নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন এক বহতা নদী...

আসিফনবী

লিখতে ভালোবাসি, ভালোবাসি পড়তে। মৃত্যুপথযাত্রীদের প্যালিয়েটিভ কেয়ার নিয়ে লেখালেখি এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ করি।

আসিফনবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্যালিয়েটিভ কেয়ার: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪০

আসিফ হাসান
প্রতিবছর অক্টোবর মাসের ২য় শনিবার বিশ্ব হজপিস ও প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে আগামী ৮ অক্টোবর দিবসটি পালিত হবে।।
‘প্যালিয়াটিভ কেয়ার’ হচ্ছে এমন একটি বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা-যা অনারোগ্য একজন মৃত্যুপথযাত্রীর অবশিষ্ট দিনগুলোর জন্য সর্বশেষ সেবা ও সহায়তা। দুরারোগ্য এমন কোন অসুখ- যা আর কখনও ভালো হবার নয়, কিন্তু সংশ্লিষ্ট শারীরিক ব্যথার উপশমের ব্যবস্থা করা সম্ভব, সেইসব রোগীর শেষ দিনগুলি সহনীয় করে তোলার প্রচেষ্টাকে এবং সেবার ধারণাটি বর্তমান পৃথিবীতে ‘প্যালিয়াটিভ কেয়ার’ নামে পরিচিত। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকার ল্যানসেট কমিশন প্যালিয়েটিভ কেয়ারের সংজ্ঞায় বলতে চাইছেন Serious Health Related Suffering (SHRS) বা ‘সঙ্কটাপন্ন স্বাস্থ্যজনিত ভোগান্তি’। কিন্ত এই সংজ্ঞা ও ‘চিকিৎসা-ধারণা’টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। করোনাকালীন বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর মিছিলে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। কভিড ১৯-এর নিষ্ঠুর বাস্তবতায় আমরা মাঝে মাঝে বিভ্রান্ত হচ্ছি এই ভেবে যে, আমাদের মধ্যে মানবিকতা বাড়ছে না কমছে। আমাদের কাছে মৃত্যু এখন শুধু একটি সংখ্যামাত্র।
মানুষ শুধুমাত্র শরীরনির্ভর প্রাণী নয়; মন, জীবনীশক্তি, আবেগ এমনকি পরিবার, স¤প্রদায়, যেখানে তার সামাজিক অবস্থান এবং জীবন যাপন, সেটিও তার অস্তিত্বেরই অনিবার্য অংশ। সুতরাং আরোগ্যাতীত একজন অসুস্থ ব্যক্তি এবং তার পরিবারের সঙ্কট শুধুমাত্র শারীরিক নয়; এটা হতে পারে মানসিক, সামাজিক, আর্থিক, আধ্যাত্মিক-যা শারীরিক অসুস্থতার মতই গুরুত্বপূর্ণ। কখনও একটি সমস্যা আরেকটিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। অসুস্থতাজনিত কারণে একজন মানুষ উদ্বিগ্ন বা হতাশায় পড়লে মানসিক ও শারীরিকভাবেও সে দুর্বল হয়ে পড়ে। একজন রোগীকে শারীরিক অসুস্থতাসহ সবকটি ক্ষেত্রে যখন সাহায্য করা যায়, কেবলমাত্র তখনি তাকে ‘সম্পূর্ণ সেবা’ বলা যায়। এ ক্ষেত্রে সকল বিষয়কে সমন্বিত করে দুরারোগ্য অসুস্থ মানুষকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সেবা প্রদান করার প্রচেষ্টাই প্যালিয়েটিভ কেয়ার।
সমাজ যেভাবে নবজাত শিশুটির যত্নকে অগ্রাধিকার দেয়, ঠিক তেমনি সমাজের উচিৎ যারা অনারোগ্য রোগে আক্রান্ত তাদের যত্ন নেয়ার বিষয়টিকেও সমভাবে গুরুত্ব দেয়া। জন্ম দেবার সময় মায়ের যন্ত্রণা, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আμান্ত ব্যক্তির মৃত্যুকালীন অসহ্য ও অমানুষিক ব্যাথার সাথে তুলনীয়। জন্ম ও মৃত্যুর অবস্থান একই সমতলে। সমাজ ও পরিবারের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, চিকিৎসাবিদ্যার জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োগে মৃত্যুকে গ্রহণযোগ্য ও সহনীয় করে তোলা কঠিন কোন কাজ নয়। প্রয়োজন সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা এবং মানসিকতার পরিবর্তন। মৃত্যু অনিবার্য, তবে তা হতে হবে যতদুর সম্ভব ভোগান্তিহীন ও শান্তিময়। বিষয়টি সম্পর্কে সকলের স্বচ্ছ ধারণা এবং সচেতনতা তৈরিতে জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্যালিয়েটিভ-সেবার অন্তর্ভুক্তি পূর্ব শর্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৪ সালের মে মাসে গৃহীত একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে প্যালিয়েটিভ কেয়ারকে স্বীকৃতি দিয়ে সব সদস্য রাষ্ট্রকে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে তা অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্যালিয়েটিভ কেয়ার এখন আমাদের জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা, সময়ের দাবি।
কর্ঠিন আরোগ্যাতীত রোগে আক্রান্ত মানুষের নানা ধরনের শারীরিক উপসর্গ, মানসিক সঙ্কট, সামাজিক সমস্যা এবং সর্বোপরি আধ্যাত্মিক অসহায়তা রোগী এবং পরিবারের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। অথচ বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সাধারণত প্রতিরোধ আর অরোগ্যকেন্দ্রিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অসুখ-বিসুখ, রোগ-বালাই যেন কখনও না হয়, আর হলেও যেন দ্রæত ভালো হয়ে যায়, লক্ষ্যটা প্রায় সবারই সেদিকে। স্বাস্থ্য কর্মীরাও সাধারণত রোগ ও তার প্রতিকারের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়ে থাকে। গত একশ বছরে চিকিৎসা বিজ্ঞান এই দুই ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্যও অর্জন করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখনও অনেক রোগ আছে-যা ভালো হয় না। তাদেরকে প্রান্তিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করাই প্যালিয়েটিভ কেয়ার-এর কর্মপরিধি। এইসব মানুষের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অনেক সময়েই চিকিৎসকরা বলেন, ‘আর কিছু করার নেই, বাড়ি নিয়ে যান’। এ ধরণের কথা বলা ভুল। প্যালিয়েটিভ কেয়ারের দৃষ্টিতে, ‘কিছুই করার নেই’ একটি ভুল ও পলায়নপর মনোবৃত্তি। মানবিক দায়িত্ব হিসেবে জীবনের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত কিছু না কিছু নিশ্চয়ই করার থাকে। এ ধরনের রোগীদের বেঁচে থাকার শেষমুহূর্ত পর্যন্ত সম্ভাব্য চিকিৎসা বা সমাজসেবা ব্যবস্থায় পরিচর্যা করতে হবে। তাঁদের কষ্ট ও সমস্যা দূর করতে সচেষ্ট থাকতে হবে। অনেকে জীবনের আশা ছেড়ে দেয়, অবহেলার শিকার হয় আক্রান্ত মানুষ। তাঁদের জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ হচ্ছে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ‘যন্ত্রণা লাঘবে’র চেষ্টা করে যাওয়া। ভালো হওয়ার নয় এমন অসুস্থ রোগী ও তার পরিবারের সাথে চিকিৎসা এবং পরিপূর্ণ সেবা ব্যবস্থাকে সম্পৃক্ত করতে হবে, এদের কষ্ট, ব্যথা এবং সমস্যা লাঘবে সচেষ্ট থাকতে হবে। এ কার্যক্রমের সাথে সকলের পরিচিতির জন্য প্রয়োজন, সমস্যার গভীরে প্রবেশ করা। দুরারোগ্যে রোগে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক- এ চার ধরনের সহায়তা দরকার। এর মধ্যে শারীরিক সহায়তা বা চিকিৎসা দিতে পারেন শুধু এ সম্পর্কিত প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। বাকি তিন ধরনের সহায়তার জন্য সরকার, সমাজ, পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের এগিয়ে আসা দরকার। উপশমসেবায় এ চার ধরনের সহায়তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে এমন রোগীদের সেবা দিচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। বিএসএমএমইউ-তে ২০১১ সালে সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আন্তঃবিভাগ, বহির্বিভাগ পরামর্শ গ্রহণ এবং ভর্তি রোগীর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা প্রমাণ করে যে, এ ধরনের রোগী এবং আক্রান্ত পরিবারের সংখ্যা কত বেশি। প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা প্রশমন চিকিৎসা সেবা নামে এ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ‘ভালো হওয়ার নয়’ এমন রোগী এবং তার পরিবারকে চিকিৎসা সেবা ও সহযোগিতা দেয়ার মাধ্যমে তাকে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার আওতায় নিয়ে আসা।
বিএসএমএমইউ ছাড়া জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে সীমিত পর্যায়ে এ সেবার ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও এ সেবা দেওয়া হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশে উপশমসেবা প্রয়োজন- এমন অরোগ্যাতীত রোগীর সংখ্যা প্রতিবছর বাড়ছে। সরকারি ছাড়াও এখন বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলি সীমিতসংখ্যক রোগীর সেবা দিতে পারছে। এ পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য দক্ষ জনবলের পাশাপাশি জনসচেতনতা গড়ে তোলাও জরুরি হয়ে পড়েছে। উপশমসেবা বা ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’ যন্ত্রণা কমায়। কিন্তু বর্তমানে দেশে এ সেবা খুব কমসংখ্যক রোগীকেই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
বিএসএমএমইউতে সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, ২০১৬ সালে নিপোর্ট ও বিএসএমএমইউ’র এর এক যৌথ জরিপের প্রতিবেদন উল্লেখ করে বলেন, ‘দেশে সেসময় এ রকম রোগী ছিলো প্রায় ছয় লাখ। বর্তমানে এ হার প্রতিবছর বাড়ছে। এদের বড় অংশ মৃত্যু পর্যন্ত তীব্র যন্ত্রণায় দিন কাটায়। একপর্যায়ে কিছু রোগের আর নিরাময় হয় না। তারা শুধু মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকে।’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণের অভিমত, এইসব রোগীর শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ আরোগ্যাতীত অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে আসেন। এইসব রোগীর জন্য আমাদের দেশে কোন সংগঠিত চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা নেই। অত্যন্ত অল্প ব্যয়ে সীমিত প্রশিক্ষণে পৃথিবীর বেশ কটি দেশ তাদের অনারোগ্য অসুস্থতায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি জাতীয় উপসর্গ-প্রশমণ চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা এবং ব্যথামুক্ত অন্তিম সময় নিশ্চিত করতে পেরেছে। দক্ষিণ ভারতের কেরালা, উগান্ডা, তানজানিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সমাজের সবাই মিলে ‘সমাজভিত্তিক প্যালিয়েটিভ কেয়ার’ নামে এক নতুন মাত্রার সংযোজন করেছে। আশার কথা হচ্ছে আমাদের দেশেও কেরালা মডেল অনুসরণ করে বস্তি এলাকায় কিছু সেবা দেয়া হচ্ছে। আমাদের মত দেশে এই চিকিৎসা সেবা তখনি সফলতা পাবে যখন এটি বাড়ি বাড়ি পর্যায়ে অর্থাৎ কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবস্থার আওতায় চলে আসবে। এজন্য