নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিরনবীনের যদি ঘটে জয়--সাজিভরা হয় ধনে ধনে।নিয়ো না, \nনিয়ো না মোর ঠিকানা এ ছায়ার আবরণে |||

ব্লগার রিয়াজ

আপনার একটা সুহৃদয় আছে অনেক দামী, সেটাকে পচতে দিবেন না কেননা পচে গেলে সেটাকে নোঙর ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।তাই আপনার হৃদয় কে মানবের জন্য ব্যবহার করুন

ব্লগার রিয়াজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং ফলাফল |||

২৭ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:০৪

Mister Dream
বালকটার জীবন কাহিনীঃ




আমি কখনও ভাবিনি আমি কোনো ব্যাপার এত সুক্ষ্মদর্শী ভাবে নিতে পারি,
অথবা চিন্তা করতে পারি।জীবন নিয়ে চিন্তা করেনা এমন মধ্যবিত্ত বা গরিব পরিবারের ছেলে খুবই কমই আছে।
তার উপর যখন আমার পড়ালেখার ঘন্টা বেজে গেছে, না চিন্তা করে যাই কোথায়। ছোট কাল থেকে মায়ের আদর- সোহাগা এমন ভাবে শৈশব দিন গুলো কেটেছে যে, কখনো চিন্তাই করি নি যে, কৈশরের দিন গুলো চলবে কি করে। মা গ্রাম কি শহর, সব জায়গায় আমায় সবসময় আগলে রাখতেন আর নিয়ম করে সবাইকে বলে দিতেন আমার উপর নজর রাখতে।
খানিকটা যে অবাধ্য ছিলাম না, তা বলে নিজেকে সাধু প্রমানিত করতে চাই না। তবে নিজেকে এই আগলে রাখার ভিতর দেখতে দেখতে কখন যে এর মাঝে অভ্যস্ততা হয়ে গেছি তাও ঠিক আন্দাজ করে সঠিক ভাবে বলা অসম্ভব। তা যাই হোক না কেনো' আমার মতে আমি ভাল ছেলেটি ছিলাম কারণ আমি খারাপ ছেলে টি বনে যাবার সাহস টা প্রায় হারিয়ে ফেলেছিলাম। এখন বড় হয়েছি।নিজের কাঁধেচাপা কিছু হলেও ভার বহনীয় হবে, এইতোঁ নিয়ম!!!

জীবন ভালই কাটছিল, বাপ টা আমার খাটতে চায় না, তাই বলে যে একদম খাটে না তাও বলা চলে না। কিন্তু ভাই, ধান জমি আর সরিষার খেত দিয়ে কি জীবন চলে! চলে না বৈ থেমেও থাকে না। বাপটা আমার ভালই চালিয়ে নিচ্ছিল সব। কিন্তু পারিবারিক কোন্দল আর সমস্যার মাইনকার চিপায় পড়লে কে বেশি দিন ভাল থাকে।

এইটুকু পড়ে হয়তো পাঠক সমাজ ভাবা শুরু করে দিয়েছেন বাপটার সামর্থ্য নেই, কিন্তু লোকটা নেহাত ভাল। তবে তা ঠিক হলেও মানব হয়ে জন্ম নেয়ায় তার ও ভুল আছে। মা টা আমার বেজায় খাটতে জানে। বাপের কাজে সবসময় তাকে লেগে থাকতে দেখা যায়, নেহাত বাঙালি মেয়েমহল বলেই হয়ত এতো কষ্ট করে প্রিয় স্বামীর সংসার করে যাচ্ছে। বাপের কথা যখন আগেই বলেছি, সন্ধেহ রাখি না যে বুঝতে বাকি আছে তার কাজটা। তিনি শুধু চাষা।
আমায় দশ ক্লাস পড়া বার কোনো আগ্রহ অভিপ্রায় তার ছিল কি ছিল না, তা আমি জানি না।
তবে মায়ের সাথে ঝগড়া বাজিয়ে রাখার ব্যাপারে আমি তাকে কখনো অনাগ্রহী বলে দেখেছি, এমন ইতিহাস ঘেটে মনে ও করতে পারছি না। তাদের এই সমস্যা হলো তো এই মিটমাট হলো, তাল বোঝা মুশকিল, আগে হয়ত বুঝতাম না ছোট ছিলাম বলে এখন বুঝতে পারি না বিরক্তি লাগে বলে।
১০ টা ক্লাশ পাশের পড় এক লংকা কান্ড ঘটে গেল। কি কাণ্ড ঘটলো তা বলে নিজের মা বাপ কে ছোট করার মানে হয় না।
এখন সত্যি বলতে কী! প্রিডেস্টিনেশন বলে যে শব্দ টা আছে, তাকে মাঝে মাঝে মেনে নিতে হয়! প্রিয় স্বামী - স্ত্রী তে ঝগড়া করা যায় না বললে আমিই পাগল প্রমাণিত হবো। এ হচ্ছে আগেকার কাহিনী ।প্রাত্যহিক সময়ের জড়তা আর স্রোতের টানে কেটে গেল একটি বছর।এই একবছর আমি হয়তো আমার জীবন এর সবচেয়ে অলস দিন গুলো কাটালাম,এই সময়টায় পড়া লিখা হয়েছে বললে ভুল বলা হবে। তবে শিক্ষা হয় নি তা বললে পাপ হবে। দিন কেটে গেল, এর ভিতর অনেক বার চেষ্টা নামক বস্তু টা বার বার চেষ্টা করেও যখন কিছু করতে পারলাম না।তখন' প্রতিজ্ঞা করলাম যেঁ জীবন আমার চালাব আমি, নষ্ট হলে হবে তবে হাল ছাড়া যাবেনা।
অনেক ভেবে চিন্তে আজ আমি নিজের ভারটা নিজে বইতে শিখেছি এই বা কম কিসে?

