নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

LET'S START...........

যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর।

আজমান আন্দালিব

নিজের সম্পর্কে আর কি লিখবো, অন্যেরা যা ভাবছে তা-ই শেয়ার করবো...

আজমান আন্দালিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণতন্ত্র বনাম আমলাতন্ত্রঃ উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন নেতৃত্ব প্রয়োজন

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৯

আমাদের দেশের সংবিধান মোতাবেক প্রতি ৫ বছর পর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। সারা দেশকে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করা আছে। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন দল থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। একটি নির্দিষ্ট তারিখে সারা দেশে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একটি আসনকে কেন্দ্র করে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। সর্বোচ্চ ভোট যিনি পেয়ে থাকেন তিনিই উক্ত আসন থেকে সংসদের প্রতিনিধি বলে গণ্য হন।



সংসদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে যিনি সাংসদ হন, তিনি প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হন। তিনি ইচ্ছে করলে দেশের আইন-কানুন পরিবর্তন, সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন এবং পরিমার্জনেও ভূমিকা রাখতে পারেন। এ কারণে সাংসদদের আইনপ্রণেতাও বলা হয়ে থাকে। আইন প্রণয়নে এ ভূমিকার কারণে ষোল কোটি মানুষের দেশে একজন সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত হন। দেশের নাগরিকদের শ্রেণীক্রম অনুযায়ী তিনি শীর্ষস্থানে অবস্থান করেন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদ সদস্য এবং এর পরেই সাংসদদের অবস্থান।



মন্ত্রীপরিষদের সদস্যদের অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় অবস্থিত। বাংলাদেশে মন্ত্রণালয় নেই। আছে সচিবালয়। জনপ্রশাসনের সমস্ত কার্য মন্ত্রণালয় ভিত্তিক বিভক্ত থাকে। কিন্তু সচিবালয়ের মাধ্যমে এই কার্যগুলো বাস্তবায়িত হয়। সচিবরা কার্যভিত্তিক মন্ত্রণালয়ের সাচিবিক কাজ করেন। তাদের অবস্থান সাংসদদের পরই। মন্ত্রণায়লয়ের কাজ কে তদারক করার জন্য সংসদীয় কমিটিও থাকে। সাংসদরা এ কমিটিগুলোর প্রধান হন। পদাধিকার বলে সাংসদরা সচিবদের উর্ধ্বে অবস্থান করেন।



সাধারণত একজন সচিব শিক্ষায়, জ্ঞানে, দক্ষতায় অনেক অভিজ্ঞ থাকেন। সাচিবিক কাজের খুঁটিনাটি তাদের নখদর্পনে থাকে। কিন্তু একজন সাংসদ এরকম অভিজ্ঞ নাও হতে পারেন। সাংসদদের থাকে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। কোনো না কোনো রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারী থেকে তারা জনমানুষের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আইনপ্রণেতা হন। কিন্তু সচিবরা জনমানুষের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেন না। তাদের সে সুযোগ নেই। একজন রিকশাওয়ালাকে বুকে জড়িয়ে ধরা কিংবা একজন শ্রমিকের উঠোনে বসে এক কাপ চা খাওয়ার সংস্কৃতি আমলাদের মধ্যে নেই।



দেশের গণমানুষের জরুরী কাজগুলো মন্ত্রণালয় ভিত্তিক হয়। সাংসদদের এলাকা ভিত্তিক প্রস্তাবিত কাজগুলোর জন্য আমলারা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন এবং মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এগুলোকে প্রকল্প বলা হয়। তারপর ধাপে ধাপে এ প্রকল্পগুলোর কাজ চলে। ভোটের পিঠে চড়ে উঠে আসা সাংসদরা এ প্রকল্পগুলো তদারকি করেন। তাদের এ কাজে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেন সচিবরা। তাই রাজনীতিক এবং আমলা উভয়কে পরষ্পর নির্ভর হতে হয়।



