![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বাধীনতার ৪৫বছর পর জানা হল এক গোপন ইতিহাস। যা হয়ত আজও অনেকেরই অজানা। ৭১'র মুক্তিযুদ্ধে এমন লক্ষ প্রানের আত্মদানের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে প্রিয় স্বাধীনতা। অনেকে সম্মাননা পেলেও কেউ কেউ বিশেষ কোন কারনে হারিয়ে গেছেন স্রোতের গহীনে। আবার কখনও বাস্তবিক কোন দেশদ্রোহী ও রাজাকার পেয়েছেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার তকমা।
শিব নারায়ণ দাশ। এটি শুধুমাত্র একটি নাম নয়। শিব নারায়ণ দাশ নামের সাথে মিশে আছে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার মূল ইতিহাস। শিব নারায়ণ দাশই বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রকৃত ডিজাইনার।
স্যার জগদিশ চন্দ্র বসুর চেয়েও যেন শিব নারায়ণ দাশের ভাগ্য আরো বেশি খারাপ। কারণ জগদিশ চন্দ্র বসু আর মার্কোনি একই সময়ে বেতার আবিষ্কার করেন। কিন্তু মার্কোনী আগে প্যাটেন্ট করানোর ফলে বেতার যন্ত্র আবিষ্কারের সুখ্যাতি জোটে তার কপালেই। বঞ্চিত হন স্যার জগদিশ চন্দ্র বসু।
ঠিক তেমনি মূল পতাকার ডিজাইন নিজে করেও তার স্বীকৃতি পাননি তৎকালীন ছাত্রনেতা শিব নারায়ণ দাশ। তার করা ডিজাইন থেকে শুধু মানচিত্রটুকু বাদ দিয়ে ডিজাইনার হিসেবে স্বীকৃতি পান শিল্পী কামরুল হাসান।
আত্মাভিমানি এ ব্যক্তিটি নিজের ক্ষোভের কথা কখনো কারো কাছে প্রকাশ করেননি। বুকের ভেতর জমে থাকা কষ্টটা সবসময় নিজের ভেতরই চেপে রেখেছেন। কখনো গণমাধ্যমের সামনেও দেখা যায়নি তাকে।
বিভিন্ন সময়ে তার একটি সাক্ষাতকার গ্রহণের জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে তার শরণাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু তিনি গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
শিব নারায়ণ দাস বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রথম ডিজাইনার। তিনি একজন স্বভাব আঁকিয়ে ছাত্রনেতা ছিলেন। ১৯৭০ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের ৪০১ নম্বর (উত্তর) কক্ষে রাত এগারটার পর পুরো পতাকার ডিজাইন সম্পন্ন করেন। এ পতাকাই পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়।
শিব নারায়ন দাসের সাথে গণমাধ্যমের কথা হলে তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি যে পতাকাটি তৈরি করা হয়েছিল, তাতে সবুজ রঙ দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছিল এই সবুজ বাংলার চিত্র এবং আর লাল রংটি দেওয়া হয়েছিল সংগ্রাম এবং জীবনের প্রতীক হিসেবে। আর মাঝে মানচিত্রটি সোনালী রং দিয়ে আঁকা হয়েছিল এই সোনালী বাংলার প্রতীক হিসেবে। কারণ বাংলাকে সবাই তখন সোনার বাংলা হিসেবেই উল্লেখ করতো সবাই।
পতাকার মাঝে মানচিত্র আঁকার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, পূর্ব বাংলা এবং পশ্চিম বাংলা আলাদা করে নির্দিষ্ট ভূখণ্ড বোঝাতে মানচিত্রটি দেওয়া হয়, যাতে করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়। কারণ আমাদের বাংলা বলতে বুঝিয়েছি আমাদের নিজস্ব ভূ-খণ্ডকে। পশ্চিম বঙ্গের ভূখণ্ড অন্য একটি রাষ্ট্রের ভূখণ্ড। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত নয়।
স্বাধীনতার পরে মানচিত্রটি সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর মানচিত্র সরানোর এ কাজটি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরামর্শক্রমে সম্পাদনা করেছিলেন শিল্পী কামরুল হাসান। সেখান থেকেই জাতীয় পতাকার ডিজাইনার হিসেবে কামরুল হাসানকেই সবাই চেনে। শিব নারায়ণ দাশ চলে যান ইতিহাসের অন্তরালে।
মানচিত্র সরানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে শিব নারায়ণ দাশ বলেন, পতাকা সঠিক ভাবে তুলে ধরা জাতির কর্তব্য। কিন্তু মানচিত্র থাকায় পতাকাটি আঁকা অনেক কঠিন এবং বিকৃত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই সহজ করে পতাকা আঁকার জন্য মানচিত্রটি সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
পতাকার ডিজাইনার হিসেবে নিজের স্বীকৃতি না পাওয়া নিয়ে নয়, এ মহান মুক্তিযোদ্ধার ক্ষোভ অন্য জায়গায়ও।
দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে শিব নারায়ণ দাস বলেন, পতাকাটি তৈরি করা হয়েছিল, স্বাধীনতার জন্য, স্বাধীন জাতির জন্য, গণতান্ত্রের জন্য ও অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য।
