নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলা

সাধারণ মানুষ যার জানার কিছু ইচ্ছা আছে।

সবুজ ইসলাম

সাধারণ মানুষ

সবুজ ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সন্তান নারী পুরুষ দায়ী কে ?কোরআন হাদীস ও বিজ্ঞান ।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৫:৪৫



বর্তমান সমাজে অজ্ঞতা হেতু নারী নির্যাতনের প্রাধান্য বেড়েছে।গতবার মেয়ে প্রসব কারীনি মা,তার সংসারের সকলের দ্বারা, কথার অপ্রীতিতে জরজরিত হতে হয়েছে। এবার আবার মেয়ে এটা মেনে নেওয়া যায় না !অতএব মা ও শিশুসহ মশারিতে আগুন দেওয়া হল।মা আগুন হতে দগ্ধ কন্যাসহ নিজেও দগ্ধিভূত হয়ে হসপিটালে আশ্রয় গ্রহন করলো।জানিনা শেষ পরিনিতি কি হয়েছিল।স্বামী চাকুরের খাতিরে বাহিরে আছে।তার আশা একটি পুত্র সন্তান।স্ত্রী অন্তসত্তা।সে আল্লাহকে বার বার বলছে আমাকে এবার পুত্র সন্তান দাও।স্বামী বলেছে এবার আবার মেয়ে হলে

তাকে তালাক দিয়ে আবার বিয়ে করবে।অবশ্য ঐ নারী পুত্র সন্তান প্রসব করেছিলো মেয়ে হলে কি পরিনিতি হতো তা আর তাকে উপলব্ধি করতে হয়নি।আমাদের এই সমাজে এই ভাবে একটি মেয়েকে দোষারোপ করা হয়।কন্যা হবার কারণে স্বামী তাকে দেখতে পারেনা,শশুর শাশুরীর নিকট হতে হয় নির্যাতিত।যেন ছেলে,মেয়ে হওয়া ঐ নারীর দোষ। স্বামীর কোন দোষ নেই। আমি এখানে এই সমাজের কিছু চিত্র তুলে ধরলাম যার সমাধান হওয়া দরকার।জানা দরকার সত্য কারের অবস্থা।যে নারী ছেলে অথবা মেয়ে হবার ব্যাপারে এতটুকু দায়ী নয়। তাকেই কি না এই সমাজে দায়ী করা হয় এই ব্যাধি শুধু মূর্খ সমাজে হলে এতটা ভয়ের কিছু ছিলোনা কিন্তু শিক্ষিত সমাজে এই ভাবে নারী তার ঘরে নির্যাতনের স্বীকার।আমরা দেখেছি জাহেলিয়াতের যুগে নারীদের প্রতি এই ভাবে দোষারোপ করা হত। যেমন কোরআনের ভাষাই;“তাদের কেউ কন্যা সন্তান প্রসবের সংবাদ পেলে মুখ বিবর্ণ ও অগ্নিশর্মা হয়ে উঠতো এবং লজ্জায় কাউকে মুখ দেখাতে চাইতোনা।তারা এই অপমানের বোঝা কাঁধে নিয়ে শিশুটি কে বাচতে দেবে না,তাকে মাটিতে পুতে ফেলবে,কিছুই ভেবে পেত না।”(নহল ৬ রুকু)

ফলে কন্যা সন্তান তারা জীবন্ত পুতে ফেলতো।ইতিহাসে এমন কথা আছে যে,দুজন ব্যাক্তি রাসুল (সাঃ)এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করে,আমাদের মা আমাদের নয়টি বোনকে জীবন্ত মাটির নিচে পুতেছিলো,এর সোয়াব কি তাদের মা পাবে?রাসুল (সাঃ) উত্তরে বলেছিলেন তাদের মা জাহান্নামে যাবে।মোট কথা ঐ সমাজের মানুষ গুলো কন্যা সন্তানকে মাটির নিচে পুতে রাখাকে ছোয়াবের কাজ মনে করতো।বর্তমান সমাজে যদিও ঐভাবে সন্তান হত্যাকরা হয়না কিন্তু বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে ভ্র“ন হত্যা করা হয়।আমি যে কথাটি বলছিলাম একটি নারী সন্তান ছেলে আথবা মেয়ে হবার ব্যাপারে এতটুকু দায়ী হতে পারেনা।ছেলে কিম্বা মেয়ে এর সবটুকু হাত সুধুমাত্র একক আল্লাহ তায়ালার।প্রকৃত ব্যাপার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন “নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তায়ালার। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন,যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করেদেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ ক্ষমতাশীল। (সুরা শুরা ৪৯-৫০)।

