নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাপ্নিক এই আমি

আমি কাল্পনিক সজল

আমি মানুষ হিসেবে খুবই সরল কারণ আমার মনে অত্যাধিক প্যাঁচ।

আমি কাল্পনিক সজল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ ব্যালকনিতে ভালোবাসা

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৪





প্রথমবার আমি তাকে দেখেছিলাম ব্যালকনিতে। চারাগাছের যত্ন নিচ্ছিল। এলোচুল হাওয়ায় উড়ছিল। মাতাল হাওয়ায় বার বার মুখে আসা বুনো চুলগুলিকে হাত দিয়ে মাঝে মাঝে শাসন করার বৃথা চেষ্টা।আমি নিচে দাঁড়িয়ে চুপি চুপি দেখছিলাম। মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম। অবাক হয়ে দেখছিলাম।



শেষবার যখন দেখেছিলাম, তখনও তাকে দেখে সেই প্রথমবারের মত করে মুগ্ধ হয়েছিলাম। অবাক হয়েছিলাম।



প্রথম আর শেষবারের মাঝে অনেকবার তাকে সেই ব্যালকনিতে দেখেছি। কখনো সে ফুল দেখতে, কখনো ভুল করে,কখনো চুল বাঁধতে,কখনো এমনি এমনি আসতো...



আমি অপেক্ষায় থাকতাম কখন সে আসবে। সে যখন বেরিয়ে যেত আমি দাঁড়িয়ে থাকতাম। যখন বাসায় ফিরত, তখনও দাঁড়িয়ে থাকতাম। এক নজর দেখার জন্য...



একজন কলোনির সামান্য দারোয়ান হয়ে এরচেয়ে বেশি কিছু করা মানুষের তৈরি সামাজিক রীতিতে বড়ই বেমানান ছিল।বড়ই বেমানান...



তাকে দেখতে দেখতে বুকে একটা অনুভুতির জন্ম নিয়েছিল। যে অনুভূতি আগে কখনো ছিল না। কেমন যেন একটা অস্থিরতা...



খুব শীঘ্রই আমার এই অস্থিরতাটাও মিটে যাবে। কারণ তার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে একজন ইঞ্জিনিয়ারের সাথে। সে চলে যাবে আমার সামনে দিয়ে, বহুদূরে...



~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~



ছাত্র জীবনে একবার একটা মেয়েকে ভালবেসেছিলাম। মেয়েটা অন্য একজনকে ভালোবাসতো। তাই মনের দুঃখে চিরকুমার থাকার পণ করেছিলাম।ভালবাসার প্রতি একটা নিদারুন বিতৃষ্ণা এসে গিয়েছিল। কিন্তু মা-বাবা আমার কষ্ট বুঝল না,তারা আমাকে বিয়ে করাবেই। আমি জানতাম এখনকার মেয়েরা একা থাকে না।তারা বড় ভীতু কিংবা নির্ভরশীল। তার মানে এই মেয়েটাও থাকবে না। এখন প্রয়োজন বিষয়টা প্রমান করে বাবা-মাকে জানানো,যাতে বিয়েটা ভেঙ্গে দেওয়া যায়।



মেয়েটার খোঁজ নিতে তাই ছদ্মবেশ নিলাম। জানলাম সে একা। আর সেখানেই প্রতিদিন তাকে দেখে দেখে ভালোলাগা ভালবাসায় রূপ নিল। আর প্রমান করল যে, ছাত্রজীবনের সেই ভালোলাগাটা কেবল একটা মোহ ছিল। আমি মোহগ্রস্ত ছিলাম।



ওদের বাসায় আগেই আমার ছবি পাঠানো হয়েছিল। তাই ছদ্মবেশ নিতে তামিল নায়কদের মত গোঁফ লাগাতে হয়েছিল। সাথে ছিল খোঁচা খোঁচা দাড়ি।



আজ আমাদের বিয়ে। এসেছিলাম ফেলুদা হয়ে, হয়ে গেলাম মজনু।



তাকে নিয়ে ব্যালকনিতে এলাম।যেখানে কুঁড়ি মেলেছিল আমার প্রথম ভালবাসা। আকাশে তখন শ্রাবণ মাসের প্রবল জ্যোৎস্না, সাথে মাতাল হাওয়া।মাতাল হাওয়ায় তার চুল হয়ে উঠেছে বুনো... অসাধারণ এক দীপ্তি তার চোখে মুখে।



সে বলে উঠল, জানো আমি না একজনকে ভালবাসি। তুমি কি তার কাছে আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারবে? :(



কথাটা শুনে আমার হৃদপিণ্ড একটা ধাক্কামত লাগলো।যতদূর জানতাম, তার এমন কেউ ছিল না। আমি ঢোক গিলে বললাম, কে সে?:-*



সে বলল, আমাদের কলোনির দারোয়ানকে। যার তামিল নায়কের মত গোঁফ আছে,আর আছে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। সে আমাকে প্রতিদিন চোরের মত করে চুপি চুপি দেখত। তার চোখে আছে আমার জন্য এক সাগর ভালবাসা। তুমি আসার পর সে কেন যেন চলে গিয়েছে। দেবে আমাকে তাকে ফিরিয়ে? বলে সে চোখ মটকে দিল দুষ্ট হাসি দিল।;)



আমি তার কথা শুনে বোকার মত একটা হাসি দিলাম। কারণ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বোকা থাকা ভালো। কারণ অতি চালাকের...;)



বিয়ের পরে প্রায়ই ওর মা মানে আমার শাশুড়ি বলেন,যদি দারোয়ানের তামিল নায়কের মত গোঁফ ফেলে খোঁচা খোঁচা দাড়ি কামিয়ে দেওয়া যেত তাহলে নাকি ঠিক তার ইঞ্জিনিয়ার জামাইয়ের মত লাগত। :||





বউ কথাটা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মটকে দেয় আর আমি... আমি দেই সেই বোকার মত হাসি...কারণ জানেনই তো... :P

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৪৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বেশ মিষ্টি গল্প একটা।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:১১

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: ধন্যবাদ...:)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.