![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একমুঠো স্বপ্ন দেবো তোমায়, শিশির ভেজা কাশফুলেরী সুবাস দোবো কিছু কথা দেবো শুনতে বিষন্বতায় বল,নেবে কি?
জায়গাটা রাদেবপুর।সকালেই হই হই রই রই শুরু হয়ে গেল।সবাইতো অপমানে অপদস্থ। মুরগি চুরি-এতো এ এলাকাই অবিশ্বাস্য নয় শুধু,এই ভদ্রপল্লীর মুখে চুনকালি মাখা।
একজন বলে উঠল-কবীর মিয়া তো আসলো না,আমরা কবে থেকে এলাকাকে বাজার বানিয়ে রাখলাম!সে এখনো ঘুমুচ্ছে নাকি?সেওতো কিছু পরামর্শ দিতে পারে।আমরা তাকে এলাকার গুরু হিসেবে জানি!
কেও একজন ডাকতে ছুটল।গিয়ে দেখে দরজা জানালা বন্ধ এখনো।কয়েকবার কড়া নাড়ার পরও আওয়াজ পেলোনা।হয়তো এখনো নাকে তেল দিয়ে ঘুমুচ্ছে কবীর মিয়ার পরিবার।
ফিরে যাওয়ার মুহুর্তে ডাকতে আসা লোকটি দেখলো উঠোনের শেষ প্রান্তে মুরগির উচ্ছিষ্ট।
পরিবেশ তার মনে সন্দেহ চেপে দিল।কাছে গিয়ে দেখে চিৎকার দিয়ে উঠে-এতো সেই চুরি হওয়া মুরগির পালক!!!
মুহুর্তে সব মানুষ ছুটে এলো।এতক্ষণ ঘুমানোর রহস্য এখন সবার কাছে উন্মোচিত। কবীর মিয়াকে ডেকে উঠানো হল।প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে আমতা আমতা করে বলল-আমার ছোট ছেলে না বুঝে চুরি করেছে।হাতের পাঁচ আঙ্গুল তো সমান না।আমার ছোট ছেলেটাও হাতের ছোট আঙ্গুল,একটু বেয়াড়া।
কারো তার কথায় করুণা হলো না।নানান জনের মুখে নানানভাবে নানানকথা।কেও কেও বলল-কবীর মিয়াও মুরগি চুরে জড়িত।নয়তো দোষ স্বীকার না করে মুরগি খেয়ে এমন ঘুমুচ্ছিল কেন।উচিত ছিল ছেলের বিচার করে মুরগি ফেরত দেওয়া।ক্ষমা চাওয়া।
সবার কাছে ঘৃণিত হয়েগেল কবীর মিয়া।মাতব্বর সাহেব জুমার নামাজের পর বিচারের ঘোষণা দিল।
এটা প্রথম গল্প।দ্বিতীয় গল্পটার সংক্ষেপন এমন:-
জমির মিয়ার ছোট ছেলে পাশের বাড়ির মুরগি চুরি করেছে।জমির মিয়ার কানে আসার সাথে সাথে রাগে লজ্জায় ক্ষোভে অস্থির হয়ে পড়ে।ছেলেকে ধরে বিলম্ব না করে মুরগি সহ বেত্রাঘাত করতে করতে পাশের বাড়ি নিয়ে যায়।মুরগি ফেরত দেয় এবং তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে।জমির মিয়াও এ ঘঠনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে।
ঘঠনা একটু পরেই জনে জনে ছড়িয়ে গেল।পুরো গ্রাম।একটু ভিন্ন ধাঁছে।এখানে ছেলের অপরাধের চাইতে জমির মিয়ার সততা,প্রতিবেশীসুলভ আচরনই প্রসংশিত হতে লাগল।
এবার আসল কথায় আসা যাক।
আমরা জানি,সত্য সত্যই।সত্য চিরদিন উদ্ভাসিত।চলে বলে কোন কলে একে আটকানো দুরুহ ব্যাপার।বলতে গেলে আটকানো যায় না।এর ধর্মই হচ্ছে মিথ্যাকে পরাজিত করা।কিন্তু বার বার আমরা এই জিনিসটা ভুলে যেতে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি।নাকি আমরা মানতে চেষ্টা করি যে ইতিহাসের শিক্ষাই হল ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করা!!যাহোক এর খেসারত দিতেই হয়।
কোন ঘটনা বা দূর্ঘটনা ইচ্ছাই বা অনিচ্ছাই ঘটে গেল।উচিত হয়তো সৎ সাহস নিয়ে মোকাবেলা করা।তখন শাস্তি হলেও কম হয়,লজ্জাটাও।
কিন্তু আমরা ধামাচাপা শব্দটার সাথে খুব মিশে গেছি।অত্যাচারিতকে সহযোগিতা করার পরিবর্তে আমাদের তৈরী করা সমাজ ধামাচাপা দিতে সহযোগিতা করে বেশি।
কিন্তু কাজটা খুবই জটিল।সুযোগ পেলেই আসল রহস্য দাবানলের মতো জ্বলে উঠে।
তখন প্রথম গল্পের কবীর মিয়ার মতো অবস্থা তৈরী হবে।একজনের অপরাধ পুরো পরিবার তথা একটা সম্প্রদায় বা সমাজকে ঘায়েল করবে।যারা অপরাধীকে সহযোগিতা করেছিল অপরাধ ঢাকতে।তখন ধিক্কার আসে শুধু ঐ অরাধীর জন্য নয়,পুরো সম্প্রদায়ের জন্য।কাটগড়ায়ও দাড়াতে ও হতে পারে বিবেকের আদালতে।
যদি ঐ সম্প্রদায় ধামাচাপা না দিয়ে দোষীকে দোষী বলে স্বীকার করে,আইনে সোপর্দ করে,তখন সম্মান কমেনা,বরং বাড়ে। দ্বিতীয় গল্পের জমির মিয়ার ক্ষেত্রে যেমনটা ঘটেছিল।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:০১
বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
+++++