এই আয়াত দৃষ্টে এই কথাই বলা চলে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির নিয়মে কারো ইচ্ছা,ক্ষমতা এমন কি জ্ঞানের ও কোন দখল নাই।তাই ছেলে কিম্বা মেয়ে হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাই হল বড় কথা।এই জন্য কোন নারীকে তিরস্কার করা মুর্খতার পরিচয়।বরং এই আয়াতে প্রথমে কন্যা

সন্তানের আলোচনা করা হয়েছে।এই ইঙ্গিত দৃষ্টে হজরত ওয়াছেল এবনে আসাকা বলেন ,যে নারীর গর্ভে প্রথমে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে,সে পুর্নময়ী।(কুরতুবি)মানুষ জন্ম মৃত্যু ছেলে মেয়ে এই সব বিষয়ে একদম অক্ষম।এর সকল কিছুই সৃষ্টিকর্তার নিয়মে হয়ে থাকে।যেমন কোরআনে সুরা ওয়াকিয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে“তেমরা যে বীজ বপন কর,সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি ? তোমরা তাকে উৎপন্ন কর না আমি উৎপন্ন করি।আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটা করে দিতে পারি অতঃপর হয়ে যাবে তেমরা বিস্ময়াবিষ্ট।”মহান আল্লাহ এখানে যে বিষয়টার উল্লেখ করেছেন,তাহল সৃষ্টির ব্যাপারে মানুষের অক্ষমতা।মানুষের যদি ক্ষমতা থাকতো তবে কোন আঁটি কোন বীজ নষ্ট হতে দিতোনা কিন্তু বীজ কিম্বা আঁটি নষ্ট হয়ে যায় তখন আর মানুষের কিছুই করার থাকেনা। ঠিক তেমনি মানুষ চায়না যে,সে বৃদ্ধ হোক কিম্বা তার চুল দাড়ী পেকে যাক।তার যদি ক্ষমতা থাকতো তবে কখনোই সে বৃদ্ধ হতো না।অনুরূপ মানুষের যদি ক্ষমতা থাকতে তবে সে তার চাহিদা মত ছেলে কিম্বা মেয়ে ইচ্ছা মত যে কোন একটিকেই গ্রহন করতো।কিন্তু বাস্তবতা হল এই ব্যাপারে সে একদম অক্ষম। মূল কথা হল ছেলে কিম্বা মেয়ে সন্তানের জন্য কোন নারি কখনোই দায়ী হতে পারেনা।এখন আমি হাদীস থেকে এই বিষয়টি আলোকপাত করবো।ইমাম আহমদ ও বায়হাকী প্রমূখ হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে রেওয়াত করেন যে,একদল ইহুদী নবী করীম (সঃ) এর কাছে এসে বলল;আমরা আপনাকে কয়টি বিষয় জিজ্ঞাসা করব সেই গুলি নবী ছাড়া কেউ জানেনা।আপনি বলুন (১) বনী ইসরাঈল নিজেদের উপর কোন খাদ্যটি হারাম করেছিল।(২) পুরুষের বীর্য সম্পর্কে বলুন,এর দ্বার পুত্র সন্তান ও কন্যা সন্তান কি রূপে হয়? (৩) সাধারণ মানুষের মধ্যে ও নবীর মধ্যে স্বাতন্ত্রমূলক পার্থক্য কি?

ইহুদীদের প্রশ্ন শুনে হুজুর (সাঃ) বলেন,আল্লাহর কসম,তোমরা জানো ইসরাঈল অর্থাৎ ইয়াকুব (আঃ) দুরাগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে আল্লাহর কাছে মান্নত করে যে,যদি আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করেন,তবে পানাহারের মধ্যে যে বস্তুটি তার কাছে সর্বাধিক প্রিয়,সেটি নিজের উপর হারাম করে নিবেন।অতঃপর আরোগ্য হয়ে তিনি নিজের উপর ঊটের গোস্ত ও দুধ হারাম করলেন।ইহুদীরা এ জবাবে সত্যায়ন করে।

