নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিরনবীনের যদি ঘটে জয়--সাজিভরা হয় ধনে ধনে।নিয়ো না, \nনিয়ো না মোর ঠিকানা এ ছায়ার আবরণে |||

ব্লগার রিয়াজ

আপনার একটা সুহৃদয় আছে অনেক দামী, সেটাকে পচতে দিবেন না কেননা পচে গেলে সেটাকে নোঙর ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।তাই আপনার হৃদয় কে মানবের জন্য ব্যবহার করুন

ব্লগার রিয়াজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

"মেঘের ও কুয়াশার ভালোবাসা "

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪৬

মেঘ!



এ যে আকাশের মেঘ নয়। ছোট্ট
ছেলে মেঘ। দিন যায় রাত আসে,
আবার রাত যায় দিন আসে। কিন্তু
মেঘের যে চিন্তা ভাবনার আর অন্ত
নেই। সে যে দূরন্ত,ছুটেই
চলেছে শুধু। এইতো সেদিনের কথা
সে তখন ক্লাস ফাইভ এ পড়ে। একাকি
এক বালক, স্কুলে যায় একা একা, আবার
ফিরেও আসে একা একা। যাওয়া আসার
পথের সাথী বলতে ছিল একটি রাস্তা,
তার সাথেই তআর পরিচয়। সে একদিন
স্কুলে যেতে যেতে রাস্তায়
হোঁচট খেল,দারুন ব্যাথা অনুভব করল
সে।
সে নিজেকে ধরে রাখতে
পারল না,কিন্তু নিমিষেই যে কি হলো
সে নিরবে দাঁড়িয়ে শুধু চুপ করে রইল
আর দেখল যে কেউ তার নতুন
স্কুলে তার বাবার সাথে এসেছে।
মেঘের মনে কৌতুহল জাগল কে
সে????

আমি তো তাকে কোনোদিন
দেখেছি বলে মনে হয় না। কিন্তু
কেন তার কথা এত ভেবে চলেছি?
প্রশ্ন যেন মনের মধ্যে জমেই
থাকছে।

সেইদিনের মতো মেঘ বাসায় ফিরে
এলো। পরের দিন মেঘ স্কুলে
গেল একা একা। মেঘের যে অস্থির
লাগছে, সে সেই মেয়েটিকে আজ
দেখতে পেল না। সে মন খারাপ
করে রইল। আবার স্কুলের শেষে
সে বাসায় ফিরে মন খারাপ করে রইল।
মা
তাকে কাছে ডেকে বলল বাবা মেঘ
কি হয়েছে তোর?????
আজ সারাদিনে পড়তে ও তো বসিস নি।
ঠিক মতন তো খাওয়াও করিস না দুইদিন
থেকে!!!
কি হয়েছে বাবা??

মা কই, কিচ্ছু হয়নি তো মা আমার।
সেই ভাল বাবা কিছু না হলে।
পরের দিন মেঘ আবার স্কুলে গেল,
কিন্তু আজ সে ওই মেয়েটিকে
দেখতে পেল তখন পি.টি হচ্ছিল
স্কুলে। মেঘ মেয়েটিকে
দেখতে পেয়ে খুবই খুশি হলো।
তারপর সে ক্লাসে গেল কিন্তু সে
আর মেয়েটিকে দেখতে পেল না।
আর পাবেই বা কিভাবে?

সেই মেয়েটি যে অন্য শাখায় ক্লাস
ফাইভে পড়ে। একদিন মেঘ দেখতে
পেল তার ঠিক সামনে বিপরীত পাশের
রুমে মেয়েটি লিখতেছে। মেঘ
অবাক হয়ে শুধু তাকে দেখেই রইল,
চোখ যে মেঘের নামছেই না
কুয়াশার দিকে চেয়ে।
ওহ!!!!!!
বলাই তো হয়নি কুয়াশা সি মেয়েটির
নাম।

মেঘ যার দিকে তাকিয়ে ছিল।
এইভাবেই চলতে থাকে মেঘের
স্কুল জীবন। একদিন মেয়েটি
স্কুলে একা একা দাঁড়িয়ে ছিল গ্রীলে
হাত দিয়ে, কি যেন ভাবছে। মেঘও
নির্বাক চোখে তার দিকে চেয়ে
আছে। আর স্কুলের টিফিন হবে একটু
পরেই।

মেঘ নিজের অজান্তেই কুয়াশার কাছে
এসে বলল যে তোমার নাম কি??
মেয়েটি বলল কুয়াশা।
ছেলেটি বলল তোমার মন কি খারাপ?
মেয়েটি বলল না,আমি একাই একাই
থাকি
সবসময়, আমার কেউ নেই তেমন
আপন।
ছেলেটি হঠাৎ করে বলে ফেলল
যে আমার বন্ধু হবে আমিও একা!
মেয়েটি চেয়ে থাকল কিছুক্ষন,
তারপর বলল যে হুম হব।

