নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাপ্নিক এই আমি

আমি কাল্পনিক সজল

আমি মানুষ হিসেবে খুবই সরল কারণ আমার মনে অত্যাধিক প্যাঁচ।

আমি কাল্পনিক সজল › বিস্তারিত পোস্টঃ

শীতের পরে বসন্ত আসে

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:০৫

-আমাকে বিয়ে করবেন?



-কাকে বলতাছেন?



-আপনাকে ।



- ঐ মাইয়া,জানো,আমি কে?



-না জানি না । শুধু বলেন,আপনি আমাকে বিয়ে করবেন কিনা?



-তুমি জানো?আমি এই এলাকার বড় ভাই । সবাই আমাকে ডরায় । দাদার বয়সী মানুষ পর্যন্ত আমাকে সালাম দেয় । আর তুমি কোন পুঁচকে মেয়ে,কি সব আবোল-তাবোল বলতাছো ।



-আপনি যেই হন,যাই হোন,আমাকে বলেন,আমাকে বিয়ে করবেন কিনা?



-দেখো মাইয়া,আমি কিন্তু এখনো চেতি নাই । আমি চেতলে কিন্তু সর্বনাশ হয়ে যাবে ।



-ধুর!আপনাকে যা বলছি সেটার জবাব দেন । আর এমন বাজেভাবে কথা বলবেন না । শুদ্ধ ভাষায় কথা বলবেন ।



-কিসের জবাব?হু? আর আমি এমনেই কথা বলি,আমাকে জ্ঞান দিবা না ।



-আমাকে বিয়ে করবেন?



-ইসসিরে,আমার মাথা কিন্তু গরম হয়া যাইতেছে । তোমার সমস্যাটা কি বল তো দেখি ।



-আমার কোন সমস্যা নাই । আপনি কেবল বলেন,আমাকে বিয়ে করবেন কিনা?



-ইসস,আমি আর পারতাছি না । ঐ কেউ এরে লয়ে যা তো । দূর করে দে আমার সামনে থেকে ।



-প্লিজ,বলেন না,আমাকে বিয়ে করবেন কিনা?আমার হাতে সময় খুব কম ।



-কও কি?AIDS হইছে নাকি?কোথায় অকাম-কুকাম করে আসছো?



-ধুর!কি আজে-বাজে কথা বলেন । আমাকে দেখে কি আপনার খারাপ মনে হয়?



-না,সেটা তো মনে হয় না । তুমি দেখতে হেবি সুন্দরী,যাকে বলে আগুন সুন্দরী,যারে দেখলেই মনে আগুন জ্বলে উঠে । তবে সুন্দরীদের মাথায় ছিট থাকে । রত্নারো ছিল ।



-রত্না কে?আপনার GF?



-কি কইলা তুমি?তুমি ভাগবা?



-প্লিজ বলেন না,আমাকে বিয়ে করবেন কিনা?আমার পরশু বিয়ে।



-তোমার পরশু বিয়া,আবার আমারে বিয়া করার জন্যে অত্যাচার করতাছো,আমার মাথায় তো কিছু ঢুকতাছে না । আসল ঘটনা খুইল্লা বলো দেখি ।



-আমার বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন । চাচাদের সংসারে মা দাসীর মত খেটে আমাকে বড় করেছেন । এখন চাচারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য আমাকে এক ধনী মাতালের সাথে বিয়ে দিতে চান । চান আর কি পরশু বিয়ে ঠিক করে রেখেছেন । আমার মায়ের বাঁধা দেওয়ার কোন ক্ষমতা নাই । তাই মা আমাকে বলেছেন,অন্য কাউকে বিয়ে করে পালিয়ে যেতে । কিন্তু আমি কোথাও কাউকে পাচ্ছি না । আপনাকে আমার মনে ধরেছে । তাই আপনাকে বিয়ে করতে চাই ।



-তোমার কস্ট শুনে আমার কলিজা ভিজে গেলো ।

-কষ্টে মানুষের কলিজা ভেজে কি করে?

-মন তো রত্না নিয়ে গেসে। তাই এখন কষ্টে কলিজাই ভরসা।

-বুঝলাম না।

-অত বুঝনের কাম নাইক্কা।তা তোমার নাম কি?

-আকাশী ।

-বাসা কোথায়?

