নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের প্রশংসা শুনার (যদিও বা কেউ করে না) চেয়ে সমালোচনা(যেটা স্বভাবগতভাবেই শুনে আসছি) শুনতে ভালবাসি..........

আমি বলব

ধর্ষিত বুজুক্খুর

আমি বলব › বিস্তারিত পোস্টঃ

নকল ডিম থেকে সাবধান

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩০



আমাদের দেশে খাদ্য তালিকায় ডিম একটি অপরিহার্য খাদ্য। এক সময় ডিমকে বলা হতো গরীবের মাংস। কিন্তু দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতির ফলে অনেক আগেই নিুবিত্তের ধরাছোয়ার বাইরে চলে গেছে ডিম। দেশে ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়ায় বর্তমান চাহিদার জোগান দিতে ইদানিং বাইরে থেকে ডিম আমদানির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে পার্শ্ববর্তী ভারত, চীন ও মায়ানমার থেকে আমদানিকৃত ডিমের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে শোনা যাচ্ছে। ডিমের এ অত্যাধিক চাহিদাকে পূঁজি করে চীন কেমিক্যাল দিয়ে উৎপাদিত কৃত্রিম ডিম বাজারজাত করা শুরু করেছে। মুরগী ডিম পাড়ার জন্য এখন আর তারা ২১ দিন অপো করতে রাজী নয়। একটা ডিম তৈরি করতে গড়পড়তায় তারা সময় নিচ্ছে মাত্র ৫ মিনিট। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বৈকি। কারন কৃত্রিম ভাবে তৈরি এসব ডিম জনস্বাস্থ্যের জন্য বিশাল হুমকি স্বরূপ।

বাজারে ডিম কেনার প্রাক্কালে তাই ভোক্তা সাধারণকে চায়নিজ ডিমের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। এখন মনে নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে কিভাবে চিনবেন ডিম আসল না নকল। আসুন আগে একটু জেনে নিই কিভাবে তৈরি হয় নকল ডিম।

নকল ডিমের কাঁচামাল তৈরির পদ্বতি

আমরা জানি একটি ডিমে থাকে কুসুম(ঊমম ুড়ষশ) , সাদা অংশ( ঊমম যিরঃব) , পাতলা আবরন( ঊমম সবসনৎধহব) এবং খোলস বা খোসা ( ঊমম ংযবষষ)। নকল ডিম তৈরির পূর্বে বিভিন্ন কেমিক্যাল সহযোগে এ সকল অংশ( জধি সধঃবৎরধষ) আলাদা ভাবে তৈরি করা হয়। যেমন খোলস তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ক্যালসিয়াম কার্বোনেট। ডিমের কুসুম আর সাদা অংশ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় সোডিয়াম এলগিনেট, এলাম, জিলেটিন, ভণ যোগ্য ক্যালসিয়াম কোরাইড, পানি এবং কৃত্রিম রং।

ক্স প্রথমে নির্দিষ্ট পরিমাণ সোডিয়াম এলগিনেট গরম পানিতে মিশিয়ে সাদা রঙ তৈরি করা হয়। এরপর এর সাথে জিলেটিন, বেঞ্জয়িক এসিড, এলাম এবং অন্যান্য কিছু রাসায়নিক পদার্থ যোগ করে তৈরি করা হয় ডিমের সাদা অংশ।

ক্স ইতোপূর্বে তৈরি সাদা অংশের সাথে লেমন ইয়েলো খাদ্য রঞ্জক মিক্স করলেই তৈরি হয়ে যায় ডিমের কুসুম।

ক্স একই ভাবে ডিমের পাতলা আবরণ তৈরির জন্য সাদা অংশ তৈরির কাঁচামালের সাথে মিক্স করা হয় ক্যালসিয়াম কোরাইড।

ক্স আর খোলস তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় মোম, জিপ্সাম পাউডার, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট এবং অন্যান্য কিছু পদার্থ।





