নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বহু বহুদিন আগের কথা। খুব সম্ভবত প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডিও পেরোইনি তখন। সত্যি, আজ ভাবলে কেমন শীর্ণ হয়ে ওঠে শরীর মন। দীর্ঘ সময় কেটে গেছে মাঝে। হ্যা, এক দীর্ঘ সময়! এসব স্মৃতি রোমন্থন করতেও ভয় পাই। কীভাবে সময় চলে যায়, দৃশ্যপট বদলে যায়, পরিস্থিতি বদলায়! আর এক গভীর শূন্যতা আদ্যন্ত গ্রাস করে নেয় আমাকে। যাক, বেশ ভূমিকা হলো, এবার ঘটনায় আসি। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাদের দোতলা বাড়ির দেয়ালে দুটো ইটের ফাঁকে গোঁজা ভাজ করা চারকোনা কাগজ আবিষ্কার করি। ওটা খুলে ভিতরে চকচকে বিশ টাকার নোট। কাগজে গোটা গোটা হরফে হাতে লেখা দুতিন লাইনের বার্তা। সেখানে এরকম কিছু লেখা ছিলো যে, ‘বিশ টাকা পাঠানো হলো। তুমি বিকেলে রিক্সা করে দেখা করতে এসো।’ খুব সম্ভবত কোনও রেস্টুরেন্টে ডেকেছিলো। শুরুতেই বলেছি, ঘটনা বহু আগের। অতো পুঙ্খানুপুঙ্খ মনে নেই। এছাড়াও ছোটো ছিলাম। যা হোক আকাশের চাঁদ হাতে পাবার মতো আনন্দ পেয়েছিলাম সে কোমল শৈশবে। বিশ টাকা তখন বেশ ভালো পরিমাণের টাকা। দুতিন টাকা ভাড়াতেই রিক্সায় এদিকসেদিক যাওয়া যেতো। বাবা স্কুলে যাবার সময় দুয়েক টাকা করে দিতেন। সেখানে বিশ টাকা তো অনেক আমার জন্য। হে হে হে। টাকা পকেটস্থ করে চিরকুটটা যেখানে যেমন পেয়েছিলাম রেখে দেই। পরবর্তীতে আমার দু’বোনের মাঝে কথোপকথন থেকে বিষয়টা পরিষ্কার হয়। আমার বড়ো বোন ছোটো বোনকে বলছিলো, ‘কে যেন পাঠিয়েছে চিঠিটা। কিন্তু টাকা পাঠায়নি। ইয়ার্কি করেছে নির্ঘাত।’ কিন্তু আসল ঘটনা ইতিমধ্যে বলা হয়ে গেছে, বিশ টাকা প্রেরক ঠিকই পাঠিয়েছিলো, কিন্তু প্রাপকের হাতে পৌছায়নি। মাঝখানে আমি সেটা নিয়ে নেই। হা হা হা। ঘটনা এটুকুই। লোকটাকে পরবর্তীতে শনাক্ত করতে পেরেছিলাম। যে সময় সে এই সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলো, তখন তার বয়স পয়তাল্লিশ ছেচল্লিশ হবে। আমার বড়ো বোনের বাইশ তেইশ। পরিষ্কার মনে পড়ছে চেহারা। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। পাতলা গোফ। দামী হাওয়াই শার্ট। ভুড়ভুড় করে পার্ফিউমের ঘ্রাণ আসতো গা থেকে। পায়ে সবসময় ঝকঝকে কেডস। বড়ো ব্যবসায়ী শহরের। পয়সাওয়ালা ধনাঢ্য লোক। সত্যটা বোনকে কখনও জানানো হয়নি। দরকার হয়নি আসলে। তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। পরবর্তীতেও লোকটা দুয়েকবার বিভিন্নভাবে আমার বোনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলো। সারা না পেয়ে এক পর্যায়ে নিরাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেয়। আহা, লিখতে গিয়ে আজ স্নিগ্ধতায় ভরে উঠছে মন। জানি না, এখন কেমন আছে সে। আদৌ বেঁচে আছে কিনা? বেঁচে থাকলে নির্ঘাত বার্ধক্যে পৌঁছে গেছে। মদ খেতো জানতাম। ধরে নিতে পারি যে, জীবিত থাকলেও নানারকম অসুখবিসুখে জর্জরিত। শুভকামনা তার জন্য। ভালো থাক সুখে থাক। আমার সে বোন আজ আর আমাদের মাঝে নেই। ২০২০ সালে ক্যান্সারে মারা যায়।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:২০
অর্ক বলেছেন: লোকটা আমাদের পরিচিত। আমার বোনকে ভালবাসতো। আরেকবার স্থানীয় এক ছেলেকে পাঠিয়েছিলো ওর কাছে। ওকে জানাতে, বড়ো ভাই তোমার সঙ্গে একটু কথা বলতে চায়। অমুক রেস্টুরেন্টে কিছুক্ষণ সময় দিতে পারবে? আমার বোন সারা দেয়নি। ভয়ঙ্কর কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিলো না বোধহয়। পরবর্তীতেও আর কোনওরকম বাড়াবাড়ি করেনি। লেখাতেও তাই তাকে শুভকামনা জানিয়েছি। কারও প্রতি কারও বিশেষ সে ভালবাসা প্রকাশ দোষের কিছু নয়। ঘটনা যেহেতু আমার বোনের, তাই আরও কিছু থেকে থাকতে পারে, যা আমার অজানা।