এভাবেই তাদের পরিচয় শুরু হল। কিন্তু
তারা কখনো ভাবেনি যে তাদের
আলাদা
হতে হবে। কারন ক্লাস ফাইভের
জীবন থেকে তারা ক্লাস সিক্স এর
জীবনে পা দিচ্ছে মাত্র তিন মাস পর।
তারা প্রতিদিন স্কুলে যেত। অনেক
মজা করত ক্লাসের সময়ে।
কিন্তু মজার ব্যাপার ছিল যে তারা
যদি
কেউ একজন স্কুলে না আসত একদিন,
তাদের কারোর ভাল লাগত না।
কুয়াশা স্কুলে আসলেই বেঞ্চে
বসে বসে মেঘের কথা ভাবত, আর
দিপ্তী নয়নে মেঘের দিকে
তাকিয়ে থাকতো। মেঘ যখনই
মেয়েটির দিকে দেখে তখনই
মেয়েটি লজ্জায় চোখ ঘুরিয়ে নিত।
এভাবেই চলে যেতে লাগল তাদের
দিন।

একসময় তাদের প্রাইমারির স্কুল জীবন
শেষ হবার আগের দিন, যেদিন বিদায়
অনুষ্ঠান হবে তাদের সবাই কে
প্রাইমারির জীবন শেষ করে চলে
যেতে হবে।

মেঘ কুয়াশার কথা ভেবে কুয়াশার
চোখের আঁড়াল হয়ে কাঁদতে লাগল
এই ভেবে যে সে আর কুয়াশা কে
কোনো দিনও দেখতে পাবে না।
কিছুক্ষন পরেই সে ফিরে এলো এবং
কুয়াশার চোখের দিকে তাকিয়ে তার
ভাষা মেঘ বুঝতে পারল যে, কুয়াশার ও
মন খুব বিষন্ন।
এরই নাম কি ভালোবাসা?

ছোট্ট মেঘ বুঝল না। তারপর অনুষ্ঠান
শেষ হলো।
যে যার মতন বিদায় নিয়ে চলে এল
বাসায়।
মেঘের মন খুব খারাপ ছিল সেইদিন,
সে একা একা নদীর তীরে গিয়ে
বসে বসে কান্না করল আর অবাক
চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে
থাকল।
রাত হয়ে গেল কিন্তু মেঘকে আর
কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না।
অবশেষে মেঘ বাড়ির কথা চিন্তা
করেই নিজেই চলে এল। মা ভীষণ
চিন্তায় ছিলেন। মেঘকে পেয়ে মা
পরম আনন্দিত হলেন।
আর কান্নায় ভেঙে পরলেন।
এভাবে তিন চারদিন যাওয়ার পর
মেঘের
মনে পড়ে গেল কুয়াশার কথা, তার
সাথে আর দেখা হয়না মেঘের।
মেঘ হাই স্কুলে যেতে লাগল, কিন্তু
তার বার বার কুয়াশার কথা মনে
পড়তেছে। সে কিছুতেই কুয়াশা কে
ভুলতে পারছে না। মেঘ প্রতিদিন
কুয়াশা

কে খোঁজার জন্য তাদের গ্রামে
যেত। যার নাম ছিল কাঁকনডুবি।
কিন্তু সে আর কুয়াশা কে দেখতে
পাই না কোনোদিন। তার কাছে যেন
সবকিছু স্বপ্নের মতন মনে হচ্ছে,
সে মনে মনে ভাবতে লাগল কুয়াশা
কেনই আমার জীবনে এলো, আর
কেনই বা চলে গেল।
যি নাই বা হবে আমাদের আর
কোনোদিনও দেখা। এভাবে কুয়াশা
কে খোঁজার জন্য সে প্রায় স্কুল
শেষে কাঁকনডুবিতে যেত।
এইভাবে ৪ বছর অতিবাহিত হওয়ার
পরে---------------

