![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন মানুষ কিংবা যেকোন প্রাণীর সবচেয়ে কাছের জন কে? কে সেই জন যে তাকে আগলে রাখে মায়া মমতায়? অবশ্যই মা। কিন্তু এই মা-ই যখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে যায় তখন তার চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে?
“আমি তপু” মুহাম্মদ জাফর ইকবালের এক অনন্য কিশোর উপন্যাস। এই উপন্যাসে লেখক মানুষের এমন বয়সের এমন এক পরিস্থিতির করেছেন যেই বয়সে যেই পরিস্থিতিতে আমরা কেউ পড়লে কি ঘটবে আমাদের জীবনে তা এই বই পড়লে সহজেই উপলব্ধি করা যায়।
খুব কাঠখোট্টা শব্দ বা বাক্য বা ঘটনা নেই, খুবই সাদাসিধে কাহিনী,নেই সেই রকম নীতিবাক্য, নেই মাথা এলোমেলো করে দেওয়া বাক্যরীতি, তাই পড়তে গিয়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
১৩ বছর বয়সের এক কিশোর তপু। পুরো নাম আরিফুল ইসলাম তপু। বি.কে. সরকারি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। তিন বছর আগে যখন তপু এক রোড এক্সিডেন্টে তার বাবাকে হারায় ঠিক তখন থেকে দুই ভাই এক বোনের সুখী সংসারটা তছনছ হয়ে। তাকে নিয়ে তার জন্য ব্যাট কিনতে যেয়ে মারা যাওয়ায় তপুর মার একটা বদ্ধমূল ধারণা হয় যে তপুর জন্যই তপুর বাবা মারা গিয়েছেন। মায়ের দুর্ব্যবহার আর ভাইবোনের অসহায়তার কারণে তার জীবন অসহ্য হয়ে উঠে। সবচেয়ে আদরের ছোট ছেলেটির স্থান হয় স্টোর রুমে। যার সাথী একটি ইঁদুর, যার নাম সে দেয় মিচকি। তাকে খেতে হয় কাজের বুয়া দুলির সাথে মোটা ভাত, ভর্তা। একমাত্র দুলি খালার ভালোবাসা ছাড়া বাকি সবার ভালোবাসা থেকে সে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। লেখকের ভাষায়, “যার চোখের পানির কোন মূল্য নেই এই পৃথিবীতে তার থেকে হতভাগা আর কেউ নেই।” এতসব দুঃখ কষ্ট সইতে না পেরে সবচেয়ে ভালো ছাত্রটি আস্তে আস্তে খারাপ হয়ে সবার চক্ষুশূল হয়ে গেল। তার কোন বন্ধু নেই, কোন শুভাকাঙ্ক্ষী নেই, কি করে কি নিয়ে বাঁচবে এই পৃথিবীতে? এমনি সময় যখন সে বাড়ি থেকে চিরকালের জন্য চলে যাবার জন্য যখন মনস্থির করে ফেলল ঠিক তখন তার ক্লাশে আসা নতুন এক মেয়ে যার নাম প্রিয়াংকা, তার সাথে ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব হয়ে গেল। প্রিয়াংকা মেয়েটা স্পষ্টভাষী, খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলতে পারে,খুবই মিশুক আর পরোপকারী। ওদিকে পালিয়ে যাবার জন্য ধীরে ধীরে জমানো টাকাসহ মায়ের কাছে ধরা পড়ে যাওয়ায় সবার কাছে সে চোর হয়ে যায়। এদিকে সে হঠাৎ বুঝতে পারে গণিতের প্রতি তার একটা আলাদা ভালোবাসা আছে। খুব সহজেই সে জটিল জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে। প্রিয়াংকার উৎসাহে সে এই ভালোবাসাকে বাড়াতে থাকে। সময় গড়িয়ে যায়। প্রিয়াংকা একসময় জানতে পারে তপুর জমানো কষ্টগুলোকে। চেষ্টা করে এগিয়ে নিয়ে যেতে। প্রিয়াংকা কি পারবে তপুকে বেঁচে থাকার সাহস জোগাতে, তপু কি পারবে এমনি এক বিরূপ পরিবেশে বেঁচে থাকতে? কি আছে তার সামনে? তার মা কি আর কখনো তাকে সহজভাবে নেবে না? এমনি হাজার প্রশ্নে গড়া এই সুন্দর কিশোর উপন্যাসটি। “আমার বন্ধু রাশেদ” উপন্যাসটি যাদের পড়ার অভিজ্ঞতা আছে তারা বুঝতে পারবেন এর সৌন্দর্যটি। শেষ লাইন পর্যন্ত কোন না কোন লাইনে নিজের অজান্তেই চোখের কোনা গড়িয়ে জল পরবেই। এক গভীর মমতা জন্মাবে নিঃসঙ্গ তপুর উপর।
জাফর ইকবালের সেরা কিশোর উপন্যাসের মধ্যে এই উপন্যাস নিঃসন্দেহে অন্যতম। একজন মানুষ সে বড় হোক কিংবা ছোট, তার জন্য একটা পরিবার যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা এই গল্প পড়লে অনুধাবন করা যায়। সেই সাথে বোঝা যায়, প্রতিভার বীজ লুকিয়ে থাকে সবার মাঝে, প্রয়োজন অঙ্কুরোদ্গমের পরিবেশ।আর প্রত্যেক খারাপ মানুষের জীবনে থাকে এক ভয়ংকর খারাপ ইতিহাস। কেউ খারাপ হয়ে জন্মায় না।
পড়া না থাকলে পড়ার নিমন্ত্রন রইল।
লেখক পরিচিতিঃ উইকিপিডিয়া লিঙ্ক
প্রথম প্রকাশঃ একুশে বইমেলা ২০০৫
প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ
পৃষ্ঠাঃ ১২৩
ফ্রন্টঃ ১২
ISBN 984 495139 9
প্রকাশনাঃ পার্ল পাবলিকেশন্স
৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০।