নতুন কিছু পেয়ে বসলে সাথে আরও নানান কিছু যোগ হয়, কিন্তু তা বেশিদূর টিকে না। কিন্তু আমার মনে সেদিন খুবি অদ্ভুত উপলব্ধিকরণ হলো। দিনগুলো আমার ঘরে বসে কাটত। আমি অঙগীকার করলাম আজ পকেটে দশ টাকা নিয়ে হেটে গিয়ে ওই টেকনিক্যাল বলে যে জায়গা টা তার যেঁ কোনো এক টঙ দোকানে চা খাবো।
পাঠক হয়তো ভাবতে বসেছেন যে চা এর সাথে এর আবার কি যোগা যোগ।
আমি আগেই বলেছি আমি ছোটবেলা থেকে ঘরকুনো। তাই নিজের জীবন নিজের হাতে তুলে নেয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে এই বাইরে গিয়ে নিজের ছোট্ট উদ্যোগ পূরনের মধ্য দিয়েই জীবন টার হাল ধরব বলে মনে করে ছিলাম।অঙগীকরন তার আগেও করা হয়েছিল বটে তবে তা পালন করা হয়েছে বলে মনে পড়ে না। এসব ভাবাটাও ভুল,নিজেকে বেশি দুর্বল মনে হয়! বিকেলে ঠিক বের হলাম তখনো জানতাম না,


আজ আমি জীবন এর খানিকটা অর্থ আর লক্ষ্য নিয়ে ফিরবো।বের হলাম, পকেটে দশ টাকা ছাড়া কিছু ছিল না। বলে রাখি, এক কাপ চা এর দাম পাঁচ টাকা, আমার আবার কাজী নজরুল এর মতো বেশ অতিরিক্ত চা পান করার অভ্যাস আছে।এক কাপ ভেবে রেখেছিলাম, কিন্তু ভাল লাগলে আরেক কাপ নয় কেন?
বা দুটো বিস্কুট? বের হওয়া গেল...................





এই কাপে চা খেতে-খেতে
কোনো খুনি এঁকে গেছে কোনো খুনের
নকশা,
কোনো মুনি আবিষ্কার করে গেছে
দর্শনের নয়া-নয়া ধোঁয়াশা,
প্রেমবঞ্চিত কোনো কবি কারো
প্রেমকেলী দেখে ফেলে গেছে দু-
ফোঁটা চোখের পানি,
সদ্য-অঙ্কুরোদগম-ঘটা কোনো
প্রেমিকা লাগিয়ে গেছে ঠোঁটের ছল।
প্রেমিক থেকে শ্রমিক,
খুনি থেকে মুনি,
কবিনেতা থেকে অভিনেতা—
প্রত্যেকের মুখস্থ তপ্ত থুতু লেগে আছে
এই চায়ের কাপে!
এই ঐতিহাসিক কাপে ঠোঁট ছুঁইয়ে আমি
পাই ইতিহাসের ছোঁয়া,
কেতলির নলে আমি দেখি ইতিহাসের
দাউদাউ ধোঁয়া।
প্রিয় ধোঁয়া উড়ছে, উড়ছে তো উড়ছেই;
চোখের জল পুড়ছে, পুড়ছে তো পুড়ছেই!



