নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবেকের ফাঁসি!

আজাদী আকাশ

সাদা মনে বলছি। পেশায় আইনজীবী। ভাবতে ভালবাসি। ভাবাতে ভালবাসি। ষোল কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করনি!

আজাদী আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেনে নিন জমির মাপ সহ প্রয়োজনীয় নানা তথ্য

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:০৫



ইঞ্চি, ফুট ও গজ

১২ ইঞ্চি = ১ ফুট,
৩ ফুট = ১ গজ

ভূমি যে কোন সাইজের অর্থাৎ কোন ভূমির দ‌ৈর্ঘ্য ও প্রস্থে যদি ৪৮৪০ বর্গগজ হয়, তাহলে এটা ১.০০ একর (এক একর) হবে।
যেমনঃ ভূমির দৈর্ঘ্য ২২০ গজ এবং প্রস্থ ২২ গজ সুতরাং ২২০ গজ × ২২ গজ = ৪৮৪০ বর্গগজ ।
কাঠা, বিঘা ও একর
১ কাঠা = ১৬ ছটাক,
১ কাঠা = ১৬৫ অযুতাংশ,
১ বিঘা = ৩৩ শতাংশ,
১ শতাংশ = ১০০ অযুতাংশ,
২০ (বিশ) কাঠা = ১ বিঘা,
১.০০ একর = ১০০ শতাংশ= ৩.০৩০৩০৩০৩... বিঘা।
একশত শতাংশ বা এক হাজার সহস্রাংশ বা দশ হাজার অযুতাংশ= ১.০০ (এক) একর। দশমিক বিন্দুর (.) পরে চার অঙ্ক হলে অযুতাংশ পড়তে হবে।

শতাংশ ও একর

৪৮৪০ বর্গগজ = ১ একর,
৪৩৫৬০ বর্গফুট= ১ একর,
১৬১৩ বর্গগজ= ১ বিঘা,
১৪৫২০বর্গফুট= ১ বিঘা,
৪৩৫.৬০ বর্গফুট= ০১ শতাংশ,
৮০.১৬ বর্গগজ= ১ কাঠা,
৭২১.৪৬ বর্গফুট= ১ কাঠা,
৫.০১ বর্গগজ = ১ ছটাক,
৪৫.০৯ বর্গফুট= ১ কাঠা,
২০ বর্গহাত = ১ ছটাক,
১৮ ইঞ্চি ফুট= ১ হাত (প্রামাণ সাই)

মিলিমিটার ও ইঞ্চি

১ মিলিমিটার= ০.০৩৯৩৭ (প্রায়),
১ সেন্টিমিটার= ০.০৩৯৩৭ (প্রায়),
১ মিটার = ৩৯.৩৭ ইঞ্চি বা ৩.২৮ ফুট/ ১.০৯৩ গজ (প্রায়),
১০০০ মিটার = ১ কিলোমিটার,
১ কিলোমিটার= ১১ শত গজ,
২ কিলোমিটার = (সোয়া মাইল),
১৭৬০ গজ = ১ মাইল,
১৩২০ গজ = পৌন এক মাইল,
৮৮০ গজ = আধা মাইল,
৪৪০ গজ = পোয়া মাইল,
১ বর্গ মিটার = ১০.৭৬ বর্গফুট (প্রায়),
১ হেক্টর = ২.৪৭ একর (প্রায়),
১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সেন্টিমিটার (প্রায়)

গান্টার শিকল

ভূমির পরিমাপ পদ্ধতি সঠিক এবং সহজ করার জন্য ফরাসি বিজ্ঞানী এডমন্ড গান্টা এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তিনি ভূমি পরিমাপের জন্য ইস্পাত দ্বারা এক ধরণের শিকল আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে তার নাম অনুসারেই এই শিকলের নামকরণ করা হয় গান্টার শিকল।

আমাদের দেশে গান্টার শিকল দ্বারা জমি জরিপ অত্যন্ত জনপ্রিয়। একর, শতক এবং মাইলষ্টোন বসানোর জন্য গান্টার শিকল অত্যন্ত উপযোগী। এই শিকলের দৈর্ঘ্য ২০.৩১ মিটার (প্রায়) বা ৬৬ ফুট।