ধন্যবাদ আপু। শুভেচ্ছা থাকলো।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:২১
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: পঁয়তাল্লিশ বছরের মানুষ বেঁচে আছে অথচ ২২ বছরের মানুষ ক্যানসারে মারা গেছে। মৃত্যুর কাছে বয়স কিছু নয়।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:২২
অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ সেলিম ভাই। শুভকামনা থাকলো।
৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:২৪
আমি সাজিদ বলেছেন: আপনার অকালপ্রয়াত বোনের জন্য দোয়া থাকলো।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:২২
অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৪
ভুয়া মফিজ বলেছেন: চিঠিটা হঠাৎই আবিস্কার করলেন, নাকি কোন গোয়েন্দা তথ্য ছিল? সেই টাকায় কি কি করলেন, তার একটা বিশদ বর্ণনা দেয়া উচিত ছিল।
ওই লোকটা মনে হয় এখনও বেচে আছে। ভালো মানুষরা সাধারনতঃ তাড়াতাড়ি চলে যায়, শয়তানদের জান হলো তেলাপোকার মতো। বহুদিন টিকে থাকে। এই তথ্য কোথায় পেলাম, তার আবার রেফারেন্স দিতে বলবেন না যেন.......কোন রেফারেন্স নাই।
আপনার বোন ওইপাড়ে ভালো থাকুক, শান্তিতে থাকুক।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:০৫
অর্ক বলেছেন: হা হা হা। না ভাই গোয়েন্দা তথ্য ছিলো না। উমম যান আরেকটু কৌতূহল মেটাই (রুচিসম্মত না হলে দুঃখ প্রকাশ ছাড়া কিছু করার নেই)। বাথরুম থেকে বেরিয়ে আবিষ্কার করেছিলাম। জেনেবুঝেই রেখেছিলো। বাচ্চা ধরে নিয়ে অগ্রাহ্য করেছিলো আমাকে। ভেবেছিলো আমার হাতে পড়লেও বোনকে দিবো। আমি বিশ টাকাটাই শুধু নিয়েছিলাম। খরচের হিসেব আজ আর চাবেন না ভাই। ও নিয়ে ভাবতে গেলে পাগল হতে হবে।
দুতিনবার এভাবে আমার বোনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেস্টা করে একপর্যায়ে সে হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেয়। আমার বোন জেলা শহরের নাম করা সুন্দরী ছিলো। এসব ঘটনা ওর কাছে ডালভাত। হাজারো পাণিপ্রার্থী। হাজারো ঘটনা।
ধন্যবাদ ভাই। শুভকামনা থাকলো।
৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:৫৪
অপ্সরা বলেছেন: যাক বাবা আমি তো ভাবছিলাম কোনো পাঁজী লোক হবে।
২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:১১
অর্ক বলেছেন: পাঁজি হতেও পারে। ধনাঢ্য লোক। সমাজে বিশেষ অবস্থান আছে। এক্ষেত্রে কোনও বাড়াবাড়ি করেনি। যে যার রাস্তায় চলে গিয়েছিলো। তাই সেভাবে খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি আমাদের। প্রায় অর্ধেক বয়সী একটা মেয়ের পিছনে লেগে থাকাটা তো ভালো কাজ নয় কিছুতে। খুব ভালো লাগতো হয়তো আমার বোনকে। যাক শুভকামনা তার জন্য।
৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৪
মিরোরডডল বলেছেন:
একটা বাসায় ইয়ং মেয়েরা থাকলে, তারওপর যদি সুন্দরী হয় তাহলে এরকম অনেক রোমিও আশেপাশে থাকে, এটা স্বাভাবিক।
যাক সেসময় কোন সমস্যা হয়নি এটাই ইম্পরট্যান্ট। অর্ককে বলেছি আগে যে আমার বড়পাও ছিল অনেক সুন্দরী। তাকেও খুব কম সময়ের মাঝেই ক্যান্সার নিয়ে গেছে।
আচ্ছা এই পোষ্টের শুরুতে ছবির মানুষটা কে?
অর্কের এবারের প্রোফাইল পিকটা পারফেক্ট হয়েছে।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:০৬
অর্ক বলেছেন: ভালো বলেছেন। সত্যিই তাই। খুব সুন্দরী মেয়েদের, নিজেদের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদেরও নানারকম বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়। কি করার আছে!
