নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরিফ_মাহমুদ

আরিফ_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিয়মিত মনটাকে ব্রাশ করছেন তো ????

২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ১:৪২


বেশীর ভাগ মানুষ হার্ট এ্যাটাকের চেয়ে থট এ্যাটাকেই মারা যাচ্ছে। ৭৫ ভাগ সাপ বিষহীন। কিন্ত ৭৫ ভাগ বিষহীন সাপেও যদি কামড় দেয় ৭৫ ভাগ মানুষ ভয়ে মারা যায়। এটাকেই বলে থট এ্যটাক। লজিকালি সাপেরই মারা যাওয়া উচিত। কারণ-মানুষের মাঝে এতো বিষ রয়েছে। হিংসা, ঘ্বণা,লোভ, প্রতিহিংসার বিষের পাশাপাশি মদ, বিয়ার, এ্যলকোহল, বার্গার, পিজা,ফরমালিন ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় বিষে শরীর ভরপুর। আশ্চর্য্য হলেও সত্য, মানুষকে কামড়ে সাপই মারা গেছে এরকম ঘটনা কিন্তু জার্মানীতেই ঘটেছে। ব্রা আর বিকিনি পরিহিত জার্মান সুদর্শনা মডেল যখন গলায় সাপ নিয়ে হাঁটছিলেন -ভালোবাসায় কাতরে সেই সাপ যেই মাত্র মডেলকে দংশন করলেন-সাথে সাথেই অবলা সাপ মারা গেলো। ব্যাপারটা শুনতে অদ্ভূত হলেও , ঘটনা সত্য। মডেলের পরনে ছিলো সিলিকন ব্রা।
মানুষ কেন থট এ্যটাকে মারা যায় ?কারণ-আমরা সচরাচর পার্ট অব এ্য সল্যুশন না হয়ে খুব সহজেই পার্ট অব এ্য ভিক্টিমে পরিণত হই। লিজেন্ডারি এ্যাথলেট অস্কার পিস্তুরেজকে সবাই চিনেন। সাউথ আফ্রিকায় ৪০০ মিটার দৌড়ে যিনি ২য় হয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। হয়তো চিন্তা করছেন- ২য় তো অনেকেই হয়। এতে লিজেন্ডারী হওয়ার কি আছে?
চমকে ওঠার কারণ হলো- দুই হাঁটুর নীচের অংশটুকুই উনার ছিলোনা। কিন্তু তারপরও উনি নিজেকে বিকলাঙ্গ মনে করতেন না।
হয়তো মনে করছেন-তবে উনি প্রতিবন্ধীদের সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন।
না, যিনি নিজেকে বিকলাঙ্গই মনে করেন না। তিনি প্রতিবন্ধীদের সাথে দৌড়াবেন কেন? স্বাভাবিক দৌড় প্রতিযোগিতায়,সেরা এ্যাথলেটদের সাথে দৌড়েই ২য় হয়েছিলেন। অন্যতম সফল মানুষ হয়েও তিনি তার চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। হঠাৎ করেই নিজের বান্ধবিকে শ্যুট করে শুধু নিজের জীবনটাকেই নষ্ট করলেন তা না, পুরো জীবনের সাফল্যেক মুহুর্তেই জেলে বন্দি করে রাখলেন।
ওজে সিমসন-আমেরিকার সর্বকালের সেরা ফুটবল খেলোয়াড়দের একজন। আমেরিকান ফুটবল, অত্যন্ত ফিজিক্যাল আর বায়োলেন্ট একটা গেম। ওজে সিমসমনের শৈশবে বোন ডিফিসিয়েন্সি বা রিকেট রোগ ছিলো।ষ্ট্রেচারে ভর করে হেঁটে স্কুলে যেতেন। ডাক্তাররা বলেছিলেন -উনি ধীরে ধীরে পঙ্গু হবেন। অথচ এই লোক ফুটবলের মতো দানবীয় খেলায় সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসাবে স্বীকৃতি পেলেন। এরপর কি হলো- তারও থট এট্যাক হলো। সামান্য রাগের বশে নিজের ওয়াইফকে খুন করে সারা জীবনের সাফল্যকে মহুর্তেই ছাই,ভস্ম করে দিলেন। এতো সাফল্যের পরও নিজের মন, নিজের চিন্তা, নিজের হৃদয়টাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন নি। মাথা বা হেড মোটা হলে যা হয়। আমাদের অগণিত হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট আছে,কিন্তু হার্ট অব দ্য ডিপার্টমেন্ট বড়ই বিরল। সেজন্য দেখা যায়, ইভেন গ্রেট পিপল ক্যান্ট ম্যানেজ দেয়ার হার্ট।