মেঘের আর তর সইল না, সে এক
দোকানে গিয়ে ভয়ে ভয়ে কুয়াশার
বাবার কথা জানতে চাইল, কারন
কুয়াশার বাবা
একজন শিক্ষক ছিল মেঘ তা আগে
থেকেই জানতো!অবশেষে মেঘ
ঠিকানা পেল কুয়াশার বাসার। মেঘের
তেমন কিছুই আর মনে পরেনা কুয়াশার
চোখ দুটো ছাড়া। সে সাইকেলে
একদিন কুয়াশার বাসার রোডের সামনে
দিয়ে যেতেই একটি মেয়েকে
সে দেখতে পেল রাস্তা দিয়ে
হেঁটে যাচ্ছে বোরকা পড়ে।
মেঘ
মেয়েটির চোখ দুটি দেখতে
পেল, মেঘের কেমন জানি একটু
সন্দেহ হল, কারন এই রকম চোখ আর
কুয়াশার ছাড়া আর কারোর হইতে
পারে
না। সে আবার অন্য রাস্তা দিয়ে গেল
মেয়েটিকে দেখার জন্য। আবার
সেই চোখ দেখতে পেল মেঘ,
এইবার সে পুরোপুরি নিশ্চিত হল যে
এই আমার হারিয়ে যাওয়া কুয়াশা।
কিন্তু যা দেখল সে কুয়াশার অনেক
পরিবর্তন হয়েছে। সে আমায় কি
চিন্তে পারল না নাকি চিনেও না
চিন্তে
চাইছে।

মেঘ ভাবল।
একসময় মেঘ মনে করল ধুর আমি কি
এইসব ভাবছি, আর কেউ না জানলে
আমি
জানি কুয়াশা আমাকে ভুলতে পারবে
না।

যাই হোক এভাবেই মেঘ কুয়াশাকে
দেখার জন্য কাঁকনডুবি তে যেত।
মেঘ কুয়াশা কে অনেক দিন দেখতে
পায়নি, সে কেমন দেখতে হয়েছে
তাও জানেনা। জানে সুধু তার চোখ।
মেঘ মনে মনে ভাবল তার দেখা আমি
পেয়েছি এটাই তো অনেক, এর
চেয়ে আর কি বেশি আশা আমার করার
ঠিক না।

তার কয়েকদিন পর আবার মেঘ গেল
কাঁকনডুবিতে। কিন্তু সে আর কুয়াশাকে
দেখতে পেল না সেইদিন, কিন্তু সে
অবাক হয়ে থমকে দাঁড়াল এবং দেখল
একটা গেইট এ বড় করে লিখা আছে
বাসভবন কুয়াশা। মেঘের আর খুশির তর
সইল না। সে বাসায় ফিরে গেল।
এইভাবেই এক সময় মেঘ আর কুয়াশা
মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল।
তারপর আর কুয়াশার সাথে মেঘের
দেখা হয়নি,

কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় আবার মেঘের
সাথে কুয়াশার দেখা হল, কিন্তু যখন
দেখা হল তখন মেঘ জানতে পারল
কুয়াশা কলেজে পড়ে, মেঘও
সেইখানকার এক কলেজে পরে।
মেঘ তার মনের কথা কোনোদিনও
কুয়াশাকে খুলে বলতে পারেনি যে
মেঘ শুধু কুয়াশাকেই ভালোবাসে।
কিন্তু মেঘ কুয়াশা কে তার মনের কথা
বলার জন্য কত চেষ্ঠা করল, পারল না।
একদিন সে হঠাৎ করে কুয়াশা কে
ফেইসবুকে দেখতে পেল।
সে
সাথে সাথে তাকে মেসেজিং করল
যে, আমি তোমাকে অনেক
ভালোবাসি কুয়াশা, আমি তোমাকে
অনেক খঁজেছি কুয়াশা আমার মনের
কথা বলার জন্য, কিন্তু পাইনি। যখন
পেলাম
তখন এইভাবেই তোমাকে ভালোবাসার
কথা বলতে হলো।
i love u lot Kuasha.....

তারপর আর সে কুয়াশার মেসেজ এর
কোনো রেস্পন্স পায়নি। সে
মেঘকে ভালোবাসে কিনা তাও
জানেনা।

দেখতে দেখতে ছোট্ট মেঘ
আজ অনেক বড় হয়ে গেল।
সে আজও অপেক্ষায় আছে যে
কুয়াশা তার কাছে ফিরে আসবে
একদিন।

ফিরে আসবেই একদিন বলবে মেঘ
আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি
তোমাকে।
মেঘ হইতো তার বাকি জীবনটা
এইভাবেই কাটিয়ে দিবে কুয়াশা কে
ভালোবেসে।
কারন ভালোবাসা হয়না মনের
বিপরীতে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০০

বিজন রয় বলেছেন: কারন ভালোবাসা হয়না মনের
বিপরীতে।

ঠিক কথা।
++++++

২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:০০

ব্লগার রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে লিখাটি পড়ে উপযুক্ত মতামত প্রদান করার জন্য♥♥

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.