ছবি ইন্টারনেটের ফ্রী ফটো। ও নিয়ে কিছু জানা নেই।
অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা থাকলো।
৭| ১৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯
শাওন আহমাদ বলেছেন: আপুর আত্মার শান্তি কামনা করছি। আপনার জায়গায় আমি হলে ঠিক ঠিক রিক্সা নিয়ে চিরকুট দাতার সাথে দেখা করে হতাশ করে দিতাম বাই দ্যা রাস্তা, দুই-তিন টাকা রিক্সা ভাড়া! সময় টা ঠিক কত আগের আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করছে।
১৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:৪৩
অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভ্রাতা। সময় আনুমানিক ৯৭-৯৮ সাল। মনে পড়ছে, ২০১৪ সালে রাজশাহীর কোথাও জনৈক রিক্সাওয়ালা ও তরুণের কথোপকথন। --- জায়গায় যেতে তরুণ বলেছিলো যে, ৫ টাকা দিবে। রিক্সাওয়ালা উঠতে বলেছিলো সঙ্গে বিরক্তিভরে আরও বলেছিলো, সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা ৫ টকা কেন বললেন? আমি বিস্মিত হয়েছিলাম, পাশের জেলা শহর বগুড়ায় তখন ১০ টাকার নিচে রিক্সা ভাড়া ছিলো না। তরুণ উঠেছিলো রিক্সায়।
ভালো থাকবেন।
৮| ১৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:৫০
শাওন আহমাদ বলেছেন: জি ভাইয়া আমিও সর্বনিম্ন ১০ টাকা রিক্সা ভাড়াই পেয়েছি। আপনিও ভালো থাকবেন।
১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:১৪
অর্ক বলেছেন: এই তো কদিন আগেই ৫ মে ৩৬ তম জন্মদিন গেলো আমার। আপনার বয়স কতো?
৯| ১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:২৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: আমি আপনার চেয়ে ঢের জুনিয়র ভাইয়া, আপনি আমার বড় ভাইয়ার এইজের।
১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৪
অর্ক বলেছেন: অসুবিধা কি! আজকে এইমাত্র যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করলো সেও কিন্ত তোমার চেয়ে ঢের জুনিয়র! হে হে হে। বয়স টয়স আসলে কিছু না। জীবন সবসময় জানার শেখার চমৎকার এক প্রকৃয়া। কাছাকাছি সময়েই একজন জার্মান ভদ্রলোক ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটে ম্যারাথন শেষ করলো। বয়স ৬০+। আমি নিজেও এ মুহূর্তে বাংলাদেশের দ্রুতগতির রানারদের একজন।
ভালো থেকো। অনেক অনেক শুভেচ্ছা থাকলো।
১০| ১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৩
শাওন আহমাদ বলেছেন: ভাইয়া বয়স আমার কাছে একটা নাম্বার মাত্র। আমি বয়সের মাপকাঠিতে কিছুই মাপি না। ছোটবেলা থেকেই আমি আমার চেয়ে বয়সে যারা বড় ছিলেন তাদের সাথে মিশতে ভালোবাসতাম। আমার ভাইয়া এমন কি আমার চাচ্চুর বন্ধুরাও আমার বন্ধু ছিলো এখনো আছে, আমি তাদের সাথে একদম বন্ধুর মতোই চলি। আমাকে কেউ বয়স জিজ্ঞেস করলে, বলি আমি ঝুনানারিকেল। জেনে ভালো লাগলো আপনি দৌড়বিদ, আপনার গতি ঢের থেকে ঢের বেড়ে যাক। আপনার জন্য দুআর আর শুভ কামনা। ওহ আপনার তুমি সম্বোধন ভালো লেগেছে।
১৬ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৩১
অর্ক বলেছেন: মানবসভ্যতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন মানুষের জীবনযাপনের এ উদার দৃষ্টিভঙ্গি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে যা একেবারেই অনুপস্থিত। জাতি হিসেবে আমাদের এগোতে হবে। আমাদের নিজেদের বদলাতে হবে।
১১| ১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আপনার বোনের জন্য দোয়া করছি আল্লাহ জান্নাতে ঠাঁই দিন
১৬ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:১৩
অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। আপ্লূত হলাম খুব। ভালো থাকবেন।
১২| ০৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্টের শেষ দুটো বাক্য পড়ে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেল!
মাগফিরাতের দোয়া রইলো।
সুন্দর, সাবলীল ভাষায় লেখা পোস্ট। কবিতার মত কোমল। + +
০৮ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৩:২৩
অর্ক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ খায়রুল ভাই। খুশি হলাম জেনে।
শুভকামনা থাকলো।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:০৬
অপ্সরা বলেছেন: কি ভয়ংকর!
তার ফাঁদে পা দিলে তো ......
যাক আমাদের দেশের মেয়েরা এত বোকা না।
কিন্তু বিদেশের শুনেছি এমন প্রতারকের পাল্লায় অনেকেই পড়ে।