এক পুরী বেগুনীর দোকানের সামনে পা টা যেন থেমে যাইতে চাইল, মনটা আমার তখন এমন এক যায়গায় ছিল, যে সর্বদা চিন্তা করে যাচ্ছিল, ভাবতে লাগলাম আজ আমার লক্ষ্য তো নয় এই হোটেলের বেগুনি খাওয়া, আমার যেতে হবে দূর লক্ষ্য পূরণ এর জন্য। শিক্ষা পেলাম কেনো মানুষ লক্ষ্য পথে হাটার পথেই ঝটকে পড়ে, এ জন্যই হয়তো বাগধারা তে বলা হয়ে থাকে বিসমিল্লায় গলদ, নিজেকে সামলে নিলাম, কিছুতেই লক্ষ্যের পথ থেকে ছিটকে পড়া চলবে না।
এগুলাম আমি, বায়ে ঘুরে হাটছি। বেশ- খানিক দূর হাটতে হাটতে খুব স্বাভাবিক ভাবে হাটার অনুভব পেলাম, মাথা থেকে চিন্তা কমে যাচ্ছে স্পষ্টত বুঝতে পারলাম। আমি হাটছি। দুপুর থেকে বিকেল গড়াবার ক্ষণে বৃষ্টি হয়েছিল।
বাংলা মা আবার তার সারি তে সর্বদা পদধূলি মেখে রাখেন, যেন সন্তান কে কষ্ট করে কোমোর ভেঙে ধূলি না নিতে হয়। রাস্তাঘাট এর এ সকল ধূলি আমাদের বাংলা মায়ের কথা মনে করিয়ে দেয় হরহামেশাই।
কিন্তু বৃষ্টিতে মায়ের সে ধুলাবালি আর জমাট বাধা জল যে হাটার সময় কি কান্ড ঘটাতে পারে তা হয়ত সব বাঙালি খানিকটা আচ করতে পারছেন।আমি এমনিতেই রাস্তাঘাটে হাটা মানুষ নই।
তাই মায়ের ধুলি জল আমার প্যান্ট এর পিছন দিক ভরিয়ে দিয়েই সেশ হল না। পায়ের পাতাকে ও পিচ্ছিল করে দিল। কিছু দূর হাটার পর হটাত রাস্তার পাশে এক দোকানের সামনে ঢালু পাড়ি দেয়ার সময় চটি গেল ছিঁড়ে, ভাগ্য ভাল ছিল, দু কদম পড়েই মুচির দোকান, দোকানি কে দিয়ে আমার চটি খানা সরিয়ে নিলাম, ব্যাটা ৫ টাকা নিল।চিন্তা আবার জেগে উঠল ভাবলাম, বিসমিল্লাহ গলদ না করলেও মাঝপথ যে বন্দুর হবে না তা ভাবা টা ঠিক হয় নি।
লক্ষ্য পূরণ এর পুরো পথ টাই কাটায় পূরণ থাকবে, মাঝ পথটায় বাধা থাকবে, কিন্তু থেমে থাকলে চলবে কেনো?

পাঁচ টাকা গেলে যাক, আমার চা খেয়ে মেস এ ফেরা চাই! চটি পড়ে ছুটলাম, ধিরে -ধিরে খুব ভাল লাগতে লাগল। বিকেলবেলা মানুষ গুলোর ছোটাছুটি দেখতে লাগলাম মন ভরে।ঘরে বসে থেকে কি আর এ দেখা যায়?
পথ আমার সহায় হলো আনন্দ দিতে লাগল, সফলতা আমায় তার ছোঁয়া দিতে লাগল।আমি পৌঁছে গেলেম আমার গন্তব্যে। খালি দেখে এক টঙ এ ঢুকে এক কাপ চা খেয়ে মেস এ ফিরলাম।
আমি সফল হয়েছি।আমি পেয়ে গেছি আমার উদ্দেশ্য, আর উদ্দেশ্য পূরণ এর চাবি। আমি বুঝে গেছি জীবন কিভাবে কাটাতে হয়, শুরু থেকে শেষ কিভাবে নিজেকে সামলে নিতে হয়। দেখে শুনে পথ শুরু করতে হয়। মাঝ পথে কিভাবে মাথা উঁচু করে বিপদ পেরিয়ে সামনে এগুতে হয়। আর গৌরব কিভাবে মেলে, কিভাবে মেলে সফলতা।

আমি গিয়েছিলাম সামান্য নিয়ে ফিরে এলাম মগজ বোঝাই করে।
কিছু কিছু উক্তি জীবন বদলে দিতে পাড়ে যদি আপনি তা উপলব্ধকীর্তি করতে পারেন। এমন ই পাঁচটি উক্তি দিয়ে লিখা শেষশয়ন করছি
Worry often gives a small thing a great shadow.
- Swedish Proverb
The way to get started is to quit talking and begin doing.
- Walt Disney
Make your life a masterpiece; imagine no limitations on what you can be, have or do.
- Brian Tracy
The difference between the impossible and the possible lies in a man’s determination.
- Tommy Lasorda
You have to expect things of yourself before you can do them.
- Michael Jordan

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.