-মিরপুরে ।

-ও ।



আমির আকাশীকে তার বাসায় রেখে আসে । আকাশী যদিও বাধা দিচ্ছিল,কিন্তু এইবার আমির তার বড়ভাইগিরি দেখালো ।



আমির মনে মনে বলে,সুন্দরীদের কথা বিশ্বাস করতে হয় না । তারা কঠিন ছলনাময়ী । রত্নার মতো । তাদের চোখে মায়া থাকে । দুনিয়া ভুলানো মায়া । রত্নার মতো । যে ঐ মায়ায় পড়লে জীবন শেষ । আমার মতো । রত্নারে,আমারে শেষ করে দিলি । জ্বালায়ে-পুড়ায়ে শেষ করে দিলি ।



আকাশীর কথা অনুযায়ী আজকে ওর বিয়ে । ওর চাচারা আমিরকে কঠিনভাবে দাওয়াত দিয়েছে । কি পড়ে যাবে সেটা ঠিক করতে পারলো না,শেষে রত্নার বিয়েতে যে শেরওয়ানী পড়ে গিয়েছিল সেটি পড়ে গেল । যদিও মাথায়া পাগরী ছিল না তবুও শেরওয়ানী পড়ার জন্য অনেকেই তাকে বর ভেবে ভুল করলো । রত্নাও করেছিল ।



আমির শান্তশিষ্ঠভাবে দাওয়াত খেল । তারপর আকাশীকে দেখতে গেল । কনের সাজে তাকে ঠিক রত্নার মতো দেখাচ্ছে । এমনি করে রত্নাও সেজেছিল ।



কাজি আকাশীকে কবুল বলতে বলছে,কিন্তু আকাশী নিশ্চুপ,ঠিক রত্নার মতো । এমন সময় হঠৎ আকাশীর চাচা এসে তার চুলের ঝুটি ধরলো,আকাশীর মা আঁচলে মুখ ঢেকে নিশ্চুপে কাঁদছে । আকাশীর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে এভাবেই তিনি নিজেকে স্বান্তনা দিয়ে আসছেন । এই কান্নার জলে অনেক কষ্ট থাকে । না বলা কষ্ট ।



এই সময় আকাশী আমিরের দিকে তাকায়,একটা মায়া আছে এই চাহনীতে,নিষ্পাপতা আছে,আছে একটা অভিযোগ । ঠিক এভাবেই রত্নাও তাকিয়েছিল,তারপর..... আমির আর ভাবতে পারে না । স্মৃতি কখনো আনন্দের হয় না । হয় সেটা পীড়াদায়ক হবে নয়তো দীর্ঘশ্বাসের হবে ।



আমির চিৎকার দিয়ে বলে,ঐ,আকাশীর চুল ছাড় বলছি ।



আকাশীর চাচা খানিকটা অবাক হয়ে চুল ছেড়ে দেয় । আমির অনেকটা দৌড়ে যেয়ে,আকাশীর মুঠি থেকে কালো কাঁচের বোতলটা নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয় ।



-রত্নার মতো তুমিও আমাকে ছেড়ে যেতে চাও নাকি?আমি আর কতো কষ্ট বয়ে বেড়াবো? আর কত জ্বললে তোমরা শান্তি পাবা?ঐ,কাজি আমাদের বিয়ে পড়া ।



আকাশীর চাচারা আমিরকে মারতে তেড়ে আসে । আমিরের সাঙ্গ-পাঙ্গরা জানে সেটা কিভাবে ম্যানেজ করতে হয় । চাচারা অসহায় ভঙ্গীতে চেয়ে আছে,সেটা দেখতে অবশ্য মন্দ লাগছে না ।



কাবিননামায় যখন আমির স্বাক্ষর দিচ্ছে তখন আকাশী মুখ খুললো,তবে যা বললো সেটা হয়তো এইসময় বলার কথা ছিল না । সে বলল,আপনি শুদ্ধ ভাষায় কথা বলছেন!



আমির যা উত্তর দিল সেটার জন্য আকাশী প্রস্তুত ছিল না । আমির চোখ মটকে বলল,একজন বুয়েটিয়ান ইঞ্জিনিয়ারের তো শুদ্ধ ভাষাতেই কথা বলা মানায় ।



-তাহলে বড় ভাই কে?

