নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

LET'S START...........

যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর।

আজমান আন্দালিব

নিজের সম্পর্কে আর কি লিখবো, অন্যেরা যা ভাবছে তা-ই শেয়ার করবো...

আজমান আন্দালিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুরু শিষ্যের এদেশীয় গল্প -১

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:০৮

গুরু-শিষ্য ঘুরতে ঘুরতে এল এক নতুন দেশে। শেষ সম্বল
এক হাজার টাকা দিয়ে গুরু বাজারে পাঠাল শিষ্যকে। কিছুক্ষণ পর খালি হাতে শিষ্য এসে উপস্থিত।
গুরু আশ্চর্য হয়ে শিষ্যকে জিজ্ঞেস করল, ‘কি হে বৎস, বাজারে কি কিছুই পাওনি?’
‘গুরুঠাকুর, বলিব কী। এ দেশের সব জিনিসের দামই অত্যন্ত চড়া। যেটাতে হাত দেই সেটাতেই আগুন। আমরা এক মাস এই দেশে অবস্থান করিব। এক হাজার টাকার বাজারে আমাদের একদিন ও চলিবে না। একটা ইলিশ মাছের দামই হাজার টাকার উপরে। তাই বাধ্য হইয়া কিছু ক্রয় না করিয়াই ফেরত আসিয়াছি। অতিস্বত্ত্বর আমাদের এ দেশ ত্যাগ করিতে হইবে। ’
গুরু কিঞ্চিৎ ভাবিয়া বলিল 'বৎস, আমি কিছুদিন এই দেশে অবস্থান গ্রহণের সিদ্ধান্ত লইয়াছি। তুমি একমাস পরে আসিয়া আমার খোঁজ নিও। ' তথাস্তু বলিয়া শিষ্য গুরুকে কদমবুচি করিয়া প্রস্থান করিল।

অত:পর গুরু একা একাই দেশটাকে ঘুরিয়া ফিরিয়া দেখিবার জন্য বাহির হইল। গুরু রাস্তায় বাহির হইয়া শুনিতে পাইল এই দেশে আমলাতন্ত্র নামে এক তন্ত্র আছে। গুরু অনেক মন্ত্র -তন্ত্র জানে কিন্তু আমলাতন্ত্রের কথা কস্মিনকালেও শুনে নাই। ঘুরতে ঘুরতে গুরু আমলাদের ঘাঁটি সচিবালয়ের গেটে গিয়া উপস্থিত হইল। গেটের উর্দিপরা দারোয়ান গুরুকে সচিবালয়ের দর্শনপ্রার্থী ভাবিয়া গেটের একপাশে ডাকিয়া লইল। তারপর গুরুর বোঁচকা -পুঁটলি হাতাইয়া একহাজার টাকা পকেটস্থ করিল। গুরুর প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও তাহাকে অনেকটা জোর করিয়া সচিবালয়ের ভিতর প্রবেশ করাইয়া দিল।

গুরু হতভম্ব হইয়া সচিবালয়ের ভিতর ঘুরিতে ঘুরিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হইল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কেরানি মহাশয় গুরুকে অভাবগ্রস্ত পন্ডিতমশাই ভাবিয়া সহাস্যে আগাইয়া আসিল। কুশলাদি জিজ্ঞেস করিয়া পন্ডিতমশাইয়ের আগমনের কারণ জানিতে চাহিলে গুরু কাঁদো কাঁদো হইয়া বলিলেন, 'আমার অর্থ ...'। কেরানী মহাশয় বলিলেন, 'ব্যাস, আর বলিতে হইবে না। আপনার বেতনের অর্থ অচিরেই ছাড় হইয়া যাইবে। পকেটে যা আছে ঝটপট ঝাড়িয়া ফেলুন। ' গুরু কেরানি মহাশয়কে কিছুতেই বুঝাইয়া উঠিতে পারিলেন না তাহার বেতনের বিষয় নহে। বরং গেটে তাহার এক হাজার টাকা লোপাট হইয়া গিয়াছে। কেরানি মহাশয় এই অর্বাচীন পন্ডিতের সাথে অযথা সময় নষ্ট করিতেছে ভাবিয়া উর্দিপরা পুলিশ ডাকিয়া গেটের বাহিরে দিয়া আসিবার নির্দেশ প্রদান করিল।