এখানেই বিপত্তিটা বাধে। আমলাতান্ত্রিক মনোভাব গণমানুষের বিপক্ষে দাঁড়ায়। গণমানুষের কল্যাণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হলে তা লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে আটকা পড়ে যায়। একজন রাজনীতিক হিসেবে জনগণের কাছে জবাবদিহীতা করতে হয় জনপ্রতিনিধিদের। একজন সচিবের সেরকম জবাবদিহীতা থাকে না। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহীতা চাকুরির শর্তাবলির উপর নির্ভর করে। একজন সচিব যদি মনে করে কাজটি সরকারের নীতি বিরুদ্ধ তাহলে ফাইলটি আটকে যেতে পারে। ফাইলটি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আমলার টেবিলে টেবিলে ঘুরে। দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেকে আপোষকামী মনোভাব নিয়ে ফাইলটি অনুমোদন করতে চায়। এখানেই পার্সেন্টেজের ব্যাপারটা চলে আসে।



সাংসদ আমলা সমঝোতা হলেই কাজ হবে। নতুবা বছরের পর বছর ঘুরতে থাকবে। কাজের কাজ কিছুই হবে না। এ দুজনের মধ্যে সমন্বয় করে দেওয়ার জন্য আরেকটি গোষ্ঠী আছে। তারা কিছুটা রাজনৈতিক পরিচয় ধারণ করে সচিবদের সাথে সমন্বয়ের কাজ করে। এতে তাদেরও কিছুটা পার্সেন্টেজ থাকে। এই সমন্বয়কারী গ্রুপ বড় হলে প্রকল্প খরচও বড় হয়। আর এভাবেই দুর্নীতির ডালাপালা গজায়।



বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বাঘা রাজনীতিবিদ দেখা যায় না। একজন বাঘা রাজনীতিক যখন জনকল্যাণে কোনো কাজ করে দেওয়ার জন্য সচিবকে নির্দেশ দিবেন তা লঙ্ঘনের ক্ষমতা সচিবদের থাকা উচিত নয়। কিন্তু নীতিগতভাবে দুর্বল মনের অধিকারী একজন সাংসদ সহজেই আমলাতন্ত্রের কাছে নতজানু হয় যান। একজন মন্ত্রী বা সাংসদ ৫ বছর মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে আসেন। কিন্তু একজন আমলা স্থায়ীভাবেই তাঁর দায়িত্বে থাকেন। বড়জোর এ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব নিয়ে ঘুরে আসেন। সাংসদরা শিক্ষা, জ্ঞান, প্রশাসনিক দক্ষতায় আমলাদের কাছ থেকে অনেক পিছিয়ে থাকেন। তাই কোনো কাজের জন্য আমলারা যেভাবে চান সেভাবেই তাদের উপর নির্ভর হতে হয়। সামরিক বেসামরিক আমলাতন্ত্রের জন্যই জন্যই কথাগুলো প্রযোজ্য।



প্রকৃত অর্থে রাজনীতিকদের কর্তৃত্ব বাড়াতে হলে উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন নেতৃত্ব প্রয়োজন। প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। নতুবা সামরিক বেসামরিক আমলাতন্ত্রের ফাইলের প্যঁচে পড়ে গণতন্ত্র সদূরপরাহত হয়েই থাকবে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫০

মিজান আফতাব বলেছেন: প্রিয়তে নেয়ার মত পোস্ট।

+ + + + +

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৫

আজমান আন্দালিব বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২৪

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন নেতৃত্ব প্রয়োজন আছেই। বুড়াদেরও বাদ দিতে হবে।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৫

আজমান আন্দালিব বলেছেন: হাহাহা...ঠিক বলেছেন সাহাদাত ভাই। বুড়াদের বাদ দিতে হবে।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১১

ডাক্তার আমি বলেছেন: নাইস পোস্ট। +++

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৯

আজমান আন্দালিব বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.