কিন্তু ৪৫ বছর পরে এসেও এই দেশে যে স্বেচ্ছাচারিতা, সন্ত্রাস, অবিচার, ও জঙ্গিবাদের আতঙ্ক দেখতে পাই, তাতে মনে হয় এই দেশের জন্য পতাকাটি তৈরি করা হয়নি।
পতাকার নকশা তৈরির ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, ১৯৭০ সালের ৭ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত ছাত্রদের এক সামরিক কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অংশ গ্রহণের কথা ছিল। এই লক্ষ্যে ছাত্রদের নিয়ে একটি জয়বাংলা বাহিনী গঠন করা হয়। ছাত্র নেতারা এই বাহিনীর একটি পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।
এই লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের (তৎকালীন ইকবাল হল) ১১৬ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা আসম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মার্শাল মনিরুল ইসলাম পতাকার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেন।
সভায় কাজী আরেফের প্রাথমিক প্রস্তাবনার ওপর ভিত্তি করে সবার আলোচনার শেষে সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের মাঝে হলুদ রঙের বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ৪০১ নম্বর কক্ষে রাত এগারটার পর শিব নারায়ণ দাস পুরো পতাকা ডিজাইন সম্পন্ন করেন।
সেই রাতেই নিউমার্কেট এলাকার বলাকা বিল্ডিংয়ের তিনতলার ছাত্রলীগ অফিসের পাশে নিউ পার্ক ফ্যাশন টেইলার্সের মাস্টার খালেক মোহাম্মদী পতাকার নকশা বুঝে কাজ শুরু করেন। তারা ভোরের মধ্যেই কয়েকটি পতাকা তৈরি করে দেন।
এভাবেই সেদিন তৈরি হয়েছিল আমাদের জাতীয় পতাকা। কিন্তু অনেকেই জানেনা যে আমাদের জাতীয় জীবনের এ অমূল্য অর্জনের প্রকৃত ডিজাইনার কে।
১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার শিব নারায়ণ দাশের ডিজাইনকরা পতাকার মাঝে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ ও তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলেন শিল্পী কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৯
এএন অনু বলেছেন: সঠিক ইতিহাস জানুন, সত্যের পথে চলুন। আপনাকেও ধন্যবাদ।
২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৯
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য। অনেক কিছু জানলাম।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৭
এএন অনু বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।
৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৫
বিজন রয় বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
এসব নিয়ে আরো লেখালেখি দরকার।
এখনকার মানুষের এসব জানা দরকার।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৯
এএন অনু বলেছেন: ঠিক বলেছেন। এরখম অনেক ইতিহাস আছে যা ঢেকে রাখা হয়েছে ইচ্ছাকৃত ভাবে। ধন্যবাদ।
৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩২
ডার্ক ম্যান বলেছেন: তথ্যের সোর্স যদি উল্লেখ করতেন
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪১
এএন অনু বলেছেন: তথ্যটি বিভিন্ন সাইটে প্রমান সহ দেয়া আছে। যমুনা টিভি কিছুদিন আগে এ নিয়ে একটা নিউজ করছে। ইউটিউবে পাবেন। উইকিপিডিয়ায় দেয়া আছে প্রথম তার তৈরি পতাকাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ এস এম আব্দুর রবের নেতৃত্বে উত্তলন করা হয়। যেহেতু তার ডিজাইন করা পতাকা প্রথম উত্তলিত হয় সুতরাং সেই জাতীয় পতাকার ডিজাইনার। আপনি যাচাই করে দেখতে পারেন। ধন্যবাদ।
৫| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ২:১১
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আসলেও যারা এই পতাকার ইতিহাস জানেন না, এসে দেখে যান।।
সোনালি রংয়ের ম্যাপটি অদক্ষদের হাতে পড়ে পরবর্তিতে ভৌগলিক সীমাকেও অস্বীকার করছিলো বলে, পরবর্তিতে বাদ দেয়ার সির্দ্ধান্ত হয়।।
আরেকটি পতাকা আরো আগেই ছিল, যার রূপকার ছিল, "স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস"!!
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৬
আহা রুবন বলেছেন: হালকাভাবে পতাকার ইতিহাস জানতাম। এখন পরিষ্কার করে জানলাম। আপনাকে ধন্যবাদ বিস্তারিত জানানোয়।