দরকার সমন্বয়ভিত্তিক সামাজিক সচেতনতা এবং কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বব্যাপি প্রতিবছর মোট মৃত্যুর মধ্যে প্রায় ৭১ শতাংশ মারা যায় ‘নন কমিউনিক্যাবল ডিজিজ বা অসংক্রমণ রোগে’। এই রোগে আক্রান্ত মানুষের শতকরা ৭০ জন মৃত্যুর আগে তীব্র শারীরিক ব্যথা সহ্য করেন। ২০১৬ সালে ’আইসিডিডিআর’বি পরিচালিত এক প্রতিবেদনে জানা যায় বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৫৯ শতাংশরই মৃত্যু হয় অসংক্রমণ রোগে। জীবনের শেষ প্রান্তে এই ধরনের রোগে আ ক্রান্তদের এক বিশাল সংখ্যার প্রয়োজন হয়ে পড়ে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের। এত বিপুলসংখ্যক প্যালিয়েটিভ রোগীকে সেবা দেয়ার জনকাঠামো দেশে এখনও গড়ে উঠেনি। অথচ খুব অল্প প্রশিক্ষণে দেশের স্বাস্থ্যকর্মী বা স্বেচ্ছাসেবক সমন্বয়ে একটি প্রশিক্ষিত ’সেবা দেওয়ার জনসম্পদ’ তৈরি করা সম্ভব। যারা, আরোগ্যাতীত রোগীদের ব্যথাহীন মৃত্যু নিশ্চিত করা, শ্বাসকষ্টে আরাম দেয়া, দুর্গন্ধযুক্ত ক্ষতস্থান পরিষ্কার করাসহ সাধারণ সেবা দিতে সক্ষম হবে।
‘প্যালিয়েটিভ-সেবা’ সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থার আওতায় পড়ে না। কারণ গতানুগতিক চিকিৎসা সেখানেই সম্ভব যেখানে রোগীর নিরাময় হবার সম্ভাবনা থাকে। চিকিৎসকের সক্রিয় সহযোগীতা যেখানে নিরর্থক হয়ে উঠে, সেখানে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের কাজ শুরু হয়! ক্যান্সার, মস্তিস্ক, হার্ট, ফুসফুসের প্রদাহজনিত জটিল রোগ বা রক্ত জমাট বাঁধা (করোনারি থ্রম্বোসিস এবং বর্তমানে করোনা) অধিকাংশ সময়েই নিরাময়ের সীমা অতিμম করে। কিন্ত মৃত্যুঅবধি রোগী (বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুরা) অমানুষিক ও অসহ্য ব্যথায় পীড়িত হয়। এই সব ব্যথা উপশমের জন্য প্যালিয়েটিভ কেয়ারে আছে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার আওতাভুক্ত বিভিন্ন পদ্ধতি। বিশেষ ক্ষেত্রে তরল মরফিন ইঞ্জেকশনও দেয়া হয়। সব ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের অনুমতি ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তবে মুলত চিকিৎসক, হজপিস-কর্মী, নার্স বা নিকটজনরাই এই সেবা দিয়ে থাকেন। শারীরিক ব্যথার উপশমে মানসিক ভারসাম্যের অত্যধিক প্রয়োজন। প্রশিক্ষিত সেবা-কর্মী জীবনের শেষ দিনগুলিতে শয্যাশায়ী রোগীর ব্যথা উপশমের জন্য ওষুধের সাথে সাথে তাকে মানসিক সঙ্গও দিয়ে থাকেন- যাতে সে মৃত্যুকে মেনে নিতে পারে। মৃত্যুর পরে আরেকটি জীবন আছে, এটা যদি রোগীর কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা যায়, তাহলে সে মৃত্যুকে সহজে মেনে নিতে পারে। ব্যথার অনুভূতি তখন কমে যায়।
পরিসংখ্যানগত ধারণা যে, ২০৫০ সাল নাগাদ প্রতিবছর নতুন ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ। এইসব রোগীর দুই-তৃতীয়াংশই থাকবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে-যারা মোট বিশ্বস্বাস্থ্য ব্যয় খাতের মাত্র ১০ শতাংশ অর্থ ব্যবহার করে। তাহলে এইসব মানুষ কী জীবনের প্রান্তিক সময়টুকু কোন চিকিৎসাই পাবে না? অথচ সবাই চায়, নিজের এবং প্রিয়জনদের জীবনের পরিসমাপ্তি যেন শান্তিতে আর স্বস্তিতে হতে পারে। সহজ, স্বাভাবিক ও প্রশান্তির মৃত্যু সবারই কাম্য।
আসিফ হাসান: লেখক ও সাংবাদিক
E-mail: [email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.