নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জাগো নারী জাগো

অঙ্গনা

জাগো নারী জাগো বহ্নি শিখা

অঙ্গনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

(দুঃ)স্বপ্ন কে বাড়ি যেতেই হয়।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২৬

সবকিছুর নাকি সিজিল মিশিল লাগে। এইকথা বিয়ের পর থেকে শুনে গোলাপির মুখস্ত হয়ে গেছে। এখন কোন কথা বলা বা করার আগে গোলাপি সিজিলমিশিল ঠিক আছে কিনা বুঝার চেষ্টা করে। তার ১৭ বছর বয়সী মাথায় সিজিলমিশিল কে সিলিজমিশিল করতে করতে এত সময় লেগে যায় যে না পারে কথা ঠিক মত বলতে না পারে কাজটা গুছিয়ে করতে। তারপরপর আবার শুনতে হয় বেডির গরে বেডির কুন কামের সিজিল নাই।


গোলাপি তার সমাজ বিচারে অনেক জোরকপালী আবু । গোলাপির জন্মের পরপর ই তার মা আরব দেশে কাজ পায় ( ভিসা )। ছয় মাস বয়সী গোলাপি দাদির কাছে বড় হতে থাকে। দাদি তারে কোল ছাড়া করে না খাওয়া রান্নার সময় ব্যতিত। জ্বর হলে বিছানার পাশে হরলিকস বেদানা আঙুর আপেল রাখে, শরবত থাকে গ্লাসে ঢাকন দেয়া। মাঝ রাতে উঠে দাদি জিজ্ঞেস করে ও দাদন কিছু কাইবা ?


ঈদে সুন্দর জামা আসে আর নোকিয়া ফোন। সেই ফোন বাজলে গোলাপির কান্নার আওয়াজ হাসির শব্দ অন্য প্রান্তে তার মায়ের বুক জুড়ায়। দিনদিন বড় হয় সে ১৫ বছর বয়সে শহরে চাকরী করা ছেলের সাথে বিয়ে হয়। স্বামীর নাম জয়নাল শিক্ষিত ছেলে এস এস সি পাস কুরিয়ার কোম্পানির ডেলিভারি ম্যান বয়স ২৫। বিয়ের পর ঢাকা শহরে চলে আসে গোলাপি। জন্ম বিয়ে মিলিয়ে ১৫ বছরের জীবনে গোলাপি মোট দুইবার মায়ের দেখা পেয়েছে। না না তিন বার জন্মের সময় ও দেখেছিলো তো।


বিয়ের দুই বছরের মাথায় এক রোজার ঈদে সে মা হয়, একটা ছেলে সন্তানের জন্মদেয়। নাতী জন্মাবার পর থেকে গোলাপির মায়ের তর আর সইছিল না নাতী কে কোলে নেবার। অনেক চেষ্টা চরিত্রের পর কোরবানী ঈদের সময় ছুটি পেয়েছে। গোলাপির মা বারবার বলে রেখেছে এয়ারপোর্টে নাতীর মুখ দেখতে চায়। সবাই মিলে যেন তাকে নিতে আসে নাতী সহ যেহেতু মেয়ে জামাই নাতী সবাই ঢাকা থাকে।


ঈদের দুইদিন আগে থেকে গোলাপির স্বামী বারবার তাড়া দেয় বাড়ি যাবার জন্যে সব গুছিয়ে নিতে। বাচ্চার জামা কাপড় দুধের কৌটা মশারী। ক্ষীণ স্বরে গোলাপি মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে একদিন পর তার মা আরব থেকে দেশে আসবে, নাতী কে দেখতে চায়। জয়নালের প্রচন্ড ধমকে তার গলার স্বর ডুবে যায় স্তব্ধ হয় সে। মুখে থুথু জমে যাওয়া রাগ নিয়ে জয়নাল বলতে থাকে। তাইনের মা আসতাছে অখন আমরার সব ফালাইয়া এয়ারফরটও যাওন লাগব। আমরা কি গুফাইজ্জা নি ? আমরার সমাজ নাই সাংসারের সিজিল মিশিল নাই ? এরলিগাই কয় আকাইঠারে বালা কতা কইয়া লাভ নাই। আল্লায় আমারারে অইগ্য অকইতা মিলায়ে দিছে। আমার বড় বাই ট্রেনত টিহেট রাকছে।