নকল ডিমের পুষ্টিগুণ

কৃত্রিম ভাবে তৈরি ডিম আসল ডিমের তুলনায় সুস্বাদু হলেও এর কোন পুষ্টিগুণ নেই। বরং এ ডিম তৈরিতে যে সকল কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় তা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত তিকর।



নকল ডিমে ব্যবহৃত বিভিন্ন কেমিক্যালের তিকারক দিক সমূহ

(১) গ্ল“কোলেকটনঃ ইহা বিপাকীয় সমস্যা সৃষ্টি করে।

(২) বেনজয়িক এসিডঃ ইহা মস্তিষ্ক ও øায়ু কোষের তি করে। যকৃতের রোগ এবং বোধশক্তি হ্রাসে ইহা ভূমিকা রাখতে পারে।

(৩) ক্যালসিয়াম কোরাইডঃ ইহা যকৃত ও øায়ু রোগ তৈরি করে এবং শরীরে রক্ত উৎপাদনে বাধা প্রদান করে।

(৪) সেলুলোজঃ ইহা বিপাকীয় জটিলতা সৃষ্টি করে।

(৫) এলামঃ ইহা যকৃত ও øায়ু রোগ তৈরি করে এবং শরীরে রক্ত উৎপাদনে বাধা প্রদান করে।

(৬) এমিনো এসিড, খাদ্য রঞ্জক, সোডিয়াম এলগিনেট, জিলেটিনঃ বিপাকীয় জটিলতা সৃষ্টি করে।



নকল ডিমের ব্যবসায়িক হিসাব



* কেজি আসল ডিম উৎপাদনে খরচ পড়ে ৬.৫ ইউয়ান। অন্যদিকে ১ কেজি সোডিয়াম এলগিনেটের দাম ৪২ ইউয়ান, যা দিয়ে ১৫০ কেজি নকল ডিম তৈরি করা যায়। অন্যান্য সকল খরচ হিসাব করে ১ কেজি নকল ডিম তৈরির খরচ পড়ে মাত্র ০.৫৫ ইউয়ান! মূলত এ লাভের অংক কষেই চায়নিজরা সকল নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে প্রস্তুত ও বাজারজাত করছে নকল ডিম। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই চায়নিজরাই দুই এক বছর পূর্বে গুঁড়ো দুধে মানব দেহের জন্য তিকারক মেলামিন মিশিয়ে বাজারজাত করে। এ দুধ খেয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় সারা বিশ্বে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হলে ঐ গুঁড়ো দুধ কো¤পানি তাদের সকল মেলামিন যুক্ত দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং বিশাল অংকের জরিমানা দিতে বাধ্য হয়। অতএব আমাদের এখন সময় এসেছে সর্বেেত্র চায়নিজ পণ্য বর্জনের; যদি ও বিশ্ব বাজারে চায়নিজ পণ্যের আগ্রাসনের প্রোপটে বিষয়টা অতোটা সহজ সাধ্য নয়। তথাপি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সম্ভাব্য অকল্যাণের হাত থেকে রা করতে এ ব্যাপারে সর্ব মহলের সচেতনতা বৃদ্ধির আবশ্যকতা রয়েছে।



নকল ডিম তৈরির ধাপ সমূহ

নকল ডিম তৈরির কাঁচামাল সমূহ তৈরি হয়ে গেলে শুরু হয় নকল ডিম তৈরির আসল কাজ।



১ম ধাপঃ



প্রথমে ইতোপূর্বে তৈরি ডিমের কুসুমের কাঁচামালের মিশ্রণকে কুসুমের আকৃতির ন্যায় ছাঁচ বা