মাইকেল জ্যাকসন পুরো বিশ্ব কাঁপানো পপ সম্রাট। কিন্তু সুখী ছিলেন না। কেন? সামান্য সিলি কারণ-গায়ের রঙ তার সাদা না। নাকটা ঠিক না। সার্জারির পর সার্জারি। জীবনটা হয়ে গেলো একেবারে বরবাদ। ডোজের পর ডোজ ড্রাগ খেয়ে জীবনটা শেষ করে দিলেন। মানুষ যখন নিজেই নিজেকে পছন্দ করতে পারেনা, তবে আরেকজনে পছন্দ করবে কেমন করে?
সবারই দুটো ভিশন থাকে। একটা হলো "আউটার উইনার" আরেকটা হলো "ইনার উইনার"। আউটার উইনার হলো সাকসেস, আর ইনার উইনার হলো সেটিশফেকশান। জীবনে শুধু সাকসেস জিনিসটা খুবই ভয়ঙ্কর যদিনা সাথে সেটিশফেকশান থাকে। অনেক মানুষই জীবনে সাকসেসফুল কিন্তু তারা জীবনে ফুলফিলড না। এর সবচেয়ে সুন্দর উদাহরণ-মেরিলিন মনরো। সুন্দরতমা মহিলাদের একজন। হাইলি সাকসেসফুল। মানুষ যা হতে চায়-সবকিছু তাঁর ছিলো। সবাই সুন্দর, রুপময় হতে চায়-তিনি তাই ছিলেন। সবাই সেক্সী হতে চায়-তিনি তাও ছিলেন। যশ, বিত্ত, খ্যাতি কি না ছিলো। তারপর মাত্র ৩৬ বছরে তিনি সুইসাইড করলেন। থট এ্যাটাকের আরেকটি জ্বলন্ত উদাহরণ।একাডেমি এ্যাউয়ার্ড পাওয়া রবিন উইলিমাসও ঠিক তেমনি একজন।সবাইকে হাসিয়ে নিজের বুকে যন্ত্রণা নিয়ে সুইসাইড করলেন।উনারা সবাই আউটার উইনার ছিলেন। একজনও ইনার উইনার ছিলেন না।
অথচ, দেখবেন একজন মেঠোরাখাল,খেয়া নৌকার মাঝি, বটের ছায়ায় জিরিয়ে নেয়া সাধারণ একজন কৃষক কত সহজে,কত আনন্দে শান্তির ঘুম ঘুমিয়ে এক অদ্ভূত অনাবিল জীবন পার করে দিতে পারে। কোনো শ্রমজীবী মানুষকে বলতে কোনোদিনও শুনিনি- ভাই রাতে শুধু বিছানায় ছটফট করেছি। একটু ঘুমাতে পারিনি। কারণ-উনারা সবাই ইনার উইনার। আর অন্যদিকে, হাইডোজ ড্রাগ খেয়ে আর টেম্পারপেডিক বেডে শুয়েও আপাত দৃষ্টিতে দেখা সফল মানুষের চোখে ঘুম নেই। কারণ- এরা সবাই আউটার উইনার।
থট এট্যাক জিনিসটা খুবই ভয়ঙ্কর।আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ যেমন বলেছিলেন- সাফল্যময় জীবনের চেয়ে দরকার স্বার্থক জীবন। আর স্বার্থক জীবনের জন্য দরকার একটা শান্তিময় সাধারণ জীবন।এই জীবনে প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করে কুলি করার মতো অতিরিক্ত চাওয়া, পাওয়া, আকাঙ্খা,লোভ, অশান্তির বিষকে সরিয়ে মনটাকেও ব্রাশ করে সবসময় সজীব রাখতে হয়।দাঁত ব্রাশ করতে যেমন সোনার থুতব্রাশ দরকার পড়েনা, ঠিক তেমনি মনটাকে পরিচ্ছন আর হৃদয়টাকে ব্রাশ করে শান্তিময় রাখার জন্য অজস্র প্রাচুর্য্যেরও দরকার পড়েনা। নিয়মিত মনটাকে ব্রাশ করছেন তো????

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.