নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনী: যেমন দেখেছি ময়মনসিংহ নগরীকে

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:০৫



স্টেশন সংলগ্ন মাঠে এই সেই রহস্যময় ঘোড়া
(পূর্ব প্রকাশের পর)

চমৎকার ঈষদুষ্ণ আবহাওয়া। ভোরের আলো ফুটছে। সুনসান সড়ক। দোকানপাট তখনও তেমন একটা খোলেনি। সবে সূর্য উঠেছে। উদ্দেশ্যহীন এ গলি ও গলি হাটতে লাগলাম। কিছুদূর যেয়ে আবার ফিরে আসি প্রধান সড়কে। দেখলাম, শহরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য গৃহপালিত পশু চড়ে বেড়াচ্ছে, আর বেওয়ারিশ কুকুরদের দৌড়ঝাঁপও সমানুপাতিক, তবে মানুষ খুবই কম। দুয়েকজন এদিক সেদিক বসে আছে, গল্প করছে, দাঁত ব্রাশ করছে ইত্যাদি। রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকা। পাশের মাঠে দেখলাম, একটি মাঝারি আকৃতির ঘোড়া মনের সুখে হেটে বেড়াচ্ছে। সে কী ভাব ঘোড়াটার! গা’ ঘেসে চলে গেল মাননীয়, কিন্তু একবার ফিরেও তাকালো না আমার দিকে! ভাবসাব দেখে মনে হলো, মহারাজ বুঝি বিশুদ্ধ বায়ু সেবনে প্রাতঃ ভ্রমণে বেরিয়েছে! হা হা হা। ঘোড়াটা গৃহপালিত পশুর মতোই মাঠের সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে লাগলো বাঁধা বন্ধনহীন। কার ঘোড়া, কোথায় বাড়ি, ছুটতে ছুটতে না জানি আবার কোথায় চলে যায়! বিস্ময় নিয়ে ভাবলাম। আসলে ঘোড়া প্রতিপালন সম্পর্কে আমার তেমন কোনও ধারণা নেই। শুধু জানি প্রাণীটা ভীষণ জোরে ছুটতে পারে। দেখলাম, এই ঘোড়াটা দিব্যি সারা মাঠ গরু ও ছাগলের মতোই ধীর পা’য়ে হেলেদুলে ঘুরে বেড়াতে লাগলো! কিন্তু আশেপাশে ঘোড়ার মালিক বা দেখাশোনা করার কাওকেই নজরে এলো না। এ সময় দুটো কুকুর ছানা ওর পিছু নিলো। না তেমন কিছু নয়, নিছকই খেলবার অভিপ্রায়ে। ঘোড়ার পিছন পিছন ছুটে চললো ওরা আর নাকি সুরে ঘেউঘেউ করতে লাগলো! কিন্তু ঘোড়াটা ওদের মোটেই পাত্তা দিলো না। পরিষ্কার বুঝতে পারলাম, এসবে ভালোই অভ্যস্ত সে।
তখনও সড়কে ল্যাম্পপোস্টের সরকারি বাতিগুলো নেভেনি। জ্বলছেই। মানুষ বলতে আমি অনেকটা একাই সেই স্টেশন সংলগ্ন মাঠে। নিটোল আনন্দে উপভোগ করে চললাম দারুণ এক ঝা চকচকে রৌদ্র ঝলমল সতেজ ভোর। সঙ্গী আমার এইসব অবলা পশু। অবুঝ বাচ্চা কুকুরগুলো এক পর্যায়ে আমার কাছে এসেও কিছুক্ষণ দুষ্টুমি করবার চেষ্টা করেছিল। আমিও ঘোড়ার মতোই ওদের একটুও পাত্তা দিলাম না। বেরসিক জানোয়ার! সুবিধা হবে না বুঝতে পেরে ওরাও মানে মানে কেটে পড়লো। আগের মতোই নাকি সুরে ঘেউঘেউ করতে করতে চলে গেল আরেক দিকে। সত্যি দারুণ উপভোগ্য ছিল ফেব্রুয়ারির সেই ঈষদুষ্ণ কোমল ভোরটা। দারুণ! আমার প্রথম দিন ময়মনসিংহ শহরে। সকালের স্বর্ণপ্রভা ঈষৎ উষ্ণ প্রাণোচ্ছল রোদ্দুর প্রাণভরে মাখলাম সারা গা’য়ে। খুব ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল, যেন এখানেই জীবনের সব মানে। এখানে- এই কমলা রঙের প্রশান্ত উজ্জ্বল রোদ্দুরেই যেন পৃথিবীর এক টুকরো স্বর্গ মানুষের। এখানেই অবিরাম স্বর্গসুখ।
সত্যি, ভীষণ উপভোগ্য ছিল স্টেশনের বিরাট মাঠে, চকচকে সূর্যোদয়ের কমলা রঙের আভাযুক্ত সেই প্রাণোচ্ছল সজীব ভোরটা। জানি না, কতোটুকুই বা লিখতে পেরেছি তার! মানুষের এইসব নিটোল সুখদ অনুভূতিগুলো কতোটুকুই বা লিখতে পারে মানুষ! স্থানীয়দের কাছে এটা নিতি নিতি জীবন কিন্তু আমার কাছে রীতিমতো তা নতুন এক অভিযানের সুখ, রোমাঞ্চ। আবারও ময়মনসিংহের সেই কমলা রঙের ভোর ফিরে আসুক জীবনে। আবার সেই রেল লাইন, মাঠ, সূর্যোদয়, শিশিরস্নাত অমল সবুজ ঘাস, সেই নিঃসঙ্গ ঘোড়া, অবুঝ কুকুর ছানাগুলো। আবার আবার!



মাঠের সেই দুটো কুকুর ছানা। হয়তো তিনটি!

(চলবে)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৫:১৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস আর ব্রহ্মপুত্র নদের দৃশ্য বড়ই মনোহর।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩৯

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। ওগুলো আসবে।

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমি নিজে ময়মনসিঙ্ঘ গিয়েছি- কিন্তু এমন নিখুতভাবে খুটিয়ে দেখিনি।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪০

অর্ক বলেছেন: পরেরটাতে ঘটনা বলা হবে। ধন্যবাদ ভাই।

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন ভাই, ঘোড়া কুকুর আর স্বর্ণাভ রোদের সাথে আপনার প্রভাত বর্ণন মনোমুগ্ধকর।

শুভ কামনা রইল গল্পের জন্য,
শুভ বসন্ত

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ কবি নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন। শুভকামনা নিরবচ্ছিন্ন।

৪| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি যতদিন ময়মনসিংহে ছিলাম, ময়মনসিংহ রেল স্টেশনটাকে একটা নোংরা, আবর্জনাময়, জনাকীর্ণ, শোরগোলপূর্ণ স্থান হিসেবে চিনেছি। হয়তো এখনো সেটা তেমনি আছে। তবে ময়মনসিংহে দেখার মত অনেক সুন্দর জায়গাও রয়েছে।

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় খায়রুল ভাই। রেল স্টেশন মাত্রেই বাংলাদেশে কমবেশি একইরকম। ময়মনসিংহ শহরে হয়তো তেমন কিছু নেই, যা আছে দূরে দূরে। ময়মনসিংহে আবর্জনা সর্বত্র, যা দুঃখজনক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.