কন্টেইনারে ফেলে ছাঁচের তিন ভাগের দুই অংশ পূর্ণ করা হয়। এরপর সাথে যোগ করা হয়

ক্যালসিয়াম কোরাইড ও পানি। পরবর্তীতে কন্টেইনারটিকে আস্তে আস্তে ঝাঁকি দেওয়া হয় যাতে কুসুমের বাইরে একটা পাতলা আবরণ তৈরি হয়। কিছুণ পর কুসুমটি শক্ত হতে শুরু করলে এটিকে ক্যালসিয়াম কোরাইড দ্রবণে এক ঘণ্টা চুবিয়ে রাখা হয়। তারপর শুকিয়ে পরবর্তী স্টেপের জন্য রেখে দেওয়া হয়।

২য় ধাপঃ



এই ধাপে কন্টেইনার বা ছাঁচের তিন ভাগের এক অংশ পূর্বে তৈরি সাদা অংশের কাঁচামাল দ্বারা পূর্ণ করা হয়। তারপর ১ম ধাপে প্রস্তুত কুসুমটি এর উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। কুসুমের উপর আরও কিছু সাদা অংশ ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর এটিকে ক্যালসিয়াম কোরাইড দ্রবণে ডুবিয়ে আস্তে আস্তে ঝাঁকালে তৈরি হয়ে যায় খোসা বিহীন একটা আস্ত ডিম।এই খোসাবিহীন ডিমটাকে শক্ত করা হয়, তারপর ওয়াশ করে শুকিয়ে রাখা হয়।

৩য় ধাপঃ



এই ধাপে খোসাবিহীন ডিমটার ভেতর সুতো প্রবেশ করিয়ে সুতোর দুই প্রান্ত ধরে ডিমটাকে ডোবানো হয় মোম এবং ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের মিশ্রিত দ্রবণে। তারপর ডিমটাকে ঠাণ্ডা পানিতে চুবিয়ে আবার পূর্বের দ্রবণে ডুবানো হয়। ডিমের বাইরে শক্ত খোলস তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করা হয়। এরপর সুতোটাকে বের করে কোটিং করে দিলেই তৈরি হয়ে যায় একটি আস্ত নকল ডিম।

আসল ও নকল ডিম চেনার উপায়

এখন জেনে নেওয়া যাক আসল ও নকল ডিমের পার্থক্যঃ



(১) নকল ডিমের খোলস আসল ডিমের চেয়ে পাতলা হবে, যদিও বাহ্যিকভাবে এটা অত ভালভাবে বুঝা যায়না।

(২) হাত দিয়ে ¯পর্শ করলে নকল ডিম আসল ডিমের চেয়ে বেশী খসখসে মনে হবে।

(৩) নকল ডিমকে ঝাঁকালে ভেতর থেকে কিছু শব্দ শোনা যেতে পারে পানি থাকার কারনে।

(৪) আসল ডিমের গন্ধ কিছুটা কাঁচা মাংসের মত যা নকল ডিমের েেত্র অনুপস্থিত।

(৫) নকল ডিম ভাঙ্গার পর কিছুণের মধ্যে কুসুম এবং সাদা অংশ এক সাথে মিশে যাবে, কারণ তারা একই উপাদানে তৈরি।

(৬) নকল ডিমকে ফ্রাই করলে কোন ফ্রাই করলে কোন প্রকার ¯পর্শ ছাড়াই ডিমের কুসুম ছড়িয়ে পড়বে যা আসল ডিমের েেত্র ঘটবে না।

(৭) আঙ্গুল দিয়ে টোকা দিলে আসল ডিম নকল ডিমের চেয়ে অধিকতর ক্রি¯প সাউন্ড’ তৈরি করবে।

(৮) নকল ডিম কে ফ্রাই করলে আসল ডিমের চেয়ে বেশী বাবল বা বুদবুদ তৈরি হয়।



শেষ কথা



আশা করা যায় কেনার সময় অথবা ঘরে বসেই এখন আমরা আসল ও নকল ডিমের পার্থক্য ধরতে পারব। পরিবারের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে বিষয়টি সবার সাথে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল। নইলে ভোক্তা সাধারণের অজ্ঞাতে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে সর্বনাশা এই চায়নিজ ডিম।

(তথ্য সুত্রঃ ইন্টারনেট)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.