নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহান সৃষ্টিকর্তার নশ্বর পৃথিবীতে আমি একজন ঠুনকো ছায়া। হয়তো একদিন চলে যাবো,চলে যাবে আমার সব চাওয়া-পাওয়া কিংবা পদরেখা। তবে, রেখে যেতে চাই নিজের তৈরী করা কিছু কীর্তি। যাতে, আমার প্রতি ভালোবাসা কারো কমে না যায়। ভালোবাসুন ভালো থাকুন....

মোঃ জাহিদুল ইসলাম (অভ্র)

Do u know what is success.\nWhen ur signature becomes an autograph that\'s call success.

মোঃ জাহিদুল ইসলাম (অভ্র) › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাধাপ্রাপ্ত ভালোবাসা:((

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১০

[1]
রাত দুইটা বেঁজে ত্রিশ মিনিট
.
ক্রিং.... ক্রিং..... ক্রিং..........
.
ভাইব্রেট দেয়া মোবাইলটা বেজেই চলেছে। বিরক্তিকর এক
রিংটোন, ঘুমের মধ্যেই ফোনটা রিসিভ করলো অভ্র
.
-- শোন # অভ্র , তুই কাল ক্যাম্পাসের পুকুরপাড়ে আমার জন্য ওয়েট
করবি
.
-- হুম,এত রাতে কেন সকালে বললেও তো পারতি
.
-- পারতাম না,আসিস
.
--ওকে
.
[2]
সকাল ১০ টা বেঁজে ১৫ মিনিট
.
-- আমি মরে গেলে কাদবি???
.
-- না ... মরার আগে দাওয়াত দিস... চল্লিশা খাবো...
.
-- ফান করিস না ... সিরিয়াস হ...
.
-- এ মা, এতে ফান করার কি হলো???
.
-- আমি মরে গেলে তোর সত্যিই কস্ট হবে না???
.
-- না রে... খুব জোর বেঁচে যাবো... মাঝরাতে ফোন করে কেউ
আইসক্রিম খাওয়ার বায়না করবে না ... ভর দুপুরে ফোন
দিয়ে দেখা করার বায়না করবে না ... কত্ত মজাই
থাকতে পারবো...
.
-- আমি তোকে খুব জ্বালাতন করি... তাই না???
.
-- খুউউউউব...
.
-- জানি রে...
.
-- তবে আমি যেটা জানি সেটা তুই জানিস না ...
.
-- কি জানিস তুই???
.
-- আমি জানি, যেদিন তুই আর জ্বালাতন করবি না, অদ্ভুত
বায়না ধরবি না, সেদিন আমার শ্বাস প্রশ্বাস আর চলবে না ...
.
-- বুঝলাম না ...
.
-- বুঝতে হবে না ...
.
-- ভালোবাসিস আমায়???
.
-- একটুও না ...
.
-- সত্যি???
.
-- জানিনা...
.
-- সারাজীবন আমার জ্বালাতন সহ্য করার দায়িত্ব নিবি???
.
-- মানে???
.
-- মানে কিছু না ...
.
[3]
সেদিনের রাত ৯ টা ২১ মিনিট
.
অহনার বাবা অহনার রূমে পায়চারী করছেন অনেক্ষণ ধরে
.
-- কিছু বলবে, বাবা ?
.
-- কাল তোর ক্লাস আছে?
.
-- আছে তো।
.
-- কাল ক্লাসে যাওয়ার দরকার নেই তোর।তোকে ছেলেপক্ষ
দেখতে আসবে।
.
-- কিহ! কাল তো একটা ইমপর্টান্ট ক্লাস ছিলো আমার।
.
-- এই বিয়েটা তার থেকেও ইমপর্টান্ট।ছেলে ভাল চাকরি করে।
মোটা অঙ্কের মাইনে পায়। ও
তোকে সুখেই রাখবে।
.
-- কি আজব! ভাল বেতনের চাকরি করলেই
সে সবাইকে সুখী করতে পারবে?
.
-- তুই বেশি বুঝিস না। মাইয়া মানুষ, বেশি বুইঝা কাম নাই।
.
-- এই বিয়েটা ক্যান্সেল করা যায় না, বাবা?
.
-- ক্যান? ক্যান্সেল করা লাগবো ক্যান?এমন ভাল সম্বন্ধ সবসময়
আসবে না।
.
-- বাবা , আমার... আমার একজনকে পছন্দ।
ও খুব ভাল ছেলে।
.
-- কি! তুই প্রেম করছিস?সর্বনাশা অলুক্ষণে মাইয়া!
এইভাবে বংশে চুনকালি লাগাইয়্যা দিলি!
.
-- কোথায় তুমি অহনার মা? শোন, তোমার মাইয়্যা কি কয়! আগেই
কইছিলাম,
মাইয়ারে বেশি পড়ালেখা শিখানোর
দরকার নাই। এখন বোঝো,বোঝো...ভালো করে!
পোলাগো লগে লাইন কইরা বেড়ায় তোমার মাইয়্যা।
.
-- বাবা , একটু বোঝার চেষ্টা কর।ওকে দেখলে তোমার অপছন্দ
হবে না।
.
-- চুপ কর বেয়াদপ! আবার মুখে মুখে কথা!লেখাপড়া শিখে দিন
দিন বেয়াদপ
হইছোস। আর পোলাডার কি আক্কেল
দেখ! কাম নাই, কাজ নাই, সারাদিন পরের
মাইয়াগো পিছে ঘুইরা বেড়ায়।
এই সব
পোলাগো ধইরা ধইরা থাপড়ানো উচিত।
