নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাপ্নিক এই আমি

আমি কাল্পনিক সজল

আমি মানুষ হিসেবে খুবই সরল কারণ আমার মনে অত্যাধিক প্যাঁচ।

আমি কাল্পনিক সজল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক ফ্যান ফিকশনঃ হিমু,মিসির আলী ও অন্যান্য... (৩য় অংশ)

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫২

প্রথম অংশ দ্বিতীয় অংশ

╚►FanFiction: হিমু,মিসির আলি ও অন্যান্য... (৩য় অংশ)◄╝



৫.



মিসির আলি আর বাকের ভাই দুজনকেই সিরিয়াস ভঙ্গিতে থাকতে দেখে আমি মুখ কাঁচুমাচু করে বললাম, আমারও একটা সমস্যা আছে। গোপন সমস্যা। কলিকাতা হার্বাল টাইপ গোপন সমস্যা না।'



মিসির আলি ভ্রু কুঞ্চিত রেখেই বললেন, 'কি সমস্যা?'



'আমি জানতে চাই এই বাক্সের ভিতরে কি আছে?'



বাকের ভাই বিরক্ত হয়ে বললেন, 'খুলে দেখলেই তো হয়। এজন্য মিসির সাহেবকে বিরক্ত করার কি দরকার? ওপেন ইট ইয়োরসেলফ।'



'না মানে, বাক্স না খুলেই জানতে চাচ্ছি। যদি এটা পেনডোরার বাক্স হয়, যদি খুলে দেখি বোমা ঘাপটি মেরে বসে আছে! তাই...'



আমার কথা শেষ হবার আগেই মিসির আলি কথা বলা শুরু করলেন,



'পেনডোরার বাক্সের ঘটনাটা তো জানো। গ্রীক পুরাণ অনুযায়ী, পেনডোরা পৃথিবীর প্রথম মানবী। “পেনডোরা ” মানে “যাকে সকল উপহার দেওয়া হয়েছে”। প্রমিথিউস যখন তার তৈরি মানবদের সাহায্য করার জন্য স্বর্গ থেকে আগুন চুরি করে নিয়ে যায়,তখন জিউস প্রমিথিউস আর তার ভাই এপমেথিয়াসকে শাস্তি দিতে মানবী তৈরির নির্দেশ দেন। জিউসের নির্দেশে তার পুত্র আর দেবতাদের কামার হেফাস্টাস (Hephaestus ) জল এবং মাটি দিয়ে পেনডোরাকে তৈরি করেন। দেবতারা তাকে অনেক উপহার দেয়। এই যেমন, Athena দেয় কাপড়, Aphrodite সৌন্দর্য, Hermes কণ্ঠ।



যাই হোক,কথিত আছে পেনডোরাকে দেবতারা যা দিয়েছিলেন, তার ভিতরে কৌতূহলী স্বভাবটিই ছিলো মানবজাতির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। জিউস পেনডোরাকে সমস্ত মানবীয় গুণাবলী ছাড়াও আরেকটি জিনিস দিলেন, সেটি হচ্ছে একটি মুখবন্ধ জার।



ষোড়শ শতকে সাহিত্যিকদের লেখায় কীভাবে যেনো জার হয়ে গেলো বাক্স! সেই থেকে বলা হতে লাগলো ‘পেনডোরার বাক্স’, অথচ হেসিয়ড লিখেছিলেন ‘পেনডোরার পিথস বা জার’! যার ভিতরে ছিলো দুর্বহ পরিশ্রম ও জরা-ব্যাধিসমূহ যা মানুষের মৃত্যু ডেকে আনে, ছিলো রোগ, অন্যান্য অসংখ্য যন্ত্রনা, ক্লিষ্টসমূহ, লোভ লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, প্লেগ, দুর্ভিক্ষ আর ছিলো আশা!



