসা, বন্ধুদের ভালবাসা। এই ভালবাসা ছড়িয়ে যাবে সবার মধ্যে। সংক্রমিত হবে। উপন্যাস পড়া থাকুন আর নাই থাকুন, আপনি কাঁদবেন। পাশের জনকে বুঝতে দিতে চাইবেন না। চোখ মুছতে মুছতে হল থেকে বের হবেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.