-ওটাও আমি। তবে সেটা আরেক কাহিনী,পড়ে জেনে নিও ।



আকাশীর মা এখনো আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদছেন,তবে এই কান্নায় একটা আনন্দ রয়েছে,এটা স্বস্তির কান্না । বহুদিন পর তিনি এই কান্নাটা কাঁদতে পারছেন ।



বাহিরে তখন বৃষ্টি হচ্ছে,হঠাৎ বৃষ্টি,প্রকৃতি ধুয়ে নিচ্ছে সব কালিমা,দিয়ে যাচ্ছে আনন্দ । অপার আনন্দ । বসন্ত এলো বলে.......

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৩২

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: আমার বেশ ভালো লাগলো। ছোট গল্পের টানটান বিষয়টা পেলাম খুব।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৩৫

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এই গল্পটির একটা পিক্যুয়েলও লিখেছিলাম এক বন্ধুর রিকোয়েস্টে। ওটাতে রত্নার কাহিনি লিখেছিলাম। এটার মত ভাল হয় নি। :(

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৪২

মামুন রশিদ বলেছেন: অন্যরকম গল্প । ভালোলাগা ।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৭

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: অন্যরকম ধন্যবাদ। :)

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮

পৃথিবীর আলো বলেছেন: খুব ভালো হয়েছে। লেখায় অনেকটা হুমায়ুন স্যারের ছায়া দেখতে পাচ্ছি। চালিয়ে যান। শুভকামনা রইল।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৩৯

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: ইচ্ছে করেই হুয়ায়ুন স্যারের লেখার ধরণ ব্যবহার করেছি। মাঝে মাঝে তার লিখা অনুসরন করি। ভাল লাগে। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। :)

৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:০২

জেরিফ বলেছেন: সেরাম ভালো লাগলো +++++

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৩৯

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: সেরাম ধন্যবাদ। :)

৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:০২

জেরিফ বলেছেন: সেরাম ভালো লাগলো +++++

৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৫৮

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: ঘটনা কি সত্যি??

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৪১

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: নাহ। ডাহা মিথ্যা। :প
এটা নিছকই গল্প মাত্র। :)

৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১৬

বাকপ্রবাস বলেছেন: সুন্দর লেগেছে খুব

৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:১১

শীলা শিপা বলেছেন: শেষ বুঝা যাচ্ছিল... তবুও লেখার ধরনের কারনে ভাল লাগল পড়তে!!!!

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৫৫

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: আমার আগের গল্প "অবাস্তব বাস্তবতা" পড়ে দেখুন তো, শেষটা বুঝতে পারেন কিনা? :/

৯| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫০

সনজিম বলেছেন: এহ ভাই মনে কি জানি একটা অনুভব করলাম তবে ঠিক বুঝলাম না। খুব ভাল হয়েছে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২৪

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: কি যে অনুভব করলেন, আমিও বুঝলাম না।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। :)

১০| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২০

মামুন রশিদ বলেছেন: ২ নাম্বার মন্তব্যটা কি দোষ করলো ব্লগার! আমার নিক টা কি পছন্দ হয়নি আপনার!


অটঃ মন্তব্যের জবাব সিরিয়ালি দেয়া ব্লগীয় শালীনতা!

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৬

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: আমার আচরণের জন্য আপনি কষ্ট পাওয়ায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি ভেবেছিলাম লাইক দিয়ে মন্তব্যের অভাব পূরণ করা যাবে। যাই হোক আশা করি ভবিষ্যতে এমনটা হবে না।

আর জবাব দেরিতে দেওয়ার কারণেও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

১১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫

ডরোথী সুমী বলেছেন: আরে আগে বলবেননা আপনি মন খারাপ করার আর ভাল করার দুই ধরনের গল্পই রেখেছেন। অনেক ধন্যবাদ মন ভাল করে দেয়ার জন্য। আবারও শুভ কামনা।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪৬

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: এই গল্পের আগের অংশ মানে পিক্যুয়েল হল "রত্নার গল্প"। এই গল্প লেখার পর আমার এক বন্ধু জোর করে পিক্যুয়েলটা লেখিয়ে নিয়েছিল। মাথায় এই গল্পটার সিক্যুয়েল ঘুরছে। দেখি কবে লিখতে পারি।

যাই হোক, কারও মন তো ভালো করতে পারলাম। :)

আপনাকেও শুভকামনা।

১২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:১৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্প বলার ধরণটা চমৎকার।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪৯

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: ধন্যবাদ. :)

১৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪৯

জালিস মাহমুদ বলেছেন: ;) ;) ;) ;) :-P :-P :-P :-P :-B :-B :-B :-B

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫০

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: :) :) :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.