কেউ কেউ বলেন দেবী এথেনা বিদায় মূহূর্তে পেনডোরাকে নিষেধ করেছিলেন, সে যেনো জারের বন্ধ মুখ কখনো না খুলে।



কৌতূহলের কারণে পেনডোরা সেই বাক্স খুলে ফেলল আর বাক্স থেকে বের হলো দুঃখ, কষ্ট, জরা, দুর্ভিক্ষসহ ভয়ঙ্কর সব জিনিস। সেই থেকেই নাকি এসব পৃথিবীতে আছে।'



বাকের ভাই বললেন, 'মুনার গুম হওয়ার সাথে এই লেকচারের কোন মিল খুঁজে পাচ্ছি না। নো সিমিলারিটি।'



আমি তখন বললাম, 'আমি রূপাকে ফোন দেই। তার বাবার সাথে অনেক পুলিশের লিঙ্ক আছে। সে খুঁজে বের করতে পারবে।'



'দেন ডু ইট কুইক। তাড়াতাড়ি গান লাগাও আই মিন ফোন লাগাও।'



আমি মুখ আরো কাঁচুমাচু করে বললাম,'ফোন তো লাগায় না, ফোন করা হয়।'



বাকের ভাই বিরক্ত হয়ে বললেন, 'লাগানো, করা সবই একই। সেম।'



মিসির আলি মাথা চেপে বসে আছেন। তিনি হয়তো সুত্র খুঁজছেন।



আমি রূপাকে ফোন দিলাম। আমার কললিস্টে শুধু একটা নাম। সুন্দর করে লেখা, RUPA সব বড় হাতের অক্ষর। কিন্তু সব বড় হাতের অক্ষর কেন?



কল দিলাম। রিং হচ্ছে। একবার হয়ে কেটে গেল। এত রাতে হিমুরা ছাড়া আর কে জেগে থাকবে। হিমিরা কি রাত জাগে? দ্বিতীয় বারে নারী কন্ঠ, নাহ, রূপা কন্ঠ। রূপার কন্ঠের সাথে তুলনা চলে কেবল রূপার কন্ঠেরই। এ যেন "তুমি শুধু তোমারি তুলনা... "



'এত রাতে ফোন দিয়েছ কেন? সবাই কি তোমার মত জেগে থাকে নাকি?'

'জরুরী প্রয়োজনে কল দিয়েছি।'

'জরুরী শব্দটার মানে জানো?'

'হুম।'

'কি?'

'অপরিহার্য,অত্যাবশ্যক,অবিলম্বে মনোযোগ দেওয়া দরকার এমন, অবশ্যপালনীয়, অলঙ্ঘনীয়,সদ্য, আশু...'



'ওফ। ডিসগাস্টিং।'

'ন্যক্কারজনক, কষাটে, নিদারূণ বিরক্তিকর, বিতৃষ্ণাজনক।'

'এসব কি?'

'ডিসগাস্টিং এর মানে।'

'আমি কি জানতে চেয়েছি? কি বলবা, বল। বলে বিদেয় হও।'

'বাকের ভাইয়ের কাছে শোন।'



আমি বাকের ভাইয়ের দিকে সেটটা এগিয়ে দিতেই তিনি খপ করে ধরে কানে লাগিয়ে বললেন, 'রূপা। মুনা ইজ গুম। তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। প্লিজ ফাইন্ড হার।'



'কথায় কথায় ইংরেজি বলবেন না। বাজে শোনায়।'

'তুমি মুনার মতো করে কথা বলছ কেন?'



আমি পাশ থেকে বললাম, সব মেয়ের মাথায় একই লজিক কাজ করে। এ কারণেই 'মা' নামে একটা জাত তৈরি হয়েছে।



বাকের ভাই আবার কথা বলায় মনযোগ দিলেন। কথা বলে আমাকে ফোনটা দিয়ে বললেন, রূপা একজন কাইন্ড গার্ল। সে বলেছে সে তার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।



আমরা এবার মিসির আলির দিকে ঘুরলাম। তিনি আমার বাক্সটা হাতে নিয়ে আছেন।



তিনি বললেন, 'এই বাক্সের সাথে মুনার হারিয়ে যাওয়ার যোগসুত্র আছে।'



আমি আর বাকের ভাই দুইজনই একসাথে বললাম, 'হোয়াট?'



১৩.১১.১৪

(চলবে)

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮

আল মামুন খান বলেছেন: আপনার লিখাটি পড়লাম। ধন্যবাদ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৪

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। :)

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ভালই লাগছে। চলুক। :) আশা করছি সামনের পর্বটা আরও বেশ ইন্টারেস্টিং হবে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৬

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: চেষ্টা থাকবে প্রত্যাশা পূরণ করার। :)

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চলুক !!

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৮

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৯

আবু শাকিল বলেছেন: মজার লেখা। ভাল্লাগছে ভাইয়া :)

চলুক ...

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৮

আমি কাল্পনিক সজল বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.