গান্টার শিকল ভূমি পরিমাপের সুবিধার্থে একে ১০০ ভাগে ভাগ করা হয় থাকে। এর প্রতিটি ভাগকে লিঙ্ক বা জরীপ বা কড়ি বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।

প্রতি এক লিঙ্ক = ৭.৯২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ১০ চেইন ×প্রস্থে ১ চেইন = ১০ বর্গ চেইন = ১ একর গান্টার শিকলে ১০ লিঙ্ক বা ৭৯.২ ইঞ্চি পর পর নস বা ফুলি স্থাপন করা হয় (নস ফুলি)।

২০ লিঙ্ক বা ১৫৮.৪ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয়- ৩০ লিঙ্ক বা ২৩৭.৩ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয়- ৪০ লিঙ্ক বা ৩১৬.৮ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয়- ৫০ লিঙ্ক বা ৩৯৬.০ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয়- ৮০ গান্টার বা ১৭৬০ গজ পর স্থাপিত হয়- মাইল ষ্টোন।
একর শতকে ভূমির মাপ
১০০ লিঙ্ক = ১ গান্টার শিকল ১০০০ বর্গ লিঙ্ক = ১ শতক ১,০০,০০০ বর্গ লিঙ্ক = ১ একর

আমাদের দেশে জমি-জমা মাপ ঝোকের সময় চেইনের সাথে ফিতাও ব্যবহার করা হয়। সরকারি ভাবে ভূমি মাপার সময় চেইন ব্যবহার করা হয় এবং আমিন সার্ভেয়ার ইত্যাদি ব্যাক্তিগণ ভূমি মাপার সময় ফিতা ব্যবহার করেন। ভূমির পরিমাণ বেশি হলে চেইন এবং কম হলে ফিতা ব্যবহার করাই বেশি সুবিধাজনক।

আঞ্চলিক পরিমাপ

আমাদের দেশে অঞ্চলভেদে বিভিন্ন প্রকারের মাপ ঝোক প্রচলিত রয়েছে। এগুলো হলো কানি-গন্ডা, বিঘা-কাঠা ইত্যাদি। অঞ্চলে ভেদে এই পরিমাপগুলো আয়তন বিভিন্ন রকমের হয়ে তাকে। বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমির পরিমাপ বিভিন্ন পদ্ধতিতে হলেও সরকারি ভাবে ভূমির পরিমাপ একর, শতক পদ্ধতিতে করা হয়। সারাদেশে একর শতকের হিসাব সমান।

কানিঃ কানি দুই প্রকার। যথা- (ক) কাচ্চা কানি (খ) সাই কানি

কাচ্চা কানি: ৪০ শতকে এক বাচ্চা কানি। কাচ্চা কানি ৪০ শতকে হয় বলে একে ৪০ শতকের কানিও বলা হয়।

সাই কানিঃ এই কানি কোথাও ১২০ শতকে ধরা হয়। আবার কোথাও কোথাও ১৬০ শতকেও ধরা হয়।


কানি গন্ডার সাথে বিভিন্ন প্রকারের পরিমাপের তুলনাঃ

২ কানি ১০ গন্ডা (৪০ শতকের কানিতে) = ১ একর ,
১ কানি = ১৭২৮০ বর্গফুট ,
১ কানি = ১৯৩৬ বর্গগজ ,
১ কানি = ১৬১৯ বর্গমিটার ,
১ কানি = ৪০ বর্গ লিঙ্ক,
১ একর = ১০ বর্গ চেইন,
১ একর = ১০০ শতক ,
১ একর = ৪,০৪৭ বর্গমিটার ,
১ একর = ৩ বিঘা ৮ ছটাক ,
১ একর = ৬০.৫ কাঠা ,
১ শতক = ১/২ গন্ডা বা ৪৩২.৬ বর্গফুট।
বিঘা এবং কাঠা
১ বিঘা = (৮০ হাত×৮০ হাত) ৬৪০০ বর্গহাত,
১ বিঘা = ২০ কাঠা,
১ কাঠা = ১৬ ছটাক,
১ ছটাক = ২০ গন্ডা,
১ বিঘা = ৩৩,০০০ বর্গলিঙ্ক,
১ বিঘা = ১৪,৪০০ বর্গফুট,
১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট,
১ ছটাক = ৪৫ বর্গফুট।