সচিবালয়ের গেটের বাহিরে ঠেলিয়া পাঠাইবার পূর্বে পুলিশ মহাশয়রা বোঁচকা -পুঁটলি জোর করিয়া রাখিয়া দিল। কপর্দকহীন অবস্থায় গুরু কাঁদিতে কাঁদিতে শিষ্যকে স্মরণ করিতে লাগিল। যাওয়ার আগে শিষ্য গুরুকে বলিয়াছিল, 'যেই দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম এত বেশি, সেই দেশে ঘুষখোর দুর্নীতিবাজের প্রভাব প্রতিপত্তি বেশি। আর ঘুষখোর দুর্নীতির আধিপত্যবাদের দেশে শিক্ষার মূল্য নেই। আপনার মত গুরু মহাশয়ের মূল্য এইদেশে কানাকড়িও নেই। তাই যতদ্রুত সম্ভব এইদেশ ছাড়িয়া পালানো যায় ততই মঙ্গল'। গুরু শিষ্যের কথা ভাবিতে ভাবিতে ক্ষুধা পেটে পথ চলিতে লাগিলেন। এই দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বলিয়া পরিচিত ঢাকা ভার্সিটির পথে আসিয়া পড়িলেন। পথের উভয় পাশে কতিপয় লোককে দেখিতে পাইলেন হাতে হাতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়া দাঁড়ানো। ব্যানার -ফেস্টুনে লেখা -'সচিব -আমলা তৈরি করে শিক্ষকরা, সেই শিক্ষকদের বেতন কমিয়ে আমলাদের বেতন বৃদ্ধি জাতির জন্য অবমাননাকর'।
(চলিবে)

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:১৫

আজমান আন্দালিব বলেছেন: মোবাইল থেকে পোস্ট করলে প্রথম পাতায় আসে না, নাকি অন্য সমস্যা বুঝতে পারছিনা।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৩০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো হচ্ছে লেখাটা। চালিয়ে যান।

৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৪৯

আজমান আন্দালিব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ হাসান মাহবুব।

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ বেশ বেশ!

গুরু শিষ্যের মাধ্যমে আরও সত্য প্রকাশিত হোক!

৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৬

আজমান আন্দালিব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভৃগু। শুভকামনা।

৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪১

আহমেদ জী এস বলেছেন: আজমান আন্দালিব ,



চলুক ।
সচিব -আমলা তৈরি করে শিক্ষকরা .. তাই শিক্ষকেরা নিপাত যাক !!!!!!!! :( :((

৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:০৫

আজমান আন্দালিব বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই।

৮| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বেশ মজার লেখাটা| চলুক

৯| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩২

আজমান আন্দালিব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ @আরণ্যক রাখাল

১০| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৬

তাওহিদ হিমু বলেছেন: হাহাহা,,,

১১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

আজমান আন্দালিব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ তাওহিদ হিমু।

১২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৯

তুষার আহাসান বলেছেন: সব দেশেই একই অবস্থা,
ভাল লাগা।

১৩| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬

মিশিলিন তুরিন বলেছেন: " 'যেই দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম এত
বেশি, সেই দেশে ঘুষখোর দুর্নীতিবাজের
প্রভাব প্রতিপত্তি বেশি। আর ঘুষখোর
দুর্নীতির আধিপত্যবাদের দেশে শিক্ষার
মূল্য নেই। আপনার মত গুরু মহাশয়ের মূল্য
এইদেশে কানাকড়িও নেই। তাই যতদ্রুত সম্ভব
এইদেশ ছাড়িয়া পালানো যায় ততই মঙ্গল'।- কথাগুলা সুন্দর ছিল। তবে পালাবো কোথায়??? বাংগালীর পালানোরও জায়গা নাই। যেই দেশেই যাবো, সেই দেশেই তাড়া খাবো; নিজেদের স্বভাব দোষের কারণে।।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.