ঈদের আগে টিকেট পাওয়া কি যা তা মুখের কথা ? সমাজে তেমন ক্ষমতা না থাকলে কি এই ঈদ মৌসুমে কেউ টিকেট পায় ? যেখানে জয়নালের বড় ভাই ট্রেনের টিকেট করে ফেলেছে সেখানে কোন সাহসে গোলাপি মায়ের সাথে দেখা করাবার জন্যে ঢাকা থাকতে চায় ? গোলাপির মা তো মরে ও যায় নাই , বিদেশ চলে ও যায় নাই। চারদিন পর ঈদ করে দেখা করলেই হবে। জয়নালের ছেলের জীবনের প্রথম ঈদ বলে কথা বাড়ি যেতেই হবে।


টঙ্গী ষ্টেশনে ট্রেন থামলে দুই বগির মাঝের লোহার রডে সিজিলমিশিল ভাবেই বসিয়ে দেয়া হয় গোলাপিকে কোলের ছেলে সহ। সেখানেই সিট মিলেছে ২ ঘণ্টার রাস্তা দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাবে।


কপিরাইট - অঙ্গনা।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আহা, গোলাপির মা'র আর এই ঈদে নাতি দেখা হলো না :(

দুই বগির মাঝখানে সিজিল মিশিল করে লোক বসার ব্যবস্থা আমি দেখি নাই। ওটা তো ভয়ংকর বিপজ্জনক, কীভাবে সম্ভব? এখন বোধ হয় ট্রেনের ছাদে বসাও নিষেধ।

১৫ বছরের জীবনে দুইবার মায়ের দেখা পাওয়া একটু অস্বাভাবিক লেগেছে, বাট হতে পারে।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১৫

অঙ্গনা বলেছেন: মেইল ইগো অনেক সময় অনেক ভোগান্তির কারন হয়।

এই লেখার কনসেপ্ট টা আসে বাচ্চা কোলে নিয়ে এক ঈদে এমন করে ট্রেনে ভ্রমণের ভাইরাল একটা ভিডিও দেখার পর। বছর দুই আগে হবে বা ১ বছর আগের। খুব ই ডেঞ্জারাস ছিল সেই জার্নি। ভিডিও তে মেয়েটার ফেইস ও দেখা গেছে। কি আর বলবো কেমন ছিল। বসা নিষেধ হলে ও নিষেধ মানার মানসিকতা কতজনের থাকে ঈদের সময় ? কাজির গরু কেতাবে থাকে।

যদি দুই / তিন বছর বয়সে দেখে ও থাকে হয়ত মনে করতে পারছিল না। সাত / আট বছরের কথা মনে আছে আর মনে আছে বিয়ের সময় এসেছিল সেই কথা।

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৫

কামাল৮০ বলেছেন: ঈদের আগের ভ্রমন এখনো তাই আছে।ট্রেনের এমন কোন যায়গা বাদথাকে না,যেখানে মানুষ বসে না ।গোলাপির বাড়ী যাবার বিষয়টা অন্য কোন ভাবে গল্পে আনলে যুক্তি পূর্ণ হতো।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২০

অঙ্গনা বলেছেন: আপনার অব্জারভেশন ভালো। অভিজ্ঞতা আছে মনে হয় ঈদে বাড়ি যাবার। আমরা আজকাল ইন্টারনেটে সব লাইভ দেখি। এইভাবে যদি গল্প টা যুক্তিপূর্ণ হত তাহলে সেটা লেখায় উঠে আসত না। কিছু অযৌক্তিক ব্যপার ঘটে বলেই উদহারন হয় গল্প হয়।
ভালো থাকবেন।

৩| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২১

পোড়া বেগুন বলেছেন:
পুরুষ শাসিত সমাজে এটাই নারীদের ভাগ্য।
গল্প শেষ হয়েও হইলোনা শেষ।
পরের অংশ কবে হবে?

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২২

অঙ্গনা বলেছেন: নাহ ...
তারারপর নাই।
এই ভাগ্য নিয়ে তো চলছে সমাজ। আর এইজন্য পরিবর্তনের ধাক্কা ও দ্রুত এগুচ্ছে সামনে ।
আছেন ভালোই ?