লিঙ্ক এর সাথে ফুট ও ইঞ্চির পরিবর্তনঃ

লিঙ্ক = ৭.৯ ইঞ্চি,
৫ লিঙ্ক = ৩ ফুট ৩.৬ ইঞ্চি,
১০ লিঙ্ক = ৬ ফুট ৭.২ ইঞ্চ,
১৫ লিঙ্ক = ৯ ফুট ১০.৮ ইঞ্চি,
২০ লিঙ্ক = ১৩ ফুট ২.৪ ইঞ্চি,
২৫ লিঙ্ক = ১৬ ফুট ৬.০ ইঞ্চি,
৪০ লিঙ্ক = ২৬ ফুট ৪.৮ ইঞ্চি,
৫০ লিঙ্ক = ৩৩ ফুট,
১০০ লিঙ্ক = ৬৬ ফুট
একর-হেক্টর
১ হেক্টর = ১০,০০০ বর্গমিটার
১ হেক্টর = ২.৪৭ একর
১ হেক্টর = ৭.৪৭ বিঘা
১ হেক্টর = ১০০ একর।

খতিয়ান এবং নকশা

খতিয়ান

খতিয়ানে (Record of Rights) খতিয়ান নম্বর, জেলা ও মৌজার নাম লিপিবদ্ধ থাকে। এছাড়া একাধিক কলামে জমির মালিকের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, দাগ নং (Plot Number), জমির শ্রেণী, পরিমাণ ইত্যাদি তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। খতিয়ানে কোন এক মৌজায় কোন একজন মালিকের জমির বিবরণ থাকে। আবার একটি খতিয়ানে একাধিক মালিকের জমির বিবরণও থাকতে পারে। এ খতিয়ান গুলো সাধারণত মৌজা ওয়ারী তৈরী করাহয়। অর্থাৎ কোন একটি মৌজার সকল খতিয়ান একসাথে বাধাই করা হয়। এজন্য রেকর্ড বইকে অনেকে সাধারণ বা প্রচলিতভাবে Volume- ও বলে থাকেন।

পড়চা

যখন পৃথক একটি কাগজে এই খতিয়নের অনুলিপি তৈরী করা হয় তখন তাকে পড়চা বলা হয়। এই অনুলিপি হাতে লিখে বা কম্পোজ করে তৈরী হয়ে থাকে । এই অনুলিপি যখন রেকর্ড রুমের ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হয় তখন তাকে নকল বা Certified Copy বলে। সহজভাবে পড়চা হলো খতিয়ানের হাতে লেখা বা Compose করা কপি বা খসড়া।
আমরা সিএস, এসএ এবং আরএস পড়চার নাম শুনে থাকি। এ গুলো কি? ইতোমধ্যে পড়চা কি সে সম্বন্ধে আমরা একটি ধারণা পেয়েছি। সিএস, এসএ এবং আরএস পড়চা হলো আসলে বিভিন্ন রেকর্ডের খসড়া বা অনুলিপি বা কপি। কাজেই পড়চা সিএস, এসএ, আরএস বা মহানগরে জরিপের অর্থাৎ ৪ প্রকার হতে পারে। এছাড়া জরিপ চলা কালে প্রাথমিকভাবে হাতে লেখা একটি খসড়া বিবরণ যাচাইয়ের জন্য জমির মালিককে দেয়া হয়। একে মাঠ পড়চা বা হাত পড়চাও বলে।

পড়চা কোথায় পাবেন?

পড়চা বা রেকর্ডের সহি মুহুরী নকল (Certified Copy) পাওয়া যায় জেলাপ্রশাসকের কার্যালয় (DC office)-এর রেকর্ডরুমে । নির্ধারিত ফী সহ আবেদন করলে রেকর্ড রুম থেকে পড়চা সরবরাহ করা হয়। পড়চা কখনও কোন দালালের কাছ থেকে নিবেন না । এতে ভুল থাকতে পারে । কেবল মাত্র ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর সহপড়চাই আসল বা Authentic.

পড়চা কেন প্রয়োজন?

জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিবরণ, জমির খতিয়ান-দাগ,অংশ, হিস্যা, শ্রেণী ইত্যাদি জানার জন্য পড়চা প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে জমি কেনা বেচার সময় পড়চা যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়। পড়চা যাচাই এর জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিস, এসি (ল্যান্ড) অফিস বা রের্কডরুমে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

মৌজা (Mouza)

সার্ভের সময় সাধারণত একই রকম ভূ-প্রকৃতির ভৌগলিক এলাকা স্বতন্ত্র ভাবে মাপ জোক করা হয়। কোন থানা বা উপজেলার এরকম স্বতন্ত্র ভৌগলিক এলাকা বাভূ-খন্ডই হলো মৌজা। মৌজা জরিপ বা ভূমি ব্যবস্হাপনার একটি একক। কয়েকটি গ্রাম একটি মৌজার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে । আবার কোন গ্রামেও একাধিক মৌজা থাকতে পারে। মৌজার কোন সুনির্দিষ্ট আয়তন নেই। তবে সাধারণতঃ কোন একটি উপজেলা একাধিক মৌজায় বিভক্ত থাকে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় ‘মৌজা’ বেশগুরুত্বপূর্ণ একটি term। খতিয়ান বাদ দিলে মৌজার নাম উল্লেখ থাকে। উপজেলাধীন প্রত্যেক মৌজাকে একটি ক্রমিক নম্বর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এই নম্বরকে জে•এল নম্বর বলে। এটি স্হায়ী।

তফসিল (Schedule)

জমিজমার ক্ষেত্রে তফসিল বলতে আসলে ভূমির পরিচয়কে বুঝায়। অর্থাৎ জমিটি কোথায়, এর মালিক কে ইত্যাদি উল্লেখ থাকে। তফসিলে জেলার নাম, উপজেলা বা থানার নাম, মৌজার নাম, জমির দাগ-খতিয়ান নম্বর উল্লেখ করা হয়। এতে অনেক সময়জ মির পরিমাণ, শ্রেণী এবং মালিকানার বর্ণনাও থাকে।

দাগনম্বর

এটি আসলে কোন সরলরেখা বা বক্ররেখা নয়। দাগ হচ্ছে আসলে জমির Plot Number।আমরা জানি সাধারণত মাপ জোকের মাধ্যমে জমিকে একাধিক অংশে বিভক্ত করা হয়। এর প্রতিটি খন্ডকে দাগ বা Plot বলে। জরিপের সময় এরকম প্রত্যেক খন্ড জমিকে একটি নম্বর দ্বারা সূচিত করা হয়। এই নম্বরকেই দাগ নম্বর বলে।

মৌজা ম্যাপ

আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি যে, খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপ দুটো মিলেই পূর্ণাঙ্গ রেকর্ড। আসলে জরিপের সময় খতিয়ান বা জমির মালিকানার বিবরণ এবংজমির নকশা বা ম্যাপ এক সাথেই তৈরী করা হয়। কেবল মাত্র জমির খতিয়ান দেখে জমি চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। এজন্য মৌজা ম্যাপ বা জমির নকশার প্রয়োজন হয়। মৌজা ম্যাপ জমি চিহ্নিত করতে বা খুঁজে পেতে খুব সহায়ক। এতে দাগ নম্বর দিয়ে জমি সূচিত করা থাকে। ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমির পাশাপাশি রাস্তা, স্কুল, মসজিদ, পুকুর ঈদগাহ ইত্যাদি পাবলিক প্রপার্টিও চিহ্নিত থাকে। মৌজা ম্যাপ পড়চার মতই ডিসি অফিসের রেকর্ডরুম থেকে সংগ্রহ করা যায়।

এওয়াজ বদল (Exchange of Land)

অনেক সময় পারস্পরিক ব্যবহারের সুবিধার্থে এবং উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে একজনের সম্পত্তির সাথে আর একজনের জমির দখল বদল বা বিনিময় করা হয়। এটাই এওয়াজ বদল । এরূপ ক্ষেত্রে, জমি বা সম্পত্তি পরস্পর ভোগ দখল করলেও স্বত্ত্ব বা মলিকানার হস্তান্তর হয় না। কেবলমাত্র দখল বদল হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না রেজিস্ট্রেশন করে জমির স্বত্ত্ব বদল করা হয়, ততক্ষণ ঐ জমি পূর্ব মালিকের নামেই থেকে যায়। মনে রাখতে হবে এওয়াজ বদল কেবলমাত্র ব্যবহার বা চাষাবাদের সুবিধার্থে করা হয়ে থাকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.