.
-- বাবা প্লিজ। একটু চুপ করো।
.
-- তুই চুপ কর। বেয়াদপ মাইয়া। মান-সম্মান তো ধুলায় মিশাইছোস
আমার।
যে মাইয়া বাপ-মা’র সম্মানের
কথা চিন্তা করে না,যে মাইয়া বংশের মান-ইজ্জতের
কথা চিন্তা করে না। সেই মাইয়ার
কোনও দরকার নাই আমার।পানিতে ডুইবা মর তুই। আর
যদি না মরতে পারস,
আমাগো গলা টিপ্পা মাইরালা।
সর্বনাশা অলুক্ষণে মাইয়া।
.
অহনা আর একটা কথাও বললো না। ও
বুঝতে পারলো,মেয়ে হয়ে জন্মানোটা পাপ।
মেয়েদের কখনও নিজেদের পছন্দ থাকতে নাই। তাহলে যে বাবা-
মা’র মান সম্মান ধুলোয় মিশে যায়।
কোনো মেয়ে নিজের পছন্দমত বিয়ে করতে চাইলে বংশে চুন-
কালি মেখে দেয়া হয়। বংশের মান- ইজ্জত সব ধ্বংশ হয়ে যায়।
.
[4]
রাত ১০ টা বেঁজে ৮ মিনিট
.
রাস্তার পাশে সোডিয়াম আলোয় ঘেরা ল্যাম্পপোস্টের
নিচে বসে সিগারেট ফুঁকছে অভ্র।
.
হঠাৎ একটা মেসেজ এলো মোবাইলে ভাবলো কাষ্টমার
কেয়ারগুলো খুব বেশিই মেসেজ পাঠায় কিনা।
.
-- অভ্র, আমাকে বাড়ি থেকে তুমি নিয়ে যাও,
আমি পালিয়ে যাব তোমার
সাথে তাছাড়া আমি আত্নহত্যা করবো
.
[5]
সকাল ১০টা বেঁজে ১২মিনিট
.
ঘুম ঘুম চোখে আবার ফেসবুক আর মোবাইল দেখার নিয়মিত
অভ্যাস আছে কিনা...??
.
ক্রিং....ক্রিং.....ক্রিং
অহনাকে প্রায় দশবারের মত কল্ দেয়ার পরও
ধরলোনা কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি তো?
এমনটাতো কখনো করেনি মেয়েটা.....
.
অজানা শঙ্কায় কেঁপে উঠলো অভ্রর মনের আকাশ তাই
সোজা রওনা দিলো অহনার দিকে , গিয়ে দেখলো উৎসুক জনতার
খুব জটলা ওদের বাড়ির সামনে
সম্মোহিত
মানুষের মত এক পা, দু’পা করে সেদিকে এগোচ্ছে আরিফ।
উঠোনটাতে বেশ ভিড় লোকের।
সবাই গোল হয়ে দাড়িয়ে কি যেন দেখছে।
.
ভিড় ঠেলে সামনে এগালো অভ্র।যা আশঙ্কা করেছিলো তাই!
অহনার
নিথর দেহ পরে আছে উঠোনে। সবাই
কান্না করছে এখন। সবকিছু কেমন একটা দুঃস্বপ্নের মত
লাগছে অভ্রর।
মনে হচ্ছে এখনই বুঝি দুঃস্বপ্নটা ভেঙ্গে যাবে। ঘুম
থেকে উঠে দেখবে সব আগের মতই ঠিকঠাক। এত গন্ডোগোলের
মধ্যেও একটা আওয়াজ কানে গাঁথলো ওর।অহনার
বাবা কান্না করছে। তার তো কান্না করার কথা না! অথচ
তিনিই এখন কাঁদতে কাঁদতে নানান প্রলাপ বকছেন,
.
-- মা রে.. . ওঠ! এটা তুই কি করলি মা. ..
কি করলি? তোর পছন্দের
কোনো ছেলে আছে এটা আমাকে আগে বলতি।
আমি নিজ
হাতে তোকে তুলে দিতাম তার হাতে। কিন্তু এটা তুই
কি করলি রে মা... ! কি করলি এটা... !
.
কথাগুলো শুনে আজ এত কষ্টের মধ্যেও কেন যেন
হাসি পাচ্ছে অভ্রর।
এটা যে এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দ!
এটাও প্রতিশোধের আনন্দ!
তবে প্রতিশোধ ওর নিজেকে নিতে হয়নি। অহনাই
নিয়ে নিয়েছে।
.
[6]
.
বি:দ্র:-- মা-বাবাদের কাছে আমার একটা বিনীত অনুরোধ,
আপনার সন্তানকে স্বপ্ন দেখতে না শেখান, অন্ততঃ তার
স্বপ্নগুলোকে গলা টিপে মারবেন না; আপনার অপূর্ণ
স্বপ্নগুলো তার ওপর চাপিয়ে দেবেন না অনুগ্রহ করে।
যদি পারেন তাকে স্বপ্ন দেখতে শেখান, তাকে তার স্বপ্নের
পেছনে দৃঢ় পায়ে দৌড়াতে শেখান; আপনিও তার স্বপ্নপূরনের
সাথী হোন। এর চেয়ে বড় আর কোন উপহার হতে পারে না।
.
প্রতিটি সন্তানই তার বাবা-
মাকে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী ভালবাসে,সে তা আপনাকে বলুক
আর নাই বলুক। যদিও কোনদিনই তা তার
প্রতি আপনার ভালবাসাকে অতিক্রমের বিন্দুমাত্র
ক্ষমতা রাখে না।আমার অসংখ্য মৃত স্বপ্ন আজ আমাকে এই
উপলব্ধি এনে দিয়েছে।।
.
------
অন্ধকার আকাশ্
--------
.

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.