৪| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২২

সোনালি কাবিন বলেছেন: আটপৌড়ে জীবন থেকে নেয়া এক করুণ কাহিনী।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৩২

অঙ্গনা বলেছেন: এইটা আর এমন কি ।
কত গল্প লেখার ভাষা খুঁজে বেড়াই।

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৪০

মিরোরডডল বলেছেন:




অঙ্গন, আমি কাউকে উপযাচক হয়ে উপদেশ দিতে চাইনা, কেউ পছন্দও করেনা অকারন উপদেশ,
তারপরও যেকথাটা না বললেই না তাই আসা ।

লক্ষ্য করেছি অঙ্গন বিভিন্ন পোষ্টের কমেন্টে কোন না কোন ব্লগারকে অনুকরণ করে একটা বিভ্রান্ত করার ইম্প্রেশন দিচ্ছে ।
এটা কি ইচ্ছাকৃত না সহজাত অঙ্গনই ভালো জানে ।

এগুলোর কোন দরকার নেই অঙ্গন ।
অঙ্গনের লেখাগুলো ভালো হচ্ছে, গুণী ব্লগাররা এসে কমেন্ট করে যাচ্ছে ।

As you’re writing well, why don’t you focus to your writing rather playing game!
That’d be good for you.

Sorry for giving you unwanted advice.
থ্যাংকস অঙ্গন ।



২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮

অঙ্গনা বলেছেন: আপনি উপদেশ দিয়েছেন থ্যাংকিউ এ লট। প্লিজ উপযাচক ভাববেন না নিজেকে । আই রিয়েলি এপ্রিশিয়েট আপনার আমার প্রতি ভাবনা কে।
ওকে চিল মুডে ই উত্তর দিচ্ছি।

না কাউকে অনুকরণে আগ্রহ নেই। ইনফরমাল আমি ট্রুলি এমন। ফর্মাল কমেন্ট শুরু করলে ও অন্য আর দশটা ব্লগারের মত হবে।
ধন্যবাদ । শুভকামনা প্লাসে অনুপ্রেরণা।

তখন ও কি আপনার মনে হবে কাউকে অনুকরণ করছি ?


আপনারা সবাই অনেক এক্সপেরিয়েন্সড বলে হয়ত গেম মনে হচ্ছে। আমি অনেস্ট আমার এক্টিভিটিজ নিয়ে। আপনারা আমাকে কারো সাথে কারো মত কারো মাল্টি না ভেবে মানে ক্রিটিক্যালি না ভেবে নরমাল একজন ভাববেন প্লিজ। দুঃখজনক ভাবে আমার শুরুটা আনইউজুয়াল হয়ে গেছে। সাধারণ ব্লগিং করতে দিলে আমি সাইডেড থাকতাম।


অনুকরণ করতে হলে মিমিক্রি করতে হইলে তো আরও অনেক ওয়ে ছিল।

আমার প্রায়োরিটি আছে রাইটিংস ছাড়া। ফ্রি টাইমে লিখতে বসি।

৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৫৯

অপ্‌সরা বলেছেন: অঙ্গনামনি!!!

সিজিল মিশিল লেখাটা পড়েছিলাম কিন্তু মনে হয় অফলাইনে......

এই সিজিল মিশিলে ঐ মেয়ে কেমনে ওমন বগির লোহার রডে বসলো ভেবেই আমি ভয়ে আত্মারাম খাঁচাছাড়া। তারপর কি হলো..... সেটাও লেখো।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৩৯

অঙ্গনা বলেছেন: আইচ্ছা লিখবোনে পরে কি হইলো।
আরও কত কিছু যে করা লাগে লং হিস্টোরি সেইসব।
আপনর নিউ এইপিসোডে যাইতে হইব।

৭| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪৫

অপ্‌সরা বলেছেন: নিউ এপিসোডে পড়েন তাড়াতাড়ি।

আমি ঘুমায় গেলাম কিন্তক! :(

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৫৮

অঙ্গনা বলেছেন: পড়ছি এতক্ষণ টাইম নিয়া।
ঘুমাইলেন যখন কমেন্ট কাইলকা দিমু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.