কভার মূল্যঃ ১৫০ টাকা
ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪/৫
পিডিএফ লিঙ্কঃ মিডিয়াফায়ার লিঙ্ক
সাইজঃ ৯.৩৬ মেগা
প্রাপ্তিস্থানঃ যেকোন লাইব্রেরীতে পেয়ে যাবেন।
অথবা রকমারি থেকে কিনতে পারেনঃ রকমারি লিঙ্ক
{ব্লগে প্রথম বই পরিচিতি বা Book Review. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি এবং সেই সাথে ধরিয়েও দেবেন। }
১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:০৪
আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: স্যারের অনেক ভালো লেখার মাঝে এটা অনেক ভালো লেখা। না পড়ে কি আর উপায় আছে?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
চেষ্টা করব নিয়মিত রিভিউ দেওয়ার।
২| ১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:২৯
একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
অনেক প্রিয় একটা বই
১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৫
আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: আমারও।
৩| ১৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ৭:৪৮
মামুন রশিদ বলেছেন: ভালো কাজ । আরো রিভিউ লিখুন ।
১৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮
আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: ধন্যবাদ। চেষ্টা থাকবে
৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৪৬
রাজিব বলেছেন: খুব সুন্দর বই রিভিউ। আশা করি নিয়মিত আরও রিভিউ করবেন।
০৬ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:১৪
আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: চেষ্টা থাকবে। আপনারদের উৎসাহ আমার লেখার প্রেরণা।
শুভকামনা রইলো।
৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৪৬
জল ঝড় বলেছেন: আমার অতি প্রিয় বইগুলোর একটি। ধন্যবাদ আরও একবার বইটির কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য
১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫০
আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: আমারও অনেক প্রিয়
শুভকামনা রইলো
৬| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:০১
রাজিব বলেছেন: সত্যি বলতে কি আপনার রিভিউটা পড়ে বইটা ডাউনলোড করে পড়লাম। তপুর মা কেন এত নিষ্ঠুর হলেন আসলেই বুঝতে পারলাম না। আর তপুর সাফল্য থেকে সব কিশোর অনুভব করুক যে জীবনে যত সমস্যাই থাকুক না কেন স্বপ্ন থাকতে হবে এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে চেষ্টা করতে হবে। তাতে সুখ আর সাফল্য দুইই আসবে। তপু যেভাবে শত কষ্টের মধ্যেও অংক নিয়ে লেগে ছিল আমার প্রতিটি কিশোর কিশোরী যেন তাদের প্রিয় কিছু নিয়ে এভাবে লেগে থাকে। তাহলেই বাংলাদেশ অচিরে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মত উন্নত দেশে পরিনত হবে।
১৩ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩০
আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: তপুর মা মনে করতেন তপুর বাবা মারা গিয়েছে তপুর কারণে । এটা ভাবতে ভাবতে তিনি একপ্রকার মানসিক অসুস্থতায় ভুগতে শুরু করেন। যে কারণে তপুকে তার অসহ্য লাগতে শুরু করে। মূলত এই কারণে তিনি তপুর প্রতি এত নিষ্ঠুর হয়ে পড়েছিলেন ।
৭| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৯
আরজু পনি বলেছেন:
মূল কন্টেন্ট নিয়ে লিখেছেন।
আপনার আলোচনা পড়েই বইটি কিনতে ইচ্ছে করছে।
সুন্দর শেয়ার ।
একটা লিঙ্ক দিলাম, বই রিভিউয়ে যদি কোন রকম কাজে লাগে আপনার তাই ।
http://www.somewhereinblog.net/blog/ANPony/29676639
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:০৬
আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: আশা করি সময় করে পড়বেন। খানিক হলেও ভালো লাগবে। জাফর স্যারের সকল পাঠকেরই পছন্দের তালিকায় এই বইটা থাকে। আপনি পড়লে আপনারও থাকবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:২৯
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আপনার গল্পের শিরোনামটা দেখেই ঢুকে পড়লাম। বইটা আগেই পড়া ছিল, আমার অনেক প্রিয় বই। ভবিষ্যতে আপনার কাছে আরও রিভিউ চাই