অতঃপর হুজুর (সাঃ) দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলেন,তোমরা জান যে,পুরুষের বীর্য সাদা ও গাঢ় হয় এবং নারীর বীর্য পাতলা হলদে হয়। এই উভয় বীর্যের মধ্যে যেটি প্রবল হয় ,আল্লাহর নির্দেশে তা থেকেই সন্তান জন্ম নেয় এবং তার অনুরূপ হয়।ইহুদীরা বলল-ব্যাপার তাই।অতঃপর তৃতীয় প্রশ্নের জবাবে হুজুর (সাঃ) বলেল;তোমরা জান যে,নবীর চক্ষু নিদ্রা মগ্ন হয় এবং অন্তর জাগ্রত থাকে।সাধারণ মানুষের চক্ষু ও অন্তর উভয় নিদ্রা মগ্ন হয়।ইহুদীরা বলল আপনি ঠিক বলেছেন।”এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে নারী পুরুষের মধ্যে যে টি প্রবল হয় আল্লাহর নির্দেশে তা থেকেই সন্তান হয়।মহান আল্লাহ নির্ধারন করে থাকেন কাকে পুত্র আর কাকে কন্যা সন্তান দিবেন। সেই ক্ষেত্রে কোন ভাবেই কোন নারিকে দোষারোপ দেওয়া যাবেনা।এখন আমরা এই বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা করব।মানব প্রজননে বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত যে ধারনা তাহল;মানুষের জন্ম তথা মানব প্রজননের কাজটা বিশেষ কত গুলো দৈহিক প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির মাধ্যমে এই ওভ্যূলের বা স্ত্রী ডিম্বানু প্রথমে নারীর ডিম্বকোষ বা ডিম্বাশয় থেকে নিজেকে পৃথক করে নেয়।পরে এই ডিম্বানু সেই নারীর মাসিক ঋতু চক্রের মাধ্যমে ফ্যালোপিয়ান টিউবের বা ডিম্ববাহী নালীর মাঝা মাঝি স্থানে অবস্থান গ্রহন করে।এই ডিম্বানুকে সত্যকারার্থে উর্বরা অর্থাৎ ফলবতী করে পুরুষের শুক্রকীট।কোটি কোটি শুক্রকীট থেকে সুধু মাত্র একটি শুক্রকীট ডিম্বানু গ্রহন করে।এই ভাবে নারীর ডিম্বানুটি হয় উর্বরা অথাৎ ফলবতি।ফ্যালোপিয়ান টিউব হয়ে এই উর্বরা ডিম্বানুটি জরায়ুতে নামে এবং জরায়ু অভ্যন্তরে অবস্থান নেয়।ইতি মধ্যে প্লাসেন্টা বা গর্ভফুলও তৈরী হয়ে যায়।তার সহায়তায় এই উর্বরাডিম্বানুটি কাল বিলম্ব না করেই জরায়ুর শ্লেষ্মা ও পেশীর পুরু আস্তরনে নিজেকে আক্ষরিক অর্থে রোপন করে দেয়।এই ভাবে নারী হয়ে পরে গর্ভবতী।সময়ের পরিক্রমায় তা মাংসপিন্ডের মত দেখায়।এরপর ভ্র“নের হারের কাঠামো,পেশী,স্নায়ুতন্ত্র,বিভিন্ন সরবরাহ যন্ত্র এবং অন্ত্রাদি।পুরুষের প্রজনন সেলের শুক্রকীট মধ্যস্থিত জিন এবং নারীর প্রজনন কোষের ডিম্বানু মধ্যস্থিত জিন যৌথ ভাবে নির্ধরণ করে গর্ভস্থ সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে।পুরুষের শুক্রকীটে থাকে হেমিক্রোমোজম এক্স ও ওয়াই আর নারীর ডিম্বানুতে থাকে হেমিক্রোমোজন এক্স।স্বামী স্ত্রী মিলনে নারীর ডিম্বানুকে হেমিক্রোমোজন ওয়াই দ্বারা সিক্ত হয় তবে সন্তান হবে পুত্র ।আর যদি নারীর ডিম্বানুকে এক্স দ্বারা সিক্ত হয় তবে সন্তান হবে মেয়ে।এই পর্যায়ে কারো পক্ষেই নির্ধারণ সম্ভব নয় গর্ভস্থ সন্তান পুত্র হবে না মেয়ে হবে।কোটি কোটি শুক্রকীট থেকে ভাগ্য ক্রমে একটি মাত্র শুক্রকীট নারীর ডিম্বানুতে অনুপ্রবেশে সক্ষম হবে।অতঃএব এই কথা বলা যায়,ছেলে কিম্বা মেয়ে হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন হাত নাই।এটি মহান সৃষ্টিকর্তার এক রহস্যময় পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা যার উপর মানুষের কোন ক্ষমতা চলেনা।তাই এই বিষয় নিয়ে কোন নারীকে দোষ দেওয়া,তাকে মানোসিক কষ্টে রাখা,নির্যতন করা মহান আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং আধুনিক বিজ্ঞানের প্রমান থাকাই তা অজ্ঞতা ও মূর্খতা।আমাদের এই মূর্খতা পরিত্যাগ করতে হবে।

[email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.